somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিক্রমের অসফল অবতরণ এবং কালের কূপমণ্ডুকের উল্লম্ফন

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাদা ধুতি পরিহিত সত্তরোর্ধ্ব কমরেড অগ্রদূত চক্রবর্ত্তী চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন বিছানায় আর তার ব্রাহ্মণ্য ধ্বজা পৈতাখানা পা গলিয়ে বিছানা থেকে ঝুলে পড়েছে মেঝেতে। প্রায় প্রতি রাতেই কমরেড অগ্রদূতের পৈতা তার শরীরে থাকে না, কখনো তার মাথা কিংবা পা গলিয়ে বিছানায় পড়ে থাকে অথবা বিছানা থেকে ঝুলে থাকে, কখনো মেঝেতে পড়ে থাকে, কখনো জড়িয়ে থাকে তার স্ত্রীর শরীরে! সকালে তার চোখ ট্যারা স্ত্রী সুনয়নার ঘুম ভাঙার পর পৈতাখানা চোখে পড়লে আলগোছে তুলে দু-হাতের আঁজলায় নিয়ে কপালে ছুঁইয়ে প্রণাম করেন, তারপর রেখে দেন নিজের বালিশের ওপর। এটা তার বহুদিনের অভ্যাস, সেই বাসররাত থেকে! আর চোখে না পড়লে সুনয়না নিজের কাজে চলে যান। ঘুম ভাঙার পর কমরেড অগ্রদূত চক্রবর্তী নিজের শরীরে পৈতার অস্তিত্ব টের না পেলে প্রথমেই তাকান স্ত্রীর বালিশের ওপর, পেলে পৈতায় প্রণাম করে জড়িয়ে নেন নিজের শরীরে, আর না পেলে স্ত্রীর উদ্দেশে হাঁক ছাড়তে ছাড়তে নিজেই খোঁজেন।

কমরেড অগ্রদূত চিৎ হয়ে শুয়ে থাকায় তার নাক ডাকার শব্দ হচ্ছে, অকস্যাৎ তার ঘুম ভাঙতেই চোখ খুলে তাকান আর তখনই তার মনে পড়ে মধ্যরাতের কথা। মধ্যরাতে তিনি যখন বাথরুমে যান তখন ড্রংয়িংরুমে ছেলে, বৌমা, নাতি-নাতনিদের কথা শুনতে পান। ড্রয়িংরুমে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে চন্দ্রযান-২ চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থানকালে ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে ইসরো’র যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সে-কথা মনে পড়তেই তিনি কিশোরের চপলতায় উঠে বসেন বিছানায়, প্রথমে শরীরে এবং পরে স্ত্রীর বালিশের দিকে তাকিয়ে পৈতাখানা দেখতে না পেয়ে তিনি হাঁক ছাড়েন, ‘কই গো, আমার পৈতাখানা শরীরে জড়িয়েই কি বাথরুমে ঢুকলে?’
বাথরুম নয়, বারান্দা থেকে সুনয়নার উত্তর আসে, ‘সাতসকালে গা জ্বালানো কথা বোলো না, খুঁজে দেখ কোথায় আছে।’
‘গা জ্বালানো কথা বললাম কোথায়, একবার তো পৈতাখানা নিয়েই…’
একবার তেমনটাই ঘটেছিল। পৈতা জড়িয়ে ছিল সুনয়নার শাড়ির সঙ্গে, আর তিনি বাথরুমে ঢোকার পর কমরেডের পৈতাখানা পড়ে গিয়েছিল কমোডের মধ্যে!
বিছানায় চোখ বুলিয়ে ঝুলে থাকা পৈতাখানা দেখতে পান কমরেড অগ্রদূত, হাতে নিয়ে পৈতায় প্রণাম করে শরীরে জড়িয়ে সোজা ঢুকে পড়েন বাথরুমে।

