somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি নীল রাতের কান্না

০২ রা আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটি নীল রাতের কান্না-পর্ব -১

জানিস্ তনিমা
আসছে মাসের পঁচিশ তারিখেই আমার ফ্লাইট ।
একদম পাকাপুক্ত হয়ে গেল ।
তোর ফ্লাইট মানে?
হ্যাঁ, আমার ফ্লাইট ।
মনে হয় তুই আকাশ থেকে পড়লি ।
রুপম তনিমার দিকে তাঁকায়।
কিরে কথা বলছিস না কেন? কি দেখিস ঐ দিকে?
দুষ্টুমিরছলে রুপম তনিমার মাথাটায় হাত বুলায়।

তনিমা কাঁদছে-
কিরে কাঁদছিস্ যে?
হঠাৎ কি হল, বলবি তো ।
তনিমা কিছু একটা বলতে চায়-
মনে মনে খুব রাগ তার উপর । এতো ভাবে আকার ইঙ্গিতের পরও
কেন সে বোঝেনা যে আমি তাঁকে ভালবাসি । ও ছাড়া যে আমার কোন সপ্ন নেই, আনন্দ নেই, নেই বেঁচে থাকার আহল্লাদ ।
এ যুগেও কি এত বোকা ছেলে মানুষ আছে ।
কত স্মার্ট এ যুগে ছেলেরা আর ও কি হয়েছে ।
তবু কেন তার লাগি মন এতো আনচান করে ।
একটা কিছুতো হয়েছেই সে । সরকারি খরচে যে ছেলে বিলাত যায় । তার কি কম যোগ্যতা?
দেখতে সুদর্শন ।
ঢাকার নামিদামী বিশাল প্রতিপত্যির মালিক বাপের এক মাত্র ছেলে
কথায় বলে মেয়েদের বোক ফাটে তো মুখ ফূটে না ।
তাই এতোটি বছর এক সাথে থেকেও তনিমার ভাললাগা
ভালবাসার কথাটি বলতে পারেনি।
তনিমা ভাবছে এবং মনে মনে সংকল্প করছে যে,
আজ আর লজ্জাকে মাথায় রাখবোনা ।
যার জন্যে লজ্জাকে লালন করছি আর তাঁকেই
যদি না পাই জীবনে তবে কি হবে লজ্জা করে ।
তনিমা চোঁখের পানি উড়নার আচল দিয়ে মুছতে থাকে ।
মনটাকে খুবই শক্ত করে বাঁধে আপন কল্পনার দড়িতে।


রুপম হাসছে ।
তনিমার মনটাতেও যেন একটু একটু সস্থ্যির ছোঁয়া লাগছে ।
ভাবছে তনিমা এবার হয়তো রুপম নিজেই বলবে
আই লাভ ইউ তনি আই লাভ ইউ ।
রুপম খুবই হাসছিল ।
কেন এতো হাসছিল সে প্রশ্নটি আমারও ।
যে ছিল নিরবতার উরধশরি। যার মুখখানি ছিল মৌনতার চাঁদরে প্রতিনিয়ত আচ্ছন্ন ।
যে বই ছাড়া অন্য কোন জগত কে দেখেনি এক মুহুরতও অন্যভাবে ।
এত বছর বয়সেও যে প্রেম ভালবাসা কি তা নিয়ে একটি বারও ভাবেনি।
আজ কি হল যে মেঘ না চাইতেই যেন বৃষ্টির আবির্ভাব ।

হাসিমাখা মুখেই রুপম বলছে-
আচ্ছা তনি, তকে একটা কথা বলবো ?
বল্
তনিমার মনের ঊদ্দ্যানে যেন নানা রংঙের ফুল ফোঁটিতে লাগিল ।
যে রিদয়ে এইতো একটু আগেও বেদনার নীলেরা ঘোরপাক খাচ্ছিল ।
আর সে নীলের জায়গায় কি করে রজনীগন্ধ্যার ঘ্রাণ লাগিল ।
তনি তাই ভাবছে আর বিধাতার কাছে প্রার্থনা করছে ।

রুপম মদূ মদূ হেসেই বলছে-
তুই আবার রাগ টাগ করবি না তো?
আরে না,
কিসের রাগ । তুই যা খুশি তাই বলতে পারিস।
তোর ঊপর কি কোন দিন রেগেছিলাম বলে বলতে পারিস।
তা অবশ্যই ঠিক । তোর মত মেয়ে আমি দিতীয় টি আদৌ দেখিনি

যেমন তুই দেখতে সুন্দর তেমনি তোর সব কিছুই সুন্দর ।
আর তাইতো আমি তোকে এতো পছন্দ করি ।
কেমন পছন্দ করিস?
বারে কেমন আবার?
কেমন পছন্দ করি তাকি মুখ খুলে বলতে হবে?
না বললেই কি নয়?
না নয় । তকে আজ বলতেই হবে কেমন পছন্দ করিস।
তনিমার যেন কিছু একটা বলার সুযোগ এসেছে ।
ভালবাসিস নাকি?
রুপম যেন কি এক সপ্নীল সুখএর ঘ্রাণ পাইল ।
একটা সুন্দরী রুপসীর মুখ থেকে ভালবাসা শব্দটি বেরিয়ে আসা আর
সে সুরের ঘ্রাণ রিদয় স্পর্শ করা যে কত অনুভবের যে করেছে শুধু সেই বুঝেছে কি মধুর অনুভুতি ।
কি হিমেল হাওয়ার স্পর্শ।
কি বিমোহিত সুখ।

তনিমা পূনরায় মনে করিয়ে দেয়-
কিরে কি জানি বলবি, কই বললি না যে ।
রুপম বলতে চায় কিন্তু লজ্জার আবরনে সে বার বার মূরছা যায়।
তনিমা সত্যিই রুপবতি গুনবতি ।
সংসারে বাপের পতিপত্যিও তার বাপের তোলনায় কম নেই ।
ঢাকার ইব্রাহিমপুরে তিন তিনটা বাড়ি । বাপের সু-প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি ব্যবসা ।
তা ছাড়া তনিমার আব্বা আর রুপমের আব্বা দূ জনেই খুব কাছের বন্ধু ।
আর সে সুত্র ধরেই তাদের
সেই ছেলেবেলা থেকেই
এক সাথে উঠাবসা ।

দুজনেই ভাল ফ্যামিলির সন্তান ।
তাই উছশৃখলতাকে কেউই লালন করেনি ।
ইভেন অন্য কোন ছেলেমেয়েদের সাথেও
তেমন উঠাবসা করেনি তারা ।

কলেজ আঙ্গিনা থেকে দু,জনে কথা বলতে বলতে ঠিক কলেজের
পুকুর পাড়ে সূ-বিশাল বৃক্ষ রাজির ছায়াতলে দাঁড়িয়েছে তারা ।
রুপম গাছের সাথে হেলান দিয়ে দিগন্তের দিকে তাঁকিয়ে
ভাবছে অনেক কথা
তার ফেলে আসা দিন গুলির কথা ।
তনিমার কথা ।
তনিমার ভালবাসার কথা ।
আজ বাদে কাল সে চলে যাবে বিলাতে।
এতোদিন যাকে সে বঞ্ছিত করেছে
সোনালী দিনের সোনালী মুহূর্ত গুলি থেকে।
এতো কাছে পেয়েও যার থেকে নেয়নি মধুর লগ্ন গুলিকে ।
তনিমা তো অনেক ভাবেই বুঝাতে চেয়েছে যে,
সে আমাকে ভালবাসে ।
সেদিন তো আমি তাকে প্রত্যাক্ষান করেছি ।
তার নীরববেদনা আর নিষ্পেষিত ভালবাসা কি আজ আর
আমার ভালবাসা কে মুল্য দেবে ?
তাই সে ভাবছে-
যে রুপ নীরবে কষ্ট আমি তনিমার রিদয়ে লেপন করেছি
ঠিক সে রুপ কষ্ট আমাকেও পেতে হবে পাওয়া উচিৎ।
তাই সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল
ভালবাসার কথাটা সে তনিমাকে বলবে না ।

সত্যি তাই হল-
জোয়ার ভাটার মত
ভালবাসার মত কঠিন শব্দটা যেন-
ঘোরপাক খেতে লাগল দু,টি মনের সবুজ আঙ্গিনায় ।
ছেলেরা এমনি হয়। কিংবা কিছু কিছু ছেলেরা এমনি হয় যারা অধিক ভালবাসলে তার বহিঃপ্রকাশটা দেখায় উলটো।
যারা বুঝতে পারে ঠিক তাঁদের জীবনটাই হয় সুখের।

