গণজাগরণ আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি খুনিরা। তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে অনলাইনে। বিভিন্ন ব্লগ, ফেসবুক ও গ্রুপ পেজে রাজীবের ধর্ম বিশ্বাসসহ মনগড়া নানা বিষয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এমনকি রাজীবের জানাজা পড়ানো ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়ে ব্লগ ও ফেসবুকে অসংখ্য স্ট্যাটাস ও পোস্ট দিয়ে চলেছে জামায়াত-শিবির, হিযবুত তাহ্রীরসহ চরমপন্থী মৌলবাদী গোষ্ঠী। রাজীব খুন হওয়ার পর গোটা জাতি যখন শোকাহত, ঠিক তখনই নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরকর্মী (Farabi shafiur rahman) ফারাবী সাফিউর রহমান গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, 'যেই ইমাম থাবা বাবার (রাজীব) জানাজা পড়াবে, সেই ইমামকেও হত্যা করা হবে। জানাজার নামাজ হচ্ছে মুসলমানদের জন্য। কোনো নাস্তিক-মুরতাদ, যে সারা জীবন আল্লাহ ও তার রাসুলকে গালিগালাজ করেছে, তার কোনো জানাজা হতে পারে না। থাবা বাবার লাশ ঢাকার মিরপুর চিড়িয়াখানায় বাঘের খাদ্য হিসেবে দেওয়া হোক। এই বাংলার মাটি কোনো নাস্তিক-মুরতাদ, যে সারা জীবন আল্লাহ ও তার রাসুলকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করেছে, তার লাশ তার গর্ভে আশ্রয় দেবে না।' সূত্র জানায়, ফারাবী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার ছাত্র থাকাকালে হিযবুত তাহ্রীরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এর আগে তিনি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে হিযবুত তাহ্রীরকে নিষিদ্ধ করার পর দলীয় কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অপরাধে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন ফারাবী। এ অপরাধে তিনি কিছুদিন জেলও খেটেছেন। জেল থেকে বেরিয়ে এসে আবারও হিযবুত তাহ্রীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে বেছে নেন ফেসবুক ব্লগকে। এখান থেকেই কর্মী সংগ্রহের কাজ করে থাকেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে। ফারাবীর ওই স্ট্যাটাসটি তুলে দিয়ে http://www.nirpata.com নামে একটি সাইটে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে শোকাহত জনতা। তারা বলছে, একজনকে খুন করার পর আস্তিক-নাস্তিকের ধুয়া তুলে ধর্মকে কলুষিত করছে এ শিবিরকর্মীরা। ওই সাইটে ফারাবীর ফেসবুকে থাকা ছবি দিয়ে বলা হয়েছে, 'একে ধরিয়ে দিন।' ওই সাইটে ওই স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, 'ফারাবী ধর্মের দোহাই দিয়ে থাবা বাবার জানাজা পড়ানো ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়েছে।' তবে জাতির কলঙ্কমোচনে আন্দোলনরত আপামর জনতা এ বিভ্রান্তিতে কান না দিয়ে ব্লগ, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সাইট পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে। মেজর রাহাত নামের আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী সামাজিক বিভিন্ন সাইটে শাহবাগের আন্দোলন সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক কথা লিখছেন। এ ছাড়া সামহোয়ার ইন ব্লগে গতকাল রাত থেকে কয়েক শ ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দিয়েছে জামায়াত-শিবির, হিযবুত তাহ্রীর নেতা-কর্মীরা। শুধু তা-ই নয়, http://nuranichapa.wordpress.com/ নামে একটি সাইটে রাজীবের ব্লগের নামে কিছু লেখা দেখা গেছে, যাতে মনগড়াভাবে রাজীব হায়দারকে (থাবা বাবা) ধর্ম অবিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই সাইটে থাবা নামে বেশ কিছু লেখা আপলোড করা হয়েছে। লেখাগুলোর শিরোনাম যথাক্রমে, 'ঈদ মোবারক আর ঈদের জামাতের হিস্টুরি', 'ঢিলা ও কুলুখ', 'সিজদা' 'হেরা গুহা', 'ইফতারি ও খুর্মা খেজুর', 'সিয়াম সাধনার ইতিবৃত্ত' ইত্যাদি। লক্ষণীয় ওই সাইটে এসব লেখার নিচে যে তারিখ আছে তা হলো, ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট। এমনকি একই দিন-তারিখে এতগুলো লেখা পোস্ট করা হয়েছে। আবার ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট পোস্ট করা লেখাগুলোর কমেন্ট অপশনে (গতকাল সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত) কারো কোনো কমেন্ট বা প্রতিক্রিয়া নেই। বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন মহল বলছে, রাজীব হায়দার কী এত বিষয় নিয়ে এক দিনে এতগুলো পোস্ট দিয়েছিলেন ওই ওয়েবসাইটে। আর এ লেখাগুলোর নিচে কারো কোনো প্রতিক্রিয়ামূলক মন্তব্য নেই কেন? এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ফেসবুকেও ঝড় উঠেছে। থাবা বাবার নামে http://nuranichapa.wordpress.com/ ব্লগটি যে বিশেষ উদ্দেশ্যে তৈরি করা, এর সত্যতা ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে এভাবে, 'ব্লগটি দেখাচ্ছে ২০১২ সালে কিন্তু এলেক্সাতে এর কোনো রেকর্ড নেই। http://www.alexa.com/siteinfo/ nuranichapa.wordpress.com ব্লগটি এক বছর আগে হলে ওয়েবআর্কাইভে এর কোনো হদিস নেই। http://web.archive.org/web/*/ http://nuranichapa.wordpress.com/ কিছু লেখা একই দিনে একই তারিখে লেখা, যা সন্দেহজনক। তাহলে এর মানে কী? এর মানে WordPress-এর এ ব্লগটি দু-এক দিন আগে তৈরি করা এবং লেখাগুলো আগের তারিখ দিয়ে প্রকাশ করা। এদিকে অব্যাহত মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কারণে সোনারবাংলা ব্লগ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া বিভ্রান্তি ছড়ানোর কারণে শিবিরের বাঁশের কেল্লা নামের ফেসবুক পেজটি বন্ধ করে দিলেও নিউ বাঁশের কেল্লা নামের আরেকটি ফেসবুক পেজ খুলেছে তারা।
বি:দ্র: শাহাবাগ চত্ত্বরের সকল খবরাখবর এক জায়গা থেকে জানতে এখানে ক্লিক করুন
আলোচিত ব্লগ
বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন
সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?
আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন
পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?
রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন
গরমান্ত দুপুরের আলাপ
মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন