মানুষের অভাব বোধ যত বাড়ে, কষ্ট যত বাড়ে ততই কি সে সস্তা উপকরণ, উত্তেজনার মধ্যে সুখ খোঁজে?
আসলে মানুষের মধ্যেই বোধহয় লুকোনো থাকে আত্মহননের বীজ।
সেই আদিম কাল থেকে আমরা যে দৈত্য দানবদের কথা শুনে এসেছি- আজ মনে হয় তাদের আলাদা করে কোন অস্তিত্ব নেই। মানুষের ধৈর্য, সহ্য নির্বিকার ভাবই হয়তো দেবত্ব। আর যত অশুভ, হিংসা,অকল্যাণ অসুর রূপে কল্পনা করা হয়েছে। সবই এই মানব শরীরে বর্তমান।কোন মানুষই এর উর্দ্ধে নয়। আমাদের বড়ো খিদে, বড়ো লোভ। নাম, যশ, খ্যাতি, গুরুত্ব পাবার ইচ্ছে..কিছুতেই যেন লোভের শেষ হয়না।
এক একসময় মনে হয় চেয়ে চেয়ে কাঙাল হওয়ার জন্যই বোধহয় জন্মেছি। প্রত্যেকটি পাওয়ার পেছনে কি অসম্ভব দাম মেটাতে হয় সকলকে। ছিনিয়ে নিতে নিতে, ভিক্ষা চাইতে চাইতে, চালাকি করতে করতে পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে মানুষ। প্রতিদিন একধাপ একধাপ করে নিচে নামতে থাকে।তবু কি দুর্নিবার আকর্ষণ এই চাওয়ার, এই ভিখারি পনার যেন শেষ নেই। মানুষ অমৃতের সন্তান। অন্তরের দেবতা কিন্তু সদা সর্বদা অপেক্ষা করে থাকে তাঁর কাছে গিয়ে দাঁড়ানোর। দুহাত ভরে রাখা থাকে স্নেহ, প্রেম, বাৎসল্য। দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন তিনি। আমরা শুধু চাইতে জানিনা, দাঁড়াতে জানিনা গিয়ে তাঁর দুয়ারে। সস্তা থেকে আরও সস্তা উপকরণ খুঁজে চলি নিজেকে প্রবোধ দেওয়ার। যা নয় আমার, যা ছিলনা কোনদিন, যা হবেও না, তাকে পাবার কি অসহনীয় প্রচেষ্টা। সাময়িক হয়তো মনে হয়.. এইতো ছিনিয়ে নিয়েছি, কেড়ে নিয়েছি। পড়ে দেখি শুধু গ্লানি জমা হয়েছে হিসেবের খাতায়। আসলে পাওয়া হয়নি কিছুই।
অথচ আমাদের ভেতর কিন্তু পরিপূর্ণ ছিল কানায় কানায়। আমরা নিজেরাই হয়তো পূর্ণ থাকতে পারতাম। কাঙাল হতে হতোনা। প্রকৃতি সব উপকরণ দিয়ে রেখেছিল আমাদের আনন্দে থাকার। প্রকৃতিগত ভাবেই মানুষ মিলতে চায়।বিচ্ছিন্ন থাকা মানুষের স্বভাব বিরুদ্ধ।
এই বয়সে এসে ভীষণ ক্লান্ত লাগে আজকাল। মনে হয় যদি প্রবৃত্তি থেকে মুক্ত হবার চেষ্টাটুকুও করতে পারতাম। যদি আমরা সবাই নিজেদের ভেতরের আমি কে খুব সামান্য পরিবর্তনও করতে পারতাম তাহলে হয়তো নিজেদের মধ্যেই আবিষ্কার করতাম পরিপূর্ণতা কে। বাকি, চলতে তো হবেই। জীবন, থামার অধিকার দেয়নি কাউকেই যে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



