somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নষ্ট সমাজ ব্যবস্থা ৪ঃ কতটা বেহায়া হলে কাউকে নির্লজ্জ বলা যায়!!! (প্রেক্ষাপট # বাংলাদেশের ফুটবল)

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অব্যাহত পতনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের খেলার মান যেন হাস্যকর অবস্থায় পরিণত হয়েছে। বাফুফে সভাপতির অব্যাহত কথার ফুলঝুড়ির মাঝে পাড়ার ক্লাবের সঙ্গেও ইদানিং হারতে শুরু করেছে জাতীয় দল। বিশ শতকের শেষ আর একুশ শতকের শুরু থেকেই দেশের ফুটবলের পতনের শুরু হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয় একের পর এক কোচ বদল। বাংলাদেশের ফুটবলে কোচের টিকে থাকা আর রাশিয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়া একই বিষয়।

ঠিক এই মুহূর্তে বিশ্ব ফুটবলের মানদন্ডে ১৮৭ নম্বর র‍্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এই বছর ভুটানের কাছে দুবার হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবু ২০১৯ সালকে সফল মনে করছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। ২০১৯ সালটা কেমন গেল দেশের ফুটবলের? কোনো তর্ক-বিতর্কে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। র‍্যাঙ্কিংকে ফুটবলের চূড়ান্ত মানদণ্ড ধরা যায় না, তবু একটি দেশের নিকট অতীতের সাফল্য-ব্যর্থতার একটি চেহারা ফুটে ওঠে তাতে। সে হিসাবে ১৮৭ র‍্যাঙ্কিং নিয়ে বছর শেষ করছে বাংলাদেশ, এতেই বোঝা যাচ্ছে দেশের ফুটবলের অবস্থা। তবু ২০১৯ সালকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের জন্য সফল বলছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

এমন অবস্থায় কীভাবে সফল বলা যায় ২০১৯ সালকে এই প্রশ্ন যখন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ গোলাম সারওয়ার টিপুর কাছে করা হলো, তিনি বললেনঃ
‘এটা কীভাবে সফল বছর হয়, বুঝলাম না। বলার জন্যই হয়তো বলা। পুরুষ ফুটবল ১৮৭ র‍্যাঙ্কিং। হারার ভয়ে নারী দলকে এসএ গেমসে পাঠানো হয় না। এরপরও যখন সফল, তখন বুঝতে হবে দেশের ফুটবলের অবস্থা। ভারতের বিপক্ষে একটা ড্র (বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাই) ছাড়া আমার চোখে ভালো কিছুই চোখে পড়েনি।’

বছর শেষের টুর্নামেন্ট দিয়েই শুরু করা যাক। চলতি মাসে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত ভারতবিহীন দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে পাঁচ দলের টুর্নামেন্টে তৃতীয় হয়েছে বাংলাদেশ। ৪ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের একমাত্র জয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। গেমসের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভুটানের কাছে হারের স্বাদও মিলেছে। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের মোড়কে প্রায় মূল জাতীয় দল খেলেছে গেমসে। তবু এমন পারফরম্যান্সে দলের করুণ ছবিই ফুটে উঠেছে কাঠমান্ডুতে। এই টুর্নামেন্টের আগে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্বেও প্রথমবারের মতো ভুটানের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। এমন ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরও ২০১৯ সালকে সফল বলছেন বাফুফে সভাপতি, ‘২০১৯ সালকে আমি মনে করি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের জন্য একটি সফল বছর।’

২০১৯ সালে মোট ৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ৯ ম্যাচে ৪ জয়, ২ ড্র, ৩ হার। এর মধ্যে দুটি জয় এসেছে ঘরের মাঠে জাতীয় দলের মোড়কে খেলতে আসা ভুটান যুব দলের বিপক্ষে। ফুটবলের সবচেয়ে সফলতা যেটিকে ধরা হচ্ছে, সেটি বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন। কিন্তু এটি মন্দের ভালো ছাড়া কিছু নয়। শেষ রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রাক্-বাছাইপর্বে খেলতে হয়নি বাংলাদেশকে। এবার তলানিতে নেমে যাওয়া খেলতে হয়েছে প্রাক্-বাছাইয়ে। সেই তলানি থেকে দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলের জয়ে লাওস-বাধা পার হওয়া ছিল অন্ধকারে একেবারেই হারিয়ে না যাওয়ার স্বস্তি।

