কিছুদিন পূর্বে আমার একটি বন্ধু নামীয় কলংক আমাকে দূরআলাপনী যোগে জানাইলো যে, সে আরো দুটি নরাধম সহযোগে আমার বাটিতে সত্তর ভ্রমন করিতে ইচ্ছুক। ইহা শুনিয়া আমি অতিশয় আহ্লাদিত হইয়া উঠিলাম। ইহার মধ্যে দুইটি নরাধমের সহিত আমার তিনটি বৎসর ব্যাপী কোন প্রকার সাক্ষাত করিবার অবকাশ হয়নাই। আমি উহাদিগকে আমার বাটির ঠিকানা জানিয়ে আমার গোয়াল ঘরখানি পরিস্কার করিতে প্রবৃত্ত হইলাম। কারন উহারা আমার আমার ঘরখানি দেখিয়া মাস্তক ঘূর্ণন পূর্বক পড়িয়া যায়, ইহা আমার ব্রত ছিল না।
যাহা হইক, সন্ধ্যা অতিবাহিত হইয়া গেল উহাদের কোন নিশানা দেখিলাম না। অতঃপর আমার দূরআলাপনীর ঘন্টাটি বাজিয়া উঠিলো। আমি উত্তর করিবা মাত্র উহারা বলিয়া উঠিলো যে "আমার তোমার সারা শহরময় উদ্বাস্থ হয়ে উচ্ছিষ্টের ন্যায় ভাসিয়া বেড়াইতেছি "।প্রতি উত্তরে আমি বলিলাম তোমরা তিন বৎসর কাল পূর্বে যেমন বেকুব ছিলে আদ্যবধি তেমনি আছো। তোমরা যেখানে দন্ডায়মান আছো সেখাই ঠায় দাঁড়িয়ে থাক আমি তোমার দিগকে উদ্ধার করিতে আসিতেছি।
অতঃপর তাহারা তিন বৎসর কাল পর আমাকে দেখিবা মাত্র যে প্রশ্নটি প্রথম করিলো তাহা হইতেছে, "তুমি আমাদিগের জন্য কি রন্ধন করিয়াছো?" প্রতি উত্তরে আমি উহা দিগকে বলিলাম তোমাদের হস্তের মনোহর রন্ধন খাইবো বলিয়া আমি পেয়াজ মরিচ কর্তন করিয়া রাখিয়া আসিয়াছি। উহা শুনিয়া তাহারা যে মধুর সম্ভাসন আমাকে করিল তাহা আর জনসন্মুখে বিবৃত করিলাম না।
যাহা হউক, রাত্রিকালে নরাধম গুলিকে আমার গোয়াল ঘরটি ছাড়িয়া দিয়া আমি এক বন্ধুবরের সহিত রাত্রি যাপনের উদ্দ্যশে গমন করিলাম। আমার সেই ব্ন্ধুবরটির রাত্রি কালীন শয়ন নিয়া নানাবিধ কথা প্রচলন থাকায় আমি কিন্চৎ ভীত ছিলাম। অতঃপর উপায়ান্ত না দেখিয়া তাহার কোল বালিশটি আমাদের মধ্যখানে দিয়া দোয়া ইউনুস পড়িতে পড়িতে রাত্রি অতিবাহিত করিলাম।
পরদিন প্রত্যুসে উহারা আমাকে জোরপূর্বক স্কন্ধে তুলিয়া উহাদের মটর যানে প্রবেশ করাইলো। আমার কোন কথা শুনিবার অবকাশ উহাদের ছিল না। পথিমধ্য আমি উহাদের বলিলাম "আমি তোমাদিগের কারনে কোন বস্ত্র আনিতে পারিলাম না। এখন আমি কি বিবস্ত্র হইয়া থাকিবো।" ইহা শুনিয়া উহাড়া আমাকে পথিমধ্য হইতে বস্ত্র ক্রয় করিয়া দিল। আমি কোন মতেই ছাড়া পাইলাম না। যাহা হউক, অতঃপর বিভিন্ন শহর ভ্রমন করিয়া রাত্রি কালে আমরা উহাদিকের বাটির উদ্দ্যেশে রওনা দিলাম। অবিরাম তুষার পরিবার হেতু মহাসড়কের অবস্থা মোটেই ভাল ছিল না। ইতিমধ্য আমাদের সঙ্গীত নামিয় চিৎকারে মোটর যানটির মস্তিস্ক বিগড়াইয়া গেল। রাত ২ ঘটিকার সময় আমরা দেখিলাম সারা পৃথিবীর আমাদিগের চারিদিকে প্রদক্ষিন করিতেছে। অতঃপর একটি খাদের কিনারে আমরা আমাদিগকে আবিস্কার করিলাম।এমতবস্থায় মোটর যানটির একটি দরজা দিয়া চারটি নরাধম কোনক্রমে বাহির হইয়া আসিলাম। মোটর যান হইতে বাহিরে আসিবার পর সঙ্গীদিগের কু দৃষ্টি লক্ষ্য করিয়া বুঝিলাম আমি তখনো সঙ্গীত সাধনা করিয়া যাইতেছি। ইহার পর দেড়টি ঘন্টা মাইনাস ২০ ডিক্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা খোলা প্রান্তরে থাকিয়া, বাচিবার হেতু শাখামৃগের ন্যায় তুষার ঝরা সড়কে কত যে লাফালাফি করিতে হইলো তাহা আর উল্লেখ করিলাম না। আর এক ফিট পরিমান অগ্রসর হইলে আমি হয়তো এখন দোজখে বসিয়া চলচিত্রের নায়িকা দের সহিত কুতকুত খেলিতাম।
যাহা হইক কাহিনি আর লম্বা করিলাম না। আমি আবার সব বান্দর, বান্দরিদের ঢিল দিতে বাঁচিয়া আসিয়াছি ইহাই বড় কথা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ৭:১২