একদিন এই দেশের মায়েরা তাদের শিশু সন্তানদের গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিবে। শিশুরাও ঘুমাতে যাবে সেসব রুপকথার গল্প শুনে। মায়েরা বলবে, “জানিস খোকা এই দেশটির নাম ছিল ভাষার নামে। নিজের মায়ের ভাষার জন্য আন্দোলন করেছিলো এই জাতি, সংগ্রাম করেছিলো মুক্তির জন্য। বিশ্বের অন্যতম সুসজ্জিত, প্রশিক্ষিত এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সাথে লড়েছিলো আমাদের পূর্ব পুরুষরা। লুঙ্গি পড়ে, খালি পায়ে, না খেয়ে, মশার কামড় খেয়ে, বন-জঙ্গলে রাত কাটিয়ে জয় ছিনিয়েও এনেছিলো। তখন এই দেশেই জন্মানো কিছু দালাল চেয়েছিল সেই শত্রুদের জুতা পালিশ করে তাদের পায়ের নীচে থাকতে। কিন্তু বাংলার দামাল ছেলেরা তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। কিন্তু তারা একটু ভুল করেছিলো। তারা তাৎক্ষণিক খুঁজে খুঁজে সেই দালালগুলোকে মেরে ফেলেনি। যখনি সেই দালালগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে চেয়েছে তখনই সে দালালগুলোর পক্ষে আওয়াজ তুলেছে আরো কিছু চুতিয়া। তারা তখন মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক মান এবং নৈতিকতার দোহাই দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে দেয়নি। সেই কি পাহাড়সম ষড়যন্ত্র! একে একে মুক্তিবুদ্ধির চর্চা করা লোকজনকে ধরে ধরে হত্যা করা শুরু করলো। তখন কেউ আর সেই নৈতিকতা, মানবাধিকার কিংবা আন্তর্জাতিক মানের প্রশ্ন তুললো না। সংখ্যালঘু হয়ে পড়লো তারা। বাকীরা চুপ করে গেলো।…. ক্ষমতায় বসানো হলো উগ্র ধর্মান্ধদের। নৈতিকতা নিয়ে কথা বলার আর কেউ রইলো না তখন। অফিসগুলোতে নারীদের চাকুরীর অধিকার রহিত করা হলো। এর কয়েক বছর পরে বন্ধ করা হলো নারী শিক্ষা। সরকারীভাবে আইন পাশ করা হলো, নারীরা ঘর থেকে বের হতে পারবে না। স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী হতে ছাত্রদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হলো। জানিস খোকা, শেষ যেদিন টেলিভিশন দেখেছিলাম, সেদিন সংবাদে বলেছিল সংবিধান পরিবর্তন করে এই দেশের নাম বদলে নতুন নাম রাখা হয়েছে, বাংলাস্তান।”
লেখক: অরন্য কবির (প্রবাস থেকে)
সুত্র :[
প্রথমবার্তা]
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১৪