মূল বাছাইয়ে এসে ৪ ম্যাচে তিনটি হার, এক ড্র। জয় নেই। তবে স্বস্তি এটাই, খেলার মানে উন্নতির লক্ষণ। যদিও বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ৪-০ গোলের হার ও এসএ গেমসে ৫ দলের মধ্যে তৃতীয় হওয়ায় সেই উন্নতি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। বাফুফে ভবনে বসে এসব কিছুকেই ফুটবলের অংশ বলে জানিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন, ‘অবশ্যই ফুটবলে উত্থান-পতন আছে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারত ও কাতারের বিপক্ষে পারফরমেন্স যেমন ভালো ছিল, আবার এসএ গেমসে নেমে গিয়েছে। সবকিছু মিলিয়েই ফুটবল। সফলতা থেকে শেখার আছে, ব্যর্থতা থেকেও শেখার আছে।’

বয়সভিত্তিক ফুটবলেও নেই কোনো সাফল্য। অনূর্ধ্ব-১৫ কিশোর সাফ ফুটবলের শিরোপা খোয়াতে হয়েছে। পুরুষ ফুটবলের যখন ত্রাহি অবস্থা, নারী জাতীয় দলের অবস্থা আরও খারাপ। ২০১৭ সালে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১০০-তে উঠে এলেও এই বছর ডিসেম্বরে এসে সেটা ১৩০-এ। ২০১৮ সালে সাফে রানার্সআপ হওয়া বাংলাদেশ এই বছর সাফে নেপালের কাছে ৩-০ ও ভারতের কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে। জয় শুধু ভুটানের বিপক্ষে ২-০ গোলে। বাজে ফলাফলের শঙ্কায় এসএ গেমসে দলই পাঠায়নি বাফুফে।

সাফল্য অবশ্য কিছুটা আছে। ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডে রানারআপ হয়ে চূড়ান্ত পর্বে ওঠে। অবশ্য বছরের প্রথমভাগেই একমাত্র শিরোপাটি জেতে মেয়েরা। সেটি এপ্রিলে ঢাকায় বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে। সেবারও ঝড়বৃষ্টিকে কারণ দেখিয়ে ফাইনাল ম্যাচ আয়োজন করেনি বাফুফে। ফলে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ ও লাওস।

সুত্রঃ

এই দেশের ফুটবল ইতিহাস কি বলে?



গেল শতাব্দীর শেষ দশক ছিল বাংলাদেশের ফুটবলের সেরা সময়। র‍্যাঙ্কিংয়ে দেখায় ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৬ নম্বরে।

যেটা ২০০০ নাগাদ ১৫১ নম্বরে আসে। এরপর বাংলাদেশ ফুটবল দল ফিফার এই তালিকায় উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে যায়।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ ছিল ১৭৪ নম্বর অবস্থানে, সেখান থেকে এক বছরের ব্যবধানে ১৪৯ নম্বরে উঠে আসে বাংলাদেশ।

কিন্তু এরপর নামতে নামতে ২০০ এর কাছাকাছি পৌঁছায়, অল্পের জন্য ২০০ না ছুঁলেও বাংলাদেশ ১৯৭ নম্বরে নেমে আসে ২০১৭ সালে।

এই ধারাবাহিক পতনের প্রায় পুরোটা সময় ধরেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
একটা দেশের ফুটবল’কে ধংশের শেষ সীমায় নিয়ে উনি এখন দাবী করছেন সাফল্যের কথা। বেহায়াপণার একটা সীমা তো থাকা উচিত!!!

দূর্নীতির আখরায় পরিনত হয়েছে বাফুফে



দুদকের কাঠগড়ায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। তার সাথে আরও ফেঁসে যাচ্ছেন বাফুফে সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরন ও প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবু হোসেন। বাফুফেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের চিঠির বিষয়টি নাড়া দিয়েছে ফুটবল সংশ্লিষ্টদের। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও সাবেক বাফুফে সদস্য হাসানুজ্জামান খান বাবলু বলেন, ‘সাবেক ফুটবলার হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার। বাংলাদেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার কর্মকর্তাদের কাছে এমন চিঠি আমাদের জন্য বিব্রতকর।’

বাফুফের হিসাব-নিকাশ বরাবরই ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। ২০০৮-১২ মেয়াদের নির্বাহী সদস্য বাবলু পরে বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছিলেন। বাফুফের হিসাব সংক্রান্ত বিষয়ে তার মন্তব্য, ‘সাধারণ সদস্যরা হিসাব-নিকাশ নিয়ে কোনো তথ্য জানতে পারত না। নির্বাহী সদস্যরা যেখানে জানতে পারত না, সেখানে কাউন্সিলরদের জানাটা দুরূহ। গত ১০ বছরে মাত্র দুটি এজিএম ও দুটি ইজিএম হয়েছে। যেটা গণতান্ত্রিক ধারার বিরুদ্ধে।’

সাবেক কৃতী ক্রীড়াবিদ, মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার ডানা বলেন, ‘ফুটবল ফেডারেশন ও তাদের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেকদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশন চিঠি দেয়ায় গুঞ্জন সত্যি হল। দেশের ফুটবলের স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’

বাফুফের সাবেক সদস্য আবদুল গাফফার এমন ঘটনায় ব্যথিত, ‘একজন সাবেক ফুটবলার হিসেবে আমি খুবই মর্মাহত। সামগ্রিকভাবে ফুটবলের জন্য বিষয়টি নেতিবাচক। ফুটবলে পৃষ্ঠপোষকতা এমনিতেই হয় না। এ ঘটনায় পৃষ্ঠপোষকরা আগ্রহী হবেন না। সংকট আরও বাড়বে।’

২০১৬ সালে ১৮ ডিসেম্বর যুগান্তরে একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। বাফুফের ব্যাপক দুর্নীতি, নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং ফুটবলকে আবার টেনে তোলার ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ফরিদ আহমেদের স্বাক্ষরিত চিঠি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগ থামিয়ে দেয়া হয়।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, একসময় ফুটবল ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। আজ বাংলাদেশের ফুটবলের অবস্থা শোচনীয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ফুটবলের রুগ্ন অবস্থার জন্য বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন দায়ী। বর্তমানে ক্রিকেটসহ অন্যান্য ক্রীড়া আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। অথচ ফুটবল বাংলাদেশের জন্য অপমান বয়ে নিয়ে আসছে। যার কোনো কারণ থাকা উচিত নয়।

প্রতিবেদনে ফুটবলের বর্তমান শোচনীয় অবস্থার জন্য একাধিক কারণ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে বাফুফে সভাপতির চারিত্রিক দুর্বলতা, ফুটবল ফেডারেশনের ঋণ করা টাকায় জুয়ার আসর বসানো, সভাপতির অদূরদর্শিতায় বাংলাদেশের জরিমানা, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সরাসরি সম্প্রচারে টেলিকাস্টিংয়ের যন্ত্রপাতি ভাড়া করার নামে দুর্নীতি, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের নাম ভাঙিয়ে ইউরো ফুটবল টুর্নামেন্টের টিকিট-দুর্নীতি, বাফুফে সভাপতি ও মাহফুজা আক্তার কিরনের যৌথ দুর্নীতি, সভার কার্যবিবরণী নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি, বাফুফের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা ও উত্তোলনে অনিয়ম, সিলেট বিকেএসপি ক্যাম্পাসে ফুটবল একাডেমির নামে দুর্নীতি, ফিফার প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতি, রাজনৈতিক আস্ফালন উল্লেখযোগ্য।

