somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৃত্যুর পর আসলেই কি ঘটে এই নশ্বর দেহের এবং তার পরিপ্রেক্ষিতঃ বিভিন্ন ধর্ম ও বিজ্ঞানের আলোকে

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মৃত্যু শব্দটা আমাদের কাছে সেক্রেড বা ভয়ানক একটা ব্যাপার।

জীবন্ত একটা মানুষ হুট করে একটা নির্দিষ্ট বয়স-সীমা বা রোগে ভোগে যখন কোষ গুলো আর সেলফ রেপ্লিকেট করতে পারেনা বা মরে যাওয়া শুরু করে এবং হৃদপিণ্ড পর্যাপ্ত পরিমান রক্ত পাম্প করে রক্ত থেকে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড আলাদা করতে পারেনা এবং মস্তিষ্কে পাঠাতে পারেনা তখনই সায়েন্টিফিকালি ধরে নেয়া হয় মানব দেহের মৃত্যুর।

এ ডিসিজড হওয়া বা কোষের মৃত্যুই আসলে মানবের শেষ অবস্থা।

কিন্তু আসলে কি হয়? সামাজিক, বৈজ্ঞানিক এবং ধর্মীয় দিক থেকে একেক সমাজে এবং একেক ধর্মে মৃত্যু কে একেক ভাবে দেখানো হয়েছে।

খ্রিস্টান ধর্মেঃ ক্রিশ্চিনিয়াটি তে জেসাস এর ক্রুশ বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু এবং এর ৩ দিন পর গড দ্বারা তুলে নেয়া তেই তাদের বিশ্বাস শুরু হয়। এটাকে ধরা হয়- তাদের উথান ও পুরুজ্জীবন এর মূল ধারনা।

তারা বিশ্বাস করে, মরনের পর একটা সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে জাজমেন্ট ডে এর জন্য এবং সেদিন সতকাজ ও পাপের বিচার হবে এবং তাদের আমল অনুযায়ী তাদের কে পুরস্কার করা হবে। এই জাজমেন্ট ডে নিয়ে কিছুটা মতভেদ আছে। কেউ কেউ মনে করে মরনের পর পর এটা হবে আবার কেউ করে মনে করে দুনিয়ার সবাই মরার পরেই এই জাজমেন্ট ডে হবে। কেউ কেউ আবার বিলিভ করে- দুই রকম জাজমেন্ট ডে হবে। মরার পর একবার আবার চূড়ান্ত একবার। পাপ ও পূন্য অনুযায়ী তাদেরকে হিভেন বা হেল এ পাঠানো হবে।
রোমান ক্যাথলিক দের মতে, মরার পর পর একটা অবস্থায় তাদের কে রাখা হবে , এর নাম পারগাটরি স্টেজ। এখানে পবিত্র আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পরিশুদ্ধ করে, এর পর হেভেন এ দেয়া হবে সবাইকে।

এটা জাস্ট বেসিক ভার্শান, অনেক ক্রিশিয়ান ভিন্ন ভিন্ন আফটার লাইফের ঘটনা বিলিব করে।

ইস্লাম ধর্মেঃ ইসলামে মৃত্যু এবং এর পরের জীবন নিয়ে বিশাল এবং বিস্তারিত বলা হয়েছে। ইসলামের বিশ্বাস টাই পুরাটা মরনের পরের জীবন এবং সেটার উপর নির্ভর করে তাই এই ধর্মে এটা নিয়ে আলোচনা ও বেশি।
এই ধর্মে বিশ্বাসী রা মনে করেন- মৃত্যু মানে শুধু বডির হৃদস্পন্দন থেমে যাওয়া নয় বরং আজ্রাইল নামক ফেরেশ্তা এসে আত্মা বা সৌল নিয়ে যাওয়াই আসল মরন। মরনের পর, ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কবর দিতে হয়।
এরপর মুঙ্কার নাকীর নামে দুই ফেরেশ্তা এসে তাদের বিশ্বাস এর টেস্ট নেন এবং যারা এই টেস্ট এ পাশ করেন তাদের জন্য কবর কে শান্তির ও সুখের বানিয়ে দেয়া হয় এবং যারা ফেল্ করে তাদের কে কবর কে আযাব বানিয়ে দেয়া হয় জাজমেন্ট ডে পর্যন্ত।
মৃত্যুর পর থেকে জাজমেন্ট ডে পর্যন্ত টাইম এ অবস্থা করাকে বলা হয় বারজাক!

