দেশের সুষম উন্নয়ন হচ্ছেনা, এটা অনেক আগ থেকেই বলছি এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতির দিকে তাকালে বোঝাই যাচ্ছে সমভাবে উন্নয়ন হচ্ছেনা। বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব বেশি শক্তিশালী নয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি গড়ে চারের নিচে থাকবে। সে তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় কিছুটা উপরে থাকবে। অবশ্য তার বড় কারণ হচ্ছে দেশের অবকাঠামোগত বড় বড় কাজ গুলো দ্রুতগতিতে হওয়া।
আমাদের অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেছেন উনি বর্তমান বিশ্বের সেরা অর্থমন্ত্রী, উনি কোন দিক দিয়ে সেরা হয়েছেন কে জানে! তবে উনার সামনে সেরাদের সেরা হওয়ার সুযোগ ছিল, উনি সেটা পারেননি। উনি গতানুগতিক প্রাইজবন্ডের দিকে না গিয়ে যদি ইনফ্রাস্ট্রাকচারার প্রাইজবন্ড বা অবকাঠামো প্রাইজবন্ড চালু করতেন তাহলে উনি অবশ্যই সেরাদের সেরা হতে পারতেন। এতে উনার বড় বড় প্রজেক্ট গুলোতে দুর্নীতি কমত এবং অর্থ পুঞ্জীভূত না হয় মানুষের হাতে হাতে ছড়াতো।
প্রাইজবন্ডের উপর মুনাফা কমিয়ে দেওয়ায় প্রাইজবন্ড কেনার পরিমাণ অনেক কমে গেছে, সেখান থেকে অর্থসংস্থান করা উনার জন্য একটু কঠিন হয়ে গেছে। দেশে যে সকল বড় বড় অবকাঠামোগত কাজ হচ্ছে, সেগুলি যদি পরিকল্পনামাফিক অভ্যন্তরীন উৎস থেকে অর্থসংস্থান করত তাহলে প্রবৃদ্ধি বাড়ার সাথে সাথে সুষম উন্নয়নের দিকে অর্থনীতি ধাবিত হত। গতানুগতিকভাবে প্রাইজবন্ড ও ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে এসব কাজ করার ফলে সাধারণ মানুষের অর্থ সরাসরি ব্যবহার হচ্ছেনা। সাধারণ মানুষের অর্থ সরাসরি ইনভেস্টমেন্টে থাকলে প্রবৃদ্ধি সুষম প্রবৃদ্ধি হত।
অর্থমন্ত্রী উনার কথার শেষে বলেছেন, “আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হতে বাধ্য, কারণ আমাদের আছে একজন সৎ ও পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী। যিনি জানেন অর্থনৈতিক উন্নয়নকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়”। উনার কথায় বুঝা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যোগ্য লোককেই অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী উনার কাজকর্মে অবশ্যই খুশি। আমরাও চাই আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে থাকুক। তবে নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেগুলোও যেনো আমাদের প্রধানমন্ত্রী উনাকে স্পষ্ট করে বলে দেন। এতে উনার কাজ করতে সুবিধা হবে।
যাই হোক দেশে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য যে বিল পাস করা হয়েছে সেটা ঠিক আছে। এটা আরো আগে করা দরকার ছিল। এখন করাতে বুঝা যাচ্ছে, অর্থসঙ্কটের কারণে এই বুদ্ধি উনার মাথায় এসেছে। তবে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অর্থ উদ্বৃত্ত থাকছে কেনো? এরা এবার পাঁচ ছয়টা বোনাস আর বিদেশ সফর করে এসব টাকা এখন আর উদ্বৃত্ত রাখবে না। গবেষণার জন্য নাকি অর্থ পাওয়া যায়না তাহলে এসব উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে এরা কি করতো?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:২৭