রুপম কি জানি কি একটা ভেবে চিনতে তনিমা কে বলল-
তনি চল্ বাসায় ফিরবো ।
হঠাৎ কি হল তোর,তনি জানতে চাইলে-
রুপম যেন একটু আঘাত সুলভ কথাই বলল ।
তনি যেন বুঝতে পারল তার মনের কথা ।
যে কথার বদৌলতে দেওয়ার কথা ছিল বেদনার বান ।
কিন্তু তা না দিয়ে তনি যেন দিল তারে বোক ভরা গান।
দূ,জনের মনেই হাজারো কথার মালা ।
শুধু না বলার ভুবনেই ঘোরপাক খাচ্ছে না বলা
হাজারও কথামালা ।
কেঊ কারো সাথে খুব একটা কথা বলছে না ।
সোজা চলে এলো কলেজের গেইটে।
রুপমের গাড়ির ড্রাইভার অপেক্ষা করছিল ।
রুপম শেষ কথাটি বলেই গাড়িতে বসল ।
আর, তনিমা নিজেই ড্রাইভ করে চলে গেল
নব নিরমিত চারতলা বিলাস বহুল বাড়িটিতে।
একটি নীল রাতের কান্না-পর্ব -২
সময় চলছে তার আপন গতিতে। মন কাঁদে, না পাওয়ার কষ্টকে ঘীরে । চোঁখের পাতাগুলি নীল হয়ে মূর্ছা যায় রিতমত। না পাওয়ার কষ্ট কথাগুলি বেদনার নীল ডালে বাসা বুনতে থাকে। তনিমা যতই ভাবে ভুলে যাবে রুপমকে সে যেন ততই পাওয়ার নেশায় মূর্ছা যায়।
কিসের এই মাতাল নেশা,
যে নেশা রক্তকনায় বাজে,
ঝরণার মত কষ্ট ঝরে
সকাল সন্ধ্যা সাঁঝে।
দুইদিন হয়ে গেল তনিমার কাছে যেন দুইটি যুগ। আর রুপমও যেন কি এক নেশার টানে টালমাটাল। কি করবে সে কিছুই ভেবে পায়না। তনিমা কে সে ভালবেসে একান্ত কাছে পেতে চায়। কিন্তু কিভাবে? আপন মনে আবারো প্রশ্ন তনিমা কি আমার জীবনে আসবে? হাজারো প্রশ্ন নিজের বিবেকের কাছে আজই তনিমাকে ভালবাসার কথাটি জানাবে। তনি তকে ভালবাসি এবং অনেক ভালবাসি । এও বলবে যে অতীতের কষ্টকথা মনে রাখিস না। যা ছিল আমার না বোঝার কিছু ভুল ছিল আর কিছু ছিল সময়ের ব্যবধান। ভাবছে কি ভাবে তাকে কথাটি বলবে। অনেক ভেবে চিনতে রুপম ঠিক করল যে, গভির রাতে তাকে ফোনেই কথাটি জানাবে।
গভির রাত । শহরের মেইন রাস্তা গুলোতেই গাড়ির শব্দ একেবারে নাই বললেই চলে। আর একটু ভিতরটায় একেবারেই শব্দ হীন। একবার জানালা দিয়ে ঊকি দেয় রুপম। তাঁকায় আকাশের পানে। মেঘমুক্ত আকাশ । তারা গুলি মিটিমিটি জলছে। নিজেকে প্রশ্ন করে আজ আমার কি হল। ইতি পূর্বে তো কখনই আমি আকাশ কে এভাবে দেখিনি। কখনই তো সৃষ্টির অপরুপ সৌন্দয কে নিয়ে ভাবিনি।
সুন্দর আকাশ । আকাশের তারাগুলি। সুন্দর তনিমা।
এমনি রাতের তারার পানে চেঁয়ে চেঁয়ে দু,জন দু,জনার মাঝে হারিয়ে যাওয়ার মুহূর্ত গুলি কতইনা মধুর হবে। ভাবেতেই মন ভরে যায়। উৎছল্লবদনে ছোটে আসে বিছানায়। রিসিভারটা ঊঠায়। একের পর এক ডায়াল করতে থাকে। না পেয়ে নিরাশ মনে ভাবে কি হল তনিমার। তনি কি ইচ্ছা করেই রিসিভারটা উঠায়রেখেছে । নাকি কোথাও কথা বলছে। এতো রাতে ও কার সাথে কথা বলবে। কারো সাথে কি আবার কিছু একটা হলোঠলো নাকি...। না,মন টাকে কিছুতেই বুঝ দিতে পারছিলনা।
ভেবে চিনতে মোবাইল টা হাতে নিয়ে তনিমার নাম্বার টিতে ডায়াল করল কের পর এক কয়েকবার । দুঃখিত কথাটি যেন তার আর শুনতে ভাল লাগছিলনা। মনের ভাবনা গুলি উল্কা পিন্ডুর মত বিচ্ছুরিত হতে লাগল। যেন রক্তগুলি দেহের মাঝে বিষের মত যন্ত্রনা দিতে লাগল। যতই ফোন দিচ্ছিল হতাশাগুলি যেন ততই আহত করছিল বারংবার। তবে কি তনু আমাকে ভাল বাসেনা। হয়ত তাই। নইলে এই আমি যাকে এক মুহুরত না দেখলে তার চোঁখে ঘুম আসতোনা । আজ দু,দিন হয়ে যায় তনিমার কোন সাড়া শব্দ নেই। কথা নেই । নিশ্চয়ই তনি অন্য কাওকে ভালবাসে। নানা কথার জল্পনা কল্পনা,নানা অপ্রাসঙ্গিক চিন্তা ভাবনায় রুপম মূর্ছা যায়। এখন সে কি করবে ? নিজেকে বারবার প্রশ্নের কাঁঠগড়ায় সন্মোখিন করছে। নীরববতার আঁধারে একাকী নিঃসঙ্গতায় ডুকরে ডুকরে কাঁদছে।
রুপমের কান্না দেখে নিয়তি হাসে। তুই যাকে এতোটিকাল কাঁদালি। তাঁর জন্যে এতো কিসের মায়া করিস।যার রিদয়টাকে পরতে পরতে কষ্ট আর যন্ত্রনা দিয়ে দিয়ে নিজের মনটাতে সস্তিতে ভরে রাখলি আজ কেন তার জন্যে এতো চোঁখের জল ফেলিস। রুপম বিস্মিতবদনে তাঁকায়। কিছুতেই আপন মনটাকে বোঝ দিতে পারছে না। দেয়ালে ঘড়ির দিকে তাঁকায় । রাত,তিনটা। সব ভুলে ঘুমোতে চেষ্টা করে। ঘুম আসেনা। একলা জাগে। মনে মনে বলে-তনি বড় কষ্ট-ধ্রুবতারা প্রশ্ন করে কোথায়? রুপোম নিজের বোকে হাত রাখে,
বলে এখানে-।
একটি নীল রাতের কান্না-পর্ব -৩
বিনিদ্র রজনী কাটাল রুপম। সকাল হয়েছে। বেলকনিতে পাতানো ইজি চেয়ারে বসে তার বিনিদ্র রাতটির কথা ভাবছে। কিভাবে একটি রাত কেটে গেল,বুঝতেই পারলোনা সে। ভাবছে ভালবাসার কি মোহিনীয় যাদু। যে চোঁখ কোন দিন শপ্ন দেখেনি সে চোঁখে আজ নীরবে জল ঝরল। যে রিদইয়ে কোন দিনইকষ্টের ছোঁয়া লাগেনি আর আজ সারাটি রাত কিভাবে বেদনার মাঝে নীল হয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদল।

