somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেনো রামপাল, বাশখালী, মাতারবাড়ি, রূপপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা???

১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাশখালি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,পাবনার রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ প্রভৃতি তথাকথিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে আমাদের দেশে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পবিরোধী এবং বাস্তবায়ন প্রত্যাশী দুটি পক্ষ দেখা যায়। এ দুটি পক্ষের মধ্যে আশ্চর্যজনকভাবে শাসকগোষ্ঠীই উঠেপড়ে লাগে প্রকল্প বাস্তবায়নে কিন্তু সমাজের বুদ্ধিজীবী,প্রগতিবাদী,যুক্তিমনষ্ক মানুষ এসব প্রকল্পের ঘোরতর বিরোধিতা করে রীতিমতো প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়।
শাসকদলগুলোর আগ বাড়িয়ে এমন উন্নয়নবাঞ্চার কি ইচ্ছা? এসকল প্রকল্প বাস্তবায়নে এতো তড়িঘড়ি কেনো? –এজাতীয় প্রশ্নগুলোর আগে জনগণের মনে দ্বিধাবিভক্তি জাগে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ তো ভাল কথা তবে কেনো বিরোধিতা???
অতীব সরল এই শেষোক্ত প্রশ্নের ব্যাখ্যাই আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু যেখানে দেশের শিল্প,কৃষির প্রত্যাশিত উন্নয়নকল্পে বিপুল বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রয়োজন সেখানে এরূপ প্রকল্পবিরোধিতা উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করার জন্যই নয়তো??
পুঁজিবাদী ,উদারবাদী মুক্ত অর্থনৈতিক লেনাদেনার এই যুগে প্রতিনিয়ত সম্পদ পুঞ্জীভূত হচ্ছে । সম্পদ পুঞ্জীভবনের সাথে উদারবাদী অর্থনীতি দেশে দেশে বহুজাতিক চরিত্রে নিজস্ব কর্পোরেট গোষ্ঠীর প্রসার ঘটাতে ব্যস্ত। সেইসাথে বিদেশী পুজিপতি গোষ্ঠীর সমান্তরালে দেশীয় পুজিপতি গোষ্ঠীও তাদের ব্যাবসায়ীক আয়োজন বাড়াতে সচেষ্ট। এই কর্পোরেটবাণিজ্য প্রসারের জন্য অত্যাবশ্যকীয়ভাবে ‘এনার্জি সাপ্লাই’ প্রয়োজন। স্বাভাবিকভাবেই দেশীয় এসকল পুজিপতির স্বার্থ সংরক্ষন করতে গিয়ে সরকারএসকল এনার্জি প্রোডাকশনের প্রকল্প হাতে নেয়। বাংলাদেশের যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেসবের প্রত্যেকটির সাথে বেশি-বিদেশি যৌথ কোম্পানি নিযুক্ত।
শাসকদলের এসকল উন্নয়নপ্রকল্প বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরনের চিন্তার প্রেক্ষিতে সাধুবাদযোগ্য কিন্তু বাস্তবে কি ঠিক তাই? মোটেও তা নয় উপরন্তু সেসকল প্রকল্প পরিচালনার জন্য যে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলো যেমন প্রশ্নবিদ্ধ অন্যদিকে এসব প্রকল্পকে ঘিরে সরকার তথা শাসকশ্রেনীর লুটপাট আর গোপন নেই বরং এক শ্বেতপত্র। এসব প্রকল্পের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিস্তর লেখালেখি এখন হচ্ছে কাজেই সেদিকে আলোচনা তোলা থাকলো। এখন শুধু বিশ্লেষন করা যাক মানুষ এবং সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা এবং মানুষ- প্রকৃতির সহাবস্থানিক উন্নয়ন তত্ত্বের বাইরে গিয়ে কেনো এসব মানববিধ্বংসী এবং জনবিরোধী উন্নয়ন তত্ত্ব সারা দুনিয়াজুরে ঘাড়ে কেনো নিঃশ্বাস ফেলছে?
রামপাল থেকে রূপপুর সকল প্রকল্পের উদ্দেশ্য খুবই সুমধুর আর তা হলো বিদ্যুৎ উৎপাদন । কিন্তু প্রশ্ন হলো রামপালে ঠিক কি কারনে এনটিপিসি কে এবং আমাদে দেশীয় ওরিয়নকে দাওয়াত দিয়ে এনে সুন্দরবন ধ্বংসের আয়োজন করা হলো?
উত্তর খুবই পরিষ্কার তবে হাইপোথিক্যাল।
এই সরকারের সাথে ভারতের দহরমমহরম কারো অজানা নয়। আর ভারতকে ট্রানজিট দেয়া, আবাসন খাতে বিনিয়োগের চুক্তি করা, ঋণ চুক্তি করা, তিস্তা ইস্যু,সীমান্ত হত্যা ইস্যুতে সরকারের নতজানু অবস্থান এবং বিগত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ভারতের সমর্থন প্রদান ইত্যাদি প্রেক্ষাপট আমাদের বলে দেয় ভারত আমাদের তথা আমাদের সরকারের কতো কাছের বন্ধু! এতো বড় বন্ধুত্ব যে বাণিজ্যখাতে গিয়ে কড়া নাড়বে না তা কি করে হয়। ভারতীয় লুটেরা কোম্পানির দক্ষিন এশীয় বাণিজ্য প্রসারে মোদির প্রেস্ক্রিপশন এদেশে বাস্তবায়ন করতে নিরবিচ্ছিন্ন পাওয়ার সাপ্লাই অত্যন্ত প্রয়োজন। সেসাথে দেশীয় পুজিপতির যথেচ্ছা মুনাফা কারবারির আয়োজন ঠিকঠাক করতেও রামপাল ,মাতারবারির বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রতিষ্ঠা ।এখানে গ্রাহক কিংবা দেশীয় গণমানুষের বিদ্যুৎচাহিদার ধোয়া তুলে তথাকথিত প্রকল্পের জনবান্ধবতা সত্যের অপালাপমাত্র। মূলত দেশী বিদেশী মুনাফালভী কোম্পানির মুনাফা তথা বাণিজ্য প্রসারই এইসকল পাওয়ার প্রডাকশনের উদ্দেশ্য সে কথা বুঝতে অতি বিজ্ঞ হবার দরকার নাই।
রূপপুরের পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথা আমরা সকলেই জানি। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর পর শাসকরা আবারো সোচ্চার। এই ২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমানবিক বিদ্যুৎ নিয়েও অনেক কথা হচ্ছে । এর ক্ষয়ক্ষতি ,ঝুঁকি এখন আলোচনার মূলে অথচ শাসকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আলোচনা কিংবা জনমত কিছুই সরকারের তরফ থেকে করা হয় নি। এ প্রকল্পতে ক্ষয়ক্ষতি ,ঝুঁকি কতটা হতে পারে তা জাপানে ফুকুশিমা বিপর্যয়ই বলে দেয়।

