somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাগ্যপরীক্ষার অবসান হোক। যোগ্যতার মূল্যায়ন হোক।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষারও রেজাল্ট অবশেষে হয়ে গেল। অর্থাৎ ভাগ্যপরীক্ষার মূল প্রক্রিয়া শেষের পথে। কিন্তু বেদনাদায়ক কিছু প্রশ্ন পিছনে থেকেই যায়। কর্তৃপক্ষ কি অসংখ্য ছাত্রছাত্রীকে বঞ্চিত করল না? নতুন অনেকগুলো মুখ ক্যাম্পাসে সুযোগ পেল। তারা আজ সুখি। তাদের এই সুখ কি আরও অসংখ্যের স্বাভাবিক দুঃখের কারণ হল না? 'ফার্স্ট টাইমে' যারা এবার চান্স পেল, তাদের কোনও দোষ নেই। কিন্তু গতবার যারা 'ফার্স্ট টাইম' ছিল তাদের ও তো কোনও দোষ ছিল না। দ্বিতীয় বারের পরীক্ষার্থীরা একটু বেশি সুবিধা পাই এটা জানা কথা। সুতরাং গতবারের 'ফার্স্ট টাইম'রা তো স্বাভাবিক কারণেই সুযোগ কম পেয়েছিল। তাহলে তাদের প্রতি একধরনের অবিচার করা হল না?

না, দ্বিতীয়বার ভাগ্যপরীক্ষার সুযোগ রাখার পক্ষে কথা বলতে আমি আসিনি। আজকে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দায়ী 'অতীতের লোকদের পরিকল্পনা এবং দুরদর্শিতার অভাব'। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের প্রায় সবকিছুই অপরিকল্পিত। শিক্ষাব্যবস্থাও তার উর্ধে নয়। আবার সকলকিছুর অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠাটাও অস্বাভাবিক ছিল না। স্বাধীনতার পর আমাদের দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনেই কেটে যায় এক দীর্ঘ সময়। এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়ে ওঠেনি।

যাইহোক, দ্বিতীয়বার ভর্তি সুযোগ তুলে নেওয়া সর্বপরি ছাত্রছাত্রীদেরই মঙ্গল, তবে তা একদলের মঙ্গল ছিনিয়ে নিয়ে নয়। এর ফলে স্টুডেন্টদের ভোগান্তি কমবে, তবে একদলকে ভোগান্তিতে ফেলে নয়।

কিন্তু এই পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। একেবারেই যে অসুবিধা হবে না তা না। তবে পরিকল্পনা করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। পরিকল্পনা করে উনারা এই পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন? তাও আবার হঠাৎ করে। যাতে সকলের স্বপ্ন ভেঙে গেল।

কাজটা কোটা পদ্ধতিতে করা যেত বলে আমি মনে করি। প্রত্যেকবারই ৫০% এর বেশি স্টুডেন্ট চান্স পায়, যারা 'সেকেন্ড টাইম'। সুতরাং প্রথম পর্যায়ে সেকেন্ড টাইম - ফার্স্ট টাইমকে ৫০-৫০ তে ভাগ করে দেওয়া যেত। পরের বার হয়তো ৪০-৬০। তারপর ৩০-৭০,,,,,,, এভাবেই কয়েকবারে কয়েক ধাপে প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করলেই ভাল হত বলে আমি মনে করি। খেয়াল করে দেখুন এভাবে করলে প্রত্যেকবারই 'দ্বিতীয়বার ভর্তি প্রত্যাশী'র সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। কয়েক বছর পর আর থাকবেই না।

প্রথমে বঞ্চিত করা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। দ্বিতীয়তে কী? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়? এরপর চট্টগ্রাম? তারপর অন্যকিছু? নাকি সবগুলোই একসাথে? what's on your mind কর্তৃপক্ষ? আপনারা তো আবার হঠাৎ হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন, কিছু বুঝা যায় না। প্লিজ আর এরকম হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিবেন না। যে কোনও পদ্ধতিই হোক, সেটা যেন হয় দুর্ভোগ লাঘবের জন্য, দুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য নয়।

এতক্ষণ হয়তো খেয়াল করেছেন প্রতিটি জায়গায় আমি ভর্তিপরীক্ষাকে ভাগ্যপরীক্ষা হিসেবে বর্ণনা করেছি। আসলেই তাই। প্রচলিত ভর্তিপরীক্ষা, ভাগ্যপরীক্ষা ছাড়া আমার কাছে কিছুই মনে হয় না। ভর্তিপরীক্ষারূপী ভাগ্যপরীক্ষাকে আমি ঘৃণা করি। আমি নিজেও এই ভাগ্যপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই একটি প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত আছি, তারপরও। কিছুদিন আগেই মেডিকেল কলেজে ভাগ্যপরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস উৎসব হয়ে গেল। এসবকে কর্তৃপক্ষ থোড়াই কেয়ার করে। ধরলাম, স্টুডেন্টদের দাবি মেনে নিয়ে কর্তৃপক্ষ যদি দ্বিতীয় বার পরীক্ষার আয়োজন করতো, তবে প্রথম বারে যারা সৎ উপায়ে চান্স পেয়েছিলো, দ্বিতীয়বারে তাদের সবাই কি চান্স পেত? কখনই না। তাহলে কি তারা প্রথমবারের জন্য যোগ্য ছিল? দ্বিতীয়বারের জন্য তারা অযোগ্য? যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কিংবা একই স্টুডেন্ট একই প্রিপারেশনে বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা দেয়। কিন্তু কোথাও চান্স হয়, কোথাও হয় না। তার মানে কি সে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও যোগ্য না? নাকি ভর্তিপরীক্ষা তথা ভাগ্যপরীক্ষার মাধ্যমে তাকে তার 'কপালের লিখন'কেই মেনে নিতে বাধ্য করা হবে!!!!

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য জিপিএ'র ভিত্তিতে ভর্তি খুব সুন্দর সিস্টেম। কিন্তু ঠিক এই মুহুর্তে শিক্ষার যা অবস্থা, তাতে বরং এখনকার ভাগ্যপরীক্ষা সিস্টেমটাই বেশি ভাল। মৌলিক ধারণাই নাই কিন্তু জিপিএ ৫ পেয়ে বসে আছে। ৫০/৬০ হাজার স্টুডেন্ট এপ্লাস পায়। কিন্তু 'ভর্তি পরীক্ষা'য় অধিকাংশই পাসই করতে পারেনা। ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল করার জন্য আলাদা পদ্ধতির দরকার ছিলনা। প্রচলিত পদ্ধতির মধ্যেই সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো সম্ভব ছিল।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×