ফিদাতো আলী সরকার। এই নামেই ব্লগে আমি লেখালেখি করতাম। নামটি আমি পেয়েছিলাম ঝুটা এ সেহি নামে একটা সিনামা থেকে। নায়িকা মিসকা নায়কে, এই নাম রেখেছিল। সিনেমাটা আমি অনেকবার দেখেছি। সিনেমাটি ফ্লপ, কাহিনীটা খুব ভালো লেগেছিল।সেই সময় অনেকটা একাকীত্ব জীবন কাটতো। একটা প্রেম করার খুব ইচ্ছে ছিল। বিশেষ করে সালমানের মেনে প্যায়ার কিয়া দেখে। আমার একটা সমস্যা ছিল, ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের থেকে দূরে দূরে থাকতাম। একটু বড় হওয়ার পর তাদের দিকে তাকাতে পারতাম না। মেয়েদের স্কুলের দাড়িয়ে থাকা বা আশে-পাশের মেয়েদের সাথে কথা বলা বা ডিস্টার্ব করা আমার চরিত্রে ছিল না। আমি কখনো প্রেম পত্র লিখি নাই, কেউ আমাকে দেয়ও নাই।
আমার আব্বা একটু অন্যরকম ছিল। সে ঠিক করেছিল, আমাকে চারটি বিবাহ দিবে। আমরা অনেক আগের থেকেই হিন্দি সিনেমা দেখতাম। প্রথম সিনেমা বোধহয় ১৯৮৩ সালে দেখেছিলাম। যাই হোক, চার জন হিন্দি নায়িকা ঠিক করে রেখেছিল। এক নম্বর শ্রিদেবী, দুই মীনাক্ষী, তিন ফারহা আর চার মাধুরী। এর মধ্যে আমার মাধুরীকে বেশি পছন্দ হতো। আম্মার আবার পছন্দ অন্যরকম। তার পছন্দ মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। আমার একটা চিন্তা ভাবনা ছিল। মহা নায়িকার নাতনিদের কথা চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু পরে আর ভালো লাগে নাই। পরে এক সময় ক্যাটরিনাকে পছন্দ লাগলো। একেবারে দিওয়ানা হয়ে গেলাম। ২০০৫ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত তার জন্য পাগল ছিলাম। রানভির আসার পর দুজনে পথ দুই দিক হয়ে গেল। ওকে নিয়ে অনেক কবিতা লেখেছি। সামনা সামনি জীবনে দেখি নাই। ওর চোখের হাঁসিটা আমার খুব ভাল লাগতো। ২০১৪ থেকে বিয়ে করবো, সেই কথা আম্মাকে বলে দিলাম। দুইটা মেয়েও দেখা হল। আমি দু ক্ষেত্রে হ্যা বললাম। একজনকে আমার আম্মা আর বোন মিলে না করে দিল, আরেকজন তার বাবা বাড়ির লোকরা হ্যা বলল, আর মায়ের বাড়ির লোকেরা না করে দিল। সেই সময় চিন্তা করলাম, এবার প্রেম করে বিয়ে করবো। আমার একটা ফেসবুকে ২০০ থেকে বাড়িয়ে দু হাজার বন্ধু বানিয়ে ফেললাম।
এখন শুরু হল এক প্রেম কাহিনী। রাক্ষস আর রাজকুমারীর প্রেম কাহিনী। রাক্ষস রাজকুমার হতে পারলো না। চেষ্টা সে কম করে নাই। ১১১ কেজির একটা মানুষ ৮৭ কেজিতে পরিণত হল। রূপকথা থেকে এখন বাস্তবতা চলে আসতে হল। আট মাসের মোবাইলের ভালবাসা আর একদিনের দেখা। শেষ হল, ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত মৃত্যুগামী বাবার শেষ ইচ্ছের কাছে। ছেলেকে তার পছন্দ হয় নাই। একমাসের মধ্যে ছেলেটি অন্যের রাজকুমার হয়ে গেল। মায়ের ইচ্ছেই পূরণ হলো। আমার জীবনে সত্যই মহানায়িকা চলে এলো।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩০