somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই মেয়ে – নাও তোমার খোলাচিঠি!!!

২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৮ ভোর ৪:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই মেয়ে,

তুমি কি জান, আমার প্রথম ভাললাগা ছিলে তুমি। সে কতদিন আগের কথা। এই জানুয়ারিতে দশ বছর হয়ে গেল। সেদিনের তারিখটি মনে আছে কি? আমি বলছি, সেদিন ছিল জানুয়ারির ১৬ তারিখ। তোমার তারিখ কি করে মনে থাকবে? তুমি হয়ত সেদিন আমাকেই দেখই নি। আমি যে কিন্তু শুধু তোমাকেই দেখেছি। যে ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়ে তোমার দেখা পেলাম সে খেলাই দেখা হল না। শুধু তোমারই জন্য। এসো, তোমায় একে একে সব মনে করিয়ে দেই।

সে আজ থেকে দশ বছর আগের কথা। ১৯৯৮ সালের ১৬ জানুয়ারি, আমি তখন ক্লাস টেনে পড়ি। কোন এক বন্ধুর কাছ থেকে বাবা পাকিস্তান – ইন্ডিয়ার ম্যাচের দুইটা টিকেট পেয়েছিল। টুর্নামেন্টটা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তি উপলক্ষে। আমি আর বাবা গিয়েছিলাম ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সে খেলা দেখতে। শুরু হল খেলা। সেদিনই প্রথম সামনে থেকে দেখেছিলাম ইনজামাম, সাইদ আনোয়ার, শহিদ আফ্রিদিকে। তুমি তো আমার খুব কাছেই বসেছিলে, নিশ্চয়ই তোমারও মনে থাকবার কথা। মেয়েরা তো তখন আফ্রিদি শুনলে পাগল। খেলা দেখতে দেখতে এক সময় এদিক ও দিক তাকাতে গিয়েই চোখ আটকে গেল তোমার উপর। তুমি আমার ঠিক পেছনের সারিতে আমার বামের তিন চারটা চেয়ার পরেই বসেছিলে। মনে আছে কি?

এরপর সারাটা দিন তুমিই তো দখল করে রেখেছিলে। তোমার পরনে ছিল লালচে বাদামি গেঞ্জি ও সাদা প্যান্ট। তোমার চুল আর চোখ গুলো আমায় সব থেকে বেশি মাতোয়ারা করেছিল। তোমার লালচে খোলা চুল, ছড়িয়ে ছিল তোমার পিঠে। তোমার চোখ দুটো কি আজ সেই একই ভাবে আমাকে টানবে, আমি জানি না? সারাদিন আমি তোমায় দেখে গেলাম, তুমি একটিবারও আমার দিকে তাকিয়ে ছিলে বলে আমার মনে পড়ে না। তবে, তুমি খেলা দেখার থেকে খাওয়াতেই বেশি মগ্ন ছিলে। আজও তোমার কথা মনে এলেই , ভেসে ওঠে বিশাল সাইজ বার্গারে তুমি কামড় বসাচ্ছ। কিন্তু তুমি তো তখন মোটেও মোটা ছিলে না। জানি না কেন, সেদিন খুব খাচ্ছিলে। আমি তন্ময় হয়ে চেয়ে রইলাম তোমার দিকে। বাবারও চোখ এড়ায়নি ব্যাপারটা, তা আমি তখনই বুঝেছিলাম। তবুও, জানতাম, সেদিনের পর আর কখনও দেখব না। তাই, আমার চোখকে বিশ্রাম দেইনি।
তুমি আমার সব থেকে কাছে এসেছিলে কখন জান? খেলা শেষে। আমি ঠিক তোমার পিছু পিছুই বের হয়েছি মাঠ থেকে। খুব মন চাইছিল, তোমার চুল একটি বার ছুই। কিন্তু, সে সাহস আমার তখন ছিল না। তুমি এসবের কিছুই জান না। তুমি কি জান, একটা ছেলের জীবনের প্রথম ভাললাগা হিসেবে তুমি তার মনে জায়গা করে নিয়েছ। তুমি তো জানই না যে, এরপরের দু’তিন বছর তোমার তাজা স্মৃতি নিয়ে ঘুরেছে সেই ছেলেটি। যখনই কোন নতুন জায়গায় গেছি মন বলেছে “যদি তোমার দেখা পাই’’। কিন্তু, হে! পাষাণ হৃদয় তুমি যে দেখা আর দিলে না।

এরপর কেটে গেল দশটি বছর। আজ এ গভীর রাত্রীতে বলতে পার ঊষা লগ্নে, কেন জানি না একটা গান শুনতে শুনতে সতেজ হয়ে উঠল সেদিনের স্মৃতি। আমি আজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের গন্ডি শেষ করবার পথে, শীঘ্রই ঢুকব কর্মক্ষেত্রে। সেদিন আমার চোখে চশমা ছিল না। এখন, চশমা ছাড়া ঠিক সেই একই দুরুত্বে তোমায় দেখতেও পারব না। চেহারায় তেমন পরিবর্তন হয়নি। সেই স্কুল আমলের চেহারা নিয়েই আছি বলতে পার। এর মাঝে এল গেল কত ভাললাগা, সেই সাথে প্রেম যারে কয়, সেরূপ ভালবাসাও। তবু আমার এ জীবনে তুমিই দখল করে রাখলে প্রথমের আসনটি।

সেদিন কোন ঠিকানাও তো দিলে না, যে চিঠি লিখব। তবুও আজ লিখলাম এ খোলাচিঠি। উড়িয়ে দিলাম সামহোয়্যারইনের জগতে। যদি কখনও এ চিঠি পড় এবং আমায় মনে পড়ে তবে সাড়া দিও। আমাদের এই ঢাকা শহরে সেদিনের মত আর একটা দিন না হয় কাটাব শুধু তোমার পানে চেয়ে।


~ইতি~

!!! সেই ছেলেটি !!!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৩:২২
১৯টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×