আজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়াল আমাদের সম্মানিত ব্লগার রাজীব নূর এবং সেই সাথে জনাব ছাদগাজী সাহেব কে ও দেখলাম খুব উত্তেজিত। এবং ব্লগার রাজীব সাহেব কে ও দেখলাম খুকাথ্যা ভাষা ব্যবহার করছেন। দেশের এমন অবস্থাতে মানসিকতা ঠিক না থাকারই কথা, এ বিষয়টি আমাদের পুরো জাতীর সম্যসা। প্রত্যক্ষভাবে হোক আর পরোক্ষভাবেই হোক।
এখন ও পর্যন্ত প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েই যাচ্ছে। সকল জায়গায়তেই এবং সকল শহরে। পেপার পত্রিকা টিভি দেখলেই আমরা বুঝতে পারি।
বর্তমান গঠনার প্রেক্ষাপট নিয়ে বলি, জুবায়ের আহমদ উনি ছিলেন একজন ইসলামীক বক্তা। তার ওয়াজ মাহফিলে অনেক লোকজনের সমাগম হত। ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে বার্ধক্য পর্যন্ত তিনি ওয়াজ মাহফিলের প্রধান বক্তা হিসেবে নিমন্ত্রীত থাকতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার বেড়তলা গ্রামে তার অনেক বড় একটি মাদ্রাসা ও আছে। আমরা ইতিপূর্বে জানি, তার জানাজায় লক্ষাধিক মানুষের বেশি মানুষ সমাগম হয়েছে। যদিও তার জানাযায় এতো লোকের সমাগম হওয়া এই সময়ে জরুরি ছিল না। এটা না হলেও পারতো আপনাদের কথা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নাই।
আসুন একটু পজিটিভ চিন্তা করি:
উনি সারা বাংলাদেশে ওয়াজ মাহফিল বেশ দাওয়াত পেয়ে থাকতেন।উনার মৃত্যুর খবরে সাধারন মানূষ আবেগময় হয়ে গিয়েছিল। তারা দেশ বিদেশের এমন পরিস্থিতি জেনে ও ভালবাসার আবেগটুকু থেকেই করেছে। আইন,মহামারি এমন কি নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ও তারা ঘড়ে বসে থাকতে পারেনি। আমরা মানুষ তো আমরা এলিয়েন গ্রহের কোন প্রাণী নয়,মানুষের প্রতি মায়া মহব্বত থেকে এরকমটা হয়ছে তার বাহিরে কোন কিছু না। দেখা গেছে ব্রহ্মনবাড়িয়া আসে পাশের জেলা থেকে ও লোক সমাগম হয়েছে।
শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া তেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না পার্শ্ববর্তী জেলা ভৈরব,নরশীংদি,মাধবপুর হবিগন্জ ইত্যাদি। থেকেও অনেক লোক এসেছে। কথা হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা যাঁরা এ একত্রিত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী অন্যায় করেছে। প্রশ্ন হল, বাহিরের জেলার লোক গুলো কিভাবে আসতে পেরেছে? ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার প্রশাসনের ঘাটতি ছিল কিন্তু পার্শ্ববর্তী জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব টা কি ছিল? একমাত্র প্রশাসনই পারতো এই অবুজ মানুষগুলোকে সান্ত্বনা দিতে এবং সান্তনার বাণী শুনেয়ি তাদেরকে এক জায়গায় রাখতে। চেতনাধারী সুশীলরা সেই পার্শ্ববর্তী জেলাকে নিয়ে কেন কথা বলছে না?
বিগত গত ৫ তারিখ গার্মেন্টস কর্মীরা যখন ঢাকার উদ্দেশ্যে পথযাত্রায় সমাগম হয়েছিল তখন সুশীলদের চেতনাবোধ কোথায় ছিল? মাজেদের ফাঁসির আনন্দে কারাগারের সামনে আনন্দ মিছিল বের করা হয়েছিল তখন প্রশাসন সরকারের দায়িত্বশীলতা কোথায় ছিল?
