প্রথম স্যাটেলাইট মহাশুণ্যে যায় ১৯৫৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়ন বর্তমান রাশিয়ান ফেডারেশনের হাত ধরে যার নাম ছিলো স্পুটনিক। আর আমরা আমাদের মালিকানায় প্রথম স্যাটেলাইট মহাশূণ্যে পাঠাতে পারলাম ২০১৮ সালের ১১ই মে দিবাগত রাত ২ টা ১৪ মিনিটে, যার নাম ব্ঙ্গবন্ধু-১। যদিও আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে নয় তবে স্টেপতো ফেললাম। তবে হ্যাঁ, আমাদের সন্তানেরা অলরেডি আন্তর্জাতিক মহাশুণ্য সংস্থায় কাজ করছে। আমাদের দরকার ছিলো আর্থিক সক্ষমতা। সেটা যেহেতু অর্জনের পথে, তাই তার হাত ধরেই আমাদের সন্তানেরাও স্বল্পসময়ে নিজেরাই তাও পারবে। মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। স্বপ্নটাতো আগে দেখতে হবে।
ধরেন আমরা এতদিন পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলতাম। তারমানে পাবলিক স্যাটেলাইট ইউজ করতাম টেলিসম্প্রচার ও ইন্টারন্টে ইউজে। যেহেতু আর্থিক সক্ষমতা হয়েছে তাই সামাজিক স্ট্যাটাস ও কস্ট কমানোর জন্য এবং নিজের ইচ্ছামত চলার ইচ্ছা থেকেই নিজস্ব স্যাটেলাইট পাঠালাম। এতে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেলো বুঝলাম না। আমি ফাইন্যান্স সেক্টরের মানুষ এবং ভালকরেই জানি বছরে আমাদের কিপরিমান অর্থ অনর্থে রুপান্তরিত হয়, সেখানে এই এমাউন্ট বড় কিছু নয়। ভোটের মাঠে শুধু চেয়ারম্যান-মেম্বার, রাজনৈতিক রথী-মহারথীরা এর চাইতেও বড় অর্থ নিয়মিতই আত্মসাৎ করে। পারফেক্টলি হ্যান্ডেল করতে পারলে এই স্যাটেলাইটের বিনিয়োগ উঠে এসে লাভজনকও হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। কিন্তু বেশীবুদ্ধিমানরা চাচ্ছেন এটা যেনো ব্যর্থ প্রজেক্ট হয়। খুবই দু:খজনক। পাকিমনারা এটা চায়, সেটা অামি জানি তাই তাদেরকে উপেক্ষা করি। কিন্তু এর বাইরেও একটা শ্রেণী কি কারনে এরকম করে আমি জানি না।
একটা কান্ট্রির যখনই আর্থিক উন্নয়ন ঘটতে থাকে তখন কিছু অপ্রয়োজনীয় ও বাহুল্য খরচ হয়, এবং এটা অর্থের সমাগমের কারনেই হয়। এটা বাইপ্রোডাক্ট। কিন্তু এই অর্থের অপচয়(?) আর্থিক উন্নতিরই ইন্ডিকেটর। এটা ঠিক আর্থিক উন্নয়ন যেনো সমাজের সর্বস্তরে কমবেশী সমান হয় তা ঠিক রাখার চেষ্টা রাষ্ট্রকে করতে হবে।
হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন, জনপ্রিয়তা হচ্ছে নেমে যাবার সিঁড়ি। ফেসবুকে বা ব্লগে অনেক সেলিব্রিটি(?) সেপথেই হাঁটছেন। বেকুবদের সাথে কখনো আমি তর্কে যাই না। কারন তাদের সাথে তর্কে গেলে তারা আমার লেভেলেতো যেতে সক্ষম হবেনা বরং তাদের চিন্তার দীনতা'র কারনে তাদের লেভেলে আমাকে নামিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে।
আরেকটা কথা, শিক্ষায় আমরা কাংখিত সফলতা পাইনি ঠিক, তবে একেবারে কিছুই হয়নি এটা যারা বলে তাদেকে মুর্খ বলতেও কষ্ট হয়। আমাদের আরো বিনিয়োগ দরকার শিক্ষায় ও স্বাস্থ্যতে। তাই বলে বাকী সব বন্ধ করে দিতে হবে যারা বলে তাদের চিন্তার দৈণতা আমাকে পীড়া দেয়। আমিরিকাকে বলা দরকার তোমার অনেক নাগরিক না খেয়ে ফুটপাথে থাকে, তুমি এসব স্পেস স্টেশন-টন বন্ধ করে দাও। চীনকে বলি তোমার মানবাধিকার কৈ মিয়া ? তুমি আগে গনতন্ত্র দাও তারপর বাকি সব করো। ইন্ডিয়াকে বলি, ঐ বাটা তোদের অর্ধেক লোক রাস্তায় হাগে। তাদেরকে টয়লেটে পাঠিয়ে তারপর সিলিকন সিটি বানাও। এই সমস্ত কথা তাদের কোন নাগরিক বলে কিনা তা আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে।
অনেক অসঙ্গতি ও অনিয়ম নিয়েও অন্তত বর্তমান স্পিডে চলতে পারলেও বাংলাদেশ নেক্সট ২০ বছরে অন্যউচ্চতায় পৌঁছাবে এটা বোঝার মত সক্ষমতা বাংলাদেশের ও বিশ্বের অনেকেরই আছে।
যারা এই স্যাটেলাইট নিয়ে টিটকিরী করছে, তারা তাদের এই টিটকিরীটাও ঐ স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই করবে কিছুদিন পর, এই সত্যটা বোঝার সক্ষমতাও তাদের নাই। পুরোজাতি কাউন্টডাউন করেছে সফল উড্ডয়নের, আর একটা শ্রেণী কাউন্টডাউন করেছে উড্ডয়ন বিনষ্ট হবার জন্য। প্রথমদিন যখন উড্ডয়ন হলোনা, কি আনন্দ এই শিবিরে। পরেরদিন যখন সফল উড্ডয়ন হলো ওরা এখন বলে কি তা দেখার বাকী আছে।
পৃথিবীতে মনে হয় আমরাই একমাত্র জাতি যাদের একটা বড় অংশ নিজের অর্জনেও গর্ব করতে সক্ষম নয়। তাদের মস্তিস্ক এতটাই আনইউটিলাইজড। নিজের অর্জন নষ্ট হলেই তারা বেশী খুশি হয়। এই একই ঘটনা পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় হয়েছে, চীনের কাছ থেকে সাবমেরিন কেনার সময় দেখা গেছে, ফ্রান্সের কাছ থেকে স্যাটেলাইট ক্রয়ের সময়ও দেখা গেলো। সমুদ্রসীমার বিরোধ মিমাংসার সময়ও এই বিষয়টি দৃষ্টিগোছর হয়েছে। বাঙ্গালী জাতির এই আজব অংশের জন্য অামার দুঃখ হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:০৯