এসব দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার জেরে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে শিগগিরই প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে সরকারের ভাবমূর্তি ও ফুটবলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়। সেই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন করে সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের অর্জিত সম্পদের সঠিক হিসাব নির্ণয় করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছিল।

কিন্তু যেই লাউ সেই কদু। কাজের কাজ কিছু হয় নি। কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয় নি। যার ফলে ক্রমাগত ভাবে ফুটবলের অধঃপতন চলছেই। সীমাহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলাফল এখন সবার কাছেই সুস্পষ্ট।
সুত্রঃ

বর্তমান সরকারের মতো এখানেও চলেছে স্বৈরাচারী ক্ষমতা দখলের রাজনীতি



ক্রীড়াঙ্গনের বৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আরেকটি নির্বাচন দ্বারপ্রান্তে। ১৯৯৮ সাল থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে বাফুফের কমিটি গঠন হচ্ছে। ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল বাফুফের শেষ নির্বাচন হয়। চার বছরের মেয়াদ শেষের দিকে। নতুন নির্বাচন হতে বড়জোর চার মাস সময় আছে। বড় পদ সভাপতি হতে কারা নির্বাচন করবেন তা অনেকটাই স্পষ্ট। বাফুফে বর্তমান সভাপতি লোভী ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন এবং চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল চেয়ারম্যান এবং সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদিও দুজন চূড়ান্তভাবে ঘোষণা দেননি, তারপরও তাদের কার্যক্রমই বলে দিচ্ছে সভাপতি পদে তারা লড়বেন।

এর আগে তিনবার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ফুটবলে নতুন রেকর্ড গড়েন সালাউদ্দিন। গত নির্বাচনী প্রচারের সময় সালাউদ্দিন মিডিয়াকে বলেছিলেন, এটিই তার শেষ নির্বাচন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছেন। এখনই নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ক্রীড়াঙ্গন। দুজনই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সংগঠকদের নিয়ে। আজ গাজীপুরের একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হবে বর্তমান কমিটির অধীনে প্রথম সাধারণ সভা। আর এ সভায় তোপের মধ্যে পড়তে পারেন সালাউদ্দিন। গতবার তারই প্যানেলে পাস করা সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহি অডিট রিপোর্ট নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। আরেক সভাপতি বাদল রায়ও ফেডারেশনের কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ। বিভিন্ন ক্লাব অংশগ্রহণকারী অর্থ ঠিকমতো না পাওয়ায় তারাও হতাশ। বাফুফে হিসাব নিয়ে কাজী সালাউদ্দিনকে দুদকও তলব করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করার অভিযোগের মামলায় মহিলা সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ জেলও খেটেছেন। মহি ও বাদল যেমন অডিট রিপোর্ট নিয়ে ক্ষুব্ধ, তেমনি নির্বাহী কমিটির বেশ কজন সদস্য সভাপতির কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট নন। একজন সদস্য বলেন, বাফুফে যেভাবে চলছে তাতে তিন সদস্যের কমিটিই বলা যায়। তারাই নিজেদের খুশিমতো ফেডারেশন চালাচ্ছেন। বাকিদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন মনে করেন না। অনেকে আজকের সাধারণ সভাকে নির্বাচনী শোডাউন মনে করছেন।
সুত্রঃ Click This Link

ফুটবলের কোচ নিয়োগ নিয়েও চলছে ভানুমতির খেলা



উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে চলতি ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২০ জন কোচ এসেছেন এবং গিয়েছেন! এর আগে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত কোচের তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৭৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৩২ বছরে কোচ ছিলেন মাত্র ১২ জন। আর সর্বশেষ ১০ বছরের হিসেবে দেখা যায়, বছরপ্রতি ২জন করে কোচ এনেছে এবং বিদায় করেছে বাফুফে!

