somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পর্দা প্রথার কারনে প্রসূতি মায়েরা প্রায়ই প্রাণঘাতী বিপদের সম্মুখীন হন

০৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধরেন, যদি আমাদের জীবনে কোন ট্রাফিক আইন না থাকতো, তাহলে জীবনটা কেমন হতো? রাস্তায় যে যার ইচ্ছামতন গাড়ি চালাতো, কোন লাইসেন্সের কারবার থাকতো না। এ ওকে ধাক্কা দিত, সে তার সাথে ঘষা খেত। মারামারি, কাটাকাটি, ভিড়, জ্যাম ইত্যাদি লেগেই থাকতো। আপনি বলতে পারেন, বাংলাদেশের অবস্থাতো সেটাই। ঠিক। কাদের জন্য? যাদের লাইসেন্স নাই, যাদের গাড়ি ফিট না, যারা আইন মানে না ইত্যাদি কারণেইতো? বিদেশে দেখবেন প্রচন্ড জ্যামের মধ্যেও কেউ আইন ভাঙ্গে না। ফাঁকা রাস্তাতেও ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলে। স্পিড লিমিট মেনে চলে। আনফিট গাড়ি রাস্তায় নামায় না। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাবার দুঃসাহস করেনা। তারপরেও কেউ না কেউ আইন ভাঙ্গে এবং এর ফলে এক্সিডেন্ট হয়। সবাই আইন মেনেছে আর একসিডেন্ট হয়েছে, এমন ঘটা অসম্ভব। এইটা ফ্যাক্ট।
একই যুক্তি দেশের সম্পূর্ণ আইন ব্যবস্থার উপরে ফেলুন। আইন আছে বলেই ইচ্ছা থাকা সত্বেও এ ওর সম্পদ, সম্পত্তি লুটে নেয় না। খুন করে ফেলতে মন চাইলেও খুন করেনা। ইচ্ছা থাকা সত্বেও অমুক তমুক মেয়েকে উঠিয়ে নেয়া যায় না। যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশগুলোর দিকে তাকান, কিছুদিনের জন্য যেসব দেশে আইনের অস্তিত্ব থাকেনা, দেখবেন কত লুটতরাজ চলে। "এনার্কি" যাকে বলে।
কাজেই, জীবনকে সহজ, সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দময় করতে সমাজে আইনি শৃঙ্খলের প্রয়োজন আছে। কেবলমাত্র চোর বাটপাররাই আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে। চোর ডাকাতরাই বলে, "আমি পরিশ্রম করে উপার্জন করছি, এতে পুলিশ আর সরকার আমাকে জেলবন্দি করার কে?"

পুরো বিষয়টাই ইসলামের ব্যাপারেও প্রযোজ্য। ইসলাম জীবনকে সহজ করতে আসছে, কঠিন করতে নয়। কুরআনে আল্লাহ বহুবার এই কথা বলেছেন, সূরা বাকারায় (১৮৫), সূরা হজ্জ্ব (৭৮), মায়েদাহ (৬), সূরা নিসা (২৮) ইত্যাদি। তারপরেও আমাদের মধ্যে একদল আছেন, যারা না বুঝেই ধর্মটাকে কঠিন বানিয়ে ফেলেন। ইসলাম বলছে পরকীয়া না করতে, আপনি করে বসলেন। তারপরে ধরা খেলেন, পুরো দেশব্যাপী বেইজ্জতি। ইসলাম নিষেধ করেছে মদ ও মাদক এড়িয়ে চলতে, আপনি খেলেন ধরা। আবারও দেশ বিদেশে বদনাম। এইভাবেই ইসলামে যা নিষেধ করা হয়েছে, তা যৌক্তিক কারণেই করা হয়েছে। বেহুদা কিছুই না। ইসলামে বরং হালাল সংখ্যা হারামের চাইতে বেশি। এবং ইসলামী ফিকহ শাস্ত্রের মূল নিয়মই হচ্ছে কোন কিছুকে হারাম ঘোষণা করার আগে আপনাকে অবশ্যই প্রমান করতে হবে, কেন এটি হালাল নয়।
