যৌন হয়রানির জন্য শুধুমাত্র পুরুষদের দ্বায়ী করা হয়।
নারী বাদীদের টাইমলাইনগুলাতে তো সমগ্র পুরুষজাতিকে
ধর্ষক হিসেবেই উপস্থাপন করা হয়, কখনো বাবার জাত হিসেবে নয়।
কিন্তু (কতিপয়) নারীদের দ্বারাও যে আমরা ছেলেরা প্রতিনিয়ত
যৌন হয়রানির শিকার হই আজ তার দুইটা বাস্তব ঘটনা বলি।
.
ঘটনা-১
২০১০ সাল তখন আমি সবে মাত্র ইন্টার পাশ করে
ঢাকা শহরে কাজিনদের বাসায় উঠলাম।তো একদিন বিকেল
বেলা ছাদে হাটতে আসা এক ভাড়াটিয়া আন্টির সাথে পরিচয়।
আন্টির বয়স আনুমানিক ৩০, বর ব্যাবসায়ী, একটা মেয়ে ক্লাস থ্রি তে পড়ে।
কথা বলার এক পর্যায়ে উনার বাচ্চাকে পড়ানোর জন্য অনুরোধ করলো।
.
আমিও বেকার মানুষ উনার কথায় রাজি হইয়া গেলাম।
তো পরের দিন থেকেই পড়ানো শুরু, পড়া নিয়ে ঊনার ও বেশ আগ্রহ।
প্রথম কয়দিন বেশ ভালই কাটলো প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের পিঠা নাস্তা হিসেবে দিতো।
কিন্তু বিপত্তি শুরু হইলো কিছুদিন পর থেকে,
মেয়েকে পড়ানোর সময় উনি আমার পাশে এসে বসে
আমার কাঁধে হাত রাখে ঘাড় মেসেজ করে আমার বসার
চেয়ারের পাশে আরেকটা চেয়ার পেতে বসে আমার উরুতে হাত দেয়
আমি একটু বিব্রত বোধ করলে আমার দিকে তাকিয়ে
এমন ভাব করে মনে হয় এ এমন কিছুনা তুমি পড়াও।
.
তারপর কয়দিন আর ছাদেও যাইনা পড়াইতে যাইনা।
তো উনি বাসায় এসে বলতেছে ওর তো সামনে এক্সাম তুমি আসোনা কেন?
সন্ধ্যার পর চলে এসো, আমিও উনার কথায় আবার গেলাম।
তো সপ্তাহ খানেক পড়ানোর পর উনি একদিন
আমার চেয়ারের পিছনে দাড়িয়ে আছেন।
আবার আগের মত আচরন করতেছেন পিছন থেকে
আমার গলা জড়িয়ে উনার বুক আমার মাথা আর কাঁধের
উপর রাখলেন, আমাকে নিজ হাতে আঙ্গুর খাইয়ে দিতেছেন।
সেদিন কোনরকম পড়ানোর পর আর উনার বাসায় যাই নাই।
.
.
ঘটনা-২
২০১৬ সালে ফেসবুকে এক (আ)পুর সাথে পরিচয় হইলো
খুবই হাই সোসাইটির মানুষ দেখতে মাশা-আল্লাহ।
একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বনানীতে থাকে হাজব্যান্ড নেভিতে জব করে
২-৩ মাস পর একবার আসে। সব ই ফেসবুকে চ্যাটিং এর মাধ্যমে জানা।
.
যেহেতু ফেসবুকে আমার সব পিক প্রাইভেসি দেওয়া,
উনি বার বার আমার পিক চাইতো। তো একদিন
আমার একটা পিক সেন্ড করলাম। উনি পিক দেখে
তুমি বেশ কিঊট তোমার লেখাগুলাও প্রচন্ড হাসির
হ্যান ত্যান নানা প্রশংসা করতে লাগলো।
.
এর মধ্যে আমাদের ইমো নাম্বার ও আদান প্রদান হয়ে গেলো।
উনি রাতে আমাকে ফোন দিতো নানা কথা বার্তা বলতো
কাউকে ভালোবাসি কি না, কেমন কোন বয়সী মেয়ে পছন্দ,
মেয়েদের কোন জিনিস ভালোলাগে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমিও আমার মত করেই সব বলতাম আর উনাকে আপু ডাকতাম।
বাট আপু ডাকটা চিরস্থায়ী হলো না ঊনি নাকি আপু
ডাকটা পছন্দ করেনা, নাউ উই আর ফ্রেন্ড।
.
প্রায় মাসখানেক চ্যাটিং কথাবার্তার পর উনি আমাকে উত্তরায় হাউজবিল্ডিংয়ের ওখানে একটা কফিশপে মিট করতে বলল।
প্রথম উনার সাথে মিট করলাম দুইজন কফি খেলাম
উনার কথা বার্তা সব ই আমার বেশ ভালো লাগলো।
.