২০০৮ সালের মে মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন দেশিয় কোচ সৈয়দ হাসান কানন। তারপর ২ মাসের জন্য আবু ইউসুফকে কোচ করা হয়। সাবেক তারকা শফিকুল ইসলাম মানিক ওই বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন ব্রাজিলের কোচ ডিডো। তিনি একটু বেশি সময় নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হন। ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ মাস দায়িত্ব পালন করেন দেশিয় কোচ রিজওয়ান আলী জাহেদ।

২০১০ সালের জানুয়ারিতে আনা হয় সার্বিয়ান কোচ জোরান জর্জেভিচকে। উনি ফ্রেব্রুয়ারিতেই বিদায় হন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন সাইফুল বারী টিটু। সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত বেশ কয়েকমাস কাটিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ান কোচ রবার্ট রুবচিচ। ওই বছর জুনে এসেই বিদায় হন মেসিডোনিয়ান কোচ জর্জ ইভানোভস্কি। ওই মাসেই নতুন কোচ হিসেবে আসেন নিকোলা ইলিয়ভস্কি। টিকে যান ডিসেম্বর পর্যন্ত।

২০১২ সালের শুরু থেকে কোচহীন জাতীয় ফুটবল দল। সেপ্টেম্বরে পুনরায় দায়িত্ব পান সাইফুল বারী টিটু। কাটিয়ে দেন ডিসেম্বর পর্যন্ত। জানুয়ারি ২০১৩ সালে আসেন নেদাল্যান্ডের কোচ লডউইক ডি ক্রুইপ। গত ১০ বছরে তিনিই সম্ভবত বেশি সময় টিকে থাকা কোচ। টিকে যান ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ওই মাসেই নতুন কোচ হিসেবে আসেন ইতালিয়ান ফাবিও লোপেজ। নভেম্বরেই বিদায় নেন তিনি।

২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন দেশিয় কোচ মারুফুল হক। ফেব্রুয়ারিতে আসেন গঞ্জালো সানচেজ মরেনো। মে মাস পর্যন্ত টিকেছিলেন এই স্প্যনিশ কোচ। মে মাসে দায়িত্ব নিয়ে জুন মাসেই বিদায় হন নেদারল্যান্ডসের কোচ লুডউইক ডি ক্রুইফ। ২০১৬ সালের জুনে আসেন টম সেইন্টফিট। এই বেলজিয়ান কোচ টিকে যান অক্টোবর পর্যন্ত। তারপর আবারও কোচহীন বাংলাদেশ।

২০১৭ সালের মে মাসে নতুন কোচ হিসেবে আসেন ইংলিশ-অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্ডু ওর্ড। চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি যোগ দেন থাইল্যান্ডে ক্লাব এয়ারফোর্স সেন্ট্রাল এফসিতে। একটি জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে অচেনা ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়া মানে আমাদের ফুটবলের মান কতটা নীচে বুঝতে পারছেন? চলতি বছরের মে মাসে নতুন কোচ হিসেবে এসেছেন ইংল্যান্ডের জেমি ডে। কতদিন টিকতে পারেন দেখা যাক।
সুত্রঃ Click This Link

বাংলাদেশের ফুটবলের অতীত ইতিহাস:

বাংলাদেশের ফুটবলের অতীত ইতিহাস অত্যন্ত চমৎকার। এ ইতিহাস মাঝপথে সীমাহীন দূর্নীতিতে গতি হারিয়েছে। বাংলার ফুটবল গৌরবের জাদুকর সামাদের নামটি চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। বলা হয়, বল তাঁর পায়ে আঠার মতো লেখে থাকত। বল নিয়ে তিনি যা খুশি তাই করতে পারতেন। কৌশলে, চাতুর্যে, ভোজবাজিতে, তীক্ষ্ণবুদ্ধিতে তাঁর পা-শরীর-মাথা ও বল যেসব পরিস্থিতি ও দৃশ্যের অবতারণা করত, বিপক্ষ দলের কাছে তা ছিল অভাবনীয়। বল নিয়ে অদ্ভুত অবিশ্বাস্য কাণ্ড করার জন্যই তিনি হয়ে উঠেছিলেন ফুটবলের প্রবাদপুরুষ, অতুলনীয় জাদুকর। খুব মজা পেতেন বলে লাথি না দিয়ে গোল করতে। গোলকিপারকে যেন সম্মোহিত করে বল নিয়ে ঢুকে যেতেন গোলপোস্টের ভেতরে। কখনো কখনো সব খেলোয়াড়কে কাটিয়ে নিয়ে গোলকিপারকে একা পেয়েও করুণা করে গোল না দিয়ে বল নিয়ে ফিরে আসতেন মাঠের একপ্রান্তে। শুরু করতেন গ্যালারি শো। দর্শক মাতানোর তাঁর এই কৌশল তাঁকে কিংবদন্তিতে পরিণত করে।