কমরেড অগ্রদূত চক্রবর্তী, কৈশোরকাল থেকেই কম্যুনিস্ট রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তার কাকা বিজন চক্রবর্তীর অনুপ্রেরণায়। তখন অবশ্য তাদের বাড়ি ছিল পূর্ববঙ্গের ঢাকার গেণ্ডারিয়ায়। ১৯৬৫ সালে সালে পাকিস্তান সরকার তাদের গেণ্ডারিয়ার বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবে অধিগ্রহণ করে নেয়, তখন তার বাবা-কাকারা চলে আসেন কলকাতার বেহালায়। ভীষণ কষ্টে তখন তাদের দিন কেটেছে। গেণ্ডারিয়ার বিশাল বাড়ি আর সুখ-স্বাচ্ছন্দ থেকে হঠাৎ-ই তারা নিক্ষিপ্ত হয়েছিল বেহালার অনভ্যস্ত, অভাবগ্রস্ত এবং আটপৌরে জীবনের বৃত্তে। কলকাতায় আসার পর কমরেড অগ্রদূতের কাকা কমরেড বিজন চক্রবর্তীর স্বপ্ন বদলে গিয়েছিল, শ্রেণিহীন সাম্যবাদী সমাজ গড়ার লড়াই ছেড়ে তাকে নামতে হয়েছিল রুটি-রুজির লড়াইয়ে, ফলে তিনি আর রাজনীতিতে আর জড়াননি। কিন্তু কমরেড অগ্রদূতের মাথার ওপর বাবা-কাকা ছিল, তাকে রুটি-রুজির লড়াই করতে হয়নি, তখন সবে তিনি কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়েছেন, টগবগে রক্ত, ১৯৬৬ সালে তিনি সিপিএম এ যোগ দেন। এখন তার বয়স হয়েছে, সক্রিয় রাজনীতি ছাড়লেও এখনো তিনি দলের একনিষ্ঠ সমর্থক। শরীর ভালো থাকলে দলের একটা জনসভাও তিনি মিস করেন না, হোক তা ব্রিগেডের বৃহৎ জনসভা কিংবা তাদের পাড়ার মাঠের ক্ষুদ্র সমাবেশ, রোদ কিংবা বৃষ্টিতেও ভিড়ের মধ্যে একটা লাল ছাতা মাথায় তিনি থাকবেনই।

সেই ১৯৬৬ থেকে আজ পর্যন্ত গঙ্গা-ভাগীরথী দিয়ে কতো জল গড়িয়ে গেছে, তার সমসাময়িক কতো কমরেড মারা গেছেন, তার জুনিয়র কতো কমরেড সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপিতে ভিড়েছে, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম এর ভোট কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৩ শতাংশ, কিন্তু তিনি আছেন তার মতোই, এখনো মার্ক্সবাদী, এখনো সিপিএম। কংগ্রেস, বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস, বামপন্থী নির্বিশেষে পাড়ার ছেলে-বুড়ো সকলেই তাকে কমরেড বলে ডাকে। কেউ কেউ কমরেডের সঙ্গে দাদা, কাকা, জ্যাঠা ইত্যাদি সংযুক্ত করে। কমরেড বললে তিনিও খুশি হন।

বাথরুম থেকে বেরিয়ে নাস্তা আর ওষুধ খেয়ে বিপুল উৎসাহে তিনি পাড়ার মোড়ে নান্টুর চায়ের দোকানে উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। বাড়ির সদর দরজা থেকে একটু এগোতেই পাড়ার হোমিওপ্যাথি ডাক্তার শিবনারায়ণের সঙ্গে দেখা। শিবনারায়ণ বলেন, ‘লাল সালাম, কমরেড!’
‘লাল সালাম!শিবু শুনেছো খবর?’
‘কী খবর?’
‘আরে খবর তো এখন একটাই, বিক্রম নিখোঁজ।’
‘বলেন কী কমরেড! হায় ভগবান, জলজ্যান্ত ছেলেটাকে কাল সকালেও দেখলাম বৌকে নিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে।’
‘আরে সতীশের ছেলে বিক্রম নয়, চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রম।’
‘ও তাই বলুন! আমি ভাবলাম…’
‘চন্দ্রযান-২ চাঁদে পাঠিয়ে বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতে চেয়েছিল। একেবারে মাঠে মারা গেছে। আমি আগেই বলেছিলাম চন্দ্রযান-২ ফেল করবে, ফলে গেল আমার কথা!’
শিবনারায়ণকে চেম্বারে বসতে হবে, রোগী এসে বসে থাকার অজুহাত দেখিয়ে তিনি পা বাড়ান। নইলে আরো কিছুক্ষণ চন্দ্রযান-২ এর বিষয়ে কথা শুনতে হতো, আর অবধারিতভাবেই এর মধ্যে এসে পড়তো রাজনীতি।

