আচমকা একটা পাখির ডাক শোনা গেল। কালো গায়ে হলুদ ছাপ পাখিটার নাম জানা নেই। সুধু বুঝি তার কণ্ঠ বড় মনোহর। সকালের ঘুম ভাঙা জানালায় সবুজের প্রান্ত থেকে উঠে আসা এই পাখির ডাক শুনতে কার না ভালো লাগে। হিম হিম আলস্য আমেজ সারা শরীর জুড়ে। কম্বলের উষ্ঞতাকে ঠেলে কুয়াদার ভেজা চাদর গায়ে জড়িয়ে হাটতে গেলে শুনতে পাওয়া যায় বাতাসে কিসের আগমন ধ্বনি। স্বাগত হে বর্ণালী পৃথিবী
আসুক আস্তে আস্তে, কোন তাড়া নেই। আসবে যাবে এটাই প্রকৃতি। গত বছরের এমন দিনে, আমি যখন এই ব্লগের ছোট শিশুটি মাত্র, কতজনকে দেখতাম !! এখন আর দেখিনা। কিংবা কালে ভদ্রে চোখে পড়ে। তাদেরকে খুব মিস করি। আনেকেই হয়তো করে। আবার নতুন অনেককেই দেখি যাদেরকে আগ দেখতাম না। নতুন হলেও শব্দ, সুর, ছন্দ, যুক্তিতে তাদেরকে উপেক্ষা করা দায়। (নতুন শব্দটা ব্যবহার করা আসলে বোকামী। কারণ ছস্মনামের আড়ালেই হয়তো লুকিয়ে আছেন শক্তিমান কথাশিল্পীরা।)
সবাইকে আমার ভাললাগা, ভালবাসা। যাদেরকে আর দেখিনা, বড় সাধ জাগে আবার যদি তাদের দেখতাম। হৃদয়স্পর্শী লেখা পড়ে মুগ্ধতার কলরব তুলতাম। আর শিখতাম.. কিভাবে লিখতে হয়। আমার যে লেখক হবার বড় শখ !!
এস এস সি পরীক্ষার পরে কে একজন খবর দিলো 'অমুক পত্রিকায় লেখা দিলে ছাপিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা আছে।' আমার একটি ছাপা হযেছে... আর যায় কোথায় বিপুল উদ্যমে ঝাপিয়ে পড়লাম। দুই দিন দুই রাত খাটাখাটি করে একটা ছড়া বানিয়ে ফেললাম। তারপর বন্ধুকে সাথে নিয়ে চুপিসারে সেই পত্রিকা অফিসে গিয়ে দারোয়ানের টেবিলে রেখে পালিয়ে এলাম। পরের সপ্তাহে.. ব্যাস, আমার লাফালাফি আর চিল্লাচিল্লিতে পাড়ার কেউ এটা জানতে ভুল করেনি যে আমাদের দেশে এক নতুন প্রতিভার আত্নপ্রকাশ ঘটেছে। পরে আরো একটা দিয়েছিলাম কিন্তু সে আর ছাপা হয়না। বন্ধু একদিন এসে খবর দিলো ছড়াটা বারান্দায় ময়লার মধ্যে পড়ে ছিলো সে দেখতে পেয়ে ঝেড়েমুছে আবার টেবিলে তুলে দিয়ে এসেছে। আজ যখনই লেখক হবার শখ জাগে তখনই আমি সেই পুরনো ঘটনা গুলো স্মরন করে নিজেকে সামলাই।
শখটা আরেকবার প্রবল হয়েছিলো যখন ব্লগের খবর পেয়েছিলাম। আমার খুশী তখন ধরেনা। এবার সম্পাদকদের দেখিয়ে দেবো সাহিত্য চর্চা কাকে বলে। প্রথম প্রথম মনে হচ্ছিলো একাই লিখে ভরিয়ে দিতে হবে। আর কাউকে চান্স দেয়া যাবেনা। সেদিনকার পাগলামী স্মরন হলে আজ মনে মনে হাসি। তখন কি আর বুঝতাম যে লিখতে নয় পড়তেই বেশি আনন্দ!!