ইসলাম অনুযায়ী সুইসাইড, মেডিসিন দ্বারা কারো প্ররোচনায় মৃত্যু ( ডাক্তারির ভাষায় ইথানাইজেশান ) এবং ধর্মীয় কারন ব্যাতিত মানব খুন ধর্ম বিরোধী কাজ এবং এর সাজা জাহান্নাম।
মুসলিম দের বিশ্বাস এর অন্যতম বিশ্বাস হল আফটার লাইফ বা পরকালে বিলিভ করা। কবর মাত্র একটা অস্থায়ী অবস্থা, আসল জীবন শুরু হবে কেয়ামতের পর জাজমেন্ট ডে তে পুনুরুত্থান এর পর। এখানেও পাপ ও পুণ্যের উপর নির্ভর করে সাজা ও পুরষ্কার দেয়া হবে। পাপীরা অনন্ত আগুণে জ্বলবে এবং ইমান দার রা অনন্ত বেহেশ্তে।


ইহুদি ধর্মেঃ অন্য আব্রাহামিক ধর্মের মতই ইহুদি ধর্ম ও সেইম পুনরজ্জীবনে বিলিভ করে। হিব্রু বাইবেল অনুযায়ী, মরার পর সবাইকে শিউল নামক যায়গায় রাখা হবে এবং সেখান থেকে পাপ পুণ্যের অনুযায়ী সাজা ও পুরস্কার দেয়া হবে।

ইহুদি দের আফটার লাইফ বিলিভ কিছু টা কমপ্লিকেটেড অন্য আব্রাহামিক দের তুলনায়। এক এক ধর্ম নেতা এক এক রকমের আদেশ ও নির্দেশ দিয়ে থাকেন। তবে বেসিক রুলস গুলা অনেক্টা বাকি আব্রাহামিক ধর্ম গুলার সাথে মিলে যায়।

হিন্দু ধর্মেঃ দুনিয়ার সব চেয়ে পুরাতন ধর্ম বিশ্বাস সণাতন বা হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী আফটার লাইফ মানে রি ইঙ্কারেশান বা পুনজন্ম। ভগবান কৃষ্ণের বানী অনুযায়ী- মানুষ যেমন পুরান কাপড় ফেলে নতুন কাপড় পড়ে তেমনি, মানুষের মরনের পর চিতায় পুড়ানোর পর মানুষের নতুন জন্ম ঘটে এবং মানুষ অন্য রুপে আবার এই দুনিয়াতে ফেরত আসে।
মোসলমান দের আজ্রাইল এর মতই হিন্দুদের দেবতা ঈয়ামা তার প্রতিনিধি পাঠান মৃতের আত্মা কালেকশান করে নিয়ে আসার জন্য , এরপর চিত্রগুপ্ত সেই আত্মার হিসাব রাখেন এবং লেজারে লিখে রাখেন তার কাজ ও পাপ পুণ্যের বা কার্মার হিসাব।
এরপর সেই আত্মা আবার ফিরে যায় দুনিয়ায় কার্মা অনুযায়ী , যদি খারাপ কাজ করে তাহলে নিন্ম শ্রেণীর প্রাণি রূপে আর যদি ভাল কাজ করে তাহলে উচ্চ শ্রেণীর ও বর্নের মানুষ হিসেবে দামী ও ধনী ফ্যামিলিতে। এভাবে সাইকেল চলতেই থাকে, তবে এক সময় সাইকেল শেষ হলে আত্মার মুক্তি ঘটে এবং পূন্য আত্মা গুলো সুপ্রিম গড এর সাথে মকশা বা স্যাল্ভেশান স্টেজে চিরতরে শান্তিতে অবস্থান করে। ( এই সাইকেল শেষ হওয়া নিয়ে তেমন বিস্তারিত পাওয়া যায় না যদিও )

তবে হিন্দু ধর্মের আসল কথা- হল কার্মা। সৎকর্ম করলে পরের জীবনে সুখী ও ধনী হিসেবে দামী ফ্যামিলি ও কাস্টে জন্ম নিবে আর যদি পাপী হয় তাহলে কুকুর সাপ পোকা মাকড় রূপে জন্ম নিবে।

বৌদ্ধ ধর্মেঃ বুদ্ধের মতে রিবার্থ ঘটে নিজের সত্তা অপরিবর্তিত রেখেই। অনেকটা হিন্দু ধর্মের সাথে মিল- যদি পাপ করে থাকো তাহলে নিন্ম স্তরের প্রাণী রুপে আসবে ফিরে আর যদি পূন্য করো তাহলে উচ্চ শ্রেণির মানুষ হয়ে ফিরবে অথবা ৩১ টা হিভেনলি রেল্ম ( Relm) এর যে কোন একটা তে আজীবন এর জন্য।