কমরেড অগ্রদূত আবার হাঁটতে শুরু করেন নান্টুর চায়ের দোকানের উদ্দেশ্যে। নান্টুর চায়ের দোকানের সামনের দুটি বেঞ্চে তিনজন লোক বসে আছে, সবাই পাড়ার লোক। কমরেড অগ্রদূত দোকানের কাছে যেতেই বেঞ্চে বসা প্রৌঢ় দুলাল সাহা বলেন, ‘এই তো কমরেড এসে গেছেন, লাল সালাম কমরেড। এই নান্টু, কমরেডকে লাল চা দে।’
দুলাল একটু সরে বসে কমরেড অগ্রদূতের বসার জায়গা করে দেন। দুজন যুবক দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায়, একজন নান্টুর উদ্দেশে বলে, ‘দুটো চা দাও নান্টুদা।’
‘বোসো দিচ্ছি।’ নান্টুর হাত আগের চেয়ে বেশি চঞ্চল হয়। তরুণ দুজন বেঞ্চে বসে।
কমরেড অগ্রদূত বলেন, ‘দেখলে দুলাল, বিজেপি কেমন ধরাটা খেল!’
সবাই কমরেড অগ্রদূতের দিকে তাকায়, এমনকি চা বানাতে বানাতে নান্টুর হাতও থেমে যায়, লোকসভা নির্বাচনের আগে নান্টু কাস্তে ফেলে পদ্মফুল হাতে তুলে নিয়েছে।

দুলাল বলেন, ‘আবার কোথায় ধরা খেলো?’
‘আরে চন্দ্রযান-২ নিখোঁজ, আমি তোমাদের আগেই বলেছিলাম চন্দ্রযান-২ ফেল করবে। দেখ, আমার কথা ফলে গেল। বিজেপির চাল মাঠে মারা গেল!’
মধ্য চল্লিশের সুফল বলেন, ‘এখানে বিজেপি’র চাল কোথায় দেখলে কমরেড কাকা?’
কমরেড অগ্রদূত চোখ বড় বড় বলেন, ‘এটা বিজেপি’র চাল নয়!আরে রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতে চেয়েছিল শালা রামভক্ত হনুমানগুলো!’
‘ইসরো বিজেপি’র প্রতিষ্ঠান নয় কমরেড কাকা, এটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৯ সালে যাত্রা শুরু করার পর সব সরকারই ইসরোকে সহযোগিতা করেছে, বিজেপিও তাই করছে। সেটাই করা উচিত। সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি ঢুকিও না তো কমরেড কাকা!’

কমরেড অগ্রদূত ভ্রূ কুঁচকে দুলালের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তোর জন্মের আগে থেকে আমি কম্যুনিস্ট করি সুফল। আমি কর্মী ছিলাম, নেতা নয়। সবকিছুর মধ্যে যদি রাজনীতি ঢুকাতাম না, তাহলে বড় নেতা হতে পারতাম, বিধায়ক হতে পারতাম, কর্মী হয়েই জীবন পার করে দিতাম না। মনে রাখিস কমরেড অগ্রদূত চক্রবর্তী হক কথা বলে, যা সত্য তাই বলে।’

‘আহ তুমি চেতছো কেন কমরেড কাকা! আমি তো বিজেপি করি না, তাই না?আমি তো তৃণমূল করি। বিজেপি’র রাজনীতির বিরোধীতা করি বলে দেশের উন্নয়ন চাইবো না? ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখ, ইসরো আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান, একজন দেশপ্রেমিক ভারতীয় হিসেবে ইসরোর সাফল্যে আমাদের যেমনি আনন্দিত হওয়া উচিত, তেমনি ইসরোর ব্যর্থতায় ব্যথিত হওয়া উচিত।’

‘আরে রাখ তুই, অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময় ধরে কম্যুনিস্ট পার্টি করি, দিনরাত এক করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেরিয়েছি, কৃষকের উঠোনে বসে কলাপাতায় ভাত খেয়েছি, আর তুই আমাকে শেখাচ্ছিস দেশপ্রেম! দেশের কোটি কোটি মানুষ এখনো তিনবেলা ভাত খেতে পায় না, ভালো পোশাক পরতে পারে না, মাঠে-ঘাটে পায়খানা করে। সেদিকে সরকারের নজর নেই, অথচ চাঁদে চন্দ্রযান পাঠায়! ৯৭৮ কোটি টাকা জাস্ট হাওয়ায় উড়িয়ে দিলো। দেশের মৌলিক সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে রাখতেই চাঁদে চন্দযান পাঠানোর হিড়িক! ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে এসবের কোনো মূল্য নেই বুঝলি। ক্ষুধার্ত মানুষের ভাত চাই, চন্দ্রযান নয়। কমরেড সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেছেন, “ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়/ পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।” আর কমরেড দীনেশ দাস বলেছেন, “এ যুগের চাঁদ হলো কাস্তে।” ঘরের মানুষকে অভূক্ত রেখে চাঁদে চন্দ্রযান পাঠানো সাম্রাজ্যবাদী নীতির কৌশল বুঝলি।’

