আমি যখন ছোট ছিলাম তখন, উত্তর শাহজাহানপুরের ৪১৪ নম্বর বাসায় থাকতাম। আমার বয়স তখন তিন বা তিন বছরের বেশি হবে। আমাদের একটা কাজের মেয়ে ছিল, তার নাম ঠিক মনে নাই। আমরা থাকতাম বাড়িটার তিন তলায়। চারতলায় যাওয়ার জন্য একটা লোহার মই ছিল। একদিন কাজের মেয়েটি মই দিয়ে উপর গেছে।
আমি ছোট মানুষ, আমিও মই দিয়ে উঠার চেষ্টা করছিলাম। কিছুদূর উঠার পর উপর থেকে কাজের মেয়েটা বলছিল, মই ছেড়ে দিতে। আমিও সুন্দর মই ছেড়ে দিলাম। আমি মানুষদেরকে আজও এভাবেই বিশ্বাস করি। ঠিক তাদের কথায় অনেক কিছুই ছেড়ে দেই। যাক, সেসব কথা। মই ছাড়ার কারণে নিচে পরে গিয়ে আমার হাত ভেঙ্গে যায়। আমাকে পঙ্গুতে নিয়ে যাওয়া হয়। অদক্ষ ডাক্তারদের কারণে ঠিক মতো আমার ডান হাত সেট করতে পারে নাই।
আজ অজু করার সময় বেসিন ভাঙ্গার সময় আমার সেই হাতেই ব্যথা পেলাম। আমার ডান হাতের জোর বরাবর কম।তাড়াতাড়ি লেখতে পারতাম না। হাতের লেখাও ভাল না। আমি বিলাতে গিয়েছিলাম, ওটার চিকিৎসা করতে। মাত্র ৯ বছর ছিল বলে, সেই সময় অপারেশন করে নাই, বলেছিল, ১৮ বছরের পরে করতে। করি নাই। এই হাত দিয়ে এক সময় ফাস্ট বলও করেছি। ভাল সুইয়েং খেত।
মেজবাবু লেখক শওকত আলী বলতো, আমার দাদুরও (শহীদ বুদ্ধিজীবী খোরশেদ আলী সরকার)ডান হাত একটু ভাঙ্গা ছিল। ৭১ এ তার কংকাল শনাক্ত করতে এই তথ্যটা কাজে লেগেছে। আমি যদি কোনদিন গুম হয়ে যাই, তবে আমাকেও হয়তো এভাবে চিনতে পারবি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৯