somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate )
জীবন একটা কৌতূহলী যাত্রার নাম- স্রষ্টা, সৃষ্টি, উদ্দেশ্য এবং এই সব কিছুর সত্যতা কে ঘিরে... আর আমি সেই পথের একজন সাধারণ যাত্রী। নিজের জায়গা থেকে সব স্থান, কাল, পাত্রে আপন অস্তিত্বকে কল্পনা করতে ভালোবাসি আর সেই অনুযায়ী প্রত্যেকটা কাজ করে যাই...

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদুর-------------------!

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদুর-
উক্ত উক্তিটি আমাদের সকলের ই কম বেশি পরিচিত এবং অনেকেই হয়তো একমত, কেউ কেউ দ্বিমত ও পোষণ করতে পারেন। কিন্তু, আমরা কি সত্যি কখনো ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তা বা বিশ্লেষণ করে দেখেছি?

(ইহা একটি ৩ পর্বের চেইন পোস্ট, আজ প্রথম অংশ)

১ম অংশ-

বিশ্বাস/বিশ্বাসী ব্যাপারগুলো আসলে ঠিক কি? ইহা কি না জেনে বুঝে শুধুই অন্ধবিশ্বাস, নাকি এর অন্যরকম কোন সংজ্ঞা আছে, ব্যাখ্যা আছে, প্রমাণ আছে, যা আমরা সবসময় এড়িয়ে চলি!

উক্ত কথাটি দুটি অংশে বিভক্ত- প্রথমে আসা যাক, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু- থেকে বিশ্বাস/বিশ্বাসী প্রসঙ্গে...

বিশ্বাস ব্যাপারটা যেমন মানুষের অন্তরের সাথে জড়িত, ঠিক তেমনি বিশ্বাস এর সত্যতা যাচাই এর জন্য ব্যাপারটি মস্তিষ্কের সুপ্রয়োগ এবং সেই অনুযায়ী কাজ সম্পাদনের সাথে সমানভাবেই জড়িত। আপনি বিশ্বাস কে সংজ্ঞায়িত করতে গেলে, উপরোক্ত সবগুলো বিষয় উপস্থিত থাকা অবশ্যই জরুরী, কোন একটি অংশ বাদ পড়ে গেলেই আপনি বিশ্বাসী হিসেবে গণ্য হতে পারেন না। আপনি হয় কোন কিছুতে সম্পূর্ণ বিশ্বাসী, অথবা সন্দিহান যা আপনার বিশ্বাসের জায়গাটা কতটা দুর্বল তা তুলে ধরে, বা একদম ই অবিশ্বাসী!
এবার কিছু উদাহরণে আসা যাক- যখন আপনি আপনার মনের/প্রাণের মানুষকে ভালোবাসেন তখন তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করেন বলেই ভালোবাসেন। এখন কেউ যদি হঠাৎ করে এসে আপনাকে বলে, আরে তোর ইয়ে কে তো অন্য আরেকজনের সাথে ফষ্টি নষ্টি করতে দেখলাম! তখন, আপনি কিন্তু দুইরকম চিন্তা করতে পারেন। এক- নাহ, ওর দ্বারা এমন কাজ কখনোই সম্ভব না! এই লোক কুৎসা রটাচ্ছে, মিথ্যে বলছে, আপনি হেসেই হয়তো উড়িয়ে দেবেন! কারণ, তার প্রতি আপনার প্রবল বিশ্বাস আছে! অন্য দিকে, সেই মানুষটি যদি আপনার পরিপূর্ণ বিশ্বাস অর্জনে ব্যার্থ হয়, তবে আপনি নানারকম উপায়ে সেই সন্দেহের সত্যতা যাচাই করতে অবশ্যই যাবেন, আর যেই সন্দেহ আপনার মনে ছিল তাই অবশেষে ফলাফল স্বরুপ পূর্ণতা লাভ করতে দেখবেন, অথবা ভুল ও প্রমাণিত হতে পারে!

এখন আসি আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় বিশ্বাসের জায়গাতে। ধর্ম- আপনি যখন বলছেন, আপনি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী মানুষ, ঠিক তখন ই সবার প্রথমে যেই দায়িত্ব আপনার বিশ্বাস কে সংজ্ঞায়িত করবে, তা হচ্ছে আপনার সেই বিশ্বাসের সত্যতা যাচাই, ক্রমান্বয়ে, তা গ্রহণ করার ক্ষমতা, এর সাথে সম্পর্কিত সকল বিষয় কে সম্পূর্ণ রুপে বিশ্বাস করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা। আপনি কি আপনার জায়গা থেকে যাচাই করার চেষ্টা করেছেন, আপনি যেই সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী হিসেবে নিজেকে দাবি করছেন, তার সত্যতা, তার প্রেরিত সকল বিষয়সমূহের সত্যতা যাচাই এর ন্যুনতম চেষ্টা করেছেন? যখন আপনি এই ধাপ পেড়িয়ে এসে সত্যতা যাচাই পর্ব শেষ করবেন, শুধুমাত্র তখন আপনি পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে পারবেন। যখন একজন মুসলিম হিসেবে আপনি ইসলাম কে সত্য হিসেবে বিশ্বাস করছেন, তখন আপনার অবশ্যই সব বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর সত্যতা কে গ্রহণ করতে হবে। এই ধাপ যদি পার করতে পারেন তবে পরবর্তী ধাপ- কার্জ সম্পাদনে কেনো যেতে হবে সেই প্রসঙ্গে যাওয়া যাক।

