somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রাম্প কেন ভোট পায়?

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ট্রাম্পকে আমরা যতই গালাগালি করি না কেন, ওর নিজের লোকেদের কাছে ওর যথেষ্ট চাহিদা আছে। লোকে ভাবে, ওর মতন লোককে মানুষ কেন ভোট দেয়? বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণীর লোকেরা? আমাদের দেশে শামীম ওসমান, জয়নাল হাজারী, সালমান এফ রহমান বা নিজামী, মুজাহিদরা নির্বাচিত হয়ে সাংসদ হয়না? এখানেও ঘটনা একই। যে যার স্বার্থ দেখে। ভোটের রাজনীতি সর্বক্ষেত্রে এই সমস্যায় জর্জরিত।
থাকি টেক্সাসে, রেড স্টেট বলে খোদাই করা আছে এর নাম। এরমাঝে থাকি যে নেইবারহুডে, বেশিরভাগই শ্বেতাঙ্গ। ধরে নেয়া যেতে পারে বেশিরভাগই ট্রাম্প সাপোর্টার। বাস্তবেও অনেককেই দেখলাম প্রকাশ্যে ট্রাম্পের জন্য ভোট চেয়ে বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে। আসলে ট্রাম্প সাপোর্টার না বলে বলা ভাল "রিপাবলিকান।" ওদের দল থেকে যদি একটা ছাগলকেও দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়, ওরা সেটাকেই ভোট দিবে। এর পেছনে কিছু কারন আছে। সেগুলো নিচে তুলে ধরছি। তাহলে ওদের মানসিকতা বুঝতে সুবিধা হবে।
১. যেকোন জাতি নিজের স্বার্থ আগে দেখে। শ্বেতাঙ্গরাও ওদের স্বার্থই দেখে। ওদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টরা এসে ওদের চাকরি নিয়ে নিচ্ছে। আমেরিকানরা বেকার বসে থাকছে, আর বিদেশিরা এসে তাঁদেরই দেশে তাঁদেরই চাকরি খেয়ে ফেলছে। ঘটনায় সত্যতা ব্যাপক। যেমন, এক জেনারেশন আগেও আমেরিকায় হাইস্কুল সার্টিফিকেট কিংবা কলেজে এসোসিয়েট ডিগ্রি (দুই বছরে ষাট ক্রেডিট আওয়ার্স) নিয়েই লোকে ভাল ভাল চাকরিতে ঢুকে যেতে পারতো। তারপরে অফিসেই কাজ করতে করতে কাজ শিখতো, প্রমোশন পেয়ে পেয়ে সামনে এগোতো, এবং ভাল একটা পদবীতে পৌঁছে রিটায়ার করতো। যাদের উচ্চশিক্ষার শখ ছিল, সেই কেবল সেদিকে পা বাড়াতো। বলে রাখি, এদেশে উচ্চশিক্ষা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সিটিজেনদেরই প্রতি সেমিস্টারে বারো ক্রেডিটের পেছনে পাঁচ থেকে দশ হাজার ডলার খরচ চলে যায়। বিদেশী ছাত্র/ছাত্রী হলে এর চারগুন খরচ হয়। পুরো চার পাঁচ বছরের পড়াশোনা শেষ করতে করতে তাই হাজার হাজার ডলার স্টুডেন্ট লোন দেনা জমে যায়। ভাল স্কলারশিপ না পেলে ঐ পথে তাই অনেকেই যেতে চায় না।
আমার সাথে এক সাদা মেয়ে পড়তো, সে বলতো তাঁর মায়ের কোন কলেজ ডিগ্রি (ব্যাচেলর্স ডিগ্রি) নেই, তবু তিনি কাজ করেন এটিএন্ডটিতে (আমাদের দেশে গ্রামীণ ফোন বা বাংলালিংক ধরতে পারেন)। শুধু তাই না, তাঁকে অফিসেও যেতে হয় না, বাড়িতে বসেই কাজ করেন এবং বছরে নব্বই হাজার ডলার আয় করেন। টেক্সাসে প্রায় আট নয় বছর আগে এক মহিলার নব্বই হাজার ডলার বার্ষিক আয় বিশাল কিছু। এইরকম উদাহরণ ভুরি ভুরি। আমি