সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অনেক রোগী অভিযোগ করছেন তারা দীর্ঘদিন এমনকি কয়েক মাস পর্যন্ত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না, বরং অনেকের সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলেকট্রোথেরাপি প্রয়োগ করতে গিয়ে অনেকের শরীর পুড়ে গেছে, ট্রাকশন দেয়ার পর ব্যথা তীব্রতর হয়েছে বা প্যারালাইসিস রোগীর সোল্ডার ডিসলোকেশন হয়ে গেছে; এমন অনেক তথ্য প্রতিনিয়ত শোনা যাচ্ছে। এতে দুটি বিষয়ে রোগীরা ভুল বার্তা পাচ্ছেন, এক ফিজিওথেরাপি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত নয় অথবা এটি কার্যকর নয়। এ প্রসঙ্গে রোগী ও তার স্বজনদেরই সচেতন হতে হবে। ফিজিওথেরাপি কোনো সাধারণ বিষয় নয়। সচেতন না হলে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। অনেক অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষিত ব্যক্তি লাভের আশায় কম মূল্যে দেশি যন্ত্রপাতি কিনে একটি থেরাপি সেন্টার খুলে বসেছেন। সচেতন না হয়ে এমন স্থানে চিকিৎসা করালে ক্ষতি অনিবার্য। কার্যকরী আইনের অভাব বা প্রায়োগিক দুর্বলতাই এর মূল কারণ।
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। এমনি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অবৈজ্ঞানিকভাবে শরীরে চাপ (ম্যানিপুলেশন) দিলে শরীরে রক্ত ও অন্যান্য নালিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্যদিকে ব্যায়ামের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটতে পারে। যেমনÑ কোমর ব্যথার কারণ স্পন্ডাইলোসিসের ক্ষেত্রে যে ধরনের ব্যায়াম প্রয়োজন স্পন্ডাইলোলিয়েসথেসিসে তার প্রায় বিপরীতধর্মী ব্যায়াম প্রয়োজন বা যে ব্যায়াম কাঁধব্যথার কারণ ফ্রোজেন সোল্ডার ভালো করবে সে ব্যায়াম সোল্ডার ইমপিনজমেন্ট রোগীকে শেখালে তা হিতে বিপরীত হবে। তাই রোগ নির্ণয় ও সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে রোগীদের আরও সচেতন হতে হবে। শুধু কম মূল্যে গরম সেঁক নিলেই তা ফিজিওথেরাপি নয়, এটি একটি বিজ্ঞানসম্মত গবেষণালব্ধ চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নেয়ার আগে অবশ্যই জেনে নিন ফিজিওথেরাপি সেন্টারটিতে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক রয়েছেন কিনা। যে কোনো ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নেয়ার আগে অবশ্যই ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি বা বিপিটি ডিগ্রিধারী ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিন ও ঝুঁকিমুক্ত থাকুন। এক্ষেত্রে রোগীদের জেনে রাখা ভালো, শুধু ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকরাই আপনার কি ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা লাগবে তা নির্ধারণ করবে। অন্য কোনো বিষয়ের চিকিৎসকদের পরামর্শে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিলে এর দায়ভার ফিজিওথেরাপি পেশাজীবী চিকিৎসকদের নয়। তাই জেনে-বুঝে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিন, নিরাপদ ও সুস্থ থাকুন।
(সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৫৯