১৯৫০-এর দশকে ঢাকা স্টেডিয়াম নির্মিত হওয়ার পরে ফুটবল খেলা বেশ জমাটি হয়ে ওঠে। মোহামেডান, ওয়ান্ডারার্স, ওয়ারী ক্লাব, আজাদ স্পোর্টিং বেশ জনপ্রিয় দল তখন। মোডামেডান ও ওয়ান্ডারার্সের মধ্যে সে সময় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতো। দর্শকেরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুই দলকে সমর্থন করত। আজাদ স্পোর্টিং ছিল ছিমছাম ও নান্দনিক ফুটবলের দল। ছন্দময় ফুটবল অনুরাগীদের অনেকেই ছিলেন এই দলের সমর্থক। এই চারটি দলকে নিয়েও ফুটবল উন্মাদনা কম ছিল না। কৈশোরত্তীর্ণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একসময় ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ফুটবলার ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে শেখ কামাল প্রতিষ্ঠা করেন আবাহনী ক্রীড়াচক্র । এই দলের নান্দনিক কৌশলময় খেলা বিপুল দর্শকের চিত্তজয় ও উন্মাদনায় বিশাল ভূমিকা রাখে। মোহামেডান আর আবাহনীর খেলার দিনটি তখন হয়ে উঠত দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ।