খুব বড় প্রশ্নটি হলো – কেনো শাসকগোষ্ঠী এসকল প্রকল্পকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেয়?

#প্রথমত, প্রথাগত ডেমোক্রেসির নির্বাচনী বৈতরণী একটি বড় ফ্যাক্টর। এই নির্বাচনী উত্তাপে টিকে থাকতে কিংবা জয়ী হতে জনগনের সামনে যেকোনরূপে নিজেদের হঠকারী উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরতে ব্যাস্ত । জনতার মনোরঞ্জনের জন্য দৃশ্যমান এবং বস্তুগত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনার নেপথ্যে রয়েছে জনতার ভোটসংগ্রহ মনোবাঞ্ছা। অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পরা জনগনের কাছে প্রকৃতার্থে উন্নয়ন থেকে মুখ্য হয়ে উঠে বস্তুগত অবকাঠামোনির্ভর প্রকল্প । জনগনের কাছে দায়বদ্ধতাহীন এসকল শাসকের উন্নয়নচিন্তা পরিবেশ ,প্রান, প্রকৃতিকে তোয়াক্কা না করে নির্বাচনী প্রতিযোগীতার ট্রামকার্ড হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
এ কারনেই উন্মুক্ত জমিতে কালভারট দেখা যায়, অখ্যাত শহরে কোটি টাকার স্টেডিয়াম দেখা যায়, পরিকল্পিত নগরের পরিবর্তে ফ্লাইওভারের বাহার দেখা যায়।
# দ্বিতীয়ত, এই বিশ্বব্যবস্থায় উন্নয়ন বলতে আসলে যা বুঝায় সেটি প্রশ্নবিদ্ধ। বিশ্বে উন্নয়ন বলতে প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিই বুঝায় । অর্থনীতির এই রেসে হুহু করে শিল্প,মুনাফা উভয়ই বেড়ে চলছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভঙ্গুর ইউরোপ পুনর্গঠনে বিশ্বের বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদরাও এই প্রবৃদ্ধি বড়ানোর ফরমূলা প্রদান করেন। উন্নয়নের সোপান ঠিকঠাক রাখতে শিল্পায়নের গতিকে এমন উন্নাসিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে মানুষ আর সভ্যতার অস্তিত্ব নিয়ে এই মানুষকেই এখন ভাবতে হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধীতোর সময়ে উদারবাদী নব্য সাম্রাজ্যবাদী মুক্ত অর্থনীতি শিল্পায়নসর্বস্ব প্রবৃদ্ধিকেই তার সমগ্র অগ্রগতি বলে ঢোল পেটাচ্ছে যেখানে মানব অস্তিত্বের হুমকি যে হতে পারে সেটা তাদের মাথায় আসেও নি। এই আবর্তে পড়েই আমাদের মতো দেশগুলোর উন্নয়ন ঐ প্রেসক্রিপশনেই হয়। যেখানে পরিবেশ থোরাই কেয়ার হয় কারন পুজিপতি জাতিক /বহুজাতিকের কাছে মুনাফাই মূল লক্ষ্য। ফুলবাড়িয়া আর বাঁশখালির গুলির চরিত্র বুঝতে হলে মুনাফার অঙ্ক বুঝতে হবে। এই মুনাফার অঙ্ক রামপালে সুন্দরবন ধ্বংস করবে, বাশখালিতে লাশ ফেলেছে সামনে জমিও লুট করবে,মাতারবারিতে দখল করবে।
এসকল মুনাফার অঙ্ক + উন্নয়ন ভাবনার সাথে আমাদের সরকার কি ঘোরের মধ্যে-
১) রুপপুরে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে সরকার তিনটি দিক বাস্তবায়ন করতে চায়। প্রথমত, পুজিপতিদের ব্যাবসা করার ক্ষেত্র অবাধ এবং অধিক স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ করা দ্বিতীয়ত, এই প্রকল্পকে ঘিরে দেশিবিদেশী লুটেরাদের পকেট ভারি করা এবং তৃতীয়ত হলো সরকার দেখাতে চায় আমরাই প্রথম দেশে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানিয়েছি এবং বিদ্যুৎ চাহিদা মিটিয়েছি।
পরিশেষে , সরকার এ ইস্যুকে যেকোন নির্বাচনে জেতার ট্রামকার্ড হিসাবে ব্যবহার করবে অথবা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার “বেশি উন্নয়ন বনাম কম গণতন্ত্র” তত্ত্বে আরেকটি পালক যুক্ত করবে উন্নয়ন হিসাবে।