এবং ৫০০ টাকার বিনিময়ে তাদেরকে এয়ারপোর্ট পাসিং করা হয়েছে। এমন হাজারটা উদাহরণ আমি দিতে পারবো, আপনারাও ইতিপূর্বে জানেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওসি, এবং এস পি কে সাময়িকভাবে প্রত্যাখান করা হয়েছে এই ঘটনার জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকার প্রশাসন সেখানে তাদের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা চেতনা বাদীরা তা মেনে নিতে পারছিনা।
৫০ হাজার থেকে ১ লাখের মত প্রবাসীকে কিভাবে দেশে আসে? অতীতে আমরা তা ও দেখলাম অভিযোগ আছে বিদেশ থেকে যাত্রী যখন বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় তখন তাদেরকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তখন আপনাদের চেতনাবোধ কোথায় থাকে? যত সমস্যা শুধু কি ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর? সব অন্যায়-অপরাধ কি ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর দাড়ি টুপি ওয়ালাদের? আর আপনারা দোয়া তুলসী পাতা।
জাতিগত বিবর্তন
এই মুহুর্তের জন্য সত্য হলো আজ এক আনসারির জন্য আমরা পুরো জাতিকে সংস্কৃতিক সভ্যতার দিকে ঠেলে দিতে পারিনা একটা জেলাকে যখন আমরা সাংস্কৃতিকভাবে আলাদা করে দেখি তখন এক জেলার বাসিন্দা হিসেবে মেনে নেওয়া খুবই কষ্টের।
এই মুহূর্তে নিজেকে একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাসি হিসেবে অনুভব করে বলছি, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি তারা কেন নিজেদের আলাদা করতে চাইত? কেন সিঙ্গাপুর,মালয়েশিয়া থেকে পৃথক হয়েছিল? মালদ্বীপ, ভারত ব্রিটিশদের কাছ থেকে কেন পূর্ন স্বাধীনতা চেয়েছিল। জার্মানি অস্ট্রিয়াকে থেকে কেন স্বাধীন হতে চেয়েছিল? অপরদিকে মায়ানমার তারা ও আজ জাতিগত নিদনে (যদিও তারা ভিক্টিম) আজ তাদের এই পরিণতি। ইতিহাস আমাদেরকে তাই শিক্ষা দেয় যেটা আমরা এখন পাচ্ছি। দেশগুলো স্বাধীনতা চেয়েছিল পৃথক করে দেখার কারণেই এখন মনে হচ্ছে।
সভ্যতার এ পর্যায়ে এসেও আমাদের জাতিগতভাবে আমাদের পৃথক করে দেখা কতটুকু অমানবিক হতে সেটা আমার জানা নেই। আপনাদের কারো জানা থাকলে বলতে পারেন? আমার এইটুকু কথার জবাব পারলে এখন দিয়ে যাবেন,ইংরেজদের শোষণ থেকে কেন মুক্তি চেয়েছিলাম?কেন পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা চেয়েছিলাম? তখন শুধু যার যার জেলার মুক্তি চেয়েছিলেন না কেন? জাতিগত কারণে যদি আমাদেরকে পৃথক করে দেখা হয় অদূর ভবিষ্যতে আমরা কি রাঙ্গামাটি ,খাগড়াছড়ির মত স্বাধীনতা চাইব? আমরা কি একটি জুমল্যান্ড দাবি করব? যেমন দাবি করছে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি। খেলতে খেলতে এতদূর যাওয়া ঠিক নয় যেন সর্বশেষ খেলাটা ভয়ংকর রূপ ধারণ! করে। জাতি, সংস্কৃতি,সভ্যতা এগুলি দিয়ে নয়, আপাতত ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী হিসেবে যদি আমাদেরকে দেখেন, আমাদের গর্ব করার মত এমন অনেক কিছুই আছে। যদি আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাস না জানা থাকে তাহলে কমেন্টে লিংক চাইতে পারেন,এবং সেখান থেকে জেনে নিতে পারেন। আমি ঐদিকে আর যেতে চাচ্ছি না।
তারপরও একটা কথা না বললেই নয়, যদি আমাদেরকে তার কাটার বেড়া দিয়ে আলাদা করে রাখা হয়, আমার মনে হয় আপনাদের চুলায় আগুন জ্বালাতে পারবেন না। আগুন জ্বালাতে না পারলে খেতে পারবেন না। আর খেতে না পারলে তখন সভ্যতার বাহাদুরি দেখা যাবে, বহুৎ দেখছি আমেরিকার মতো এত বড় দেশ কি দেখতেছি।
পরিশেষে এটাই বলব মাথায় ব্যাথা অনুভব করলে ওষুধ খেতে হয় মাথা কেটে ফেলে দেওয়া যাবে না। সভ্যতা-সংস্কৃতি কাঁটাতার এগুলো ভিন্ন বিষয়। বর্তমান পরিস্থিতি অন্য বিষয়। সপ্ন দেখি,একদিন আমরা সবাই পরিবর্তনশীল জাতি হয়ে,নিজের জেলার পরিচয়ে বড় না হয়ে সমগ্র বাংলাদেশের পরিচয় বড় হবো। সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।
লেখার সোর্স:--------অপ্রত্যাশিত হিমু ব্লগ