somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষের প্রতি অমানুষের নিবেদন

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-----------------------------------
সতর্কীকরণ ও দায়মুক্তিঃ আমি নিশ্চিত আমার এই লেখাটি কেউ পড়বেন না কারণ আপনারা যাদের এবং যেমন লেখা পড়তে ভালোবাসেন আমি বা আমার লেখা সে গোত্রের কিছুই নয়, তাই আপনি এটা পড়েন আমি সে প্রত্যাশা করিনা বরং বারণ করি এই লেখাটি পড়ে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করতে! তারপরেও যদি কেউ ভুল করে এই লেখাটি পড়ে সময় নষ্ট করেন সে জন্য আমি কোনক্রমেই দায়ী নই।
------------------------------------
"আজি হতে সহস্র বর্ষ পরে যে পাঠক পড়িতেছে এই লেখা" তাদের চরণ যুগলে নিবেদন আমার অনুর্বর মস্তিষ্কের অর্বাচীন ভাবনাগুলি।

ইতি, অসভ্য সভ্যতার এক মহা অসভ্য প্রতিনিধি।
তারিখঃ ২১/০১/২০২৩
----------------------------------
প্রশ্নঃ রাষ্ট্র আমার নয় তাহলে রাষ্ট্রের ভরণপোষণ ও মেদ বৃদ্ধির দায়িত্ব আমি কেন নেব?!

হাইপোথিসিসঃ ধর্ম, রাষ্ট্র ও প্রগতি এই তিনে মানব সভ্যতার বেগতি।

আত্ম ভাবনাঃ আমি কে বা আমি কি এই জাতীয় প্রশ্নের উত্তর খোঁজা অবান্তর কারণ আমি তো সবসময় আমিই, তাই আমি কে এটা আমি না জানলেও চলবে যদি অন্যেরা ঠিকঠাক মতো জানে তবে ভালো না জানলে আরো ভালো কারণ তাতে আমার আমিত্বের কোন পরিবর্তন বা লাভ-লোকসানও ঘটে না।
কোন মানুষেরই স্থির কোন চরিত্র নাই, স্থান-কাল পাত্র ভেদে এটা সর্বদা পরিবর্তনশীল। এই পরিবর্তনশীলতা সবার চোখে একইভাবে ধরা পড়ে না কিংবা তার দরকারও নাই। যে যা ভাবে ভাবুক তাতে আমিত্বের কিছু যায় আসে না বরং আনন্দচিত্তে সামনে এগিয়ে যাওয়াই (কখনো কখনো সামনে যাওয়ার জন্য পেছনে যাওয়া) বা স্বাচ্ছদ্যময় জীবন যাপনই মানব জীবনের পরম লক্ষ্য বা গন্তব্য।
অন্যের স্বার্থে বা বৃহত্তর স্বার্থে আত্মত্যাগ অর্থহীন কারণ মানুষ জন্মগতভাবেই 'আমি' কিন্তু সবসময়ই 'আমরা' হবার অভিনয় করি যা আদতেই কখনো সম্ভব নয়। 'আমরা' হবার ভন্ডামি ছেড়ে 'আমি' হলেই জগতের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। জগতের কারো প্রতি বা কোন কিছু প্রতিই কারো কোন দায়িত্ব বা দায়বদ্ধতা নেই সমস্ত দায়িত্ব এবং দায়বদ্ধতা কেবলমাত্র নিজেকে নিয়ে আর সবাই যখন নিজের প্রতি এই দায় দায়িত্ব পালন করবে তখন জগত আপনা আপনি বদলে যেতে বাধ্য। তথাকথিত পরসেবার নামে মানুষ আসলে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত করে এবং ঠকায় নিজেকেই।
পর্যবেক্ষণঃ আমরা মনে বিশ্বাস লালন করি একটা, প্রকাশ করি আর একটা আবার আচরণ করি একেবারেই অন্যটা। মানুষের এই ভন্ডামি বর্তমান সভ্যতার সব সমস্যার সূতিকাগার। ধর্ম এবং প্রগতি নামক যে আফিম এখন বাজারে সয়লাব তা আসলে এক ধরনের বিষাক্ত ফল, কোন মানুষেরই আলাদাভাবে ধার্মিক বা প্রগতির ধ্বজাধারী হবার প্রয়োজন নেই কারণ এই দায়িত্ব পালনের জন্য রয়েছে সময়। ধর্ম বা প্রগতি উভয়েই মানবতার জন্য ক্ষতিকর কারণ এদের কাজই বিভাজন সৃষ্টি। পৃথিবীতে জন্মসূত্রেই সবাই (জীব ও জড়) ধার্মিক এবং প্রগতিশীল কিন্তু এদের আলাদা আলাদা নামকরণ কেবল সমস্যাই সৃষ্টি করে কোন সমাধান দেয় না। আপনি যতই চেষ্টা করেন সময়কে পিছনে চালাতে পারবেন না তা আপন গতিতে সামনে যাবে এবং তার প্রয়োজনে সবকিছু বদল করে বা সৃষ্টি করে সামনে ছুটতে থাকবে।
করুণ বাস্তবতা হলো আমরা কোন ঘটনার ঘটক বা অনুঘটক নই বরং শিকার, এই সত্য যত তাড়াতাড়ি মানুষ বুঝবে তত তাড়াতাড়ি পৃথিবী থেকে বিভাজন হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি দূর হবে।
সিদ্ধান্তঃ যে শত্রু ভীতি বা দৃশ্য+অদৃশ্য শত্রু থেকে রক্ষা পেতে রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানের জন্ম এখন সেই ভীতি প্রায় অনুপস্থিত হলেও রাষ্ট্র নামক জগদ্দল পাথর দিনকে দিন আরও শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান হচ্ছে যা মানব সভ্যতার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর কারণ প্রাকৃতিক ও মানব উৎপাদিত বেশিরভাগ সম্পদই খরচ হয়ে যায় এই রাষ্ট্র নামক দানবের উদর পূর্তি করতে। মানুষকে রক্ষা করার নামে রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিকাশ ঘটলেও(যদিও কোনকালেই এ কথাটি সত্য ছিল না বরং সত্য হচ্ছে শাসকূলকে রক্ষার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থার সৃষ্টি) বর্তমানে রাষ্ট্র মানব দমন, পীড়ন, নির্যাতন ও শোষণের সবচেয়ে বড়, শক্তিশালী ও সর্বাধিক কার্যকর অস্ত্র। শাসকূল তাদের নিজেদের প্রয়োজনে তাদের পোষ্য বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা দেশ মাতৃকা ও দেশপ্রেম নামক আফিম উৎপাদন ও বাজারজাত করে যে আফিমের নেশার ঘোরে লক্ষ লক্ষ মানুষ যুগে যুগে হাসিমুখে প্রাণ দিয়েছে আর আমরা তাদেরকে বীরের মর্যাদা স্মরণ করি। আর সব যুগেই সব ধর্মগুরুরাই শাসক কুলের আনুকূল্য লাভের আশায় এ কাজে শাসকূলকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করে এসেছে এবং এখনো করছে। আসলে দেশ কখনোই মায়ের তুল্য নয় এবং দেশপ্রেম একটি বিভ্রান্তিমূলক মনোবিকার। যদি সবার উপরে মানুষ সত্য তার উপর কিছু নাই এ কথা সত্যি হয় তাহলে রাষ্ট্র ব্যবস্থা মানবকুলের জন্য সবচেয়ে বড় অভিশাপ। তাই মানব কুলের আজন্ম দায়িত্ব এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা তবেই পৃথিবীতে মানুষ মুক্ত ও স্বাধীন হবে।
মানুষ সেদিনই প্রকৃত মানুষ হবে যেদিন পৃথিবীতে রাষ্ট্র নামক কোন কিছুর অস্তিত্ব থাকবে না। সময়ের প্রয়োজনে এই পৃথিবীতে এমন একদিন আসবে যখন ধর্ম এবং রাষ্ট্র বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব থাকবে না আর প্রগতি নামক প্রপঞ্চটি কেবলমাত্র পুথিপুস্তকে হাঁসি ঠাট্টার বিষয় হিসেবে দেখা যাবে।

