somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিবসের বাণিজ্য এড়িয়ে 'মা আর কুকুর', অন্যের কবিতা, এই জন্য এত দীর্ঘ

১৫ ই জুন, ২০০৯ রাত ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি কত অল্প জানি আমার মায়ের শুরুর বিষয়ে। সে জন্মেছিল ১৯২০, রামসগেটে। তার পিতা ছিলেন গর্বিত গাড়ির অধিকারী পোস্টমাস্টার পার্শ্ববর্তী ওয়াই গ্রামের, যেখানে তার শৈশব আর বয়োসন্ধির আরম্ভ লন্ডনের উইপসক্রস হাসপাতালে নার্সের চাকরি শুরু করার আগে। যেমন বলছিলাম, আমি কত অল্প জানি।
সে আমাদের বলেছিল, যে হাসপাতালের ছুটির সন্ধ্যায়, সে পরত চোখালো জুতা, এটাই হল তার পায়ের বড় আঙুলগুলোর প্রতিবেশীর উপর স্থায়ীভাবে চড়াও হবার কারণ। আমার পিতার সাথে তার প্রথম দেখা হয় একটা ফরাসী ক্লাবে, লন্ডনের কোথাও, যুদ্ধ চলাকালীন কোন এক সময়ে। আমার পিতার ছিল ফরাসী জননী আর ছিল প্যারিসের অভিবাসী, যা ব্যাখ্যা দেয় এরকম প্রতিষ্ঠানে তার উপস্থিতি। আমার আশঙ্কা আমার মা সেখানে গিয়েছিল কারণ ফরাসীদের চমকপ্রদ চিত্রকল্প। তার পছন্দ ছিল আভিজাত্য আর বৈশিষ্ট্যের গন্ধযুক্ত বস্তু। শেষমেষ তার জুটল আমার পিতা।
আমার বাবার মাতা ছিলেন একজন ফরাসী নর্তকী, খুবই তরুণী বধূ ইংরেজ পিতার কন্যা, যে দ্রুতই পরিবার পরিত্যাগ করেছিল। দাদীমা ফিরে গেল মঞ্চে, আর আমি বুঝতে পারি যে আমার মা ক্ষুদ্ধ ছিল তার উপর, কারণ হয়তো দাদীমার দায়িত্বে অবহেলা যখন সে একা জীবিকার সন্ধানে ব্যস্ত; অথবা হয়তো সে ছিল আমার বাবার মনোযোগে প্রতিযোগী; অথবা কারণ হয়তো সে ছিল জঘন্য। মা, যা হোক, মেনে নিয়েছিল আকর্ষণীয় ফরাসী শোবিজ যোগসূত্র মরিস চেভিলেয়ার (মঞ্চে) আর ১৮ শতকের সুরকার জীন ফিলিপ রাঁমো (রক্তে) কে। আমার পিতামাতা বিবাহিত, এই নবদম্পতি থাকত ইজলিংটনের ভূ-গর্ভস্থ কক্ষে, যেখানে খুব শীঘ্রই তাদের কোলে আসল আমার ভাই, ক্ষুদে রেনে মার্সেল। আট বছর পর, যখন আমার জন্ম, সেই ফরাসী যোগাযোগ ফিকে হয়ে গেছে আর পরবর্তীতে আমার জন্য নাম বাছা হলো জন। ফ্ল্যাটটা ছিল থাকার জন্য খুবই ছোট আর বাসা বদল করা হলো লুটনে, যেখানে বাড়ি পাওয়া সোজা, আর, যেখানে আভিজাত্য নয়। আমার বাবা খুব একটা বড় বা খাম ভরা মাইনা বাড়ি আনত না আর আমার মা একবার রসিকতা করেছিল যে তার মানিব্যাগে টাকা বাদে সবই আছে। লুটনে গৃহস্থালী খরচ চালাতে হতো কড়ায়গন্ডায় আর আমার মা ভালোই করেছে। সে দোকানের তাকে মূল্য যাচাই করতো আর একটা থেকে আরেকটা কাউন্টারে ছুটত চুল পরিমান মাংশ, দুইটা সবজি আর একটা মিঠাই কমদামে কেনার জন্য।