তিব্বতীয়ান বৌদ্ধ রা বিলিভ করে , মরার পর পর একটা বোধি স্টেজ থাকে যেখান থেকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে এই সাইকেল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ভগবান বুদ্ধ এই জ্ঞানের আলোর কথা বলে গিয়েছেন অনেক বার।

যদিও বৌদ্ধ ধর্মে ডিটেইলস পাওয়া যায় না কিভাবে কার্মার উপর বেইজড করে পুনরজ্জীবন ঘটবে বা কিভাবে এই সাইকেল কন্টিনিউ করবে।

এই হল, মোটামুটি সংক্ষেপে বর্তমান প্রচলিত ধর্ম গুলোর মৃত্যুর পরের বিশ্বাস। এ ছাড়াও এই সব ধর্মের বিভিন্ন কাস্টে বিভিন্ন মতব্বাদ প্রচলিত আছে আফটার লাইফ বা পরের জীবন সম্পর্কে।

তবে সব ধর্মেই একটা কমন জিনিষ পাওয়া যায়- সেটা হল ধর্ম বিশ্বাসী ও আস্তিক দের জন্য আফটার লাইফে সুখ আর সুখ এবং অবিশ্বাসী দের জন্য শাস্তি। মোটামুটি সকল ধর্মের কমন ফিচার এটাই।

মৃত্যু একটা আন সারটেইন টেরিটরি এবং এটা নিয়ে মানবকূল চিন্তিত ছিল সেই চিন্তা শুরু করার সময় থেকেই।

ফলে, ধর্ম প্রচারক রা এটাকেই তাদের অন্যতম মাধ্যম ধরে নিয়েছে ধর্ম প্রচারের জন্য এবং আফটার লাইফ কেই আসল করে তাদের ধর্ম প্রচার করেছে কারন এই জিনিষ প্রমান করাও সম্ভব না আবার ভূল প্রমান করাও সীমিত জ্ঞানে সম্ভব না।

সো, মানুষ কে ধর্মের পদাবনত করতে আফটার লাইফের গল্প সব ধর্মের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার ছিল, আছে এবং যতদিন না মানুষ ডেথ কে একদম ডাইসেক্ট করে পরিপূর্ন বুঝে উঠতে পারবেনা ততদিন থাকবে।

যাই হোক- এবার ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে বিজ্ঞানের দিকে আলো ফেলা যাক।

বিজ্ঞান কি বলে?

হৃদপিণ্ড যখন সক্ত সঞ্চালন বন্ধ করে দেয় তখন দেশের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট মস্তিষ্কে আর রক্ত পৌছায় না ফলে আর ডেটা ও ক্যামিকেল প্রসেস করতে পারেনা মানব দেহ এবং বডিলি ফ্লুইড এর ভাংগন ধরে- এটাকেই ডেথ বলা যায়।

বিজ্ঞান যেহেতু এখনো আফটার লাইফ বা সুপার স্টিসিসাস লেভেলে পৌছাতে পারে নাই, এখানে আমরা আলোচনা করব শুধুমাত্র বায়োলজিকাল দিক থেকে।

হার্ট বন্ধ হবার পরে, বায়োলজিকাল বডীর ডিকম্পোজিশান শুরু হয় কয়েক মিনিট পরেই। এটাকে আমরা বলতে পারি- অটোলাইসিস বা সেলফ ডাইজেশান।

হার্ট অফ হবার পর কোষ গুলা অক্সিজেন এর অভাবে হাস্ফাস করতে থাকে ফলে তাদের এসিডিটি বৃদ্ধি পায়। ফলে কোষের ভেতরের এঞ্জাইম গুলো কোষের মধ্যকার মেমব্রেন বা ফাইবার কে ভেংগে ফেলে একটা ক্যামিকেল রিয়েকশান এর মধ্য দিয়ে। এভাবে কোষ থেকে এনজাইম বের হয়ে যায় । এটা শুরু হয় লিভার এবং ব্রেণ সেলে সবার আগে; যেটা পানি ও এঞ্জাইমে পরিপূর্ন । এভাবে আস্তে আস্তে সকল অর্গান , টিসু ভেংগে যায়। ডেমেজ হওয়া রক্তনালিকা গুলো রক্ত যেখানে সেখানে বের করে দেয় এবং গ্রাভিটির কারনে কৈশিক নালিকা এবং ছোট ছোট শিরায় জমা হয় এবং পুরা শরীর পেইল বা সাদা বর্ন ( রক্ত হীন )ধারন করে।

