[গাঢ়] সতীনাথ ভাদুড়ীর ঢোঁড়াই চরিত মানসের কোন খন্ডের সাথে এই কাহিনীর কোন মিল নাই। কাজেই খোঁচ ধরিয়া সময় বরবাদ করিবেন না। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লিখিত কিঞ্চিৎ অশালীন পোস্ট, শিশুরা দূরে গিয়া খেলো। [/গাঢ়]
ভোদাই আজ সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছে, হস্তে একটি ঠোঙ্গা।
আমি খুশি হইলাম। যাক, আমার সংস্পর্শে আসিয়া সে লোকাচার শিখিয়াছে। কারো সহিত বিদ্যালাভের নিমিত্তে সাক্ষাৎ করিতে গেলে যে কলাটামূলটাকচুটা সঙ্গে উপঢৌকন হিসাবে লইয়া যাইতে হয়, এই বিদ্যা সে আয়ত্ব করিয়া ফেলিয়াছে। অবশ্য তাহার ঠোঙ্গায় কলা, মূলা বা কচু থাকিলে আমি নিদারুণ হতাশ হইতাম। ঐসব আমি খাই না।
ভোদাই খুশি খুশি স্বরে কহিল, বন্ধু মুখফোড়, বড় একটি থালা লইয়া আইস। গরম গরম পিঁয়াজু খাই।
আমি খুশিমনে হাঁক পাড়িয়া ভৃত্য ধানুকে ডাকিলাম। সে একটিবড় থালা ধুইয়া মুছিয়া আনিয়া রাখিলো। পিঁয়াজু আমি পছন্দ করি।
ভোদাই ঠোঙ্গা খুলিতে গিয়া আবার থমকিয়া গিয়া বলিল, "আচ্ছা, পতিরা কি একটু ভীরু প্রকৃতির হয়?"
আমি পন্ডিতসুলভ শ্রান্ত মুচকি হাসি দিয়া কহিলাম, "নির্ভর করে কাহার পতি, সেই তথ্যের উপরে!"
ভোদাই বলিল, "যেমন?"
আমি বলিলাম, "যদি আমার প্রতিবেশিনী বিল্লুর আম্মুর পতি হয়, তাহা হইলে নিরতিশয় ভীরু প্রকৃতির লোক হওয়া স্বাভাবিক। বিল্লুর আম্মু সকালে ছোলা ভক্ষণ করে, বারবেল ভাঁজিয়া সংসদে পাঁচবার চক্কর মারে, জিমে গিয়া শরীরচর্চা করে, তাহার হাতের একটি কীল খাইলে কোরবানির গরুকেও জুতা শুঁকাইয়া চাঙ্গা করিতে হইবে।"
ভোদাই একটু বিমর্ষ হইয়া ঠোঙ্গা খুলিতে ভুলিয়া গিয়া কী যেন ভাবিতে লাগিলো।
আমি ভদ্রভাবে বলিলাম, "পিঁয়াজু জুড়াইয়া গেলে স্বাদ একটু কমিয়া যায় শুনিয়াছিলাম ...।"
ভোদাই বলিল, "কিন্তু ধর, সেই প্রকার কোন খান্ডারনী মুশকো মহিলার পতিই হইতে হবে এমন তো কোন কথা নাই। ধর গিয়া, সভাপতি?"
আমি একটু অসহিষ্ণু হইলেও ধৈর্য ধরিয়া বলিলাম, "তাহা নির্ভর করে সভার প্রকৃতির উপর। সভার সভ্যরা যদি সেরকম অসভ্য প্রকৃতির হয়, তাহা হইলে সভাপতি মাঝে মাঝে দুর্বল চরিত্রের হইতে পারেন।"
ভোদাই আবার ঠোঙ্গা খুঁটিতে খুঁটিতে কী যেন ভাবিতে লাগিলো।
আমি একটু জোর তাড়া দিলাম, "বাহ, বেশ ভাজা ভাজা করিয়াছে মনে হয়?"
ভোদাই বলিল, "কিন্তু ধর, আরো বড় কিছুর পতি যদি হয়? ধর গিয়া, রাষ্ট্রপতি?"
আমি বিষণ্ন হাসিয়া বলিলাম, "রাষ্ট্রপতি তো মহা ক্ষমতাধর মানুষ, তাহার কি দুর্বল হওয়া সাজে?"
ভোদাই ঠোঙ্গা খুলিয়া থালায় পিঁয়াজু ঢালিয়া দিল।
খাইতে গিয়া দেখিলাম, পিঁয়াজুর মান ভালো নহে। পিঁয়াজুর মশলা ভালোমত বাটা হয় নাই, তাহারা পরস্পরের সহিত মিলিয়া মিশিয়া থাকিতে পারে নাই, দানা দানা হইয়া ছড়াইয়া গিয়াছে।
মিছিমিছি বকাইলো ভোদাইটা! আমি চটিয়া গিয়া বলিলাম, "আরে, ইহাকে পিঁয়াজু বলে? যত্তোসব বাসি পচা জিনিস টোকাইয়া আনিয়াছো। এই পিঁয়াজুর তো মেরুদন্ডই নাই! ইহাকে আর যা-ই হোক পিঁয়াজু বলা চলে না!"
ভোদাই দুঃখিত চিত্তে মাথা নাড়িয়া কহিল, "তাহাই তো দেখিতেছি। চল এক কাজ করি, ইহার নতুন নামকরণ করিয়া খাইয়া ফেলি। পয়সা নষ্ট করিয়া কী লাভ?"
আমি ক্ষুব্ধস্বরে বলিলাম, "নতুন নাম? কী নাম রাখিবো?"
ভোদাই গম্ভীর ভঙ্গি ধরিয়া কহিল, "ইয়াজু।"
আমি থতমত খাইয়া ধানুকে হাঁক পাড়িয়া চা দিয়া যাইতে ডাকিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০