দুই তরুণের একজন চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে, ‘দাদুর বক্তৃতার ঢঙ ভালো। কিন্তু ভাবনায় গলদ আছে। শুধু আপনার নয়, সব বামেদের ভাবনাতেই এই গলদ আছে।
চোখ বড় বড় করে তরুণের দিকে তাকান কমরেড অগ্রদূত, ‘তুমি কে হে, পাড়ায় নতুন নাকি?’
‘হ্যাঁ, দাদু।’
‘ভাড়াটিয়া?’
‘না, ফ্ল্যাট কিনেছি।’
‘তা ভাবনায় গলদ কোথায় দেখলে?’
‘ওই যে বললেন, ৯৭৮ কোটি টাকা জাস্ট হাওয়ায় উড়িয়ে দিলো; গলদটা ওখানেই।৯৭৮ কোটি টাকা হাওয়ায়ি উড়ায়নি বিজ্ঞান চর্চায় খরচ হয়েছে। ব্যর্থতা থাকবেই, তা বলে বিজ্ঞান চর্চা থামিয়ে দিলে চলবে না।’
‘মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে বিজ্ঞানচর্চার নামে যা করা হচ্ছে তা অপচয়।’

‘সারা ভারতবর্ষে কোটি কোটি মানুষ এখনো তিনবেলা ভাত খেতে পায় না, ভালো কাপড় পরতে পারে না, লক্ষ লক্ষ গৃহহীন মানুষ খোলা আকাশের নিচে ঘুমায়। এই ৯৭৮ কোটি টাকা দিয়ে এতো মানুষের মৌলিক চাহিদা আপনি পূরণ করতে পারতেন? পারতেন না। হ্যাঁ, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে হবে, আপনি এই ব্যর্থতার জন্য সরকারের সমালোচনা করুন। দেশের এক হাজার মানুষের হাতে যে সম্পদ আছে তার অর্ধেক ব্যয় করলে দেশে আর গরিব মানুষ থাকবে না। দেশে ধনী আরো ধনী হচ্ছে, দরিদ্র আরো দরিদ্র হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আপনি সে-সবের সমালোচনা করুন। তা না করে আপনি বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে চাইছেন।’

‘আমি বিজ্ঞানের বিরোধীতা করছি না। বলছি বিজ্ঞান চর্চার সময় এখন নয়, আগে মানুষকে খেতে-পরতে দিতে হবে। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে তারপর বিজ্ঞানচর্চায় ব্যয় করতে হবে।’

‘তাহলে কখনোই বিজ্ঞান চর্চা করা হবে না। পৃথিবীর সব দেশ বিজ্ঞানচর্চার ব্যয় বন্ধ করে দিক, তারপরও দেখবেন কোটি কোটি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হবে না। পৃথিবীতে এখন খাদ্য আর বস্ত্রের অভাব নেই, তারপরও কোটি কোটি মানুষের খাদ্য-বস্ত্র জোটে না। কেন জোটে না সেটা অন্য হিসাব, অন্য রাজনীতি। বিজ্ঞানচর্চার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। জগদীশ চন্দ্র বসু যখন বিজ্ঞানচর্চা করেন তখনো ভারতবর্ষে ক্ষুধা ছিল, এখনো আছে। ভারতবর্ষে ক্ষুধার্ত মানুষ আছে বলে তিনি যদি বিজ্ঞান চর্চা বন্ধ রাখতে তাহলে আমরা কি হারাতাম বলুন তো! পৃথিবীতে ক্ষুধার্ত মানুষ আছে বলে অরভিল রাইট আর উইলবার রাইট যদি উড়োজাহাজ আবিষ্কার না করতো, তাহলে আপনার কমরেডরা কিভাবে চীনে উড়ে যেতো বলেন তো!’