যে অফিসে কাজ করি, সেখানেও অন্যান্য ডিপার্টমেন্টে এমন অনেকেই আছেন। হাইস্কুল পাশ করে ছোটখাট চাকরি করে শিখে শিখে ম্যানেজার হয়ে বসে আছে। কিন্তু গত কয়েক দশকে যা হয়েছে তা হচ্ছে বিদেশ থেকে (ভারত-চায়না ও অন্যান্য) লোকজন মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে এদেশে আসছেন অথবা এদেশে এসে মাস্টার্স-পিএইচডি করছেন। পড়ালেখার পাশাপাশি কাজে কর্মেও প্রমান দিচ্ছেন তাঁরা যোগ্য। ফলে উচ্চপদে তাঁরা চাকরি নিয়ে নিচ্ছে। বেতনের ব্যাপারে সাদাদের (এদেশে বেড়ে ওঠা পোলাপান) ডিমান্ড একটু বেশি থাকে। ইন্ডিয়া বাংলাদেশ বা চীনাদের সেটাও নেই। সবাই যা পায়, তা পেলেই আলহামদুলিল্লাহ। ফলে দেখা যাচ্ছে এখন সাদাদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নিতে হচ্ছে। পরিশ্রম করতে হচ্ছে! বেতনে/বেনিফিটে ছাড় দিতে হচ্ছে, ইত্যাদি।
আমেরিকান মেডিকেল স্কুলে পড়তে হলে আগে আপনাকে চার বছরের ডিগ্রি নিতে হবে। সেখানে অতি ভাল রেজাল্ট থাকলে তাহলে আপনি এমক্যাট পরীক্ষা দিতে পারবেন। সেখানে ভাল স্কোর পেলে মেডিক্যাল স্কুলে চান্স পাবেন। তারপরে আরও কয়েক বছর হাড়ভাঙ্গা পড়াশোনা। তারপরে ইন্টার্নশিপ/রেসিডেন্সি ইত্যাদি ইত্যাদি। কয়েক লক্ষ ডলার জমা হয় লোনের খাতায়। এদিকে দেখা যাচ্ছে ভারত/পাকিস্তান/বাংলাদেশ/চায়না থেকে লোকজন মেডিক্যাল পড়াশোনা করে একটি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছে। কোন লোন নাই। একজন আমেরিকান ডাক্তার যে বেতন চাইবে, ওর তা না পেলেও চলবে। আবার ও যেটাতে রাজি হবে, ওটাতে আমেরিকান ডাক্তারের পোষাবে না। সবক্ষেত্রেই এই ক্রাইসিস চলছে এখন। বিদেশি কর্মীদের উপর বিরক্ত হয়েই ওদের অনেকে রিপাবলিকান সাপোর্ট করে।
২. ইমিগ্র্যান্টদের বিরুদ্ধে সাদাদের একটি বড় অভিযোগ হচ্ছে অনেক দেশের অনেক দাগি অপরাধী আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ করছে। ওদের মধ্যে সিরিয়াল কিলার, সিরিয়াল রেপিস্ট থেকে শুরু করে ছিচকা চোর পর্যন্ত সবই আছে। একশোর মধ্যে সংখ্যায় হয়তো এক হবে, কিন্তু ঐ এককেই রিপাবলিকানরা এমনভাবে প্রমোট করছে যে সাধারণ মানুষের কাছে মনে হচ্ছে ঐ একই আসলে নিরানব্বই। এক সাদা মহিলাকে তাঁর ঘাস কাটার কর্মচারী রেপ করে খুন করেছিল। ব্যাকগ্রাউন্ড চেকে পাওয়া গেছে সে ইল্ল্যিগাল এবং ম্যাক্সিকোতে ওর অপরাধের রেকর্ড ছিল। মধ্যবর্তী নির্বাচনে এই ঘটনাকে রিপাবলিকানরা যে কতবার দেখিয়ে প্রচার করেছিল গুনতেও ভুলে গেছি।
ম্যাক্সিকান গ্যাং, কিউবান গ্যাং, ইটালিয়ান গ্যাং ইত্যাদিতো আছেই। ড্রাগস ব্যবসা করছে, স্কুলের ছেলেমেয়েদের টার্গেট করছে, সবইতো সত্য। সেক্স ট্রাফিকিংয়েও এরা জড়িত। সাথে ইমিগ্র্যান্টদের ব্যাপারে যুক্ত করেছে প্রোপাগান্ডা, ওরা নিজের দেশে খেতে পারেনা, উদ্বাস্তু হয়ে থাকে। তাই এদেশে এসে অশান্তি সৃষ্টি করেছে।
আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের আমাদের দেশেই কেউ দেখতে পারে না, আমেরিকানদের দোষ দিবেন কেন? ঘটনাতো একই।
৩. ট্রাম্প এসে কর্মীভিসার উপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ওর কথা হচ্ছে, আগে আমেরিকান হায়ার করা হবে, তারপরে যদি না পাওয়া যায়, তবেই বিদেশীদের ভিসা দিয়ে আনতে পারবে। সাধারণ মার্কিনিদের কাছে এই কাজটি কেন জনপ্রিয় হবেনা সেটা কেউ ব্যাখ্যা করতে পারবেন? যেখানে চাকরির ক্ষেত্রে ওরা দেখছে দলে দলে "বিদেশী" এসে চাকরি নিয়ে যাচ্ছে।
৪. ট্রাম্প ওপেনলি ইসলামিস্টদের বিরোধী। এবং আমাদের মুসলিম ভাইয়েরাও যা তা করে বেড়াচ্ছে। ভিয়েনার শুটিংই লেটেস্ট উদাহরণ। আপনি যতই গলা ফাটান "দেড় বিলিয়ন মুসলমানের মধ্যে পয়েন্ট জিরো জিরো ওয়ান পার্সেন্টও জঙ্গি না" "ভিয়েনায় গোলাগুলিতে নিহত চারজন, আর ক্রাইস্টচার্চের হামলায় নিহত হয়েছেন একান্নজন" বা "লাসভেগাসেই বন্দুক হামলায় অর্ধ শতাধিক নিহত হয়েছিল" কিংবা যত স্কুল শুটিংয়ের উদাহরণই দিন না কেন, সাধারণ আমেরিকানের চোখে "মজ্লিমস আর টেরোরিস্টস" হিসেবে প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে এবং এর পেছনে মুসলিমদেরও দায় আছে। ভিয়েনার শুটাররা বা প্যারিসের হামলাকারীরা "জয় জিসাস ক্রাইস্ট" বলছে না। কাজেই এইটা আশাও করবেন না যে সাদারা আপনাতেই সব বুঝে ফেলবে অথবা ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে সত্য উদ্ঘাটন করবে। ওরা তাই বিশ্বাস করবে যা তাদের দেখানো হবে। আপনি যদি শান্তির ধর্মের অনুসারী হন, বেশি বেশি করে শান্তিপূর্ণ কর্মকান্ডে অংশ নিন। কামাবেন এখানে, বাঁচবেন এখানে, জনসেবা করবেন বাংলাদেশে - তাহলে ওদের সমাজে আপনার উপস্থিতি ওরা বুঝবে কিভাবে? আপনাকে অবশ্যই জনসেবার একাংশ এই সমাজেও ব্যবহার করতে হবে।
তেমনই রিপাবলিকানদের বিশ্বাস ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে, ভারতের বিরুদ্ধে, ল্যাটিনদের বিরুদ্ধে, সে কেবল আমেরিকানদের পক্ষে। রেসিজম নিজের সাথে না ঘটলে কেউ উপলব্ধি করেনা। কাজেই সাদারা অনেকেই বুঝেনা ট্রাম্পের বর্ণবাদ।
৫. ডেমোক্রেটরা সোশ্যাল সার্ভিস দিতে গিয়ে ট্যাক্স বাড়ায় দেয়, রিপাবলিকানরা কমায়। লোকজন এইটা দেখেনা ওর টাকায় গরিব মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে, ওরা দেখে মাসিক পে চেকে কত টাকা আসলো। একশো দুইশ ডলার বাড়তি আসা অনেকের জন্যই অনেক বিগডিল। বিজনেস যারা করে, তাঁদের জন্যতো কথাই নাই।
৬. ডেমোক্রেটরা উদারনীতিতে বিশ্বাসী, এবং রিপাবলিকানরা রক্ষণশীল। উদারনীতি আমাদের জন্য ভাল, যেমন, যে যার ধর্মচর্চা করবে, অথবা করবে না ইত্যাদি। গোল বাঁধে এখানেই যে ডেমোক্রেটরা এবর্সনের পক্ষে, যেখানে রিপাবলিকানরা সরাসরি ভ্রুণহত্যাকে শিশু হত্যা হিসেবে বিবেচনা করে। মায়ের প্রাণ বাঁচাতে এবরশন এক ঘটনা, কিন্তু ফিগার নষ্ট হয়ে যাবে, কিংবা আমি এখনও তৈরী না ইত্যাদি বাহানায় শিশু হত্যার সমর্থক ওরা নয়। ডেমোক্রেটদের বিশ্বাস "আমার শরীর, তাই ভ্রুন রাখা বা না রাখা আমার অধিকার।" ব্যস, লেগে যাই কনফ্লিক্ট।