আপনাকে কুরআন হাদিসের পন্ডিত হতে হবেনা, বেসিক জ্ঞান থাকলেই বুঝতে পারবেন আমি কি বুঝাতে চাইছি। ইসলাম কতটা সহজ সেটা বুঝাতে হলে আমাদের "চাচাতো ভাই" ইহুদিদের দিকে একটু তাকালেই হবে। এই দুই ধর্মই যেহেতু একই ঝর্ণা নিঃসৃত নদী, কাজেই এই দুইয়ের মাঝেই তুলনা করা সহজ ও যৌক্তিক।
আমাদের যেমন জুম্মা আছে, ইহুদিদের আছে সাবেথ। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে (শনিবার) পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে সাপ্তাহিক "ইবাদত।" আমাদের জুম্মার নির্দেশ কি? জুম্মার নামাজ আদায় শেষে জমিনে ছড়িয়ে পড়ো উপার্জনের জন্য। মানে জুম্মার আগেও আপনি বাণিজ্যে থাকতে পারবেন, পরেও। মাঝের আধ ঘন্টা সময় শুধু মসজিদে যেতে হবে। যে কারনে আমরা প্রবাসী মুসলিমরা সহজেই অফিস থেকে লাঞ্চ টাইমে বেরিয়ে এসে নামাজ পড়ে আবার অফিসে কাজে চলে আসতে পারি।
কিন্তু ইহুদিদের এই আরাম নেই। সাবেথের সময়ে দুনিয়ার সবকিছু থেকে ওদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হয়। দোকান, ব্যবসা, বাণিজ্য, চাকরি সব বাদ দিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে বসে শুধুই ইবাদত চলে। সেলফোন, ফেসবুক, ইন্টারনেট সব বন্ধ। বাড়িতে এই সময়ে দুনিয়া সম্পর্কিত কোন কথাবার্তা বলা পর্যন্ত নিষেধ। এর একটি সুফল হচ্ছে এই যে এতে পারিবারিক বন্ধন অত্যন্ত সুদৃঢ় হয়। প্রতি সপ্তাহেই ওদের "থ্যাংক্সগিভিং" (আমেরিকানরা জানেন এর মাহাত্ম) উৎসবের ফিলিং হয়। তবে এই কারনে ওদের যদি চাকরিও চলে যায়, ওরা চাকরি ছেড়ে দেয়। এই সময়ে কোন ধার্মিক ইহুদিকে আপনি বাড়ির বাইরে পাবেন না। যত প্রয়োজনীয় কাজই হোক না কেন। মনে আছে বনু কুরাইজার কাহিনী? কুরাইশদের সাথে ষড়যন্ত্র করে ওরা মুসলিমদের আক্রমন করতে চেয়েছিল, এবং "শনিবার" ছিল বলে ওরা যুদ্ধে অংশ নেয়নি, এবং কুরাইশরা ভেবেছিল, ওদের সাথেও বেঈমানি করেছে? এই সেই "সাবেথ।" ওরা মরে যাবে, তবু সাবেথ ভাঙবে না। এই ওদের ধর্ম।
আমাদের জুম্মায় এত কাঠিন্য নেই।
তারপরে ধরেন ওদের ওযু করার সিস্টেম। বহমান পানি হতে হবে, আমাদের মতন যেকোন পানি হলেই হবেনা।
ওদের নামাজে জুতা ছাড়াই দাঁড়াতে হবে। আমাদের নামাজ জুতা পরেও পড়তে পারবেন। সাহাবীগণ জুতা পায়েই নামাজ পড়তেন। মদিনার তপ্ত গরমে জুতা ছাড়া চললে পা ঝলসে যেত। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক আমাদের প্রাণপ্রিয় মসজিদে নববীতে কোন সুবিশাল ছাদ ছিল না। শুরু হয়েছিল খেজুর পাতার ছাউনি দিয়ে, তাও প্রথম কয়েক কাতার পরেই যা ছিল না।