২)এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হলে পুজিপতিদের ব্যাবসার শ্রী ঘটবে যা খুবই ইতিবাচক ঐসকল পুজিপতিদের জন্য । সনাতন ধাচের উন্নয়ন ভাবনার মধ্যে নিমগ্ন থেকে পুজির বিকাশের ধারাতে যখন প্রবৃদ্ধি ঘটবে আরো তখন সরকার আরেক দফা উন্নয়নতত্ত্ব হাজির করবে । আর তাতে যদি আরো রামপাল ,মহেশখালী তে ভারতীয় বিনিয়োগের যৌথতা পাওয়া যায় তবে তো ক্ষমতায় আকড়ে থাকার ভারতআনুগত্যের নিদর্শন স্বরুপ মোদি প্রেরিত ব্যাবসায়ীতোষণের ঠিকাদারিও হয়ে যায়।
কিন্তু উন্নয়নও হলো ,ওরিয়ন আরো ধনী হলো, প্রবৃদ্ধিও বাড়লো কিন্তু
এই উন্নয়ন যদি বাশখালির মতো গুলি করতে উদ্যত হয়
এই উন্নয়ন যদি সুন্দরবনে উজার করে
এই উন্নয়ন যদি ফুলবাড়িয়াতে লাশ ফেলে
এই উন্নয়ন যদি রুপপুরসহ পুরো অঞ্চলের ক্যান্সার বিস্তারের কারন হয়
এই উন্নয়ন যদি জায়গাজমি দখল করে মুনাফা অর্জনের আয়োজোন হয়
তবেও কি সেটি উন্নয়ন। এই পৃথিবী মানুষের কাজেই মানবের অস্তিত্তের সাথে যা কিছু বিট্রে করে সেটিকে যদি উন্নয়ন বলাই যেতো তবে পারমানবিক বোমার ফ্রিস্টাইল ব্যাবহারে আপত্তি থাকারও কথা নয়। মানবিক বিপর্যয়ের আর উন্নয়ন যেখানে সমান্তরালে অগ্রসর হয় সেখানে উন্নয়নতত্ত্বকে আধুনিক প্রযুক্তিসাপেক্ষ এবং যুগোপযোগী করা বাঞ্ছনীয়।
অর্থাৎ যদি কোন উন্নয়ন প্রকল্পের জনবান্ধবতা,জনআকাঙ্খার বিপরীতে ব্যাবসায়ী, দেশি- বিদেশী লুটেরার স্বার্থ প্রকটরূপে ধারন করে তবে সেই প্রকল্প যেকোন বিচারেই পরিত্যাজ্য। সরকার দেশের ব্যাবসায়ীশ্রেনীর কাছে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে তারা অবাধ বিদ্যুৎসুবিধা প্রদান করবে কাজেই এখানে এনার্জি প্রডাকশনের সুবিধাভোগী জনগন নয় একটি বিশেষ শ্রেনী।
সারাবিশ্বের যেসকল দেশগুলো এনার্জি প্রোডাকশনের দিক থেকে এগিয়ে সেসকল দেশগুলো তাদের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে কয়লা, পারমানবিক খাত, তেল ,গ্যাস প্রভৃতির সাহায্যে শক্তি তথা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতো । কিন্তু বিশ্বব্যাপী বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ,ইকোলজি, ইকোসিস্টেম বিপর্যয়ের দরুন সেসকল দেশগুলো ভাবতে বাধ্য হয়েছে এনার্জির বিকল্প উৎস খুজতে যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বব্যাপী কয়লা এবং পারমানবিক খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হচ্ছে। জার্মানি তার কয়লা, পরমানু খাতের প্রকল্পগুলো বাতিল করছে। জাপান ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর যাবতীয় পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে ভাবতে শুরু করছে। রাশিয়া ,ফ্রান্স সকল প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন রাষ্ট্রই এসকল খাতের প্রকল্প কমিয়ে আনছে কিন্তু আমাদের মতো দরিদ্র দেশগুলো এই যুগে এসে মান্ধাতার যেসকল অকার্যকর , অসময়োপযোগী প্রযুক্তি গ্রহন করছি শিল্পায়ন ,বিশ্বায়নের ফ্যান্টাসিতে পরে। কৃষির মতো নির্ভরশীল খাতকে পাশ কাটিয়ে আমরা তাদের অনুকরনে অভিজাত শিল্পবিলাস করার রোমান্টিকতায় গা ভাসাচ্ছি। অথচ আমাদের দেশের প্রত্যাশিত উন্নয়নতত্ত্ব হওয়া উচিত কৃষিভিত্তিক, শিল্পভিত্তিক নয়। কৃষিপ্রধান শিল্পনীতিকে উপেক্ষা করে যখন নানান মুনাফালোভীদের খপ্পরে দেশ পরে যায় তখনই উদ্ভব ঘটে আগ্রাসী এবং জনবিরোধী উগ্র শিল্পায়নভাবনা। এই শিল্প ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতেই প্রয়োজন পরে তড়িঘড়ি এনং সহজে স্থাপনযোগ্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের। শাসকরাও উঠেপড়ে লাগে কারন পরিবেশ, প্রকৃতির দীর্ঘমেয়াদি ভাবনার থেকে ক্ষনিকের শিল্প উন্মাদনা তাকে ভোটের রাজনীতিতে ভালো সুবিধা করে দেবে। আর সে কারনেই এসকল প্রকল্প হঠকারী , অবৈজ্ঞানিক ,স্বার্থনিয়ন্ত্রিত বলে প্রতীয়মা।।

