somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহফুজ
আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

নতুন বউয়ের কাণ্ড

১৮ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বউ তো গতকাল মারাত্মক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলছে!! অহ আচ্ছা দুঃখিত,
যদিও সবাইকে বলতে পারিনি, আসলে আমার বিয়েটা হয়ে গেছে মাস দু'এক হবে। বউ মাশাআল্লাহ সুন্দর আছে। আমরা কেউই অতিরক্ত ছবি টবি আপ্লোড দিয়ে সেকেন্ডে সেকেন্ডে ঘরের খবর পররে জানাইতে পছন্দ করিনা তাই ছবি দেয়া হয়নি ফেইসবুকে।

হ্যাঁ প্রেম করেই বিয়ে করেছি৷ একসময় তো ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে বিয়েসাদি না করার সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত করেই ফেলেছিলাম তবে আবার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম বউয়ের। অনেক নাকানিচুবানি খেয়েছি, ঘুরঘুর করেছি পেছনে পেছনে। অবশেষে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়েই নাকি সেও আমাকে পছন্দ করে জানিনা রাজি হয়ে গেলো বিয়েতে। তাই মোটেই দেরী না করে বিয়েটা করে ফেললাম।

আমার আসলে অর্ডিনারি কোনো বউয়ের ইচ্ছা কোনোকালেই ছিলনা। বউ জিনিসটা আমার কাছে বিরাট একটা এচিভমেন্টের মতো ছিলো। বিয়ে করলাম, খাইলাম, দাইলাম, এক সাথে শুইলাম, বাচ্চা হইলো, বংশ রক্ষা হইলো, ব্যাস বিয়ার উপাখ্যান শেষ৷ এমন অর্ডিনারি ম্যারিড লাইফ আমার লক্ষ্য ছিলনা আরকি।

তো যাই হোক বউ কী ঘটাইছে বলি। এই ক'দিনে রান্নাবান্না সে এখনো করেনি বললেই চলে। আসলে আমার আম্মার এখনো রান্নাঘরের দায়িত্ব ছাড়ার খেয়াল নাই আর আমার বউরও এতো টান নেই রান্নার। টুকটাক হেল্প করে আর কি আম্মাকে।

গতকাল ফুটানি দেখাতে গিয়ে আম্মাকে বললাম, আম্মা ওরে কী রান্নাবান্না করতে দিবানা? একটু রান্না-বান্না করুক, দেখি খেয়ে কেমন লাগে?

- কেন আমার রান্নায় কোনো সমস্যা? তাছাড়া তুই না বললি ও তেমন রান্না-বান্না করেনা না-কি পারে না।
-
- অহ তা তো বলেছিলাম। তাই বলে একেবারেই করবে না না-কি?

- না করছি না-কি? করবে তো। আমি কী সারাজীবন রান্না করবো। যতোদিন সুস্থ আছি, পারছি করে যাই। আচ্ছা এক কাজ কর তোর বউকে বল আমাকে একটু হেল্প করতে। রান্নাঘরে পাঠা গিয়ে ওরে।

এই কথোপকথনের আধাঘন্টা পরে হঠাৎ দেখি আম্মা আমাকে ডাকছেন। আমার বউ তখন আমার পাশেই ছিলো। আম্মারে কিছু হেল্পটেল্প না-কি করে এসেছে। তো আমি আম্মার ডাক শুনে গিয়ে দেখি আম্মা আব্বা দুজনেই কী নিয়ে হাসছেন খুব। সাধারণত আমাদের বাসায় এমন দৃশ্য বিরল। আমরা তিনটা মানুষই জীবনভর অন্তর্মুখী। হাসি উল্লাস রেয়ার সিন। চুলার সামনে দাঁড়িয়ে দু'জন এতো হাসছে কেন জিজ্ঞেস করতেই আম্মা চুলায় বসানো পাতিল দেখালেন। উকি দিয়ে দেখলাম আলু সিদ্ধ হচ্ছে। আমিতো এখানে হাসির কিছু দেখলাম না। আমি বোকার মত আবার আম্মাকে জিজ্ঞেস করলাম এখানে তো আলু সিদ্ধ হচ্ছে তাহলে হাসছো কেন? আব্বা ততক্ষনে চলে গেছেন আর আম্মা অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে আমাকে বললেন তোর বউকে বলেছিলাম ফ্রিজ থেকে আলু বের করে অর্ধেক ছিলে সেদ্ধ বসানোর জন্য। সে যা আলু ছিলো সব অর্ধেক করে ছিলে সেদ্ধ বসিয়ে দিয়েছে। এই কথা শুনে আমি আবার ভালো করে পাতিলের আলুর দিকে তাকালাম এবং খেয়াল করলাম সত্যি সত্যি প্রতিটা আলু প্রায় অর্ধেক ছিলানো। হাসির রহস্য হচ্ছে বউকে বলা হয়েছিল পরিমাণে আলুর অর্ধেক ছিলার জন্য আর সে বুঝেছে আলুর অর্ধেক ছিলতে হবে। আপনাদের বিশ্বাস না হলে কমেন্টে সেই ছিলা আলুর ছবি দেখতে পারেন।