একটা উদাহরণ হিসেবে- আপনি যখন জানছেন, ফরজ কাজগুলো না করলে অবশ্যই পরকালে+ইহকালে শাস্তি প্রাপ্য এবং আপনার প্রতিটা কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করতেই হবে, তখন আপনার সিদ্ধান্ত কি হওয়া উচিত? ঐ যে আপনি বললেন, আপনি বিশ্বাসী। তাহলে অবশ্যই, বিশ্বাসের সত্যতা স্বরুপ আপনাকে ফরজ কাজ গুলো হলেও অবশ্যই পালন করতেই হবে। আর যদি এই ক্ষেত্রে আপনি অপারগতা বা কোনরকম হেলফেলা প্রদর্শন করেন, তাহলে আপনার সেই বিশ্বাসের জায়গাটা একদম ই ভঙ্গুর পর্যায়ের। আপনি, সত্য নিয়ে সন্দিহান, আপনার কর্মফল নিয়ে সন্দিহান, এমনকি আপনি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব বিশ্বাসেও সন্দিহান। কারণ, তার দেয়া বাণীগুলোকে আপনি সত্য জেনেও মানছেন না, অথবা তা যে আসলেই সত্য সেই যাচাই বাছাইটুকু ও করেননি। তাহলে আপনাকে সেই দুর্বল বিশ্বাস কি করে ফরজ কাজগুলো করতে উৎসাহিত করবে? এখন আপনি জানেন, সালাত আদায় না করলে এই শাস্তি হবে, যাকাত আদায় না করলে ঐ শাস্তি হবে, সুদ খেলে শাস্তি হবে এইরকম যত নিয়মকানুন দেয়া হয়েছে সবকিছু হয় আপনার কাছে সত্য, অথবা আংশিক সত্য, আংশিক মিথ্যা যা আপনার কর্ম অনুযায়ী প্রতিপন্ন হবে। তাই এই কথা বলার কোন সুযোগ নেই যে, আমি তো মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, নামাজ/রোজা/যাকাত থেকে শুরু করে সব দায়িত্ব গুলো পালন না করলে কি হইসে! কিন্তু, আপনি বুঝতেই পারছেন, যেই মুহূর্তে আপনি নিজেকে বিশ্বাসী বলছেন, তখন থেকেই তার সত্যতা যাচাই, গ্রহণ করা, সম্পূর্ণরূপে তা বিশ্বাস করা, এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা অবশ্যই বাধ্যতামূলক। যদি আপনি প্রথম অংশ বলেই বাকিগুলো এড়িয়ে যান, তবে আপনি চেইন ব্রেক করছেন, যা আপনার বিশ্বাস কে বৈধতা দান করছেনা। আপনার কাছে ব্যাপারটা এমন যেনো- হইলেও হইতে পারে, নাও হইতে পারে। তার মানে আপনি সৃষ্টিকর্তার নিয়ম কানুনের যথার্থতা সম্পর্কে সন্দিহান, তার দেয়া প্রতিশ্রুতি/ওয়াদার ব্যাপারে সন্দিহান, তার অস্তিত্ব সম্পর্কেও তাই। কেননা, যদি আপনি তার অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন, তবে তার দেয়া সকল বিষয় ও আপনার কাছে সত্য, এবং সেই অনুযায়ী কাজ করাও একইসাথে বিশ্বাসের যথার্থতা যাচাইয়ের সাথে সমানভাবে জড়িত। অনেকটা চেইন অফ কমান্ডমেন্ট এর মতই ব্যাপারটা। ইউ জাস্ট ক্যান্ট ব্রেক দা চেইন অফ বিলিফ।
তাই দিন শেষে, সঠিক ভাবে কাজ না করে, সত্যতা যাচাই না করে, শুধু মুখে মুখে বলেই গেলেন আমি বিশ্বাসী, আমি বিশ্বাসী, তাহলে সেই বিশ্বাস আপনাকে কোথায় নিয়ে যাবে, সেই চিন্তাভাবনার দায়িত্ব আপনার উপর ই বর্তায়।

( পরবর্তী দুটি পোস্টে আলোচনা করবো- বিশ্বাসে বস্তু মিললো কিনা, এবং তর্কে তা কতদূর পর্যন্ত গড়াল! :) )

- ধন্যবাদ

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×