somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিতর্ক

১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি আর আমার বন্ধু রিফাত মিলে আমরা নিকুঞ্জ এর একটা বাসায় থাকি ৷ বাড়ির নাম শহর আলী ৷ মালিক ভদ্রলোক মারা গেছেন ৷ আমরা ৫ তলায় থাকি ৷ আমি সারাদিন আমার ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকি ৷ কোনও কাজ নাই ৷ বেকার মানুষ, বেকার হিসাবে যাতে পরিচয় না দিতে হয় সেই জন্যে আমি MBA করছি৷ আমার বন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ MBA করছে ৷ তবে সে বেকার না ৷ গতবারের BCS এর প্রিলিমিনারিতে টিকেছিল ৷ Written এ বাদ পড়ে যায় ৷ এবার আবার দিচ্ছে ৷ সে মহা ব্যস্ত ৷ এর মাঝে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন ব্যাংক এ Viva এর ডাক পেয়েছে ৷ আর আমি ভার্সিটি আসি যাই, দিন কাটাই আমাকে কেউ ভাইভা তে ডাকে না ৷ কয়েকদিন আগে একটা ব্যাংক এ written দিয়েছিলাম, হয় নাই ৷
এখন সকাল ৮ টা আমি এত ভোরে কেন উঠে গেলাম বুঝতে পারছি না ৷ আমার বন্ধুর কোনও সাড়া শব্দ পাচ্ছি না ৷ ও মনে হয় উঠে নাই ৷ আমার এক কাপ কড়া কফি খেলে ভাল হতো ৷ কিন্তু কফি খেতে হলে নিজের বানিয়ে খাওয়া লাগবে ৷ আমার অবশ্য নিজের বানিয়ে খাওয়ার তেমন কোনও ইচ্ছে নাই ৷ রিফাত খেলে ওকে বললে ও বানিয়ে দেয় ৷ যেহেতু ওর কোনও সাড়া শব্দ নাই তাই আপাতত কফি খাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছি না ৷ আমি আবার শুয়ে পড়লাম ৷ আরেকটু ঘুমানো যাক ৷ প্রায় তিন ঘণ্টা পড় যখন আমার আবার ঘুম ভাঙ্গল তখন ১১ টার বেশি বাজে ৷ যদিও ১১ টা কে সকাল ধরা হয় আমার এতে যথেষ্ট আপত্তি আছে ৷ আরে ১১ টা তো ভোর ৷ এত ভোরে উঠে আমি সারাদিন কি করব বুঝতে পারছি না ৷ উঠে বসে কান পেতে কোনও সাড়া শব্দ আছে কিনা বোঝার চেষ্টা করে আমি হতাশ হলাম ৷ আজ বোধয় কপালে কফি নাই ৷
আমি যখন আবার ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখন আমার ফোন টা বেজে উঠল ৷ ফোনের দিকে তাকিয়ে যখন দেখলাম unknown নাম্বার তখন ফোন ধরার কোনও ইচ্ছা পোষণ করলাম না ৷ যে ব্যাটা ফোন দিয়েছে সে ভীষণ ধৈর্যশীল মানুষ ৷ এক টানা ৮ বার ফোন দিচ্ছে ৷ একটা unanswered call এ ৪৫ সেকেন্ড লাগে ৷ তার মানে সে ৬ মিনিট ধরে চেষ্টা করছে ৷ আমার আনন্দ আরও বহু গুনে বেড়ে গেল ৷ দে দে ইচ্ছা মত ফোন দে ৷ অনিচ্ছা সত্তেও আমি উঠলাম ৷ দাঁত ব্রাশ করতে করতে রুম থেকে বের হলাম ৷ কোথায় যেন পড়েছিলাম হেটে হেটে দাঁত ব্রাশ করলে গুনাহ্ হয় ৷ যদিও আমি নামাজ কালাম পড়ি না পড়তে ইচ্ছা ও হয় না কিন্তু হেটে হেটে দাঁত ব্রাশ করতে মনের ভেতর খচ খচ করছে ৷ ধর্মীয় অনুভূতি অদ্ভুত ! ধর্মের ধ নাই হেটে হেটে ব্রাশ করা নিয়ে আমি চিন্তিত ৷ চিন্তা আরেকটু সম্প্রসারিত হল যখন দেখলাম আমার বন্ধুকে তার রুমে না পেয়ে ৷ তার বাথরুমে ও নাই কিচেন এ ও নাই ৷ সাধারণত রিফাত সকালে বের হয় না ৷ কিচেন থেকে বের হতে হতে ফ্রিজ খুলে দেখলাম ফ্রিজে যথেষ্ট পরিমাণ বাজার সদাই আছে , সুতরাং বাজারে যাওয়ার ও কথা না ৷
হাত মুখ ধুয়ে আমি একটা লিস্ট করা শুরু করলাম কোথায় কোথায় যেতে পারে ৷ আমার লিস্ট টা এরকম
১৷ বাজার এ (যদিও বাজার আছে, তবু যেতে পারে)
২৷ ভার্সিটিতে (যদিও MBA এর ক্লাস রাতে, যেতে পারে)
৩৷ কোথাও চাকর হওয়ার Exam আছে (যদিও আমার দোয়া না নিয়ে সে যায় না, এবং চোদ্দ গুষ্টির, ঘুমিয়ে ছিলাম বলে হয়তো জানি না)
৪৷ বেড়াতে গেছে (বেড়াতে গেছে মানে dating এ গেছে, যদিও সে মেয়েদের থেকে সতর্ক দূরত্ব রাখে, এবং সে ছেলে অতি ভদ্র বাবা মা এর পছন্দেই বিয়ে করবে)
আমার ফোন টা আবার বাজা শুরু করায় আমার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটল ৷ আমি মনে মনে ভাবতে থাকলাম এটা নিশ্চয়ই রিফাত এর ফোন ৷ ও নিশ্চয়ই কোনও বিপদে পড়েছে ৷ বাইরের কোনও নাম্বার থেকে ফোন দিচ্ছে ৷ সাহায্য দরকার ৷ মনে মনে হাসলাম ৷ খুব ভাল হয়েছে বুঝ ঠেলা ৷ দিতে থাক ফোন আমি ধরছি না ৷ আমি নিচে নামলাম ৷ breakfast এর সন্ধান করতে হবে ৷ breakfast নাকি দিনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার ৷ তবে এখন ১২ টা বাজে ৷ ইহা breakfast নাকি lunch তা নিয়ে একটি ভাল বিতর্ক হতে পারে ৷ বিতর্কের বিষয় হবে এমন ৷ ঘুম থেকে উঠে বেলা ১২ ঘটিকায় কিছু খেলে সেটি আর break fast বলে গণ্য করা যায় না ৷ এই যুক্তির পক্ষে থাকবে এক দল বিপক্ষে থাকবে এক দল ৷ কোন দলের কে নিজে কি ভাবে তার কিন্তু জানার দরকার নাই ৷ সঞ্চালক তার মনের ইচ্ছে মত আপনাকে ধরিয়ে দিবে আপনি পক্ষে না বিপক্ষে ৷ আপনি এর পর আপনার নিজের কি মনে হয় তা ভাবা বাদ দিয়ে ধুমায়া চাপা বাজি করতে থাকবেন ৷ যে বেশি চাপাবাজি করতে পারবে সেই সেরা বিতার্কিক ৷ তালি !!!

চলবে...

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:২৩
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×