একদা আমার মায়ের একটা ছবি ছিল লন্ডনের এক নার্স বান্ধবীর সাথে, সুসজ্জিত আর প্রস্তুত পৃথিবীর মোকাবেলায়। লুটনে, একবারও কখনো আমার বাবামা সন্ধ্যায় বাইরে বেড়াতে যায়নি একসাথে। ভ্রমণবিলাস বলতে ছিল ক্লাকটন অথবা বর্নমাউথে দিনের জন্য বেড়ানো। আর এখন আমার বোন আছে। দু'বছর ছোট আমার চেয়ে, আমার মা ডাকতো সোনামনি; আমার ভাই আর আমি না।
আরেকটু পরিশীলিত মর্যাদা ফিরে পেতে এক সম্মিলিত পদক্ষেপে, মা সানডে টাইমস্ রাখা শুরু করলো যা কার্যত অপঠিত থাকতো। আমরা আরো নিলাম একটা বীগল, শিকারী শ্রেণীর কুকুর। সে ছিল পঁচিশ গিনি, আমরা তাকে কিনলাম কিস্তিতে। কান এলো প্রথমে। প্রাণীটা ছিল ভয়াবহ বদ-মেজাজী আর সানডে টাইমস্ ছিঁড়ে ফিতাফিতা করে ফেলতো যখনই এটা ঘরে ঢুকতো। সে আমাদেরকেও খুব একটা পছন্দ করে নি, আর ওতপাতা বছরগুলোতে, ঠোট বাঁকানো, ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত।
আধুনিকায়নে আমি অংশগ্রহণ করি স্থানীয় বয়েজ গ্রামার স্কুলে ভর্তিযোগ্য হয়ে, সেখানে বাধ্যতামূলক ভায়োলিন শিক্ষা নিয়ে। আমার নৈশ ঘষাঘষি ছিল আমার মায়ের কানে সঙ্গীত।
আমাদের আধা-বিচ্ছিন্ন বাংলোর বাইরে ছিল ঘাস যা উল্টোদিকের পৌর বাড়িগুলোর বাচ্চাদের ফুটবল খেলার কাজে ব্যবহৃত হতো, আমার মায়ের আক্রমণ আর মাইগ্রেনের কারণ। একেকবার ঘন্টা সে জানালায় দাড়িয়ে থাকতো, তার সীমান অভিমুখী বলের অপেক্ষায়। একবার এক অতির্বতন পরিলক্ষিত হয়, আমার বাবা অত্যন্ত গতির সাথে প্রেরিত হলো ওদেরকে কিছু কথা শোনাতে, কিন্তু ছেলেপেলেরা তার কর্তৃত্ব স্বীকার করল না আর ছিল অশ্লীলরকম অগৌণ। এটা মুখোমুখি হল, যখন, বাইরের ফুটপাথের উপর, তারা আঁকল এই শব্দসমষ্টি বব হেগলি একজন যৌন বাতিকগ্রস্থ লোক। আমার কেন যেন মনে হল আমার মা অসম্মত। পুলিশ ডাকা হল, দোষীদের ধরা আর সতর্কিত করা হল, আর তারপর সক্রিয় বিরোধিতায় এক সংক্ষিপ্ত স্থবিরকাল এল, কিন্তু ফুটবলের মৌসুম ফিরে এল অনিবার্যভাবে। যখন পাশের বাড়ির লোকেরা তাদের সন্তানকে মাঠের খেলোয়াড়দের সাথে যোগ দেয়ার অনুমতি দেয়া শুরু করল আমার ধারণা আমার মা এটাকে দেখল সম্মানিত বাড়িওয়ালা বনাম অকিঞ্চন পৌর লোকের বিভেদ; অতিসরলীকরণের এই ধ্বস সহায়তা করে আমাদের শহর ছাড়তে ১৯৭০-এ বাবার অবসরপ্রাপ্তিতে।
আমি এটা লিখছি পোর্টোবেলো রোডে, ছাদে অবস্থিত এক ক্যাফেতে। লুটনে, আমার মা ভালোবাসতো টিভিতে পুরনো চলচ্চিত্র যা দেখাত লন্ডনের সড়ক, আর সে আগ্রহভরে আমার বাবাকে নির্দেশনা দিত পরিচিত স্থাপত্যের। লুটন ছিল বড় রকমের আশাভঙ্গ এই বড় নগরীর পর। যা হোক, সেখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ আনন্দউৎস ছিল এই বন্য সময়ের মাঝে। ফুটবল হয়ে গেছে আমার মায়ের সর্বনাশ। কিন্তু ফুটবলের ভেতরেই আসবে এক