প্রতিটি সকাল রুপমের ঘুম ভাঙ্গত অনিমার ফোন পেয়ে। গত দুইটি দিন মাত্র অনিমার কোন ফোন আসেনি আর তাতেই রুপমের জীবনে নেমে এসেছে তিমিরের মত অন্ধকার। হঠাৎ একটা ফোনের শব্দ রুপমের কানে ভেসে এলো। রুপম দেয়াল ঘড়িরটার দিকে তাঁকায়। বুঝতে পারে তনিমার ফোন।
রুপমের অভিমান টা হঠাৎ বেড়ে যায়। তিন তিন বার ফোন টা কেঁটে দেয় রুপম
খূব রাগ হয় তার। অভিমান করে বসে। চতুর্থ বার ফোনটা ধরে।
হ্যাল.........কে ?
অনিমা মনে মনে রাগ হয়-
হঠাৎ আজ এমন প্রশ্ন কেন?
রুপম তো কোন দিন এভাবে বলেনি হ্যাল কে? কারন রুপম জানে তার সকালের ঘুমটা তনিমার ফোনস্পর্শেই ভাঙ্গে।
তনিমা বলে-
কি ফোন দিয়েছিলে কেন?
রাগান্নিত কণ্ঠস্বর শুনে রুপম যেন ভাষা হারিয়ে ফেলে।
মনের সহস্র কালিমা মনেই লেপন করে বলে
না। তেমন কোন এসেন্সিয়াল কিছু না।
তাহলে কেন ফোন করেছিলে?
রুপম যেন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বিবেকে যেন নাড়া দেয়। হঠাৎ তনিমা এতোটাই বদলে গেল? রুপমের যেন আর কথা বলতে ইচ্ছে করছিল না।
আচ্ছা সরি
ভুল হয়েছে।
রাখছি-
সরি, ভূল হয়েছে কথাগুলি যেন তনিমার বোকে একটা শুভ বারতার ইঙ্গিত বলে মনে করল। হাজারো কষ্টের মাঝেও যেন একটা সোনালী রোদের ঝলমলে হাসি দিয়ে পুরো গেহটা আলোকিত করে দিল।


