somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি অফলপ্রসূ মিটিং এ অশ্বডিম্ব প্রসব এবং পরবর্তী খরানুভূতি

২৪ শে জুন, ২০০৮ রাত ১১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৯-১০ ঘণ্টা অফিসের পর মিটিং হয়, মেয়েদের মাসিকের মতো মান্থলি মিটিং; কোনমাসে রক্তপাত বেশি কোন মাসে কমের মতো কোন মিটিং এর সময়কাল বেশি আর কোনদিন প্রলম্বন একটু কম ঘটে। মাঝে মাঝে আবার প্রধান কার্যালয় থেকে পাল্লুদের আগমন ঘটে। ৫বছর ধরে একই কথা শুনছি - আমাদের গ্রাহক সংখ্যা বাড়াতে হবে, আমানত বৃদ্ধি করতে হবে, সেবার মান বাড়াতে হবে। ঢাকা শহরে মানুষ কয়জন? কয়জনকে ব্যাংকের ছাতার নিচে আনা যায়? বিরক্ত লাগে। এক ছাগলের বাচ্চা বলে আমরা না কি রেলী (বানানটা লিখতে পারছি না, য ফলা নিচ্ছে না) বের করব, আমাদের ব্যাংককে পরিচিত করতে! অফিস আওয়ারের পর এক দু ঘণ্টা রাস্তায় রাস্তায় হাঁটব গ্রাহক বাড়াতে। বাসায় আসি ছটারও পরে। আর অফিসের লোকদের সাথে শুয়ে গেলে পারি অথবা গ্রাহকদের সাথে; ঐটাই ফ্যামিলি কি না! একটা মোজা কিনতে গেলেও না কি ভোলা যাবে না আমি ব্যাংকার, দোকানদারদের সাথে সখ্য করতে হবে। চাকুরীই জীবন চাকুরীই মরণ। অনেকে শুক্রবারেও মার্কেটিং এ বের হয়। হিসাব। সাপ্তাহিক শোয়ার হিসাবও এক্সেলে শিট্‌ বানিয়ে করতে হবে। কোন এক ব্যাংকে একই ডিপার্টমেন্টের দুজন মেয়ে প্রায় কাছাকাছি সময়ে প্রেগনেন্ট হওয়াতে এক শাখা ব্যবস্থাপক তাদের ডেকে নিয়ে বলেছে আমার যাতে ব্রাঞ্চ চালাতে সমস্যায় পড়তে হয় তাই তোমরা প্ল্যান করে এই কাজ করেছো! কে কখন লাগাব বা প্রেগন্যান্ট হব তার রোস্টারও ব্যাংককে বছরের শুরুতে জমা দিয়ে দেবার বিধান করলেই হয়। টার্গেট টার্গেট শুনতে শুনতে বিবমিষা লাগে।
১৫কোটি মানুষের মধ্যে ৫কোটি মানুষও ব্যাংকিং করে না। আমরা বেশিরভাগ মানুষকে ব্যাংকিং করার যোগ্য বলেই বিবেচনা করি না। সেবা সেবা, কিসের সেবা! ফালতু চার্জ কাটা, লোনের উচ্চ মাত্রায় সুদ, তেলা মাথায় তেল দেয়া, এসব করে এখানে ব্যাংকগুলো বেঁচে আছে। এরা (আমিও) যখন সেবার কথা বলে তখন আমার ভীষণ হাসি পায়। একটা চাকরীই তো করে এক একজন। এর বাইরে আর কোন পরিচয় নাই। সেই কবে মাস্টার্স পাস করছে তারপরে আর পড়াশুনা নাই। এখনকার পোলাপান আবার অনেক স্মার্ট। অধিকাংশ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি প্রোডাক্ট বিবিএ এমবিএ করা-এমবিএ তে কি হয় বলতে পারে না। কিছু প্রোডাক্ট অবশ্য আসলেই ভালো।
আমার মনটা আজকে অনেক বিক্ষিপ্ত। এই পেশাটা আমার সব কেড়ে নিলো, শান্তিপূর্ণ ঘুম, প্রেমের সময়, ভাবার সময় সব। কোন বিকল্প ও খুঁজে পাই না। গত ২বছরে একটা ছোট গল্প লিখতে পারিনি। কত প্লট মাথায় বাসায় ফিরে এত শ্রান্ত থাকি আর হয়ে উঠে না। আমার আর শিল্পী হওয়া হলো না। গান ভুলে গেলাম। লিখতে ও ভুলে যাচ্ছি।
আমি তাহলে নরমাল হয়ে যাচ্ছি, হাহ হাহ...আমিও অফিস যাব, বাসায় ফিরব, সঙ্গম করব, বাচ্চা বিয়াবো, বাচ্চার স্কুল - জামাই চক্রে বন্দী হব।
আমি সবকিছুর মুখে পিসাব করি।:(
১৮টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×