আমি নিজেও এবর্সনের বিরুদ্ধে। আমার কথা হচ্ছে যে মুহূর্তে মায়ের পেটে শিশুর হার্টবিট শুরু হয়ে যায়, সেই মুহূর্তেই তাঁর বাঁচার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁকে নষ্ট করা মানব হত্যার সামিল। এতটাও উদার হইনি যে হাসিমুখে শিশুহত্যা মেনে নিব। কিন্তু দুই বদমাইশের মধ্য থেকে ছোট বদমাইশকেই বেছে নিতে হয়। কিছু করার নাই।
সমকামীদের ব্যাপারেও ডেমোক্রেটরা উদার। এদেশে ওদের বিয়ের আইনও পাশ হয়েছে ডেমোক্রেটদের কারনেই। কনজারভেটিভ রিপাবলিকানদের মাঝে হোমোফোবিয়া তীব্রভাবে কাজ করে। ওদের বিশ্বাস, সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা পেলে ওদের ছেলেমেয়েরাও সমকামীতার দিকে ঝুঁকবে। জেফরি ডামার নামের এক কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার ছিল এদেশে। তার বাবার কাছে "সন্তান সিরিয়াল কিলার" এ পরিচয়ের চেয়েও লজ্জার বিষয় এই ছিল যে সে ছিল সমকামী। তাহলেই বুঝুন একে কোন পর্যায়ের পাপ ও লজ্জার বিষয় হিসেবে ওরা গণ্য করে।
এখন এদেশে সমকামী সহ যেকোন মাইনোরিটি গ্রূপের (কালোদের ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার বা ইহুদিদের কোন অধিকার) অধিকার প্রতিষ্ঠা পাওয়াটা আমাদের মুসলিমদের জন্যও জরুরি। কারন আমরাও মাইনোরিটি গ্রূপ। ওদেরটা প্রতিষ্ঠা পাওয়া মানে আমাদেরও বেসিক অধিকার প্রতিষ্ঠা পাওয়া। আজকে ওদের উপর যদি কনজারভেটিভরা আক্রমন করে, কালকে আমাদের উপর করবেই। "শরিয়া আইন" ওদের চোখেও আতঙ্কের নাম। আমাদের যদি কেউ রোজা রাখতে, নামাজ আদায় করতে, ওযু করতে বাঁধা দেয়, মেনে নিতে পারবেন? সেটাই নিশ্চিত করে মাইনোরিটিদের অধিকার। এক গ্রূপের জন্য প্রতিষ্ঠা না পেলে অন্য গ্রূপও মার খাবে। যারা সমকামীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে, তারাই আমাদের মসজিদের বাইরে অস্ত্র হাতে শরিয়া বিরুদ্ধ স্লোগান দেয়। আমাদের এই টেকনিক্যাল বিষয়গুলো বোঝাটাই বেশি জরুরি।
৭. ম্যাক্সিকানদের ধরে ধরে যখন সীমান্তের ওপারে জোর করে পাঠানো হয়, তখন ওরা নির্বিকারভাবে বলে, "ওরাতো ইল্ল্যিগাল। বেআইনিভাবে আমাদের দেশে থাকছিল। ওদের কারণেই আমাদের সিটিজেনরা চাকরি পাচ্ছিল না।" কথা ঠিক, বৈধ কাগজপত্রহীন কোন ম্যাক্সিকানকে দিয়ে আপনি অর্ধেক পয়সায় কাজ করিয়ে ফেলতে পারবেন, যেখানে কাগজপত্রওয়ালা আমেরিকানকে মিনিমান ওয়েজ দিতেই হবে। যেকারনে ছোটখাটো চাকরিগুলো ইল্ল্যিগাল লোকজন নিয়ে নেয়।
