somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডুব - অনুগল্প

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লাল জবাফুলের পাঁপড়িগুলো তার মাটিতে পড়া বন্ধুদের দিকে চেয়ে বেনামী একটা গর্ব বোধে কেঁপে ওঠে। চিকন ফালির বাঁশ আর কঞ্চি দিয়ে বানানো ফুলের ডালির একটা দিক ভাঙা। কেউ জানেনা কেনো। না তো, ঠিক হলো না- একজনই কেবল জানে। প্রতি দিন শিশিরের ঘুম ভাঙা ভোরে জলে ডুব দিয়ে উঠে যার ডালিটার কথা মনে পড়ে সবার আগে।

আজও ভোরে ফুল তুলে তুলে ডালি ভরে গেলো জবা ফুল দিয়েই। নরম গোটাগোটা আঙুল ফেলে, ভাঁজ ভেঙে হাঁটার তালে তালে ডালির ভাঙা দেয়াল দিয়ে একটা একটা করে জবা মাটিতে গড়িয়ে পড়ছে তাই। দূরের কাশবন থেকে ছুটে আসা ভোরবেলার মাটির ঘ্রাণভরা বাতাসে মাটির উপর শুয়ে থাকা লাল ফুলগুলো তাদের অবতীর্ণ হবার জায়গা থেকে সরে সরে যায়। পাতাবাহারের লালহলুদ ফুটকি দেয়া লম্বা লম্বা পাতাগুলো সেই বাতাসের সাথে শরীর দোলায়।

জবাফুল এতো ভালো লাগে কেনো? কোনও এক বৃষ্টিভেজা বিকেলে বড় মাঠের শেষ মাথায় পদ্মদীঘির পাড়ে বসে প্রশ্নটা শুনেছিলো... (তার নামটা যে আমাকে কেউ বলে নি) হাতের আঙুলগুলো দোলাতে দোলাতে ভ্রু টেনে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলো: লাল রঙ! উত্তর শুনে প্রশ্নকারীর স্বাদ মিটলো না, রহস্য থেকে গেলো। তারপর প্রশ্নকারী উত্তরটা নিয়ে নিজেই আরো প্রশ্ন করতে থাকলো নিজেকেই! একটা একটা করে মিনিট পার হয়ে যেতে থাকলো দীঘির সবুজাভ জলের উপর দিয়ে ঢেউ খেলে। এরকম অসহ্য লম্বা নিরবতা প্রশ্নকারীর কাছে অসহ্য হলেও জবা ফুল প্রিয় নাম না জানা উত্তরদাত্রীর কাছে ভীষণ মজার।

এভাবে দশটা মিনিট নিজের পৌরুষের তাড়নায় কপালের ঘাম ছুটিয়ে মাটিতে আঁকিবুকি করে মনে মনে জানা যত সাহিত্য আছে সেটা স্মরণ করেও যখন প্রশ্নকারীর কাছে লাল রঙের মধ্যে ভালো লাগার কী আছে সেটা অধরাই থেকে গেলো। উত্তরদাত্রী চোখ ঘুরিয়ে দেখলো, বেচারার খুব দু:সময় যাচ্ছে- সে তো এইরকম সময় পার করবে বলে আজ দীঘির পাড়ে আসেনি। বেচারাকে মুক্তি না দিলে আজ ঘরে ফিরে গিয়ে ঘুমও ঠিক হবে না। কিন্তু উত্তরটা তার দিতে সামান্য ভয় ভয় করে।

তাও কীসের যেনো টানে দ্বিধা ঝেড়ে শেষবারের মতো মনে মনে মুচকি হেসে ধরাগলায় প্রশ্নকারীকে জিজ্ঞেস করলো, 'লাল রঙ দেখবে?' বলতে বলতে উঠে দাঁড়িয়ে হঠাৎ দীঘি জল কাঁপিয়ে ঝাপিয়ে পড়লো সবুজ গভীর জলে! তারপর ডুব!

উঠছে না কেনো? কোথায় লাল রঙ? প্রশ্নকারীর গবেষণা এখন ওলটপালট পুরো। ডুবে গেলো না তো?

একেবারে অজানা এক উৎস থেকে কর্তব্যের দুইরকম অর্থ এসে প্রশ্নকারীর সমস্ত দ্বিধা দূর করে দিয়ে গেলো! সবুজ টলটলে জল আরেকবার কেঁপে উঠলো। এবার আগেরবারের চেয়ে জোরে!
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×