দায়মুক্তিঃ এই লেখার যেকোন অংশবিশেষ বা সম্পূর্ণ লেখার বিষয়বস্তুর সঙ্গে যে কেউ ভিন্নমত বা অন্য মত পোষণ করতে পারেন এবং ইচ্ছা করলে আপনার যত ইচ্ছা গালাগালিও করতে পারেন। আপনার গালাগালি বা প্রশংসা কোনটাই আমার কাম্য বা প্রয়োজনীয় নয়। তবে কেউ যদি যুক্তি-তর্কের নিয়ম মেনে এই লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমার সাথে প্রকাশ্য বিতর্কে আসতে চান তাহলে সর্বদাই আমি তাকে স্বাগত জানাবো।

স্বীকারোক্তিঃ
***এই লেখাটি বর্তমান সময়ের কোন পাঠকের জন্য নয় এটি সেই ভবিষ্যৎ মুক্ত মানুষদের উদ্দেশ্যে লিখিত যাতে তারা জানতে পারে তাদের আহাম্মক পূর্বপুরুষদের মধ্যেও দু একজনের মানুষ হবার স্বপ্ন ছিল যাদেরকে সমকালীন মানুষেরা উন্মাদ ভাবতো।***
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ২:৫০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গাজার শিশুদের উদ্দেশ্যে - আমরা তোমাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


তোমরা এসেছিলে মাথার উপর বোমা পড়ার ভয়ার্ত গল্প নিয়ে। যে বোমা তোমাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে, লোকালয় ধ্বংস করেছে। আমরা কান বন্ধ করে উদাসীন হয়ে বসে ছিলাম। তোমরা এসেছিলে ছররা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবিতে গণতন্ত্রের নামে মবতন্ত্র

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১০



তথাকথিত গণতন্ত্রকামীদের পীর আল্লামা পিনাকী এবং ছোট হুজুর ইলিয়াস মোল্লার উস্কানীতে দেশজুড়ে চলছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে মবতন্ত্র। আল্লামা পিংকুর যুক্তি হচ্ছে- যে বা যারাই তাদের (গণতন্ত্রকামীদের) সূরে কথা না... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×