somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজবাড়ি ও মুক্তাগাছার মন্ডা B-) (ছবিব্লগ)

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত হলো আমরা কয়েকজন ফ্রেন্ড মুক্তাগাছা রাজবাড়ী দেখতে যাব। খুব দূরে না তাই আমরা নিজেরাই যেতে পারবো, বড় কারো দরকার নেই। সবাই যার যার বাসায় বললাম। যেই শুনে তার জিজ্ঞাসা, “তোমরা একা একা? সাথে কোন ছেলে নেই?” কি মুশকিল! ‘আমরা কয়েকজন’ আবার একা হলাম কিভাবে? সাথে ছেলে থাকলেই কি সুবিধা এটা আমার ছোট মাথায় ঢুকলোনা। আমার বাসায় অবশ্য এসব নিয়ে কোন সমস্যা হয়না। কিন্তু তিনজনকে বাসা থেকে আটকে দেয়া হল, ‘একা একা’ যাওয়া যাবেনা। নিদেনপক্ষে একটা ছেলে থাকলেও হতো। বড়ই অদ্ভুত কথাবার্তা! কেবল একজন ছেলে না থাকায় আটজন মেয়ে মিলেও ‘একা’ এর ‘অপবাদ’ থেকে রেহাই মিললো না। গার্জিয়ান না দিলে কি আর করা! আমরা আট থেকে পাঁচে নেমে এলাম।
যাই হোক, সকাল ১০টার দিকে রওনা হলাম মুক্তাগাছার উদ্দেশ্যে। তারপর মুক্তাগাছা সিএনজি স্টেশন থেকে ভ্যানে করে রাজবাড়ি। রিকশা করেও যাওয়া যেত, কিন্তু তাতে কি আর ভ্যানে পা ঝুলিয়ে যাওয়ার মজা পাওয়া যাবে?

রাজবাড়িটি মহারাজ সূর্যকান্ত আচার্য্য চৌধুরী এর বংশধর জীবেন্দ্র কিশোর আচার্য্য এর বিনোদবাড়ি।
জীবেন্দ্র কিশোর আচার্য্য চৌধুরী মানুষ কিংবা শাসক হিসেবে কেমন ছিলেন জানা নেই। তবে উনার জন্য আমার আলাদা একটা শ্রদ্ধা বোধ আছে। উনার অর্থায়নে, উনার পূণ্যময়ী জননী বিদ্যাময়ী দেবী এর নাম অনুসারে প্রতিষ্ঠিত হয় আমার প্রিয় স্কুল বিদ্যাময়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। (এটা নিয়ে আরেকসময় কথা হবে আশাকরি)

কোন গাইড নেই, মানুষজন নেই, কোথাও কিছু লেখা নেই। তাই বুঝতে পারিনি কোন ঘরে কি হতো।

রাজবাড়িতে ভগ্নপ্রায় কিছু দেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণ করার কেউ নেই। অনেক জায়গায় ইট খুলে নিয়ে গেছে। যদিও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নীল রঙের একটা সাইনবোর্ড ঝুলছে রাজ ফটকের পাশেই।
ভাবতে খুব অবাক লাগে, এক সময় এ বাড়ির সামনে দিয়ে প্রজাদের জুতোপায়ে ও ছাতা মাথায় যাওয়া নিষেধ ছিল। আজ এটি পড়ে আছে অবহেলায়।

ভেতরের দিকের ছবি


ভগ্ন প্রাসাদের একাংশ


কি হতো এই ঘরে?





কারুকার্যখচিত দেয়াল।







ইট খুলে নিয়ে গেছে


দোতালা বাংলো বাড়ি, একসময় দেখার মতো সুন্দর ছিল বোঝা যাচ্ছে


কত বছরের পুরনো গাছ কে জানে!




পূজার ঘর


দেয়ালে পরগাছা


বাংলো বাড়ির ভেতরের দিক


দোতালায় উঠার সিঁড়ি, এখন উঠার কোন অবস্থা নেই। ভাঙ্গা সিঁড়িতে কাঁটা ফেলে দেয়া আছে যেন কেউ না উঠে।


মন্দির


রাজবাড়ির বাইরের দিক


মুক্তাগাছায় যাবেন অথচ মন্ডা খাবেন না এটা হতেই পারে না।
রাজবাড়ির কিছু দূরে আছে মন্ডার দোকান। পুরো মুক্তাগাছায় অসংখ্য মন্ডার দোকান আছে। কিন্তু মন্ডার আদি স্রষ্টা হচ্ছেন গোপাল নাথ পাল। ভাবছেন গোপাল মন্ডা ভান্ডার দেখলেই ঢুকে পড়বেন? এই নামেই দোকান আছে অন্তত তিনটি। তিনটিতেই আছে সিংহের ছবি। কিন্তু আসল মন্ডার স্বাদ অন্যগুলোর চেয়ে অনেক ভালো।
গোপালনাথের দোকানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো দোকানটাই আসল মন্ডার দোকান।

আদি ও আসল মন্ডার দোকান



ভেতরে আদি স্রষ্টা গোপালনাথ এর মূর্তি আছে,


আর আছে জমিদার শ্রী জীবেন্দ্র কিশোর আচার্য্য এর লেখা প্রশংসা পত্র।


স্টার হেরিটেজে মন্ডা নিয়ে ফিচার



শীতের দিন এত তাড়াতাড়ি বেলা ডুবে যায়! ঘুরাঘুরি শেষ করে বেলা আড়াইটার দিকে রওনা দিলাম ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে, বাসায় আসতে আসতে প্রায় সোয়া তিনটা বেজে গেছে।
আসা যাওয়ার সময় চোখে পড়লো ম্যাক (বিল্ডিং ছাড়া দেখার কিছু নাই, একটা গাছও চোখে পড়েনাই) বিজিবি ময়মনসিংহ (বেশ ছিমছাম এলাকা) আর রিভার প্যালেস (একটা অত্যাধুনিক হোটেল, এরকম গ্রাম এলাকায় যেটা ভাবাই যায় না)। তবে গাড়িতে এত ঝাঁকি, আর জায়গার সংকীর্ণতার কারণে ক্যামেরা বের করার সাহসই পাইনি।

এতক্ষণ কষ্ট করে পড়ার জন্য :)

৬৮টি মন্তব্য ৬৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×