শরীরের তাপমাত্রা কমা শুরু করে যতক্ষন না এটা পরিবেশ এর টেম্পারেচার এর সমান না হয়। এরপর, দেখা দেয় মেডিকেল এর সবচেয়ে জনপ্রিয় টার্ম- রাইগর মর্টিস। চোখের পাতা, চোয়াল এবং গলায় মাসল ঝুলে যায় । জীবন্ত থাকা অবস্থায়, এক্টিন ও মায়োসিন প্রোটিন আমাদের মাসল গুলোকে লুব্রিকেন্ট ও রিলাক্স রাখত, রাইগর মর্টিস স্টেজে এসে প্রোটিন ফিলামেন্ট এক যায়গায় আটকে যায় ফলে হাত পা বা অন্যন্য জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায় এবং যেটা যেভাবে আছে সেটা সেভাবে লক হয়ে থাকে।

এই স্টেজে, দেহের ইকো সিস্টেমে অবস্থান করা ব্যাকটেরিয়া মূলত সব একশান চালায়। আমাদের দেহ ব্যাকটেরিয়ার এক মারাত্মক আধার যেখানে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ব্যাক্টেরিয়া টিকে থাকে । পরিপাক তন্ত্র এদের বাস এবং এই গাট ব্যাকটেরিয়া আমাদের মরনের পরে একটা বিশাল ভূমিকা পালন করে। এটা নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে, সময়ের সাথে ইন ফিউচারে আমরা আশা করি এদের সম্পর্কে আরো জানতে পারব।

আমাদের ইমিউন সিস্টেম এর জটিল প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা। আমাদের অর্গান গুলো মাইক্রব এ ভরে যায় মারা যাওয়ার সাথে সাথেই এবং আমাদের ইমিউন সিস্টেম কাজ করা অফ করে দেয় মরার সাথে সাথে। আমাদের গাট ব্যক্টেরিয়া যোগ দেয় এই যুদ্ধে এবং তারা খাওয়া শুরু করে পরিপাক তন্ত্র থেকে, এর পর পাশের পেশী এবং এভাবে আস্তে আস্তে যদি দেহ ফেলে রাখা হয় তাহলে এঞ্জাইম ভেংগে ক্যামিকেল কে সোর্চ হিসেবে ইউজ করে পুরা ভেতর থেকে সকল কোষ এবং পেশী কে খেয়ে ফেলে।

এরপর এই গাট ব্যাক্টেরিয়া আমাদের কৌশিক নালিকা, ব্রেণের লিম্প নোড হয়ে লিভার হার্ট এবং স্প্লিন খেয়ে শেষ করে। এটা লিভারে আক্রমনে যেতে ২০ ঘন্টা এবং ৬০ ঘন্টার মধ্যে পুরা বডিতে ছড়িয়ে পড়তে সমইয় নেয়।
এই মাইক্রোবায়োম এটাকের উপর নির্ভর করে ময়না তদন্ত স্পেশালিস্ট রা বের করতে পারেন- কবে নাগাদ দেহের পচন শুরু হয়েছিল এবং কবে নাগাদ মৃত্যু হয়েছিল স্পেসিফিক বডির।

তবে সব কাজ একই রকমের ব্যাক্টেরিয়া করেনা, ভিন্ন ভিন্ন ডি কম্পজিশান স্টেজে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া কাজ করে।

যখন ই সেলফ ডাইজেশান শুরু হয় এবং গাট বাক্টেরিয়া পরিপাক তন্ত্র ছেড়ে ভ্রমনে বের হয় তখন ই একটা মানব দেহের মলিকুলার ডেথ শুরু হয়। সফট টিসু ভেংগে গ্যাস, লিকুইড আর লবনে পরিণত হয়। এটা আরো আগে আস্তে আস্তে শুরু হয় বাট এনরোবিক ব্যাকটেরিয়া এটাকে আরো কুইক করে।

