একাকিত্ব জীবনের জন্য আরামদায়ক নয়। দীর্ঘদিন একা থাকলে মানুষ নাকি চরম অসামাজিক হয়ে ওঠে, কারো সাহচর্য সইতে পারে না। কিছুটা পেঁচার মতো, আলোও ভালো লাগে না। খুব স্বাভাবিক। মানুষ একা থাকতে থাকতে বাঁচার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। মনে করে সে এই দুনিয়ায় অদরকারি।
এক রকম অসুখ আছে, যাকে বলে অ্যানথ্রোপোফোবিয়া। এ ধরণের মানুষ ভিড় ও মানুষ দেখতে পারে না। এরা একাকিত্ব বা নিঃসঙ্গতাই বেছে নেয়।
একাকিত্বের অপর নাম সুখে-দুঃখে নির্বিকার থাকা। জীবনে আসলে সুখ বলে কিছু নেই। ওটা দুঃখের অনুপস্থিতি মাত্র। মানুষ যতই মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করুক, দিনের শেষে সে প্রচণ্ডভাবে একা ও একান্ত। সেখানে কারো কোনো প্রবেশাধিকার নেই। অনুপ্রবেশের প্রয়াসও বৃথা।
বস্তুত মানুষ একা থাকতে পারে না বা চায় না, কারণ মানুষ জন্মগতভাবে আসঙ্গপ্রিয়। সুখ হোক বা দুঃখ, কারো না কারো সঙ্গে ভাগাভাগি করা চাই। আর কিছু না হোক, কলহ করার জন্য হলেও সঙ্গী দরকার। মনোকষ্টে আমরা অনেক সময় আক্ষেপ করে বলি, স্বজনের চেয়ে পর ভালো, পরের চেয়ে জঙ্গল ভালো। আসলেই কি তাই!
স্বার্থপরতার কারণে কেউ কারো ভালো দেখতে পারি না। সবাই সবাইকে প্রতিপক্ষ মনে করি। অথচ ভেবে দেখুন, একেবারে একা কি থাকা যায়?
আমরা সবাই একা। এসেছি একা, যাবও একা। মাঝখানে কিছুটা সময় সম্পর্ক গড়ার অপপ্রয়াস মাত্র। জীবনটা শুধুই যাপনের জন্য, যেখানে একাকীত্ব থাকবে, প্রচুর অনর্থক শব্দসম্ভার থাকবে, আবেগের অপচয় থাকবে, কিন্তু সুখ থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:২৮