‘খোঁচা মেরে কথা বলবে না ছোকরা।’
‘আপনাকে বাস্তবতাটা বোঝাতে চেষ্টা করছি দাদু। বামপন্থীরা লাল বইয়ের তত্ত্ব যতোটা বোঝে, বাস্তবতা ততোটা বোঝে না। যে কারণে আজকে ভারতবর্ষে আপনাদের অস্তিত্ব বিলীন হবার পথে।’
‘তোমাদের মতো তরুণরা সাম্রাজ্যবাদের দালালি করে বলেই কম্যুনিস্ট পার্টি ভারতে সফল হতে পারছে না, যার ফলে ভারতবর্ষের এই দূরাবস্তা।’

‘সবকিছুতেই আপনাদের ওই একই বোল-সাম্রাজ্যবাদী, সাম্রাজ্যবাদের দালাল! এসব ছেড়ে আপনাদের বাস্তবের জমিনে পা রাখতে হবে। আমাদের ভারতবর্ষের বামপন্থীদের সমস্যা কোথায় জানেন? একজন বুদ্ধিদীপ্ত সাধারণ মানুষ আজ যা ভাবে, একজন বামপন্থী তা ভাবে কমপক্ষে তিন বছর পরে। বামপন্থীরা বারবার একই ভুল করে, আর পিছিয়ে যায়, কিন্তু ভুল শোধরায় না, ভুলের বৃত্তে ঘুরপাক খায়।
পশ্চিমবঙ্গের অফিস-আদালতে কম্পিউটার ঢুকুক আপনারা তা চাচ্ছিলেন না। একবার ভাবুন তো পশ্চিমবঙ্গে কম্পিউটার না ঢুকলে আমরা কতোটা পিছিয়ে থাকতাম! সারা পৃথিবী থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন থাকতাম। সময়ের সাথে চলতে না পারলে কল্কে পাবেন না দাদু, ভারতবর্ষ থেকে আপনারা জাস্ট ফুটে যাবেন। ভারতীয় বামপন্থীদের আদর্শেও গলদ আছে। এরা ডারউনেও আছে, আবার কৃষ্ণ-মোহাম্মদেও আছে।’
‘কম্যুনিস্ট পার্টি ছাড়া ভারতবর্ষকে কেউ দারিদ্রমুক্ত করতে পারবে না। কাঁচা বয়সে চাড্ডিরা তোমার মাথাটা খেয়েছে। তুমি এসব বুঝবে না।’

তরুণ কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগে তার সঙ্গের তরুণটি বলে, ‘এই দাদু, তখন থেকে বাল ভুলভাল বকে যাচ্ছেন, মুখ বুজে শুনে যাচ্ছি। চাড্ডি কে? আমরা চাড্ডি? বাল ভোটও তো দিতে যাইনি। ভোটের দিন গালফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরেছি। আর আপনি চাড্ডি মারাচ্ছেন বারা। কেউ উচিত কথা বললেই আপনাদের কাছে সে চাড্ডি, না?’
‘এই ছোকরা মুখ খারাপ করবে না।’ ধমকের সুরে বলেন কমরেড অগ্রদূত।
‘মুখ খারাপ করতে আপনি বাধ্য করেছেন। আপনি চাড্ডি বললেন কেন?’
‘চাড্ডির ভাষায় কথা বললে চাড্ডি বলবো না?’
‘বাল বলেছে ও চাড্ডির ভাষায়। বুড়ো হাবড়া কোথাকার!’
‘থাপড়ে দাঁত ফেলে দেব বেয়াদব।’ উত্তেজনায় উঠে দাঁড়ান কমরেড অগ্রদূত।

প্রথম তরুণ দ্বিতীয় তরুণকে বুঝিয়ে থামানোর চেষ্টা করে। দুলাল আর সুফল কমরেড অগ্রদূতকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে। প্রথম তরুণ চায়ের বিল মিটিয়ে দ্বিতীয় তরুণের হাত ধরে টেনে নিয়ে বেরিয়ে যায় রাস্তায়।

