somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোঃ খুরশীদ আলম
যারা ইমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ ( আল কুরআন)“সত্য ও সুন্দরকে ভালবাসি, অন্যায়- অবহেলা দেখলে খারাপ লাগে, তাই ক্ষদ্র এ প্রয়াস “

রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর আদর্শ সকল দেশ ও পরিবেশ এবং সকল যুগ ও কালের জন্য

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর আদর্শ সকল দেশ ও পরিবেশ এবং সকল যুগ ও কালের জন্য



বর্তমান প্রগতিশীল ও উন্নতিশীল জগতে চৌদ্দশত বছর পূর্বের আদর্শাবলী কতটুকু ফলপ্রসূ? এই অসাধারণ জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির যুগে রাসূল (সঃ) এর আদর্শ বর্তমান অগ্রগামী যুগের চাহিদা কিভাবে মিটাতে সক্ষম?

আপাত দৃষ্টিতে প্রশ্নদ্বয়ের যৌক্তিকতা দৃশ্যমান মনে হতে পারে। বিশেষত চলমান সময়ে যখন একশ্রেণীবদ্ধ মানুষ ইসলাম বিদ্বেষী লক্ষস্থির করে আক্রমনাত্বক কার্যক্রম ধারাবাহিক রেখেছেন। যাদের ইস্যুভিত্তিক শীতল কর্মকাণ্ডের শিকার হয়ে আধুনা শিক্ষার দাবিদার সহজ-সরল অগণিত মানুষ বিপথে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। দ্বীন শিক্ষার ফরজিয়াতের গুরুত্ব ভুলে দুনীয়ার প্রতি অন্ধ মোহাচ্ছন্নতা এর একমাত্র কারণ। অনেক দিন বেঁচে থাকার আকাঙ্খা এবং সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার স্বপ্ন আমাদের মূল লক্ষ্য হতে বিচ্যুত করে দিয়েছে। রাসুল (সঃ) এর বাণী “ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা সমস্ত মুসলমানের উপর ফরজ” – এর বিকৃত ব্যাখ্যায় বিশ্বাসী হয়ে বদদ্বীনি শিক্ষায় জেনারেশনকে অভ্যস্ত করে তোলার ফলে যা হবার তাই হচ্ছে, ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ আরকান-আহকাম, তাহজিব-তামাদ্দুনকে নিয়ে সন্দেহপোষণমূলক বক্তৃতা-বিবৃতি, স্বাধীন মত প্রকাশের নামে রাসুল (সঃ) ও তার সাহাবাদের নিয়ে কটুক্তির মাত্রা কমবেশি প্রতিদিনই প্যাকটিস হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য এই মিশনে পরিকল্পনাবিদগণ যাদের ব্যবহার করে আসছেন তাদের সিংহভাগই মুসলমানের সন্তান। কিন্তু কেন? ঘুরে ফিরে উত্তর একটাই-দ্বীন শিক্ষার অভাব ও দুনীয়ার জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবার লোভ। ডাক্তার, প্রকৌশলী, বৈজ্ঞানিক, আইনজীবী হওয়াতে কোন বাধা নাই কিন্তু শিক্ষা জীবনটা যদি ইলমে দ্বীন দিয়ে শুরু হয় তাহলে ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ডে মুসলমানের সন্তানেরা ব্যবহার হবে না বলে মনে করি।