এককালের দেশসেরা দুই ক্লাবের খেলা মনে করিয়ে দেয় ছোটবেলার ফুটবল উন্মাদনার এক ভুলে যাওয়া অধ্যায়ের কথা। ৮০র দশকের শেষ দু’এক বছর থেকে ৯০দশকের মাঝামাঝি সময়ের কথা। ফুটবল তখন এক মহা উন্মাদনার নাম। তখন আমরা স্কুলে পড়ি। দেশে তখন ফুটবলের পরাক্রমশালী দুটি ক্লাব ছিল, প্রথমটি ঐতিহ্যবাহী ঢাকার মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব আর অন্যটি আবাহনী লিমিটেড। সারা দেশে সমর্থক দুই দলে বিভক্ত ছিল। আমি ছিলাম মোহামেডানের কট্টর সমর্থক। সত্যি কথা বলতে কি সেসময়ে মোহামেডান ও আবহনী এ দুটি প্রধান দলের পেছনেই ছিল শতকরা ৯০ ভাগ সমর্থক। তাদের লড়াই ছিল খুব মর্যাদাপূর্ণ। দু’দলের সাফল্যের মূল নিয়ামক ছিল মর্যাদাপূর্ণ এই লড়াইয়ের ফলাফল। কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান অবস্থা। তখনকার ফুটবলারদের মানও ছিল অনেক উন্নত। মোহামেডান দলে তখন খেলতেন কায়সার হামিদ, বাংলার ম্যারাডোনা খ্যাত সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, কানন, নকিব, জনি, জুয়েল রানা, মানিক, পনির সহ দেশবিখ্যাত সব খেলোয়ার। বিদেশী খেলোয়ারদের মধ্যে ছিল এমেকা, নালজেগার, নাসের হেজাজী, রাশিয়ান রহিমভ, ইরানিয়ান আর এক সুপারস্টার ভিজেন তাহিরি। এসব কুশলী প্লেয়ারদের ক্রীড়া নৈপুণ্য ছিল সত্যিই দেখার মত। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত পরপর তিনবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ান হয়ে ”আনবিটেন হ্যাটট্রিক” করার অনন্য রেকর্ড স্খাপন করে সাদা-কালো জার্সিধারীরা। ফুটবলের লড়াই মাঝে মাঝে গ্যালারিতেও নেমে আসত। গ্যালারি তখন হয়ে উঠত উন্মত্ত, রণক্ষেত্র। নিজ দলের পরাজয় হলে স্টেডিয়াম এলাকায় প্রায়ই প্রলয় ঘটে যেত। মারামারি, দৌড়ানিতে গোটা এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে উঠত। সেই সময়ে ঢাকায় একটা গল্প প্রচলিত ছিল। গল্পটি হলো, কোন এক নতুন দর্শক-সমর্থক গ্যালারিতে বসে আরামসে খেলা দেখছেন। হঠাৎ প্রিয় দলের গোলে গলা ছেড়ে ‘গোওওওল’ বলে চিতকার করে পড়ে গেলেন মহাবিপদে। আসলে না জেনেই তিনি বিপক্ষ দলের গ্যালারিতে বসেছিলেন। ও হ্যা একটা কথা বলাই হয়নি, গ্যালারিও তখন দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগ সাদা কালোর দখলে অন্য ভাগে আকাশীর দৌরাত্ব। ভুলক্রমে এর অন্যথা হলে বড়ই বিপদের ব্যাপার ছিল! শুধু কি তাই? তখন এই দুদলের দ্বৈরথ অন্য এক মাত্রা পেয়েছিল। যার প্রমাণ “আবাহনী আবাহনী মোহামেডান, কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমান সমান” গানটি। বাংলা সিনেমায়ও জায়গা করে নিয়েছিল এই দুলের প্রাণবন্ত, তুমুল উত্তেজনাময় খেলা।
বিশ শতকের শুরু থেকেই পূর্ববাংলার গ্রামেগঞ্জে ফুটবল বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই ধারাবাহিকতায় টেলিভিশনের যুগে বাংলাদেশে এল বিশ্ব ফুটবলের এক মনমাতানো উপহার। বিশ্বকাপ এলে বোঝা যায় বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের কী উন্মাদনা! বাংলাদেশ দল খেলছে না, তাতে কী? এইদেশের মানুষের রক্তে আছে ফুটবলের নেশা। অতএব সমর্থন করো নান্দনিক ফুটবলের কারিগর ব্রাজিল, না হয় আর্জেন্টিনাকে। এ দুই দলের ভক্তে বিভক্ত সারা বাংলাদেশের ফুটবল-পাগল দর্শক। কিছু কিছু সমর্থক জার্মানি, ইটালি, ফ্রান্স বা আফ্রিকার কোনো কোনো দলের। শুধু কি সমর্থন, বিভিন্ন দেশের পতাকায় পতাকায় ছেয়ে যায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফুটবলপ্রিয় মানুষের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, উঁচু গাছ, বা দালানকোঠার। কোনো কোনো দর্শক চমক দেওয়ার জন্য সর্ববৃহৎ পতাকা উড়িয়েও বাজিমাত করতে চায়। তিরিশ বা চল্লিশ ফুট বা আরও লম্বা পতাকাও তৈরির গোপন প্রতিযোগিতা চলে।


শেষ কথাঃ


দুঃখের বিষয় হচ্ছে প্রায় অর্ধশত বছর ধরে খেলে আসা ফুটবলে এখন আমাদের অবস্থান সত্যি প্রচন্ড হতাশাজনক। প্রতিবার বিশ্বকাপ আসলে সারা দেশেই ফুটবল নিয়ে উন্মাদন সৃষ্টি হয় সেটা দেখেও এর সাথে সংশ্লিট ব্যক্তিদের বোধদয় হয় না। ফুটবলে এই দেশকে এগিয়ে নিতে হলে তৃণমূল পর্যায় থেকেই খেলোয়াড়দের সৃষ্টি করতে হবে। তৃণমূল পর্যায় থেকে আরও প্রতিভা অন্বেষণে বেশি বেশি করে বিভিন্ন ধরণের টুর্নামেন্টের আয়োজন করলে অনেক মেধাবী খেলোয়াড়রা উঠে আসতে পারবেন। আমাদের তৃনমূল পর্যায়ে যারা মেধাবী খেলোয়াড় রয়েছেন তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই তাদের প্রতিভা বিকশিত হবে। এটাই একমাত্র রাস্তা।

