somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাধু বাবা, আমি, হিমালয় অথবা একটি মশার কামড়

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে শেষ পর্যন্ত হিমালয়ে চলেই আসলাম। বাকি জীবন এখানে ধ্যান করেই কাটিয়ে দেবো। হিমালয়ের কোনো এক অজানা যায়গাতে দাঁড়িয়ে আছি। একাধারে ক্লান্ত ও শ্রান্ত। হাটাহাটির ফলে বেশ তৃষ্ণার্ত। ঢক ঢক করে অনেক খানি পানি পান করলাম। আবার হাটতে লাগলাম। কিছুক্ষন পরেই অনুভব করলাম প্রকৃতি আমাকে মিসকল দিচ্ছে। কতক্ষন আর সহ্য করা যায়। ভালো একটা যায়গা দেখে হালকা হয়ে নিলাম। এবার যাওয়া যাক। হাটা ধরেছি। “বৎস দাঁড়াও”, আকাশ বাতাশ কম্পিত করে শব্দ দুটি আমার কানে এলো। এই নির্জন হিমালয়ে কে আমাকে ডাকে? ভূত এফএমের কথা মনে পরলো। আমি ভয়ে কাপতে কাপতে অজ্ঞান হওয়ার আগ মুহুর্তে দেখলাম সামনে ইয়া জটা ধারি গায়ে লেংটি পরা ইয়া বড় বড় লাল চোখ নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে এক আজব লোক। এক অজানা কারনে তার মাথা ভেজা। আমি আর সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেলাম।

জ্ঞান ফেরার পরে দেখি সেই অদ্ভুত লোক আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কোনো মতে জিজ্ঞাসা করলাম
-আপনি কে, এই খানেই বা কি করেন?
>বৎস, আমাকে তুই চিনবি না। কোনো এক সময় বাড়ি ছেড়ে এই হিমালয়ে এসেছি। এখানেই তপস্যা করে দিন কাটে আমার।

ওনার হিমালয়ে থাকার কথা শুনে খুশিই হলাম। আমিও হিমালয়ে সাধনা করতেই এসেছি, একজন গুরু পাওয়া গেলো।

>বৎস তুই আজকে আমার জীবন বাচিয়েছিছ। বল তুই কি চাস।
-(অবাক হয়ে) আমি আপনার জীবন বাচালাম কিভাবে?
>একদিন ধ্যান করা অবস্থায় এই বরফের মাঝে জমে বরফ হয়ে গিয়েছিলাম বৎস। তোর উষ্ণ প্রসবনে সে বরফ গলে যাওয়ায় আজ ১২ বছর পর আমি বরফ মুক্ত হয়েছি।

এতক্ষনে কাহীনি বুঝলাম। সে সময় তার মাথা ভেজা থাকার কারনও বুঝলাম। আগে রাস্তা ঘাটে এই কাজ করার জন্য কতই না ভোগান্তির শিকার হতাম। কুকুরের দৌড়ানি খাইছি, মানুষের দৌড়ানি খাইছি। একবার তো ধরা পরে কিছু নগদ নারায়ন ও দেয়া লেগেছিলো। আর আজ সেই কাজ, সেই “ইয়ে” করার ফলে একজন সাধকের জীবন বেচে গেছে। নিজের প্রতি নিজেরই গর্ব হচ্ছে।
আমাকে চুপ থাকতে দেখে সাধক বললেন

>তুই আমার জীবন বাচিয়েছিস বৎস, এর বিনিময়ে আমি তোর দুইটি ইচ্ছে পুরন করে দেবো।

কথা টা শুনে আমার ভেতরটা চকচক করে উঠলো। যে জন্য হিমালয়ে ধ্যান করতে আসলাম, সে উদ্দেশ্য বোধহয় ধ্যান করা ছাড়াই পূর্ন হয়ে যাবে।

>বল বৎস, তোমর ইচ্ছের কথা আমাকে বল।
-আমি অনেক ধনের মালিক হতে চাই!
>(কাশতে কাশতে) কেনো বৎস, একটা তে কি পোষাচ্ছে না? মানুষ একটা সামলাতেই কোমর ভেঙ্গে ফেলে, আর তুই অনেক চাস?! কোন হারবালের ফাইল খাস বৎস?
-ইয়ে মানে আমি ধন-সম্পত্তির কথা বলছি।
>ওওওও, আগে বলবি তো। আমি মনে করেছিলাম......... থাক সে কথা, তোর ইচ্ছে পূরন হয়ে যাবে। তোর শেষ ইচ্ছে কি বৎস?
মনে মনে শেষ ইচ্ছের কথা টা ভেবে নিলাম। এই সেই ইচ্ছে, যেটার জন্য সুদুর হিমালয়ে চলে এসেছি সাধনা করতে।
-দয়াল বাবা, আমাকে এমন ক্ষমতা দিন যাতে আমি পৃথিবীর সকল মেয়ের মন জয় করতে পারি।

বেশ কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো, মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখলো। অদ্ভুদ নিষ্ঠুর হাসি দিয়ে বললো
>বাবারে,এই ক্ষমতা যদি আমার থাকলে আমি এই হিমালয়ে পইরা থাকি? এই কাজের জন্যই আমি এই হিমালয়ে পইরা আছি। কিন্তু এখনো সেই সক্ষমতা অর্জন করতে পারি নাই। তুই বুঝি এই জন্যই হিমালয়ে আইছোস? যা বাপ, নিজের ঘরে ফিরা যা।
আমিও তব্দিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। সাধু বাবার সাধু ভাষার হঠাৎ পরিবর্তন হলো ক্যান? সাধু বাবাও তাহলে ছ্যাক খেয়ে হিমালয়ে আসছে!
- সাধুবাবাও তাহলে ছ্যাকা খেয়েছিলেন। তা আপনিও কি স্যান্ডেলের ম্যাসাজ খেয়েছিলেন যে একদম সোজা হিমালয়ে এসে পড়েছেন?
বলেই হাসতে লাগলাম, ওদিকে সাধু বাবা রেগে আটচির(চৌচিরের দ্বিগুন) হয়ে গেছে।
>আমার সাথে বেয়াদবি করিস মূর্খ............ ঠাস

ঠাপ্পরের ব্যথায় ঘুম ভেঙ্গে গেলো। উঠে দেখি আমার ডান হাত আমার বাম গালে আছে। হাত নামিয়ে দেখি সেখানে একটা মশাও আছে। নাহ, আজ কাল মশার যন্ত্রনায় ঘুমানোও যায় না। দেশটা গেলো
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×