আমিও অনেকক্ষণ হাসলাম তারপর রুমে গিয়ে বউকে জিজ্ঞেস করলাম -আচ্ছা আম্মা তোমাকে কি করতে বলেছিলো? বউ মোবাইলে কিসের জানি ছবি দেখতে দেখতে বললো -অর্ধেক আলু ছিলে সেদ্ধ বসাতে বলেছিলেন।
- ও আচ্ছা তা অর্ধেক ছিলেছো?
-হ্যাঁ একদম অর্ধেক করে ছিলে সিদ্ধ বসিয়েছি।
-বেশ করেছো সোনা। তোমার কষ্ট হয়েছে?
-আরে না সামান্য আলু ছিলতে কষ্টের কী?
আমি হাসি চেপে আদর করে বউয়ের গাল টিপে দিলাম আর মনে মনে বললাম আমার তো এমন একটা বউয়েরই শখ ছিলো। তার বোকামির জন্য হোক আর অদক্ষতার জন্যই হোক একটু হাসির উপলক্ষ তো তৈরী হয়েছে।

(সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ)

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:২১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৪–৫ আগস্ট : রাষ্ট্রক্ষমতার মুখোশ খুলে দেওয়া রাত ও দিন

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০১

৪–৫ আগস্ট : রাষ্ট্রক্ষমতার মুখোশ খুলে দেওয়া রাত ও দিন

৪ আগস্ট রাত — আশ্বাসের আড়ালে ছদ্ম-অভ্যুত্থানের নীরব নকশা
৪ আগস্ট সন্ধ্যায় কোটা-আন্দোলনের বিশৃঙ্খলাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যখন রাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা,... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে এমপি হওয়ার মতো ১ জন মানুষও নেই

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪



দলগুলোতে মানুষই নেই, আছে হনুমান।

আমেরিকায় যদি ট্রাম্প ক্ষমতায় না'আসতো, বাংলাদেশে হ্যাঁ/না ভোট দিয়ে ইউনুসকে দেশের প্রেসিডেন্ট করে, দেশ চালাতো প্রাক্তন মিলিটারী অফিসারেরা ও বর্তমান জামাতী অফিসারা মিলে। দুতাবাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সুন্দর একটা ব্লগ পরিবেশ গড়ে তুলি

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯


ব্লগ লেখার আগে আমাদের জানা উচিত আসলে ব্লগ কি ?
ব্লগ মানে তথ্য সম্পূরণ ও গন সংযোগ সোসাল নেটওরাকিং প্লাটফরম । এখানে বিভিন্ন মর্তাদেশের,বিভিন্ন শ্রেণীর
পেশার বিভিন্ন ধরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মজনু নামাজ পড়ার পর মোনাজাত ধরল তো ধরলই, আর ছাড়তে চাইল না | পাক আর্মির বর্বরতা!!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭



১৯৭১ সালে পাকিস্তানী আর্মি পুরো বাঙালী জাতির উপর যে নৃশংস হত্যাংজ্ঞ, বর্বরতা চালিয়েছে যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। সত্যি বলতে ১৯৭১ সালে বাঙালী জাতির উপর পাকিস্তানী আর্মি কর্তৃক... ...বাকিটুকু পড়ুন

সব দোষ শেখ হাসিনার !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৬


অনেকদিন পর zahid takes এর ডা. জাহেদুর রহমানের এনালাইসিস ভিডিও দেখলাম। জুলাই আন্দোলনের পূর্বে বিশেষত যখন র‍্যাব স্যাংশন খায় তখন থেকেই উনার ভিডিও দেখা আরম্ভ করি। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×