আমরা খাবারের শুরুতে "বিসমিল্লাহ" বললেই চলে, ওরাও "বিসমিল্লাহ" বলে, তবে ওদের খাবারের প্রতিটা উপাদানকে কেন্দ্র করে দোয়া পড়তে হয়। যেমন রুটিতে কামড় বসানোর আগে বলা "ইয়া আল্লাহ তুমি ময়দার এই রুটির উপর বরকত দাও।" বাটার খাবার আগে বলতে হবে, "ইয়াল্লাহ এই দুগ্ধপণ্যের উপর বরকত দাও।" তারপরে ডিম খাবার আগে দোয়া, সবজি খাবার আগে দোয়া। মাংসের আগে দোয়া, মাছের আগে দোয়া। মদের জন্য আলাদা দোয়া, দুধের জন্য আলাদা, আবার পানির জন্য আলাদা।
এইরকম আরও বহু মিল আছে আমাদের ধর্মে, কিন্তু ওদেরটা অনেক কঠিন। সেটা নিয়ে আলাদা পোস্ট করা যাবে যদি কেউ আসলেই জানতে আগ্রহী হয়। তবে আজকের লেখার বিষয় আলাদা। সেটা হচ্ছে, "ইসলাম আমাদের জীবনকে সহজ করতেই নাজেল হয়েছে।"

আমাদের নামাজের ব্যাপারটাই ধরেন, সুস্থ থাকলে আপনি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে হবে। অসুস্থ হলে বসে। আরও অসুস্থ হলে শুয়ে। আরও বেশি অসুস্থ হলে ইশারায়। সফরে আছেন, নামাজ ছোট করে পড়লেই হবে। কিবলা কোনদিকে বুঝতে পারছেন না, একদিক আন্দাজ করে আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়িয়ে যান, আপনার নামাজ কবুল। চব্বিশ ঘন্টা সময়ের মধ্যে মাত্র পাঁচবার আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হয়। সব মিলিয়ে আধ ঘন্টাও লাগেনা।
নামাজ পড়তে ওযু লাগবে। পানি না থাকলে তায়াম্মুম।
রোজা রাখতে হবে। অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে রোজা মাফ। মাত্র একজনকে পেট ভরে খাইয়ে দিলেই কাফ্ফারা আদায় হয়ে যাবে।
সামর্থ্য থাকলে হজ্বে যাবেন, কুরবানী দিবেন, জাকাত দিবেন। পয়সা না থাকলে কোনই সমস্যা না। উল্টো সামর্থ্য নেই, এরপরেও আপনার মনে সাধ জেগেছে, এবং একই সাথে আল্লাহর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন, আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ হননি, কেবল এই কারণেই ধনী ব্যক্তি কোটি টাকা ও পরিশ্রম করে যে সওয়াব অর্জন করবে, আপনি ঘরে বসে বসেই তা পেয়ে যাবেন।
জ্বি, এই কারণেই আমরা বলি, ইসলাম আমাদের জীবনকে সহজ করতেই নাজেল হয়েছে। শুধু শুধু না বুঝে একে মানুষই কঠিন বানিয়েছে। ঠিক ইহুদিদের মতন। কুরআনের ঘটনা অনুসারে আল্লাহ যখন ওদের বললেন গরু কোরবান করতে, ওরাই প্রশ্ন করতে শুরু করলো কেমন গরু, দেখতে কেমন হতে হবে, রং কি হবে, এটা ওটা নানা প্রশ্ন। চুপচাপ কোরবান করে দিলে কিন্তু ওদের জন্যই সহজ হতো।
উপরে যে এত কঠিন নিয়মের কথা বললাম, সব ওদের নিজেদের কারণেই হয়েছে। ধর্মটাকে কঠিন না বানানো পর্যন্ত ওরা সন্তুষ্ট হতো না।
আমরা স্মার্ট। আমাদের নবীজি বা সাহাবীগণ শুধু শুধু ইসলামকে কঠিন বানাননি।