রাসূল (সঃ) ও তার সাহাবারা হলেন মানব জাতির চরিত্র গঠনের উপযুক্ত নমুনা যার বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, “হে মোসলমান জাতি! রাসূলুল্লার জীবনের মধ্যে- তাঁহার প্রতিটি কথা ও কাজের মধ্যে তোমাদের জন্য সুন্দর নমুনা ও আদর্শ নিহিত রয়েছে।” মহান সৃষ্টিকর্তা মানুষ দুনীয়াতে পাঠিয়ে তার দুনীয়া ও আখেরাতের ফসল কামাইয়ের নমুনা রাসূল (সঃ) কে দিয়ে উপস্থাপন করেছেন। অপর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, “ হে মোহাম্মদ (সঃ) আপনি আমার পক্ষ হতে ঘোষণা শুনিয়ে দিন যে- হে মানব! তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসার দাবী করিতে চাও, তবে তোমরা আমার অনুসরণ করিয়া চল, তাহা হইলে স্বয়ং আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসিবেন।”
অপর এক আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, “তোমরা আল্লাহর আদেশ পালন কর এবং রাসূলের আদেশ পালন কর।”
মহান রাসূল (সঃ) সমস্ত নবীদের উর্দ্ধে, সকলের উর্দ্ধে তার সম্মান ও মর্তবা। তিনি কোন কথা তার নিজের থেকে বলেননি বরং তিনি যা বলেছেন তা আল্লাহরই কথা। সেই বিষয়ে সত্যায়ন স্বয়ং আল্লাহ পাক করেছেন এভাবে- “যদি সে (মোহাম্মদ (সঃ)) কোন একটি কথাও নিজের তরফ থেকে বানিয়ে বলতো তবে আমার সর্বগ্রাসী হস্তে তাকে ধরিয়া যখন তখন তাহার হৃদয়তন্ত্রীকে ছিঁড়িয়া দিতাম।”
বিষয়টি মাওলানা রুমী (রঃ) এভাবে ব্যক্ত করেছেন- “আল্লাহ তায়ালার বক্তব্যই ঠিক ঠিক অবিকলরূপে রাসূলের কণ্ঠে প্রকাশ পেয়ে থাকে।”
যেহেতু নবীগণের জ্ঞানপ্রাপ্তির সূত্র হলো ওহী সেহেতু নবীগণের কথা, কাজ ইত্যাদি সংক্রান্তে প্রশ্ন উন্থাপন করার কোন সুযোগ নাই। কেউ সুযোগ গ্রহণ করার দুঃসাহস দেখালো তো পক্ষান্তরে সে মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের বাণীকেই সন্দেহ পোষণ করলো। আর সেই কারণে আকাইদের পরিভাষায় উক্ত ব্যক্তি নিজের ঈমানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে নিয়ে ঈমান হারা হলো। যেই কারণে মহান আল্লাহ তায়ালা কোন যুগ, সময়, দেশ, কালের জন্য নয় বরং সৃষ্টির শুরু হতে শেষ পর্যন্ত তার বিস্তৃতি সেই কারণেই মহান নবী (সঃ) কোন নিদিষ্ট সময়, যুগ, কাল, জাতির জন্য নবী নয় বরং কেয়ামত পর্যন্ত সকল বনী আদমের জন্য, সকল সমাজের জন্য, সকল জাতির জন্য তিনি নবী ও তার কথা-কাজ-আর্দশ সবকিছুই দুনীয়া ও আখেরাতে সকল মানুষের জন্য পাথেয়, অবশ্য যারা তা কাজে লাগাতে সক্ষম হন।

শিরোনামের প্রশ্ন দৃশ্যত যৌক্তিক মনে হলেও এর নেপথ্যে রয়েছে সরলমনা সাধারণ মুসলমানের ঈমান ধ্বংস করার অপচেষ্টা। কেননা রাসূল (সঃ) অস্বীকারকারীদের দৃষ্টিতে যতই সেকেলে হোক না কেন, তিনি ছিলেন আদি, অন্ত সকল দেশ ও সকল পরিবেশের সৃষ্টিকর্তা আল্লার রাসূল। মহান সৃষ্টিকর্তা আদি-অন্ত সবকিছুর ব্যাপারে জ্ঞাত এবং উক্ত মহাপজ্ঞাময় আল্লাহর সাথে যেহেতু মহানবী (সঃ) এর দৃঢ় যোগসূত্র বিদ্যমান তাই তার প্রতিটি কথা, কাজ ও ভাবনা-চিন্তার উৎস ছিল স্বয়ং আল্লাহ পাক। যার সত্যতা তুলে ধরে কেয়ামত পর্য্ন্ত বিশ্ববাসীকে মহান আল্লাহ ম্যাসেজ দিলেন-“ মোহাম্মদ (সঃ) নিজের মনোবৃত্তি হতে কিছু বলেন না, তিনি যা কিছু বলেন সৃষ্টি কর্তার তরফ হতে অহীপ্রাপ্ত হয়ে সেই অহীর বিকাশ সাধন করেন মাত্র।” সুতরাং রাসূলের আদর্শ (সুন্নাত) উনার নিজস্ব রচনাকৃত কিছু নয় বরং মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের প্রদত্ত বস্তু। তাই মহানবী (সঃ) এর আদর্শ ও তার সুন্নত বর্তমানেই শুধু নয় বরং কেয়ামত পর্যন্ত অত্যন্ত গৌরবের সাথে সচল। এর সাথে দ্বিমত পোষণকারী, সন্দেহ উৎপাদনকারী কোন মতেই মুসলমান হতে পারে না।


সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৪২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×