দুই
ঢাকার মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের দক্ষিণপাশে ফুটপাতের চায়ের দোকানে বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছে বছর পঁয়ত্রিশের মোহাম্মদ জুলফিকার হোসেন। সামনে বসা আরো দুজনকে বিস্কুট-কলা-চা খাওয়াচ্ছে। সামনের চওড়া রাস্তায় কিশোর-যুবকেরা ক্রিকেট খেলছে। এই শহরে খেলার জায়গার বড় অভাব। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের যে রাস্তাগুলোতে যান এবং মানুষ চলাচল কিছুটা কম, বিকেল হলেই সেই রাস্তাগুলোতে ছেলেরা ক্রিকেট খেলে। ক্রিকেট খেলায় মত্ত এই ছেলেগুলোকেও একটু আগে বিস্কুট-কলা-চা খাইয়েছে জুলফিকার। পরিচিত যাকে পাচ্ছে, তাকেই বিস্কুট-কলা-চা খাওয়াচ্ছে জুলফিকার। পরিচিত এক যুবক ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাবার সময় জুলফিকারকে দেখে সালাম দেয়। জুলফিকার সালামের জবাব দিয়ে বলে, ‘কই যাইতাচোস রায়হান?’
‘একটু উত্তরায় যামু বাই।’
‘চা খাইয়া যা।’
‘অহন খামু না বাই, টাইম নাই।’

বেঞ্চে বসা আবরার নামের একটি ছেলে বলে, ‘তর টাইমের মায়রে বাপ, বাইয়ে কইতাচে খাইয়া যা। বিস্কুট-কলা-কেক-চা যা খাইতে চাস খাইয়া যা আজ। কাইল আর এই সুযোগ পাইবি না।’

দোকানের দিকে এগিয়ে একটা নিজেই কলা আর ড্রাই কেক নিয়ে বেঞ্চে বসতে বসতে রায়হান বলে, ‘বাইয়ের মনে অয় আইজ দিল খুশ।’
আবরার বলে, ‘খালি খুশ নাকি ব্যাডা, বাই আইজ উড়তাচে, পাংখা লাগাইয়া উড়তাচে!’
‘কোনো বালা খবর আচেনি বাই?’

জুলফিকার বলে, ‘আরে খবর তো অহন একটাই-আকাটা মালাউনের বাচ্চারা চান্দে চন্দ্রযান পাঠাইচিল, কাইল রাইতে চান্দে নামার কতা আচিল। হেইডার আর কোনো খোঁজ নাই। মনে অয় ভাইঙ্গা পড়চে।’

মুখের খাবার গলা দিয়ে নামিয়ে রায়হান বলে, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এট্টা দারুণ খবর শুনাইলেন বাই। সক্কাল থেইকা পেরেশানির মইদ্যে আচিলাম, কোনো খবর লইতে পারি নাই। আপনি অহন দিলডা জুড়াইয়া দিলেন বাই!’

‘আরে হুন, সক্কালবেলা ঘুম থেইকা উইঠ্যাই ফেসবুকে ঢুইকা দেহি এলাহি কাণ্ড, ভাই-ব্রাদারগো পোস্টে ফেসবুক ছয়লাব, সবাই উল্লাস করতাছে মালাউনগো চন্দ্রযান নিখোঁজ হওনের খবরে! মনে কর খুশির ঠ্যালায় আমার দিলের মইদ্যে এট্টা রঙিন বাজি ফুটলো! মনে অইলো হালায় আইজকা ঈদ। কোরবানি ঈদে দেড় লাখ টাকার গরু কোরবানি দিয়াও এতো আনন্দ পাই নাইক্যা!

এই কথা আজ আরো অন্তত বিশবার বলেছে জুলফিকার। এ কথা সত্য যে গভীর রাতে ভারতের চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর প্রকাশ হবার পর থেকে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মুসলমান অতুল আনন্দ- উল্লাসে মেতেছে, শালীন-অশালীন ভাষায় তাদের এই বুনো উল্লাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

‘হাচা কইচেন বাই। কী যে আনন্দ লাগতাচে!’ হাত বাড়িয়ে চা নেয় রায়হান।
জুলফিকার বলে, ‘অই আমারেও আর এট্টা চা দে। তোরা আর এট্টা কইরা চা খাইলে খা।’
হাবিব নামের একটি ছেলে বলে, ‘বাই যহন কইতাচে, দে আর এট্টা কইরা।’

জুলফিকার এই এলাকার তরুণদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তরুণরা কোনো সমস্যায় পড়লে, অন্য এলাকার ছেলেদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা বা মারামারি হলে তারা তাদের জুলফিকার ভাইয়ের শ্মরণাপন্ন হয়। জুলফিকারও বুক পেতে তাদেরকে রক্ষা করে। আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়। ফলে জুলফিকারের একটা ফোনেই শ’খানেক যুবক হাজির হয়ে যায়।