৮. বন্দুক প্রেমও একটি নিয়ামক। সাধারণ টেক্সানদের বাড়িতে বাড়িতে বন্দুক থাকে। সাউথের প্রায় প্রতিটা রাজ্যেই এক অবস্থা। দোনলা পাখি মারা বন্দুক না, মিলিটারি এসল্ট রাইফেলের কথা বলছি। শিকারের কাজে ছাড়াও এমনিতেও রাখে ওরা। গাড়িতে অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে। বন্দুকের কারনে নিজের ছেলেমেয়ের সাথেও ঝগড়া করে কথাবার্তা বন্ধ করে দেয় লোকজন। এই অবস্থায় একটা গুজব চালু আছে যে ডেমোক্রেটরা অস্ত্র কেড়ে নিবে। যা আসলে ভিত্তিহীন। NRA মোটা অংকের টাকা এই ঐ দুইপক্ষকেই দেয়। ওদের কেউই ঘাঁটাবে না। সবই পলিটিক্স। কিন্তু এই ডেমদের এই গুজবের কারণেও ভোট কম আসে।
এইরকম আরও বহু কারন আছে। অনেক বড় কারন আছে, অনেক ছোট কারনও আছে। সবাই ধরে নেয় রিপাবলিকানরা রেসিস্ট। আসলে রেসিজম ব্যাপারটা ওদের অনেকেই বুঝেনা, অতি স্বাভাবিকভাবেই নেয়। যেমন আমাদের দেশে ফেয়ার এন্ড লাভলীর মতন প্রকাশ্য বর্ণবাদী প্রোডাক্ট বিক্রি হয়। অতি নির্বিকারভাবে আমরা বিয়ের সময়ে ফর্সা ছেলে/মেয়ে খুঁজি। সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানের গায়ের চামড়ার ঔজ্জ্বল্যের উপর আমাদের খুশির ঔজ্জ্বলতা নির্ভর করে। মোটা/চিকন/বেটে/লম্বা মানুষদের নির্বিকারভাবেই হেনস্থা করি। অতটুকুন একটা দেশ, সেখানেও এলাকায় এলাকায় আমরা বিভাগ/বিভেদ তৈরী করে বসে আছি। তেমনই রিপাবলিকানদেরও মতি গতি এক!
তা এই লেখাটি পড়ে অনেকেই কনফিউজড হতে পারেন। অনেকেই ভাবতে পারেন, রিপাবলিকানদের প্রোপাগান্ডা চালালাম নাতো? না ভাই, আমি ডেমোক্রেটকে ভোট দিয়েছি এবং নিজের স্বার্থ্যের কারণেই দিয়েছি। একজন "ইমিগ্র্যান্ট" "বাংলাদেশী" "মুসলিম" হিসেবে আমার হাতে কোন অপশন নেই। রিপাবলিকান সমর্থকদের সম্পর্কে একটি হাল্কা ধারণা দিতেই ওদের কিছু বিষয় তুলে ধরলাম। ইলেকশনের পরেই পোস্ট করছি যাতে কেউ এই লেখাদ্বারা প্রভাবিত হয়ে ওদের ভোট দিয়ে না বসেন।
একটি ব্যাপার মাথায় রাখবেন। পৃথিবীর বুকে আমেরিকাই একমাত্র দেশ যারা এর সিটিজেনদের রক্ত সম্পর্কের আত্মীয়দের (চেইন ইমিগ্রেশন) আনার সুযোগ দেয়। আশির দশকে আমার চাচা এসেছিলেন, তিনি সিটিজেন হয়ে তাঁর ভাই বোনদের জন্য এপ্লাই করেছিলেন বলেই আমরা এসেছি। আমার মা সিটিজেন হয়ে এখন মামা খালাদের জন্য এপ্লাই করেছেন, তাঁদের ডাক আসার অপেক্ষায় আছি। এই সুযোগ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড কেউই দেয় না। আমি আমার বোনকে এদেশে আনতে পারবো, কিন্তু আমার বোন আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় নিতে পারবে না। রিপাবলিকানরা বহু বছর ধরেই এই আইন বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে। কোনদিন বন্ধ করে দিবে কেউ জানেনা। ডিভি ভিসা বাংলাদেশের কোটা বহু বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই কোন ইমিগ্র্যান্ট ভোটারের কেবল এই একটি বিষয় হলেও বিবেচনায় নিয়ে ভোটের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৯
৯টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×