somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উমরাহ টিপসঃঃ ৪র্থ পর্ব- Perform properly /সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করুন

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

আমরা ছোট বয়সে নামাজ পড়া শিখি, রোজা রাখা শিখি। উমরাহতে যাওয়ার আগে উমরাহ করা কি শিখে নিবেন নাকি এজেন্সি থেকে মোয়াল্লেম দিবে সেই ভরসায় বসে থাকবেন, এটা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছা। মোয়াল্লেম বা গাইডের মাধ্যমে উমরাহ করাতে কোনো ভুল নেই বরং হেরেমে গিয়ে দেখবেন মালয়েশিয়ান বা ইন্দোনেশিয়ান ১৫-২০ জনের গ্রুপ নিয়ে একই রঙের কাপড়ে বা ব্যাজ লাগিয়ে হাজিসাহেবরা উমরাহ করছেন।

ভুল-সঠিকের দ্বন্দ নেই, বিষয়টা তৃপ্তির! ইবাদাতে তৃপ্তি অনেক বড় বিষয়! একটা বিষয় আপনি জানেন, আপনি আপনার মতো করে আদায় করছেন, তার সাথে বই দেখে দেখে বা আরেকজনের কথামতো কাজ সম্পন্ন করার মধ্যে একটু তো পার্থক্য আছে।

দলবেঁধে উমরাহ পালন করার বিষয়টি আমার ভালো লাগেনি। একটা পিছুটান থাকে। গ্রুপের অমুক কোনদিকে গেল, তমুক কোন দিকে গেল। ঝামেলা!

আরে, আপনি আল্লাহর মেহমান, দাড়িয়ে আছেন তার পবিত্রভূমিতে, কা'বার সামনে! হারিয়ে যান না স্রষ্টার প্রেমে, ক্ষমা চেয়ে কেঁদে কেটে একাকার হওয়া মানুষের মিছিলে! সারাজীবন তো সংসার, পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবকে সময় দিলেন। এবার একটু ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করুন। নিজেকে স্রষ্টার দরবারে মেলে দিন। কখনো তার প্রশংসা করুন, কখনো রাসুলুল্লাহ সাঃ এর শানে দরুদ পড়ুন, কখনো তার দান করা হাজারো নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করুন, কখনো বা এতো প্রাপ্তির পরও নফরমানি করার জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করুন। দোয়া করুন, নিজের মতো করে দোয়া করুন। মাথায় হাজার কিছুর পেরেশানি থাকলে দোয়া করা যায় না। তাই আমার পরামর্শ, গ্রুপের সবাই আলাদা হয়ে যান। ঘাবড়ে গেলেন! ভাবছেন এটাও কি সম্ভব নাকি! আমি প্রশ্ন করি কেন সম্ভব না!? অবশ্যই সম্ভব।

ঐ যে লিখেছিলাম গেট নাম্বার মনে রাখার কথা! মাতাফে নামার আগে, গ্রুপ থেকে সবাই বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে, সবাইকে বলে দিন উমরাহ শেষে এতো নাম্বার গেইটে সবাই অপেক্ষা করবে। ব্যস! ঝামেলা শেষ! আর কোনো পিছুটান নেই! নিজের মতো করে ইবাদাত করুন। কা'বার আঙিনা, মাকামে ইবরাহীম, কা'বার বিভিন্ন পাশের দেয়াল, হাতিম, কা'বার গেট, হাজরে আসওয়াদ- প্রত্যেকটি পয়েন্ট নিজে নিজে আবিষ্কার করুন। ক্ষমা চান, আল্লাহর কাছে বেশি করে ক্ষমা চান। অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত, তিনকালের গুনাহমুক্তির জন্য কেঁদে বুক ভাসান।

মানুষ অনুকরণ প্রিয়! অন্যের অনুকরণ করার আগে চিন্তা করুন, কাজটা ঠিক তো!? আবার নিজে কিছু করার আগে সতর্ক হোন, আবেগের আতিশয্যে যেন শিরক করে না বসেন। ভয় পাবেন না। আপনার যদি মাজারভক্তি না থাকে, তাহলে শিরক আসার কথা না।

ইহরাম অবস্থায় সেলফি নেয়া বা হেরেমে ছবি যারা তুলবেন বলে প্ল্যান করে আছেন, আমার লেখা তাদের আর পড়ার দরকার নেই। সত্যিই দরকার নেই! আমার এই লেখা ইবাদাতে উপকার আসার জন্য লেখা। যারা পড়বেন, উপকার পেলে নিজের অজান্তেই আমার জন্য দোয়া করবেন, সেই উদ্দেশ্যে লেখা। ঢং চং করতে গেলে, আমার লেখা কষ্ট করে পড়ার দরকার নেই।

যাক! উমরাহ-র কথায় আসি। প্রথম কাজ, তাওয়াফ সম্পন্ন হলে ২ রাকা'ত ওয়াজিবুত তাওয়াফ নামাজ পড়তে হবে। নামাজ পড়ার আগে সময় খেয়াল করুন। নামাজের নিষিদ্ধ সময়ে নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকুন।

নিষিদ্ধ সময় পার হওয়ার পর নামাজ আদায় করে বাকী কাজ সম্পন্ন করুন। আবার লিখছি, হেরেমে কেউ হারায় না। পথ ভুলে যায়। পথ খুজে পেতে খাদিমদের সাহায্য নিন।

আমার লেখা মতো, মোয়াল্লেম বা গাইড ছাড়া উমরাহ করতে গিয়ে কেউ যদি বিপদে পড়েন। মানে, পরবর্তী কাজ ভুলে যান বা দোয়া ভুলে যান, ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই! একটু স্থিরভাবে আশেপাশে পর্যবেক্ষণ করুন। সুবিধামতো পদক্ষেপ নিন যেমন- উর্দুতে/ইংরেজিতে পাশের কাউকে জিজ্ঞেস করুন বা বড় উমরাহ-র গ্রুপগুলোর সাথে মিশে যান। প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আবার নিজের মতো নিজের ইবাদাত করুন। মনে রাখবেন, বুদ্ধি রাখবেন দুইনাম্বার কিন্তু কাজ করবেন একনাম্বার!

জাজাকাল্লাহ খাইরান

চলবে...ইনশাআল্লাহ
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×