৩২ টা বছর কেটে গেল
অনেক স্বপ্নের জাল ছড়িয়েছি;স্বপ্ন সারথি
মা।স্বপ্ন তন্দ্রাচ্ছন্ন রাত্রি একেবারেই শেষ প্রান্তে।
মায়ের স্বপ্ন হয়তো ভোরের আযানেই ভেঙ্গে গেছে
আর আমি কলিংবেল বাজাই।রোজ
সন্ধ্যার পরে।
রাস্তায় গণিকা ভেঙচি মারে, হয়তো নপুংশক
নয়তো কাঙ্গাল ভাবে।
মায়ের ফোন যেন আতঙ্কের সুর ধ্বনি
চারুলতা।আমার দ্বিতীয় স্বপ্ন সারথি; আমার একমাত্র আদরের ছোট বোন।
২০ হাজার টাকার যৌতুক; তবু তাকে বিদায়
জানাতে হবে। চুপচাপ,মায়ের আকুতি
যেন একখানা পাথর বুকে বসিয়ে দিয়েছে।
দ্বারে দ্বারে হাত বাড়িছে।টিউশনি ।আমার একমাত্র
চাকরি সেখানেও অগ্রীম চেয়েছি।
দেওয়ালে মাথা ঠুকেছি, টাকা পাইনি তবু।
দাদা। যেন একঘা ছুরি বসিয়ে দিল।চুপচাপ এ পাশে
আমি।চিরদিনের জন্য আমি অন্যের বাড়ি চলে যাচ্ছি।মূহুর্মূহ কান্না আর
আমি চোরাবালিতে হাবুডুবু খাচ্ছি।
চির বিদায় বোন আমার ,আমায় তুই
ক্ষমা করে দিস।
৩২ টা বছর কেটে গেল
স্বপ্নের জালখানি ফিকে হয়ে গেছে
ঘরটা সাইডওয়াল আর উপরে থাকবে
ঢেউ খেলানো টিন।আমার তৃতীয় স্বপ্ন
সারথি ।এখনও আমি সাইডওয়াল ঘরে থাকি
আর উপরে ঢেউ খেলানো টিন।তবে
বৃষ্টির ঝুম ঝুম শব্দ পাইনা,পাই মাস শেষে বাড়িওয়ালার শব্দ
চয়নের ঝাড়ি।
আশা আমার নদীতে বেঁচে থাকার গাড়ি
তাইতো এখনও বায়োডাটা পাঠাই।
মুখের আগাছাগুলো বড্ড জ্বালা দিচ্ছে;
সপ্তাহ শেষে ২০ টাকা কেটে নিচ্ছে।
রেখে দিয়েছি।খরচের খাতা কমিয়ে আনতে আনতে
সকালের নাস্তা আর দুপুরের খাবার এক করে দিয়েছি।
দাড়িতে চুলে শরৎচন্দ্রের দেবদাস বনে গেছি
আশঙ্কাগ্রস্থ ছাত্রীর পিতা।বললেন আজ থেকে আপনার ছুটি
ধোঁয়া আচ্ছন্ন ঢাকা আর বড্ড ভারী বাতাস
রমনার বেঞ্চ আর স্বর্গের কয়েকটা বড়ি
নির্ঝরনীর পথ ধরে হেটে চলেছি।একজন ফেরশতা
মারলেন খোচা,সামনেই নরক।
বিরক্তি নিয়ে উঠে বসি।স্যার, স্যার,পেয়েছি ;জঙ্গি নয়তো হিরোইনচি।
বুঝিলাম আমার স্বর্গ আর বেশি দূরে নয়।
হ্যানকাপ হাতে এই প্রথম যাচ্ছে কোন স্বর্গবাসী।
আর পেছনে পড়ে রয় আমার নরক যন্ত্রনা
আর স্বর্গীয় বেঞ্চখানি।
ছবিসূত্রঃ-নেট
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৩