অবিশ্বাস্য পূর্ণতা। আমি শহরের ফুটবল দলে আগ্রহ নেয়া শুরু করলাম '৬৬ এ ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের পর। স্কুলের প্রতি ঘৃণাভরে, আমি দ্রুতই ফুটবলে মেতে উঠি ব্যস্ততার উৎস হিসাবে, আর আমার মা আমার সমর্থনকে সমর্থন দিত বাড়ন্ত ঐকান্তিকতায়। একসাথে টিভিতে আমরা দূরবর্তী খেলার ফলাফল দেখতাম আর লাফাতাম তিন আসনের সোফা থেকে যদি 'শহর' জয়ী ঘোষিত হয় কোন মোকাবেলায়।
পরবর্তীতে আমি উপস্থিত থাকব এইগুলোর অনেক খেলায়, আর এই ভ্রমণের মাধ্যমেই আমি পাব ইংল্যান্ডের উত্তরের স্বাদ, বিশেষত ব্র্যাডফোর্ড, যেখানে পরবর্তীতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান নেব। এই প্রমোদ বিহারের ভাড়া একত্র করা সন্ত্রস্ত করে আমার মায়ের তহবিলকে, কিন্তু সে সবসময়ই চালিয়ে নিত। সে সপ্তাহ অগ্রিম বিজ্ঞাপিত ভ্রমণ দেখত আর আমাকে করত এমন প্রশ্ন 'তুমি কি ব্যারো যেতে চাও, জন?' বিশাল আর সমস্ত দেবার এক ক্রিয়া, মাতৃত্বের সারমর্ম। স্বাগতিক খেলাগুলো আমি সর্বদা উপস্থিত ছিলাম আর যে কোন খেলাই আমি গেছি ঘরে ফেরায় তার পিছু নিয়েছে বিস্তারিত আর উৎসাহিত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ। একান্তে সে জানতে পারত খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত খুটিনাটি। এই একাত্মতা ছিল সবসময়ই দূরের থেকে জানা। সে জীবনেও কোন ফুটবল মাঠে প্রবেশ করেনি, কিন্তু অনেকগুলোতেই সে গেছে তার কল্পনায়, আর আমার বিশ্বাস যে সে আর আমি উল্লেখযোগ্যভাবে দায়ী আমাদের অংশগ্রহনের শিখর সময় ১৯৬৮ তে লুটনের ফোর্থ ডিভিশন চ্যাম্পিয়ানশিপ জেতায়। যে রাতে আমরা ট্রফি লাভ করি আমরা সারারাত নেচেছি বসার ঘরে। ঘরে যে কোন হুল্লোড়ে হান্টার নড়েচড়ে উঠত ডাকতে আর কামড়াতে, কিন্তু এই বার সে অনিচ্ছুক নিস্তব্ধতায় আবদ্ধ যখন মা আর আমি উন্মাদ উৎসবে মত্ত; আর সেই সানডে টাইমসের ফিতারা কাঁপছে তার ধূসরিত চুলে।
এভাবেই প্রভাবিত হলো নিন্দুক কপালের অলৌকিক ঘুরে দাড়ানো; যদিও আমি নিশ্চিত নই কতটা গভীর তার বিশ্বাস অলৌকিক ক্যাথলিকতায় যাতে সে ধর্মান্তরিত হয়েছিল আমার বাবাকে বিবাহ করে। সে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেয় নি। আমি জানি না এর গোড়ায় কোন ক্ষমার অযোগ্য পাপ ছিল কিনা অথবা সে এমনিতেই পছন্দ করত তার রুটির খামির বানাতে আর মোরব্বাসহ খেতে। যদিও তার বিশ্বাস ছিল অলৌকিকতায়। এক বর্বররকম ঠান্ডা শীতে সে বাইরে বাজার করছিল, তাপকের কেরোসিন তেলের জন্য মরিয়া। কিন্তু সব-খানেই মজুত শেষ। সে সারা শহর জুড়ে হেটেছে, আর পৌচ্ছাছিল বেপরোয়ায়, যখন সে পৌছাল, যেমন ইঙ্গিতপূর্ণভাবে ফেরার