somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিজিটাল নেতার, ডিজিটাল নিতী....

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১২ সালের কোন এক দিন....
রাজধানীর ইঞ্জিনীয়ারিং ইনিষ্টিটিউটে বিরোধী দল
এক রাজনৌতিক সমাবেশের ডাক দেয়।
.
তো যৌনিক নেতা ভাই হোষ্টেলে আমাকে সহ আরো
কয়েকজন ফ্রেন্ডকে যাওয়ার জন্য ইনভাইট করল।
কি আর করা বড় ভাইয়ের কথায় আমরা
বন্ধুরা সবাই রাজী হইয়া গেলাম।
.
রাতে আমাদের উনার বাসায় রাখল।
চা, সিগারেট, বিরিয়ানি দিয়ে আপ্যায়ন করল।
.
.
যাউকগা ভোর ৫ টায় নেতা ভাই নিজ দ্বায়িত্বে সব
গুলারে সেগুনবাগিচা নিয়ে গেল। ওখান থেকেই
মিছিল নিয়ে সবাই বের হবে.... ওখানে গিয়ে
দেখি আমরা কিছু আবাল ছাড়া কেউ নাই। :-/
.
ভোরের আলো ফুটতেই আমাদের মত হাজার
খানেক পোলাপান এসে ভীড় করল। এত
পোলাপান দিয়ে কি হবে কিছুই বুঝতেছিনা। :-(
.
একটু পর দেখি পুরা সেগুনবাগিচা, পল্টন
এলাকা পুলিশ ঘেরাও করে রাখছে, একটু পর
ফায়ার শুরু করল। ফায়ার দেখেই কখন বড় ভাই
নিজ দ্বায়িত্বে পলায়ন করিল। বুঝতেই পারলাম না। :-(
.
চারিদিকে পুলিশের গুলি টিয়ারশেল,
কাদানো গ্যাস চলছেই... পুলাপাইনে জিগায়
দোস্ত ভাই আমাদের কই নিয়া আইলো
আইজ নিশ্চিত পুলিশের গুলি খাইতে হইইব....
.
ওদের কি কমু আমি নিজেই বুঝতেছিনা কি করব...
শুধু ওদের বললাম যে যেভাবে পার এই এলাকা
ছেড়ে ভাগ বাঁচলে দেখা হইবো... :-/
.
চারিদিকে গুলির শব্দ, ইটের ছড়াচড়ি,
মনে হচ্ছে দেশে আবার যুদ্ব লাগছে।
আর এ যুদ্বে আমরা নিশ্চিত মারা যাব... :-(
.
এসব দেখে সবাই নিজ চেষ্টায় পথ খুজতে
লাগল, হঠাত করেই ফাহাদ বলে ঊঠলোঃ
.
- দোস্ত আমি তোর লগে থাকুম,
বাঁচলেও তোর লগে মরলেও তোর লগে।
.
(...কথাটা শুনে নিজের ই কান্না চলে আসলো।
আমি এমন গোলাগুলির মধ্যে কখনো পড়িনি।
আর এ পোলা জন্মের পর থেকেই বিদেশে
কাটালো ও এদেশের এসব বুঝবে কি...)
.
- আচ্ছা তুই আমার পিছে থাক,
আমি বের হলে তোকে নিয়েই বের হব।
.
কি আর করা বন্ধুর দ্বায়িত্ব আমি নিলাম,
ওকে নিয়ে একটা বাড়ির দেওয়াল টপকে
আন্ডারগ্রাউন্ডে ঢুকে গেলাম। একটু পর
বাড়ির সিকিঊরিটি গার্ডরা বের করে দিলো...
.
তারপর, অনেক কষ্টে একটা গলির
তাঁরকাটা খুলে বাইরে বের হওয়ার পথ তৈরী করলাম।
অনেক গুলা লোক ওই তাঁরকাটা দিয়ে বেরিয়ে গেল
কিন্তু, ফাহাদ বের হতে পারেনা। :-(
.
পেছন থেকে পুলিশ গুলি করাতে দুই বন্ধু
দৌড়ে HOTEL-71 এর সামনে একটা কার্গোর
নিচে লুকাইয়া গেলাম... কিন্তু শেষ রক্ষা হইলো না,
দুই বন্ধু পুলিশের হাতে ধরা খাইলাম...
.
দুই জনের পাঁছায় দুই বেত দিয়া গাড়িতে
তুলিয়া ভ্রাম্যমান আদালতের ডিউটি করা
ম্যাজিষ্টেটের কাছে নিয়ে গেল
.
ম্যাজিষ্টেট আমার বুকে হাত দিয়া বলিলঃ
কি বুক ধপ ধপ করিতেছে?? দেখে তো ভদ্র
মানুষের ছেলেই মনে হয় এসব কাজে আস কেন??
.
আমি মাথা নিচু করিয়া বলিলাম "আর আসব না" :-(
ম্যাজিষ্টেট কিছু একটা ভেবেই
আমাদের দুজনকে ছেড়ে দিতে বলিলেন।
.
মুহুত্বেই নিজেকে নতুন ভাবে ফিল করলাম।
আর প্রতিজ্ঞা করলাম কখন এইসব কাজে
নিজেকে জড়াব না।
.
বাসায় আসার পর টিভিতে দেখলাম ওই
ঘটনায় ৩০০০+ জন'কে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
.
সবছেয়ে দুঃখের বিষয় হইলো
যে ভাইয়ের জন্য এত কিছু করলাম
আর ভাই সেদিন একটু খোজ ও নিল না...
.
এই হল ভাইয়ের ভালবাসার প্রতিদান...
এমন ভালবাসার আমার প্রয়োজন নাই।
সেইদিন থেকেই রাজনিতির সাথে সকল
সম্পর্ক শেষ... তারপর থেকে আমিই ভাই,
বড় গাইরে দোচার টাইম নাই...
.
.
কয়েক বছর পর ভাই দল পরিবর্তন করে
সরকার দলের বিরাট নেতা হইয়া গেল।
এখন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন সম্পাদক।
.
পিছে বহু মানুষ ঘুরে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে
ভাইয়ের নামে ব্যানার ফ্যাষ্টুন, এখন সম্মেলনের
সফল করার জন্য ভাইয়ের লোকের অভাব নাই।
এখন বাস-ট্রাক ভরে ভাই লোক পাঠায়.... :-D
.
বাসে ট্রাকে যেতে যেতে সবাই স্লোগান ধরে,
দলের দূর্দিণের কান্ডারী জনগনের বন্ধু, সংগ্রামী
নেতা, কর্মীদের জানের জান ইত্যাদি ইত্যাদি...
.
আর এসব দেখে আমি হাসি আর ভাবি
সত্যি নেতাদের চোখ সাপের চেয়ে হারামি।
ওরা নিজেদের জন্য সব করতে পারে
নিজের পকেট ভরাতে তারা আম জনতাকে
ধর্ষন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
.
হয়ত সেদিন আমাদের ব্যাবহার করছে
কাল আপনাদের কাঊকে ব্যাবহার করবে।
সম্মানিত পাঠক চোখ কান খোলা রাখুন।
.
কখনো এসব ফাঁদে জড়াবেন না,
রাজনিতির ফাঁদ বড়ই বে-রহম...
একবার জড়াবেন তো সারাজীবন পস্থাবেন...
ভালো থাকুন নিরাপদে থাকুন... :-(
.
.
বিদ্রঃ সকল চরিত্র ঘটনা কাল্পনিক ও ভিত্তীহিন...
.
.
মূল লেখাঃ Mamum Wretched
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×