আরও কিছু উদাহরণ দেই। যেমন, ইসলাম বলে, মিথ্যা বলা মহা পাপ, ঠিকতো? কিন্তু তিন ক্ষেত্রে মিথ্যা বললে উল্টো সওয়াব হয়। যেমন, কারোর কলহ মেটাতে মিথ্যা বলা। ("তুই এখানে রাগ করে বসে আছিস, আর ও ঐদিকে তোর সাথে ঝগড়া করে আফসোসে মরে যাচ্ছে।" দুই ভাই/বন্ধুর ঝগড়া বন্ধ করতে আপনি যদি এমন কথা মিথ্যামিথ্যি বলেন, আল্লাহ আপনাকে সওয়াব দিবেন।) বা স্ত্রীর মন রক্ষার্থে মিথ্যা বলা। ("তোমার চেয়ে সুন্দরী নারী এই পৃথিবীতেতো বাদ, বেহেস্তের হুরও এমন হয় না।" বা স্বামীকে বললেন, "তোমাকে আজকে দেখতে এত হ্যান্ডসাম লাগছে!" এতে স্বামী বা স্ত্রী যে খুশি হবেন, তাতেই আপনার পুণ্যের খাতা ভরে উঠবে।) তৃতীয়টা দয়া করে নিজে খুঁজে পড়ে নিবেন।
তারপরে ধরা যাক আমাদের ধর্মে এলকোহল সেবন নিষিদ্ধ। কারন এতে নেশা হয়, বুদ্ধি লোপ পায়। ঠিকতো? কিন্তু আপনি যদি প্রাণ বাঁচাতে ওষুধ খান যেখানে এলকোহলিক উপাদান থাকে, তাহলে সেটা হালাল হয়ে যায়।
শূকর খাওয়া নিষেধ। কিন্তু ধরা যাক আপনি মরুভূমিতে আটকা পড়েছেন, এবং আপনার কাছে শূকরের মাংস ছাড়া আর কোন খাদ্য পানীয় নেই। তখন প্রাণ রক্ষার্থে আপনি শূকর খেতে পারবেন।
কিছুদিন আগে এই উদাহরণ দেয়ায় এক "ট্যাটনা" নিজেকে পন্ডিত প্রমান করতে জিজ্ঞেস করলো, "আপনি শুকরের মাংস নিয়ে মরুভূমিতে যাবেন কেন?" তা ঐ ট্যাটনাকে বললাম, "যদি কোন কারনে প্লেন ক্র্যাশ করে, এবং যাত্রীদের মধ্যে আপনি ছাড়া কেউ বেঁচে না থাকে, এবং কয়েক ক্যান শুকরের মাংস ছাড়া সব ধ্বংস হয়ে যায়, তখন?"
ট্যাটনা চুপ।
কোন অযাচিত কমেন্ট করার আগে চিন্তাভাবনা করে নিবেন। অহেতুক সময় নষ্ট বিরক্তিকর তারচেয়ে বড় সমস্যা, বিভ্রান্ত পাঠকের জন্য বিভ্রান্তিকর। এমন ট্যাটনামী না করে বরং খোঁজ নিবেন আসলেই আমি সত্য বলছি কিনা। এক্ষেত্রে "মরুভূমিতে আমি কেন শুকরের মাংস নিয়ে যাব" চিন্তা না করে চিন্তা করবেন "শূকর বা এলকোহল নিয়ে যে মন্তব্য করলাম, আসলেই কতটা সত্য?" দুইয়ের মাঝের পার্থক্য বুঝতে পারছেন? একটা জ্ঞানীর আচরণ, অন্যটা ট্যাটনামীর বৈশিষ্ট্য।

তা এত ঘটনা বলে যে ভূমিকা টানলাম, এখন তাহলে মূল প্রসঙ্গে আসি। তা হচ্ছে, ইসলামে পর্দা প্রথা একদম দিনের আলোর মতন পরিষ্কার। নামাজ পড়া, রোজা রাখা ইত্যাদির মতন নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য হচ্ছে পর্দার বিধান। নারীদের যেমন বলা হয়েছে পর্দা করতে, পুরুষদেরও বলা হয়েছে চোখের পর্দা করতে। কার বৌ, কার মা, কার মেয়ে, কার বোন পর্দা করছে না, করলে সেটা কতটা সহীহ ইত্যাদি দেখার দায়িত্ব অন্য কোন পুরুষকে দেয়া হয়নি। নামাজ রোজা ইত্যাদির জন্য যেমন যার যার কৈফিয়ৎ নিজেকে দিতে হবে, তেমনই পর্দার ব্যাপারেও আল্লাহর কাছেই ওকে জবাবদিহি করতে হবে। "সাকিব আল হাসানের বৌ কেন পর্দা করলো না" এই অভিযোগ করার আগে আপনাকে জবাব দিতে হবে কোন নিয়তে বা অধিকারে আপনি নিজের চোখের পর্দার বিধান ছিন্ন করে সেদিকে নজর দিলেন। তখন কি জবাব দিবেন?