পর সে আমাদের বলেছিল, নিকটবর্তী হলো একজোড়া 'বৃদ্ধ স্বজন'। বৃদ্ধ স্বজন শব্দবন্ধ সে মায়া করে ব্যবহার করতো তারচেয়ে প্রাচীন সমলিঙ্গের কারো বেলায়। প্রশ্নবিদ্ধ যুগল, আমার মায়ের যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ দেখে, সাহায্য করতে চাইল। সে তার কেরোসিন সমস্যা ব্যাখ্যা করলো, আর তারা তাকে নির্দেনিত করলো এক গৃহপালিত পশুপাখির দোকানে, তাকে বলল সেখানে খুঁজতে। সন্দিগ্ধ, কিন্তু মরিয়া, সে উপদেশ অনুসরণ করলো। বেশ কাজে এল এটা। এই ধারণাতীত পণ্য আশ্চর্যভাবে মজুদ আর বেশ ভালো দরে আছে। দ্রুততায় ছুটল বৃদ্ধ স্বজনদের কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপনে, সে তাদেরকে পেল বিগত। অবশ্যই হতে পারে তারা তাদের পথেই হাটছিল, কিন্তু আমার মা বিশ্বাস করেছিল তারা অ-বাস্তবায়িত হয়ে গেছে, কোন প্রকারের ভূত অথবা দেবতা, যার প্রেষণ ছিল তার কুপির জ্বালানী সন্ধানে তাকে সাহায্য করা।
যখন আমরা লুটন পেছনে ফেলে গেলাম, আমার ভাই থেকে গেলেঃ বালক নয় আর, আর প্রতিষ্ঠিত তার বিমানবন্দরের চাকরিতে। আর সে সেখানে থেকে গেল - সেখানে, যেখানে সে বিমান খুঁজতো স্কুলের ছুটিতে। সে এখনো আছে, নিরিবিলি, আমাদের সবার মধ্যে সবচে বেশি লুটনায়িত।
ব্রিস্টলে, বাচ্চাদের ফুটবলের আগ্রাসন ছিল না, ছিল নতুন ভবন আর আমার মায়ের থাকার জন্য নতুন ইজারা। তার চুল গাঢ় রঙ কার উৎফুল্ল নাপিতের দ্বারা যে বাড়িতে এসেছিল, আর সে আমার বাবার সাথে সন্ধ্যায় বাইরে বেড়াতে যাওয়া শুরু করলো, চোখা জুতা পরে নয় অবশ্য। সে পেল মার্কস এন্ড স্পেনসারস্ -এর খাবার বিভাগ পরিদর্শনের চাকরি, আর একটা গাড়ি।
তার চালক পরীক্ষা পাস করতে লাগল কিছু কর্ম, যা হয়তো ট্যাবলয়েডের ৮নং পৃষ্ঠা বানায়। আমার হিসাবে সে প্রায় একশটা ক্লাশ নিয়েছে আর পরীক্ষা দিয়েছে হয়তো ১৫ বার। প্রতিদিনের নিয়মিত প্রথা ছিল সকালে তার প্রস্তুতি পরীক্ষার পরবর্তী প্রচেষ্টার, সাথে আমার পিতার দেয়া তার চাকার-পেছনের যোগ্যতার পুনর্নিশ্চয়তা। সে সবসময়ই মায়ের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিল। সে বলত মা সুন্দরী, সে বলত তার গানের গলা মধুর, সে বলত সে ছিল বুদ্ধিমতী, সে বলত তার রান্নার হাত ভাল, সে বলত সে ছিল চমৎকার চালক। যেমন বলছিলাম, শেষেরটা কিছু প্রমাণ দাবি করল। সে বাড়ি থেকে বের হতো পরীক্ষার জন্য, পিতার উৎসাহিত সমর্থনে উৎসাহিত হয়ে আর দরজা দিয়ে আবির্ভাব হতো ঘন্টা দুয়েক পর, আরেকবার তার আত্মবিশ্বাস ঝনঝনে তার সাম্প্রতিক ব্যর্থতায়। কিন্তু তারপর একদিন তার চাবি যেটার ঝনঝনানি আমরা শুনতে পাই তার ফিরতি পথে, অভিজ্ঞ চালকের সঙ্কেত আর প্রতীক। সে পরীক্ষায় পাস করল, আমার পিতার প্রশংসা অবশেষে প্রতিপাদিত হল।