এখন প্রশ্ন হলো বিদ্যুৎ/ শক্তির পরিবেশবান্ধব উৎস কি আদৌ আছে?????

পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে এমন এক জ্বালানি উৎস অনুসন্ধান জরুরী যেটি একদিকে যেমন জ্বালানি চাহিদাও মেটাবে অন্যদিকে পরিবেশ,প্রান, প্রকৃতিকেও সুরক্ষিত রাখবে । একবিংশ শতাব্দীর জ্বালানিনীতিতে তাবৎ বিশ্বেই এসব আলোচিত হচ্ছে , নবায়নযোগ্য জালানি উৎপাদন তেমনই এক আলোচ্য প্রযুক্তি। প্রকৃতিতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তিভান্ডার রয়েছে যেমন-
#নদী/ ঝরনা/সাগরের পানির স্রোতধারা( বাংলাদেশের বিভিন্ন নদী/ পাহাড়ী ঝরনা)
#বায়ুপ্রবাহ( বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিশাল সম্ভাবনা)
#ভূগর্ভস্থ তাপীয় শক্তি
#সৌরশক্তি(বাংলাদেশে ইতিমধ্যে জনপ্রিয় এবং দিন দিন বাড়ছে)

প্রাকৃতিক এসব বিদ্যুৎ উৎস সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব । বাংলাদেশের উচিত পতিতপ্রযুক্তির অনুগামী না হয়ে এসকল খাতে গবেষণা বাড়ানো। অহেতুক মানুষ, সভ্যতার বিরুদ্ধবাদী প্রযুক্তির দ্বারস্থ না হয়ে প্রান ,প্রকৃতি সুরক্ষা করে এমন এনার্জি প্রোডাকশন এর সোর্স খুজে বের করা উচিত। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক গবেষনা , এর থেকে অধিক প্রয়োজন শুধুমাত্র অর্থনীতিক প্রবৃদ্ধির উন্নয়ন ভাবনা পরিত্যাগ করে প্রকৃত জনকল্যান আকাঙ্খায় দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই জ্বালানি উৎস খুজে বের করা।












সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×