তা, এই পর্দা প্রথার কারনে প্রসূতি মায়েরা প্রায়ই প্রাণঘাতী বিপদের সম্মুখীন হন। সেটি হচ্ছে, "পুরুষ ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাবেনা।"
স্বাভাবিকভাবেই, মেয়েলি বিষয়ে পুরুষ ডাক্তারের সামনে বেশিরভাগ মেয়েই স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন না। গাইনি বা মহিলারোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে তাই মহিলাদেরই ডিমান্ড বেশি। বিশ্বব্যাপীই ঘটনা এক। আমার বৌ, এবং আমার পরিচিত যত ভাবি, বোন, আন্টি আছেন, বেশিরভাগেরই ডাক্তার মহিলা ছিলেন। তারপরেও, আমাদের দেশের কথা চিন্তা করলে, যেখানে জনসংখ্যার তুলনায় এমনিতেই ডাক্তারের সংখ্যা কম, সেখানে দেশের সব জায়গায় পর্যাপ্ত নারী ডাক্তার পাওয়া অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব একটি ব্যাপার। শুধু প্রসবের কথাই বলছি না, আরও অনেক ইমার্জেন্সিতেই দেখা যায় মহিলা রোগীর অভিভাবকরা পুরুষ ডাক্তার দেখাতে চান না, এতে রোগীর প্রাণ সংশয় ঘটলেও তারা পাত্তা দেন না। "পর্দা রক্ষা" উনাদের কাছে এমনই গুরুতর বিষয়। অথচ একই লোকের অন্ডকোষে যদি ফোঁড়া হয়, এবং সেজন্য ডাক্তার দেখাতে হয়, তখন কিন্তু উনি "নাভির উপর থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত" পর্দার বিধান ভুলে যান। কোন মহিলা ডাক্তার উনার শরীর স্পর্শ করে ফেললে উনার তখন সমস্যা হয়না।
এই যে লোকজন পয়সা খরচ করে তাজমহল দেখতে যান, "প্রেমের স্মৃতি" বলতে বলতে গদগদ হয়ে যান, তাজমহলের পেছনের মূল ঘটনা ছিল, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মুমতাজ মহল প্রসবকালীন সংকটে পড়েন, সম্রাট শাহজাহান রাজবৈদ্যকে (দেশের সেরা ডাক্তার) স্ত্রীর কাছে পাঠাননি কারন পরপুরুষ মহারানীর শরীর দেখে ফেলবেন। এটা কি পরোক্ষভাবে হত্যা নয়? বৌ মারার পরে আপনি তাজমহল বানান কি বদমহল বানান, কিছু যায় আসে?
যাই হোক, এখন নিশ্চই বুঝে গেছেন উপরে এত লম্বা উদাহরণ কেন দিলাম। জ্বি, জীবন মরনের প্রশ্ন যেখানে উপস্থিত, সেখানে পর্দা মানা না মানা গুরুতর কিছু না। কারন ইসলামে পর্দার চাইতে মা ও শিশুর জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারন একটি মানুষের জীবন আল্লাহর কাছে কাবা ঘরের চাইতেও বেশি পবিত্র। কথাটা আমার না, আমাদের রাসূলুল্লাহর (সঃ) নিজের মোবারক কণ্ঠ থেকে নাজেল হওয়া। বিশ্বাস না হলে ইব্ন মাজাহর ৩৯৩২ নম্বর হাদিস দেখে নিন।

সব কথার শেষ কথা, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। কুরআন পড়বেন, হাদিস পড়বেন, নবীজির পাশাপাশি সাহাবীদের জীবনীও পড়বেন এবং তাহলেই বুঝবেন শুধু শুধু আল্লাহ বলেননি, "আমি তোমাদের মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি" (২:১৪৩)। "মধ্যপন্থী" মানে কি সেটা আগে বুঝার চেষ্টা করবেন। তাই শুধু শুধু ধর্মটাকে কঠিন বানাবেন না। নিজের জন্যও না, অন্যের জন্যও না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:১৬
১৭টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×