মস্কোর রাস্তা ধরে হাটছিলাম, পেটে দানা-পানি পড়ে নি গতরাত থেকে। তিন চার মাস হলো বাসার ভাড়া দেই না, জার্মান স্বামীতেয়াগী বাড়িওয়ালি ভদকারাঙা চোখে আজ সাঝসকালে সাঁসিয়ে গেছে, 'এই যে বাঙালি সাহেব, এটা কি রিফিউজি ক্যাম্প পেয়েছেন? রাত্রের মধ্যে ভাড়া দিবেন, নাইলে তল্পিতল্পা আমিই লোক ডেকে গুছিয়ে দেবো- আপনি ঐগুলো রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নিতে পারবেন।'
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না। ছয় বছর ধরে মহিলা পুরুষমানুষের সঙ্গবঞ্চিত; আমার মতো ভ্যাগাবণ্ডকে দুইপ্রস্থ কথা শোনাতে পারলে তার আত্মতৃপ্তি হতে পারে। সেটা ভাড়ার সমান দামী না হোক, ভদকা-পরবর্তি মেজাজ ঢালার জন্য উপযুক্ত হবেই। অতএব তার কিছু উপযোগ আছে, সেটা নিয়েই এই সপ্তাহের জন্য হয়তো মাফ পাওয়া যেতে পারে।
লেখক বন্ধু কাতিয়া তার বারোটা প্রেমিকের কোনও একজনের সাথে বারোয়ারি প্রেমে মগ্ন। এই ঘোর সন্ধেবেলায় তাকে খুঁজে পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। পকেটে যথেষ্ট রুবল থাকলে ভোলগার পাড়ে বসে মৌঁজ মেরে মুলাট্টো সিগার টানা যেতো- সে খায়েসের মুখে ছিপি মারতে হলো।
কলেজে ফিরে যেতে হবে, সহকর্মী দুপয়সা ধার নিয়েছিলো। সেগুলো যদি ফেরত পাওয়া যায়। সভেন এক ডাচ শুয়োরের বাচ্চা, একেবারে গোলাপী রঙের। যে শুয়োরের বাচ্চাগুলোর মাংসের সসেজ দেখলে খিদে বেড়ে যায়, ঐ রকম।
ওর ইতালিয়ান বউটিকে দেখার জন্য হলেও সপ্তাহে একবার সভেনের বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করে। আর শুয়োরের বাচ্চা সভেন তার ফরাসী ইন্টার্নকে এখন বোঁদলেয়ার পড়ে শোনাচ্ছে ক্যাম্পাসের কোনও এক কোণে বসে, আমি নিশ্চিত। ফরাসী মেয়েটাও দুই কাঠি বাড়ন্ত, রাশান শীতপোশাকের গাঢ় আস্তরও যেন তার কবিতামাখা শরীর ঢাকতে পারে না।
শুয়োরের বাচ্চা সভেন!
মাথায় রাগ চড়ে যাচ্ছে, আজ গিয়ে অন্ধকার থেকে সভেনকে টেনে বের করে রুবল হাসিল করতে হবে। এই সাহিত্যের প্রমিস্কাস প্রফেসরগুলোর জন্যই দুনিয়ার এই অবস্থা।