আরো বেশ কিছুদিন পর উনি উনার চুলকানি টাইপের পিক
যেমন ওড়না ছাড়া বেডরুমে নিজের মত শুয়ে বসে থাকা পিক সেন্ড করত,
প্রথমে বিব্রত হইলেও পরে উনার চলাফেরা আচরন এমনই ধরেই নিলাম।
.
আমার বিরিয়ানি খুব পছন্দ,
তাই উনি নিজ হাতে বিরিয়ানি করে খাওয়াবে
বলে আমাকে উনার বাসায় দাওয়াত দিলো আমি গেলাম।
গিয়ে দেখি উনার ৩ রুমের ফ্ল্যাটে উনি ছাড়া কেউ নাই।
উনার মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করাতে বলে সপ্তাহে
এই দিন উনার মেয়ে বাসায় থাকেনা।
.
তারপর উনি আমাকে উনার বাসার আসবাব পত্র দেখাচ্ছে,
বারান্দা দেখাচ্ছে, ছোট ছোট টবের গাছ গুলা দেখাচ্ছে
তারপর বেড রুমে নিয়ে বিছানায় বসালো আমি টিভি দেখতেছি
.
তারপর আমাকে চা দিয়ে আমার সামনে বসে বলতেছে
সারাদিন টিভি দেখবা? নাকি অন্য কিছু দেখবা?
আমি কিছু না বুঝেন একটা হাসি দিয়ে বললাম আমি চা খাইনা।
.
ঊনিও হাসি দিয়ে বললেন আচ্ছা আইসক্রিম নিয়ে আসতেছি।
তারপর উনি আইসক্রিম নিয়ে আমার সামনে বসে বলতেছে,
"আমাকে কাছ থেকে তোমার কেমন লাগে বলো"?
আমাকে দেখে মনে হয় আমার একটা মেয়ে আছে??
আমি তেমন কিছু না একটা ফ্যাকাশে হাসি দিয়েই বললাম
"নাহ বিয়েই হচ্ছে মনে হয়না"
.
তারপর উনি একটা মুচকি হাসি দিয়ে ফ্লোর থেকে
উঠে আমার পাশে বসলেন আমার হাত ধরলেন
আস্তে আস্তে আমার হাত ধরে উনার বুকে চাপ দিয়ে
বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বলেন "লজ্বা পেওনা আমি জানি
একটা ছেলে একটা মেয়ের কাছে কি চায় তুমি চাইলে এখনি
আমার সাথে হাজবেন্ড ওয়াইফের মত যা ইচ্ছা করতে পারো কোন সমস্যা নাই"
.
তখন আমি এত্ত ভয় পাইলাম বার বার গলা শুকিয়ে আসতেছে
পুরা শরির ঘেমে গেলো কোন ফাঁদে পড়লাম কে জানে। ফেসবুকের চ্যাটিংয়ের বাস্তবতা যে এত কঠিন হবে তা তখন বুঝিনি।
উনার সাথে একটু তাল মিলিয়ে অন্যদিন আসবো বলে কোন রকম
উনাকে সেদিনের জন্য মেনেজ করে বাসায় ফিরলাম।
.
উনার বাসা থেকে বের হওয়ার পর শুধু ভাবতেছি
এসব কি হলো, তারপর কয়দিন পর এসব নিয়ে আর
ভাবিনি আস্তে আস্তে উনাকে নিজের মতই স্কিপ করে গেলাম।
প্রথমে ফ্রেন্ডদের সাথে শেয়ার করতে চাইলাম
বাট ওরা মজা নিবে এই ভেবে চেপে গেলাম।
এদেশে যে ছেলেরাও যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়
সেটা সকলের কাছে অবিশ্বাস্য ও হাস্যকর।
.
মেয়েরা তো চাইলেই ফ্যামেলি বন্ধুবান্ধবদের কাছে বলতে পারে
আমরা আসলেই এ বিষয়ে কারো কাছে কিছু বলতে পারিনা।
আমি বলবনা সবাই খারাপ, কিছু খারাপ সবার মাঝেই আছে
বিশ্বাস করেন আর না করেন ছেলেরা শতকরা ৫-১০ জন
হলেও যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ২৮-৩৫ বছর বয়সী মহিলাদের দ্বারা।
.
এখন ঘটনাটা লিখতে/পড়তে হাসি পাচ্ছে
কিন্তু তখনকার অনুভূতি গুলা ছিলো পুরাই অসস্তিকর।
শুধু মেয়েদের ব্যাপারেই নয় ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে
যৌন হয়রানির বিরুদ্বে হোক প্রতিবাদ।
.
#mamunlgc
#MeTooForMen