somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামী লীগ করলে এমনই হয় মা!

১৮ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“হাম উর্দুভাষি আওয়ামী লীগ হ্যায়। ম্যারা নাম লাদেন। ৭১ সাল হাম পাকিস্তানকো সাপোর্ট দিয়াথা। আবি হামলোক হিরোন ভাইকো আদমি হ্যায়।

২১ ফেব্রুয়ারী ম্যারা ভাই রফিক, জব্বার জান কুরবান দিয়াথা। উসকো আদমী শহীদ হোয়াজো। উসকো আত্মার মাগফেরাত করতি হ্যায়।

হামলোক যুদ্ধাপরাধী বিচার মানতি হ্যায়। বাংলাদেশ মে যুদ্ধাপরাধী নেহি রয়েগা। হাম উর্দুভাষি বাংলাদেশি হ্যায়। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ।”

উপরের কথাগুলো প্রাসঙ্গিকতার আগে সবার জানা সেই পুরনো গল্পটি আরো একবার মনে করে দেই। একবার গোপালের অতিপ্রিয় গরুটি হারিয়ে যায়। সারাদিন সারা গাঁয়ে 'গরুখোঁজা' করে হয়রান হয়ে গোপাল নিজের বাড়ির উঠোনে বউকে দেখে বলে, এক গ্লাস জল দেবে দিদি? রেগেমেগে বউ বলে, মিনসে কি চোখের মাথা খেলো! বউকে বলে দিদি! তখন ক্লান্ত গোপাল উঠোনে ধপাস করে বসে বলে, ‘গরু হারালে এমনই হয়, মা!’

আমরা সবাই জানি, ৫২’র ভাষা আন্দোলন হয়েছিল কেন? একদল নরপিচাশ আমার মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। শুধু তাই নয়, তারা আমার মায়ের ভাষাকে নিঃশেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শহীদ রফিক-জব্বারদের জীবনের বিনিময়ে সেই দিন তারা সফল হয়নি। বরং অল্প ক’দিনে আমরা বাংলাদেশকে অর্জন করে নিয়েছি।

কিন্তু আমাদের আজকের এই দিনটি এমনি এমনি চলে আসেনি। সেদিন হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী যখন এদেশে আক্রমন করে তখন তাদের দোষরা তাদের সহযোগীতায় এগিয়ে আসে। পাক বাহিনীর সবচেয়ে বড় সহযোগী ছিল এদেশে অবস্থান রত বিহারীরা। বিশেষ করে ঢাকার মীরপুরে অবস্থিত কালশি, নীলফামারীর সৈয়দপুর এবং চট্টগ্রামের খুলশী-আকাবরশাহ এলাকায় অবস্থানরত বিহারীরা পাকিস্তানি হানাদারদের সাথে খুনের নেশায় মেতে উঠেছিল। পাকিস্তানী সেনাদের চেয়ে কোন অংশেই কম ছিলনা, বিহারীদের নির্যাতন।

২০১০ সালে চট্টগ্রামের ফয়’স লেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈধ্যভূমি উদ্ধধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। সেইদিন ৭১’র ভুক্তভোগীরা বিহারীদের যে নির্মমতা বর্ণনা করেছিলেন, তা শোনার পর অন্তত এক সপ্তাহ ঘুমাতে পারেনি। এমনকি এখনও মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙ্গে যায় সে ঘটনা কল্পনা করে।

শত শত মানুষ মেরেছিল চট্টগ্রামের বিহারীরা। বিহারীদের নির্মমতা কারো জানার ইচ্ছে হলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের #প্রফেসর গাজী সালাউদ্দিন স্যার অথবা মাষ্টারলেইনের শহীদ স্মরনী আবাসিক এলাকায় গিয়ে শহীদ পরিবারগুলোর সাথে দেখা করে জেনে আসতে পারবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময়ই নিজেদেরকে মুক্তি যুদ্ধের স্বপক্ষের দল হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে। অবশ্য এটা অস্বিকার করারও কোন সুযোগ নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের সেই দাবী দিনে দিনে ফিকে হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগের হাতেই ধ্বংস হতে শুরু করেছে মুক্তিযুদ্ধের মৌল উদ্দেশ্য।

তার একটা জ্বলন্ত প্রমাণ চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ড। এই ওয়োর্ডেই চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি বিহারী বসবাস করে। গত ২০০৭ সালে সরকার লজ্জাজনক ভাবে বিহারীদের নাগরিকত্ব দেয় এবং তাদেরকে ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দেয় হাইকোর্ট। এরপর থেকেই মূলত বিহারীরা সোনায় সোহাগা।

এখানকার বিহারীরা এখন আওয়ামী লীগেরে একনিষ্ঠ কর্মী। বিহারী আস্তে আস্তে আওয়ামী লীগের ঘরে বাসা বাধছে। এদের অনেকেই এখন আওয়ামী লীগের নেতা।

উপরের যে কথাগুলো কোট করা হয়েছে, তা তেমনি একজন নেতার কথা। যা গত ২১শে ফেব্রুয়ারীতে বিহারী উর্দূভাষি আওয়ামী লীগ আয়োজোত ‘মহান মাতৃভাষা দিবসের আলোচন সভায়’ লাদেন নামক এক নেতা দিয়েছিলেন।

বিহারি পাকিস্তানিরা স্বাধীন বাংলাদেশে মাতৃভাষা দিবস পালন করছে, হয়ত আগামী ২৬ তারিখে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানও করবে এই বিহারীরা।

শুধু তাই নয়, গত সিটিকর্পোরেশন নির্বাচনে বিহারীদের ভোট পাওয়ার জন্য খুলশী থানা আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হোসেন হিরন উর্দূভাষায় লিপলেট চাপিয়েছেন, এবং সেগুলো প্রচারও করেছেন।
শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতিতে এসে আজ আমরা আমাদের দেশপ্রেম, স্বাধীনতার লক্ষ্য ও চেতন সব হারাতে বসেছি। আওয়ামী লীগের বর্তমান বিহারী প্রীতি দেখে আমার মত গোপালদের বলতেই হয়, #‘আওয়ামী লীগ করলে এমনই হয় মা!”
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×