আমার মায়ের অস্টিন মিনি গাড়িটা সোনালী রঙা আর আমাদের বলা হলো উচ্চতর পরীক্ষার জন্য তাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। বস্তুতপক্ষে সে কখনো অগ্রসর হয় নি, কিন্তু, যাই হোক, ভাবতে ভালো লাগত এমন কিছুও সম্ভব। সোমবার থেকে শুক্রবার, আমার বাবা ঘরের কাজ করত আর সে কাজ থেকে বাড়ি ফিরত, ঝনঝনে চাবি সাথে খুশি আর ফ্যাক্টরীর মেয়েমানুষের পরচর্চার কাহিনী। সে রসিকতা করত কাহিনীর মাঝখানে রজোনিবৃত্তির ভুল পক্ষে দাড়িয়েও গরম পায়জামা পরিহিত চরিত্রটা নিয়ে। টেলিভিশনে লন্ডনের দৃশ্য শুধু নৈম্যিত্তিক স্বীকৃতি পেত এখন। সানডে টাইমস্ বন্ধ করা হলো। সান নিউজপেপার এখন কেনা হতো হাউজি খেলার জন্য, সম্মান আর গৌরবের বদলে। লোক দেখানো আচরণ শেষ। সে নিজেকে উপভোগে মত্ত। ৫২ তে আমার মা ছিল তার পশ্চিমা উৎশৃঙ্খল দিনে।
১৯৭৩-এ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যাই। কিছু পরেই আমার বোন তার স্বামীর সাথে নতুন ঘর বাধতে গেল। মা আর বাবা ইট আর চুনসুরকি বেঁচে দিল আর কিনল একটা ভ্রাম্যমান বাসা কাছের নির্ধারিত আবাসিক স্থানে। তারা একদফায় মূল্য পরিশোধ করল। খরচ হলো ৩০ পাউন্ড। ছোট বাসায় ছোট কুকুর স্বাগত হলো। ইয়র্কি। ইয়র্কি, অবিরত তীক্ষ্ণস্বর ইয়র্কশায়ার টেরিয়ার, যে ধীরপায়ে আমার মায়ের কোলে লাফ দেবে আর বসে আনন্দে হাঁপাবে, আরেকবার তার অনুশীলনের সমাপ্তি। খবরের কাগজ আর মাংস থাকল অভগ্ন, শিকারী সব আভাস চলে গেছে।
ভ্রাম্যমান বাসায় আমার মায়ের এক মজার ঘটনা আমার মনে পড়ে, যা আমার মতে তার ব্যক্তিত্বের উল্লেখযোগ্য নির্দেশ। আমি কিছু চিত্র করছিলাম ছন্দময় ইঁদুরের, যাদের আমি একসাথে ডাকি 'ওস্তাদ'। একটু মজা করে, আমি তাকে অংশ নিতে বলি আর সে আঁকল তিনটা ক্ষুদে অবয়ব বিভিন্ন যন্ত্র সহকারে। 'এ'গুলো বেশ, মা,' আমি ঘোষণা করলাম, জীবনে প্রথমবারের মত তাঁর অঙ্কন দেখে সত্যি সত্যি খুশি আর প্রাধান্য বোধ করে। সে তার মাথা ঝাঁকাল, ছবিগুলো আবার নিল, কিছু লেখা সংযোজন করল আর ফেরত দিল, পরিশিষ্টে এই শিরোনামসহঃ অন্ধ শিল্পীর আঁকা তিনটা অন্ধ মূষিক।
যখন আমার বোনের প্রথম সন্তান হলো, মা তাকে শিশুপালনের নাড়িনক্ষত্র দেখিয়েছে; চিরবিদায় নিল, অল্প পরেই, ৬৫ বছর বয়সে, শেষ মাতৃত্ব পালন করে, আর শেষ জীবনে ফুটে উঠে। এটা ছিল আমাদেরকে ছাড়ার সঠিক সময়। সে কখনোই হতে চাইত না 'বৃদ্ধ স্বজন'।

মূল: জন হেগলি
অনুবাদ : তানভীর রাতুল
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৩:৪২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×