রাব্বির আর হামহুমা কামা রাব্বাইয়্যানি সাগিরা।
আব্বার সাথে আমার অনেক স্মৃতির মধ্যে সম্ভবত: সবচেয়ে রোমান্চকর এবং গর্বের স্মৃতিটি হচ্ছে একাত্তরের ডিসেম্বরের এক সকালে, নেত্রকোনার সীমাণ্তবর্তী সুসং দুর্গাপুর থানা্য, আব্বার তৎকালীন কর্মস্থলের সামনের মাঠে। মফস্বলের একজন দেশপ্রমিক সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সক্রিয় সমর্থনের জন্য স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় ছিলেন, পাকসেনাদের তৎকালীন সেনা ছাউনি বাঘমারা ক্যাম্পে কয়েকদিন ব্যাপী অবরুদ্ধ এবং নির্যাতিত হয়েছিলেন, এবং পরবর্তীতে হানাদার বাহিনীর নজরবন্দী ছিলেন স্বাধীনতার পুর্বমুহুর্ত পর্যন্ত। একাত্তরের ডিসেম্বরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে সুসং দুর্গাপুর থানা যেদিন হানাদারমুক্ত হলো, সেদিন অনেক মুক্তিযোদ্ধা এসেছিলেন আব্বার সাথে দেখা করতে। তাদের একজনের ষ্টেনগান নিয়ে আব্বা আকাশের দিকে গুলি ছুঁড়েছিলেন অনেকগুলো, মুখে বিজয়ের হাসি, পাশ থেকে আমি মুগ্ধ চোখে দেখেছিলাম সে হাসি।
স্বাধীনতার আনন্দমুহুর্ত উদযাপনরত, ষ্টেনগান হাতে স্বাধীনতার পক্ষের সেই উদ্বাহু প্রসন্নমুখই আব্বাকে নিয়ে আমার অন্যতম গর্বের স্মৃতি।
সেদিন অনেকের বাবা-মা ভাই-বোনেরাই করেছিলেন অনেক আত্নত্যাগ, দেশের জন্য, দশের জন্য, গরিষ্টের কল্যানের জন্য। একাত্তরের স্বাধীনতা আর্জনের উদযাপনে ব্যয়ীত বুলেট এবং বিক্রম কেবল "ব্যয়" ছিলো, নাকি ছিলো আরো মহত্ত্বর কিছু অর্জনের লক্ষ্যে সাধিত এক মহৎ "বিণিয়োগ", সে প্রশ্নের উত্তর মহাকাল কিভাবে দেবে তা নির্ভর করছে আপনি, আমি এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কিভাবে সে স্বাধীনতার "সদ্ব্যবহার" করছি, করার চেষ্টা করছি, তার ওপর। মানুষের মুক্তির সংগ্রাম জারী থাক।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৯ ভোর ৪:৪৫