জুলফিকারের ইচ্ছে আছে আগামীতে ওয়ার্ড কমিশনার পদে নির্বাচন করার। এজন্য সে জনগণের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করে, বিশেষত যুবকদের। বারোটার দিকে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে সে বাসা থেকে বের হয়, কখনো আওয়ামীলীগের স্থানীয় অফিসে গিয়ে বসে, কখনো ওয়ার্ড কমিশনারের অফিসে গিয়ে বসে, বিহারী সাইফুলের সেলুনে গিয়ে বসে, এখানকার চায়ের দোকানে বসে। দুপুরে একফাঁকে বাসায় ভাত খেতে যায়, তারপর আবার এইসব জায়গায় আড্ডা দিয়ে তার সময় পার হয়। সারাদিনে এই জনসংযোগ ব্যতিত তার অন্য কোনো কাজ নেই। আয়-রোজগারের চিন্তা নেই। তাদের ছয় কাঠার প্লটটা একটা ডেভলপার কোম্পানীকে দিয়ে অনেকগুলো ফ্ল্যাট পেয়েছে। সেই ফ্ল্যাটের ভাড়ায় তাদের দুই ভাইয়ের সংসার চলে। জুলফিকার এসএসসি পাস করার পর আর লেখাপড়া করেনি। সে এখন কট্টোর আওয়ামীলীগ কর্মী। জুলফিকারের বাবা জামায়াত করতেন, জুলফিকার একসময় ছাত্র শিবির করতো। ২০০৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিজয়ের পর হাওয়ার গতি বুঝে সে যুবলীগে যোগ দেয়। এখন সে যুবলীগের বেশ সক্রিয় কর্মী।

পারিবারিকভাবেই জুলফিকাররা ভারতবিরোধী। যে কোনো বিষয়েই ভারতবিরোধীতা করা, ভারতের অমঙ্গল কামনা করা, ভারতের কোনো ক্ষতি হলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা, ভারতকে রেণ্ডিয়া বলা, ভারতীয়দের মালাউন বা চাড়াল বলা জুলফিকারদের পারিবারিক সংস্কৃতি!
যে কোনো বিষয়েই জুলফিকার ভারতের চাড়ালগো চক্রান্ত খুঁজে পায়, হোক তা আইসিসির কোনো কর্মকাণ্ডে কিংবা মিয়ানমারের সেনা কর্তৃক রাখাইনের রোহিঙ্গা বিতারণে। কেউ ভারতে কোনো ভাল কাজের প্রশংসা করলেও বলে, ‘হালায় ভারতের দালাল।’ ভারতের সিনেমা দেখার সময় সুন্দরী অভিনয়শিল্পীদের দেখে বলে, ‘রেণ্ডিয়ার একটা সুন্দরী মালু যদি করতে পারতাম!’

গতমাসে ভারত সরকার যখন সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়, তখন ভারতীয়দের গুষ্ঠি উদ্ধার করে ছেড়েছে জুলফিকার, সারাদিন চায়ের দোকানে বসে ভারতীয়দের গালিগালাজ করেছে। আর রাতে নফল নামাজে বসে কাঁদতে কাঁদতে আল্লাহ’র কাছে প্রার্থণা জানিয়েছে, ‘আল্লাহ আপনি মেহেরবান, আপনি দয়ালু। ভারতীয় কাফের, জালিম, মালাউনদের হাত থেকে আপনি কাশ্মীরের মুসলমান ভাই-বোনদেরকে রক্ষা করুণ আল্লাহ। যারা আপনার ইবাদত করে, তাদেরকে আপনি হেফাজত করুণ আল্লাহ। আপনি কাশ্মীরকে পাকিস্তানের অংশ বানিয়ে দিন। আল্লাহ, এই দুনিয়া আপনার হাতের খেলনা। মাওলা, ভারত কেন ভাঙে না? আপনি ভারত ভেঙে খান খান করে দিন। ভারতের আরো কিছু রাজ্য মুসলমানদের দিয়ে দিন আল্লাহ।’