কোথায় হারিয়ে গেলো বাংলাদেশের ফুটবলের সেই দাপট? পুরোনো এই প্রশ্নটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে বারবার। কিছুদিন আগেও র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৯৭তে নেমে গিয়েছিল যেটা সর্বনিন্ম র‍্যাঙ্কিংয়ের ইতিহাস, অতীতে কখনোই র‍্যাঙ্কিংয়ের এতোটা নিচে নামেনি বাংলাদেশ। একটা সময় প্রতিবেশি দেশ ভারত র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের কাছাকাছি অবস্থানে থাকতো। কিন্তু এখন র‍্যাঙ্কিংয়ে ভারত তড়তড় করে এগুচ্ছে আর বাংলাদেশ নামতে নামতে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেছে। ১৯৯৬ সালে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১১০ নম্বর অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। সেই ফুটবল পাগল দেশটা এখন কিনা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৯৭ নম্বরে! ভাবা যায় কোথায় এখন আমরা?

এশিয়া কাপ বাছাই পর্বের প্লে-অফের ফিরতি পর্বে ভুটানের কাছে ৩-১ ব্যবধানে পরাজয়কে মনে করা হচ্ছিল বাংলাদেশের ফুটবলের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়ার মত। লজ্জাজনক ওই পরাজয়ের পর অনেক কথাই উঠছে। বাফুফে কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে সচেতন মহল থেকে। যদিও তারা ঠিকই নির্লজ্জভাবে গদি আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন, নতুন নতুন পরিকল্পনা দিচ্ছেন, হাস্যকর সব ক্যালেন্ডার ঘোষণা করছেন।

কিন্তু ভুটানের কাছে সেই পরাজয়ের ঢেউ যে কোথায় গিয়ে আছড়ে পড়তে পারে, তা হয়তো কারও কল্পনাতেই ছিল না। সেই প্রভাবটা খুব বাজেভাবেই পড়েছে ফিফা র‍্যাংকিংয়ের ওপর। ফিফা র‍্যাংকিংয়ের বলছে ইতিহাসের সবচেয়ে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বাংলাদেশের ফুটবল। ফিফার সদস্য মোট ২০৫টি দেশ। সর্বনিম্ন ২০৫তম স্থানে রয়েছে টোঙ্গা। এভাবেই যদি চলতে থাকে বাংলাদেশও একসময় র‍্যাংকিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করবে আর আমাকে এসে সেই দুঃখে পোস্ট দিতে হবে।

এই দেশের ফুটবল খেলা গ্যালারীতে যেয়ে দেখা হয় না প্রায় বহুদিন হয়ে গেল। তারপরও দেশের ফুটবল নিয়ে যেকোন খবর মনোযোগ দিয়ে পড়ি আর মনে মনে স্বপ্ন দেখি ঠিক ঠিক একদিন আমরা বিশ্বকাপে খেলতে পারবো। না চাইতেও মনে পড়ে যায় ফেলে আসা সেই সব ফুটবলের সোনালী দিনগুলির কথা!

সময়ের কালস্রোতে, দূর্নীতির আখড়ায় আর বাস্তবতার জঘন্য নির্লজ্জতায় আমরা ভরাক্রান্ত।

কেউ কি আমায় ফিরিয়ে দিতে পারবেন মোহামেডান আর আবাহনীর খেলার দিনগুলির মতো দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ সেই মুহূর্তগুলি আবার!

একই বিষয়ে আমার আগের পোস্টঃ [link|https://www.somewhereinblog.net/blog/nilakas39/30245840|নষ্ট সমাজ ব্যবস্থা ১ঃ ফুটবল, বাংলাদ্শে আর বাস্তবতা


সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@ নীল আকাশ, ডিসেম্বর ২০১৯

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:২১
৩২টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×