একটি নীল রাতের কান্না-পর্ব -৪

নারী প্রেমের সুরের সারথি।নারী ভালবাসার নদী। নারী দুরভেদ্দ খেয়ালের অন্ধ খেয়ালিনি,নিঃস্বার্থ,মোহনিয় আর মহা মায়াবিনি।
রুপমের হৃদয় কঠিন তারের কঠিন বাঁধনে বাঁধলেও তনিমার হৃদয় এর নরম কথার ছোবল আর তীক্ষ্ণদূরদরশিতার গুনে রুপমকে মোমের মত গলতে হল।। প্রিয় পাঠক নিশ্চই জানতে চাইবেন ভালবাসি নামের এই কঠিন শব্দটা কার মুখ থেকে প্রথম বেরিয়ে এসেছিল। সে এক কঠিন পরিক্ষা। দু,জনই দু,জনকে অধিকরুপে ভালবাসে তার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। কিন্ত দুজনেই দুজনের ব্যক্তিত্তের দিক থেকে এতই সোচ্চার যে কথাটি যেন দু,জনার সামনে বিশাল এক পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ভালবাসা,ভালবাসি শব্দটি যেমনি গোপনিয়তার স্বর্গীয় চাঁদরে ঢাকা তেমনি না হয় এই কথাটিও ঢাকাই থাক।
কারন নিয়তির এমনি নির্মম পরিহাস যে ভালবাসার স্বর্গীয় সুখ তাঁদের কপালে খুব বেশী দিন সইলনা।
সইলনা কথাটি হয়ত পুরোপোরি ঠিক হবেনা।
কারন যে প্রেম স্বর্গ থেকে আসে তার যে কোন মৃত্যু নেই। স্বর্গ থেকে আসে প্রেম স্বর্গে ই যায় চলে।

খুব আনন্দেই দিন কাটাচ্ছে রুপম তনিমা। নীল আকাশের বোকে শঙ্খচিল হয়ে উড়ছে,সাদা মেঘের কোলে ভেলায় সাতার কাটছে,সাগর জলে।পাহাড়ের পর্বত চূড়ায়,উদ্দ্যানে উদ্দ্যানে আনন্দ বিনোদনের যেন ঢল বইছে।
পারিবারিক দিক থেকেও চেয়েছিল দু,জনে দু,জন কে পছন্দ করুক। তারঃপর সময় সাপেক্ষ্যে বিয়ে দেবেন।
এমন অকৃতিম প্রেম ভালবাসা দেখে দু,ফ্যামিলিতেই যেন আনন্দের বন্যা বইতেছিল।