চায়ে চুমুক দিতে দিতে জুলফিকার বলে, ‘সব আল্লাহ’র কুদরত বুঝচোস! আল্লায় চাইলে কী না অয়! মালাউনরা এতো কায়দা-কসরত কইরাও চান্দে ওগো যান পাঠাইতে পারলো না। আর দ্যাখ আমাগো নবীজিরে, কোনো যন্তরপাতি লাগে নাই, কোনো তেল-ডিজেল-ফুয়েল লাগে নাই। একটা বোরাক লইয়া সাত আসমান পাড়ি দিয়া আল্লাহ’র আরশে চইল্যা গেছে! আল্লাহ’র সাথে দেখা কইরা খানা-পিনা কইরা আইচে। আবার আমাগো সাঈদীসাবরেও চান্দে দেহা গেচিল। আল্লায় চায় নাই, কাফেরগো বানানো যান চান্দে যাক, চান্দের মাটি নাপাক করুক।’

‘হ বাই, আমারো তাই মনে অয়। আচ্চা বাই, মালাউনরা যেইডা চান্দে পাঠাইচিল, এইডা কী দিয়া চলে?’
‘ওই ফুয়েল-টুয়েল কিছু এট্টা অইবো।’
‘আমার কী মনে অয় জানেন বাই?’
‘কী?’
‘ওরা গরুর মুত ভইরা পাঠাইচিল, হের লাইগ্যাই ভাইঙ্গা পড়চে।’
হা হা করে শব্দ করে হেসে ওঠে জুলফিকার। অন্যরাও তার সাথে হেসে ওঠে। হাসির দমক কমলে জুলফিকার বলে, ‘তুই হালায় এট্টা পুংটাই রইয়্যা গেলি! পারোসও, মুত দিয়া চন্দ্রযান! হা হা হা…।
আরো কিছুক্ষণ হাসি-ঠাট্টার পর রায়হান বলে, ‘বাই যাইগা।’
‘যাইবি? যা।’

রায়হান সবার সাথে হ্যান্ডশেক করে উঠে পা বাড়ায়, জুলফিকার তাকে ডাকে, ‘ওই হুন..।’
রায়হান ফিরে তাকালে সে বলে, ‘মালউনগো চন্দ্রযান নিয়া তিনডা পোস্ট দিচি ফেসবুকে। লাইক-কমন্টে করিস।’
রায়হান বলে, ‘হ বাই করুমনে, উত্তরা থেইকা ফির‌্যা আইয়াই করুমনে।’
চলে যায় রায়হান, কিন্তু চন্দ্রযান-২ নিয়ে ওদের আলোচনা চলতেই থাকে।


তিন
কাল সকালে পূর্ব পৃথিবী আবার সূর্যের আলোয় আলোকিত হবে, ইসরোর বিজ্ঞানীরা নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করবে। নিশ্চয় চাঁদের উদ্দেশে আবার তারা চন্দ্রযান পাঠাবে, যদি আবারও ব্যর্থ হয়, তবু ঘুরে দাঁড়িয়ে আবারও চন্দ্রযান পাঠাবে চাঁদে। আজকের ব্যর্থতার ভিতের ওপর দাঁড়িয়েই নিশ্চয় ইসরোর চন্দ্রযান একদিন সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে; হয়তো তাদের মহাকাশযান মহাবিশ্ব তন্ন তন্ন করে একদিন খুঁজে পাবে নতুন নতুন গ্রহ আর কোনো এক ভিনগ্রহে পেয়েও যেতে পারে প্রাণের সন্ধান। সেদিনও হয়তো কালের কূপমণ্ডুক কোনো কমরেড ভাত আর পায়খানার দোহাই দিয়ে বিজ্ঞানের এই অগ্রযাত্রার সমালোচনা করবে; সেদিনও হয়তো জুলফিকারের মতো কোনো বাংলাদেশী মুমিন মুসলমান তাদের নবীর মেরাজের কাল্পনিক গল্পে বিভোর থেকে কিংবা কুখ্যাত খুনি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ওরফে দেইল্যা রাজাকারকে চাঁদে দেখার গুজবে বিশ্বাস রেখে ইসরো এবং ভারতের অমঙ্গল কামনা করবে আর ভারতীয়দের গালাগালি করবে। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা থেমে থাকবে না, বিজ্ঞান এগোবে তার নিজস্ব গতিতে আর উন্মোচন করবে নতুন নতুন বিষ্ময়।

ঢাকা।
সেপ্টেম্বর, ২০১৯।










সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৫
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×