একটা চমৎকার খবর আপনাদের কাছে শেয়ার জন্য এলাম । যদিও আমার ধারণা যে অনেকেই খবরটা আগে থেকেই জানেন এবং এসব এখন আপনার আমার কাছে ডাল ভাতের ব্যাপার । আসলে আমাদের অনেক কয়টা ঐতিহ্যের ভেতরে ব্যাংক উন্নয়ন একটি । সেই ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু হয়েছে এখনও চলছে । সর্বপ্রথম ব্যাংকের উন্নয়ন করে ফেলেছিলেন আমাদের সবার প্রিয় প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর । আমাদের বিশ্বকবির দাদা মশাই । সেই যে ঐতিহ্য চালু হয়েছে এখনও চলছে । সব শেষ যোগ হতে যচ্ছে ইসলামী ব্যাংক । ইসলামী ব্যাংকের লোন ডিস্ট্রিবিউশনের চিত্র যদি আমরা দেখি তাহলে দেখতে পাই যে ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে মোট লোন দেওয়ার পরিমান ছিল প্রা্য় চার হাজার তিনশ কোটি টাকা । সেটা পরের বছরে বেড়ে সাত হাজার একশ কোটিতে, গত বছরের শেষে সেটা ৫ হাজারের ঘরে এসে থেকে। কিন্তু এই বছর সেপ্টেম্বর এসে দেখা যায় লোনের পরিমান দাড়িয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকায় । গতবছর সেখানে ছিল ৫ হাজার, তার আগের বছরে ছিল সাত হাজারে এই বছরে একেবারে ২৫ হাজারে ! ভাবতে পারেন উন্নয়নের ধারাটা !
যাই হোক যে সংবাদটা শেয়ার করতে এসেছি সেটা হচ্ছে আব্দুল্লাহ আর রাকিব নামের এক ২৪ বছর যুবক সম্প্রতি এই ইসলামি ব্যাংকে লোনের জন্য এপ্লাই করেছিলেন এবং সেটা এপ্রুভ হয়ে গেছে । পরিমানটা কত শুনবেন?
৯০০ কোটি টাকা !
জি ঠিকই শুনেছেন । ৯০০ কোটি টাকা । তার কোম্পানীর নাম মেডিগ্রিন এবং কোম্পানীটি মাত্র একমাস আগে জয়েন্ট স্টক রেজিস্টারে কোম্পানি হিসাবে মানে (১১ সেপ্টেম্বে, ২০২২) রেজিস্ট্রেশন করেছে । সব থেকে মজার তথ্য হচ্ছে কোম্পানীর ঠিকানা দিয়ে লোনের জন্য আবেদন করা হয়েছে সেটা একটা ভুয়া ঠিকানা এবং কোম্পানীর মালিক ২৪ বছর বয়স্ক এই রাকিবের কোন সলিড পরিচয় ব্যাংকের কাছে নেই । ডেইলি বিজনেস স্টান্ডার্ডের সাংবাদিক যখন রাকিব সাহেবের এনআইডি দেখতে চায় ব্যাংক কর্তপক্ষ সেটা দেখাতে পারে নাই ।
এবার একটু ভাবেন । একটা কোম্পানি যেটা কিনা মাত্র এক মাস আগে রেজিস্ট্রেশন করেছে, যার অফিসের ঠিকানা ভুল দেওয়া এবং মালিকের এনআইডি ব্যাংকের কাছে নেই, যে কোম্পানির মালিকের বয়স ২৪ বছর এবং যে ইন্টার পাশ, এমন একটা কোম্পানিকে ৯০০ কোটি টাকা লোন এপ্রুভ করা হয়েছে!
এইতো একজনের খবর । ঠিক একই ভাবে আরও দুইটা কোম্পানীকে নয়শ নয়শ করে মোটা দুই হাজার সাতশ কোটি লোন এপ্রুভ হয়েছে । সেই কোম্পানি দুটোর অফিসের ঠিকানাও ভুয়া ।
আপনি আপনার আশে পাশের কোন ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন এই ভাবে?
বেসরকারী ব্যাংকের ভেতরে ইসলমী ব্যাংক সব থেকে বড় এবং এর গ্রাহক সংখ্যা সব থেকে বেশি । এই যে টাকা গুলো ভুয়া একাউন্টের কালে লোন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই টাকা গুলো কিন্তু গ্রাহকের । যদি ব্যাংকের কিছু হয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের সাধারণ মানুষ । যে পরিমান সিকিউরিটি বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকদের দিচ্ছে তা হচ্ছে আপনার এককোটি টাকা ব্যাংকে জমা থাকলে, যদি ব্যাংক দেউলিয়া হয় তাহলে আপনি পাবেন মাত্র একলাখ । এর বেশি না । পরে ব্যাংকের সকল সম্পত্তি বিক্রি করে যা টাকা পাওয়া যাবে তা গ্রাহকের জমার উপরে নির্ভর করে ভাগ করা হবে । তা হতে কত সময় লাগবে কে জানে !
আরও বিস্তারিত জানতে এই সংবাদটা পড়তে পারেন
How a 24-year-old greenhorn is 'blessed' with a Tk900cr loan
এছাড়া প্রথম আলোতে বের হওয়া আরও একটা সংবাদ পড়তে পারেন।
ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’
এভাবে একের পর এক ব্যাংকের যে উন্নয়ন হচ্ছে আশা করি আমরা আরও উন্নয়নের পথে গিয়ে হাজির হব ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২৮