একটি নীল রাতের কান্না-পর্ব -৫

জগত জীবন কাল আচার অনাচার দুরাচার এই ত্রি-ধাঁরার দুরবার স্রোত মুখে নিয়ে যারা এগিয়ে গেলেন তারা শুধু বলে গেলেন এগিয়ে চল এগিয়ে চল। কিন্তু কোথায় ? যেখানে নেই মহা মানবতার সঙ্গমস্থল। যেখানে নেই অন্ধকার আছে আলোর বন্যা। আছে সীমাহীন সময়ের অনন্ত শান্তি। আর সেই শান্তির নীগাড়ে পৌঁছার ধ্যান আমরা কেউ যে করিনা। দু,দিনের এই দুনিয়াতে কত রঙের রঙ্গিন তামাসায় মত্ত থাকি। কখন সময় ফুরিয়ে যাবে তা যে কেউ ভাবিনা।
সেই না জানা প্রলয়ংকারী ঝড় যে সল্প সময়ের বেড়ে উঠা দু,টি তাজা প্রানে আঘাত হানবে তা কেইবা জানে। নিমিষেই ভেঙ্গে তছনছ করে দেবে সপ্নের মত সাজানো ঘর। ভাসিয়ে দেবে সপ্নের আঁকা রংগুলিকে। ফিকে করবে বসন্ত বাতায়ন।
রুপম তনিমার প্রেম। যেন আকাশে বাতাসে ধবনিত হইতেছে। সবার মুখেমুখে একই সুর দু,জন কে খুবই সুন্দর মানিয়েছে। কেউ আবার বিধাতার গুনগান করে বলছে সত্যি আল্লার কি অপার মহিমা,কেউ আবার বলছে মাবুদ তোমার খেলা বোঝা বড় দায়। তনিমা বলছে আমি তোমার কাছে এর চেয়ে আর বেশিকিছু চাইনা প্রভু।
সল্প সময়ে দু,জনের প্রেম যে এতো গভির হবে তা যেন ভাবতেই অবাক লাগে। একজন আরেক জন কে এক মুহুরত না দেখলে থাকতে পারেনা। কি প্রেম,কি আকর্ষণ, কি মায়ার বন্ধন লেগেছে দু,টি প্রানে।
নিয়তি হয়ত সেদিন দূর থেকে নীরব হাসি হেসেছিল।
আগেই বলেছিলাম রুপম বিদেশ চলে যাবে। সে দিনটির আর মাত্র তিন দিন বাকী। বিদেশ যাওয়ার ভীষন ব্যস্ততায় সে দিন সারা দিন দু,জনার দেখা হয়নি। রুপমের মনটাও দেখা করার জন্যে আকূল হয়ে আছে। আর তনিমার কথা কি আর বলবো।
সারা দিন রুপম তার বাবার সাথে ছিল বলে খুব একটা কথা তনিমার সাথে বলতে পারেনি। ঠিক পনে নয়টার দিকে বাসায় ফিরে।কোন রকম গোসলটা সেরে নিয়েই তনিমাকে ফোন দেয়।
তনি। তনি আমার-
লক্ষি সোনা আমার কথা শোন।একটু বোঝার চেষ্টা কর।
যতই বলছে কোন সারা শব্দ যেন নেই।
একের পর এক অনেক অনুনয় বিনয়। পৃথিবীর মাঝে যত অনুনয় বিনয় মধুর কথার সৃষ্টি হয়েছে রুপম যেন তার সবি প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছে। মনে হয়েছে তাতেও সে খুব একটা সফল হয়নি। রুপম ভাবছে তনিমা যেন সেভাবে আর আগের মত কথা বলছে না। কেন জানি ছারাছাড়া। মানে তনি কথা বলছে বাট প্রান খোলে বলছে না। কে জানে কি হয়ছে। হয়ত তনিমা জানত কিছু কিংবা হয়ত কিছুই জানত না।
রাত দশটা। রুপম কোন ভাবেই সস্থ্যি পাচ্ছে না। তাই গাড়িটা নিজেই ড্রাইভ করে বে্রিয়ে পড়ল। নানা জল্পনা কল্পনা আর হতাসা নিয়ে ড্রাইভ করছিল। হঠাত পেছন থেকে একটা গাড়ী এসে হাল্কা ধাক্কা দিল।রুপম ঊকি দিল। গাড়ি থেকে স্পষ্ট আওয়াজ এলো মিয়া মাতাল হয়ে গাড়ি চালাও কেন?
রুপম একটু সাবধান হয়েই গাড়ি চালায়।

যাওয়ার আগেই রুপম মেসেজ দিয়ে জানিয়েছিল।
তনি আর যাই কর। আমি আসছি তোমার বাসায় অন্ততঃ দারোয়ান দিয়ে অপমানিত করোনা।
তনিমার কর্ণ কোহরে যেন কথাটি বাঁজিয়া ঊঠিল। মনে মনে খুশি হইল। জানালার শিক ধরে দাঁড়াল। চোঁখ দু,টি তার
কেবলি নীল রঙের গাড়িটার দিকে। কেবলি উত্তেজনার প্রহর, কেবলি উচছলতা কখন আসবে প্রিয়।
ইতিমধ্যেই তনিমা গেটে থাকা তিনজন দারোয়ান কে বলে দিয়েছে যে রুপম আসলে তাকে যেন ভিআইপির মর্যাদায় ঢুকতে দেওয়া হয়।
চলবে.........


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×