'আকাশটাকে ঘুম পাড়িয়ে চাঁদ জেগে থাকবে রাতভর,
আমার গল্প ফুরিয়ে যাবে...তবু..., আপনি বলবেন, তারপর?'
প্রেমের মধ্যে একটা অবাধ্য ব্যাপার আছে। আয়োজন করে অপেক্ষা করলে তার দেখা মেলা দায়। যখনই তার আগমন অপ্রত্যাশিত এবং অসুবিধাজনক, তখনই সে মহা সমারোহে পালকি চড়ে আসে। প্রেম তো আবদার করে আদায় করার মতো বিষয় নয়, প্রেমের একটা নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। মুখের কথা সবাইকে শোনানো যায়, তবে মনের কথা; কেবল মনের মানুষকে শোনাতে হয়। প্রেমের মতো আকাংক্ষিত জিনিস চেয়ে পেতে ভালো লাগে না, কেমন লাগে তাও ভাবাই যায় না। কিছু মানুষের স্বভাবের সৌন্দর্য দেখা মাত্র চোখে পড়ে না। তবে একটু মন দিয়ে খুঁজলে সুপ্রকাশ হয়ে পড়ে। সুন্দরের সার্থকতা সৌন্দর্যে। সৌন্দর্যের একটা মোহিনী শক্তি আছে। মাসুম সাহেবের ঠোটের সাথে বোধ করি হার্টে্র একটা কানেকশন আছে। তিনি হাসলে মনে হয় অন্তর দিয়ে হাসছেন। আর আমি ভাবি ‘আপনার একটুখানি হাসি আমাকে বাঁচাতে পারে হাজার বছর’। তিনি চোখ তুলে তাকালে আমি তো ফিদা! অনেকটা এমন যে ‘সব পথও এসে মিলে গেলো শেষে তাঁর ওদু’খানি নয়নে’।
মাসুম সাহেব সেই মানুষ যার ব্যাপারে সম্ভবত আমি নিজেই নিজের কাছে নিরপেক্ষ থাকতে পারি না। তাঁকে ভয়ংকর ভাবে কাছে পেতে চাওয়ার নামই বোধহয় ভালোবাসা, কিন্তু তাঁকে চেয়ে ফেলাটাই আমার কাছে বিভ্রম মনে হয়। এই অনুভূতি বড় তরল, কিছুতেই নিখুঁত করে বলতে পারি না। ঝড়ো বেগে চলে যচ্ছে সময়। সর্বগ্রাসী বাস্তবতার অতলান্তে ডুবে গেছে সব, শুধু অহমিকার ক্ষুদ্র দ্বীপটুকু জেগে আছে অপরিসীম ভালাবাসায়। তাঁর নিরন্তর ভালোবাসা, অপার আগ্রহ, একাগ্রতা, সৌজন্যতা, আত্মসচেতনহীন মনোভাব আমাকে মুগ্ধ করে। মাসুম সাহেবের মধ্যে যে গুনটা আমার সবথেকে প্রিয় সেটা হল; তিনি দারুন লিখেন। তাঁর সাথে যে কোনো মূল্যে চিঠি লেখালিখিটা ধরে রাখতে হবে। দিনের পর দিন উত্তরবিহীন আত্ম-জিজ্ঞাসার পর জেনেছি নারীদের জন্য তাঁর পছন্দের পোশাক শাড়ি। মাসুম সাহেব বলেন, একই শাড়ি; মা পরলে তিনি তার আঁচল দিয়ে মুখ মোছেন। আর প্রেমিকা পরলে তিনি মনে মনে সেই আঁচলে চুমু খান। তারপর থেকে কল্পনায় আমি সব শাড়ির আঁচল জুড়ে তাঁর চুমু কুড়োই।
গণমাধ্যমে রোজ কত খবর বেরয় কিন্তু ঐ খবর তো কোথাও নেই যে আমি মাসুম সাহেবকে ভালোবাসি। প্রায়শ তাকে লিখে পাঠাতে ইচ্ছে করে 'যৌথ ডানা মেলে আকাশটা দখলে নেব। আপনি আমার হলে, আমিও আপনার হবো'। হঠাৎ একদিন মনে মনে একটা বেহিসেবী কাজ করে ফেললাম। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে ফেললাম ‘এতদিন কোথায় ছিলেন'। মাসুম সাহেবের অবাক চোখের নীরব ভাষার প্রতিউত্তরে ভেবেছি বলবো 'বুকের পাজর খুলে দেখুন সত্যি আমি হৃদয় দিয়ে চাই’। আমার আকাংক্ষার আশকারায় উনার উত্তর হতে পারে, ‘রোজ সকালে ঘুমের ঘোরে থাকবে যখন একা; খুব আদরের ছোঁয়া পাবে তোমার সিথীর রেখা’… হা মুঝে মঞ্জুর হে আপকি যো ফায়সালা
এমন করে ডাকবো না আর বাইরে থেকে, পারি যদি ডাক পাঠাবো অন্তরে তাঁর, আনবো ডেকে... । সত্যি বলতে কি, যেখানে কোনো দাবি নেই সেখানে নৈরাশ্যের জ্বালা সব থেকে তীব্র, কারণ তার কোনও প্রতিকার হয় না।
'একদা এমনই বাদলশেষের রাতে---
মনে হয় যেন শত জনমের আগে
সে এসে সহসা হাত রেখেছিলো হাতে
চেয়েছিলো মুখে সহজিয়া অনুরাগে।
সে-দিনও এমনই ফসলবিলাসী হাওয়া
মেতেছিল তার চিকুরের পাকা ধানে ;
অনাদি যুগের যত চাওয়া, যত পাওয়া
খুঁজেছিল তার আনত দিঠির মানে
একটি কথার দ্বিধাথরথর চূড়ে...
ভর করেছিল সাতটি অমরাবতী'
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৭