এনারবিক ব্যাক্টেরিয়া গুলো এরোবিক এর চেয়ে আলাদা। এরোবিক এর গ্রো এর জন্য অক্সিজেন দরকার অন্যদিকে এনারোবিক এর লাগে না, ফলে দেহের টিসু ও ফারমেন্টিং এর মাধ্যমে সুগার তৈরি করে, এবং এই মাধ্যমে গ্যসীয় বাই প্রডাক্ট মিথেন, হাইড্রোজেন সালফাইড ও এমোনিয়া বের হয়। এটা শুরু হয় এবডোমেন ও পরিপাক তন্ত্র থেকেই ইউজালি। ভেসেলে আটকে থাকা হিমোগ্লোবিন গুলোকে এনারোবিক ব্যাক্টেরিয়া সালফাহিমোগ্লোবিনে রুপ দেয় ফলে বডি আরো গ্রিনিশ ও মার্বেল ব্লাক কালারে পরিনত হয়।

এদিকে গ্যাস এর উতপাদন এর ফলে স্কিন এর ব্লিস্টার ফুলতে থাকে এবং পুরা শরীরের ত্বকে ছড়িয়ে যায়। আস্তে আস্তে এই ব্লিস্টার লিক করে ত্বক কে লুজ করে ফেলে এবং নামে মাত্র ঝুলে থাকে নীচের হাড় এবং পচন শীল পেশির সাথে। একসময় শরীরের এনাস ও অন্যন্য লিক দিয়ে এই গ্যাস চূড়ান্ত ভাবে বের হয়ে যায়, মাঝে মাঝে এর বেশি গ্যাস জমা হয় ব্লটিং এর ফলে, পুরা পেট বার্স্ট হয়।
ব্লট স্টেজ এর শুরু এবং শেষে বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া কাজ করে এখানে । কিছু নেক্রোফাগাস ব্যাক্টেরিয়া সারা জীবন আমাদের দেহে থাকে এবং মরার পরে তাদের আসল কাজ শুরু করে।

একটা মৃতদেহ হল, মাইক্রোব এবং ইন্সেক্ট দের জন্য আদর্শ জিনিষ তাদের লাইফ সাইকেল এর।

ব্লো ফ্লাইস এবং ফ্লেশ ফ্লাই নামক দুই ধরনের মাছি শেষ স্টেজে এসে ডিকম্পোজিশান এ অংশ নেয়। পচন ধরা দেহের তীব্র দুর্গন্ধে এরা আসে এবং ডিম পাড়ে এবং কলোনী গড়ে তোলে। এই ম্যাগট রা পচা ফ্লেশ এবং মাসল খেয়ে বড় হয় এবং আস্তে আস্তে বড় এডাল্ট মাছিতে রূপ নেয়। এভাবে ডীম থেকে এডাল্ট সাইকেল চলতেই থাকে ( ডিম, লার্ভা, এডাল্ট, ডিম, লার্ভা...........................) যতক্ষন না এই এলাকায় আর কোন খাদ্য না থাকে, অর্থাৎ, হিউমান ক্যাভেডার এ আর কোন কিছু খাওয়ার মত অবশিষ্ট না থাকে।

এভাবে একসময় এই সকল মাছি গুলো মাটিতে মিশে যায় মরার পরে এবং মাটিকে উর্বর করে তোলে মৃত দেহের ইকোসিস্টেমে বড় হয়ে। এছাড়াও এই সকল মাছি ক্যাভাডার বা পচন শীল দেহ থেকে নাট্রিয়েন্ট বা ব্যাক্টেরিয়া মাটিতে নিয়ে ফেলে ফলে যে এলাকায় এই মাছি গুলা ভ্রমন করে, সেই এলাকার সয়েল এর আলাদা নাট্রিয়েন্ট সিস্টেম গড়ে উঠে।

এর ফলে এই মাটি আরো উর্বর হয় এবং প্লান্ট ডাইভারসেশানে ভূমিকা রাখে।

ফলে , এক সময়ের তরতাজা হিউমান বডি মাটির সাথে মিশে প্লান্টের উর্বরতায় কাজ করে এবং আবার ফিরে আসে আমাদের কাছে।

দিজ ইজ এ লাইফ সাইকেল অফ এ হিউমান।


মায়ের ভ্রুণ থেকে যাত্রা শুরু করে গাছ পালা হয়ে আবার প্রকৃতিতে ফিরে আসে শত বছর পরে।


বিজ্ঞান এখনো কোন আফটার লাইফ বা জাজমেন্ট ডে এর সন্ধান পায় নায়, সো আপাতত ভার্ডিক্ট হিসেবে বলা যায়- মরার পর মানব দেহ মাটিতেই ফিরে যায় বা ফিরে আসে আমাদের মাঝে ।।

[link|https://ychef.files.bbci.co.uk/160
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৪৩
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×