বাসের মধ্যে এক মহিলা পাশের সীটে বসে আছে, একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সহঃ অধ্যাপিকা। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে ওনি দেশের সাম্প্রতিক সময়ের অবস্থা আর ১৯৭১ সালের অবস্থার তুলনা করে বললেন, "দেশে এখন যে অবস্থা, ১৯৭১ সালেও পাকিস্তানে এমন গন্ডগোল ছিলো না"
ভদ্রমহিলার গন্ডগোল শব্দটা আমার একদমই পছন্দ হলোনা।
তখনই ভেবে রেখেছি এটা নিয়ে কিছু লিখবো-
তারপর দেখলাম ইতোমধ্যে "মেহেরজান" মুভিতে এই গন্ডগোল শব্দটা আলোচিত ।
দেশের এখনকার অবস্থাকে বিএনপি বলছে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন, যৌক্তিক দাবি। গণতন্ত্র উদ্দার করার কথা বলে এর যৌক্তিকতা প্রকাশ করছে- এবং তারা এটাকে আন্দোলন বলছে, যা একটি ইতিবাচক অর্থ প্রকাশ করে।
এই একই বিষয়কে আওয়ামী লীগ বলছে দেশে গন্ডগোল পাকাচ্ছে,যা কিনা একটি নেতিবাচক অর্থ প্রকাশ করে।
দেশে এখন অবধি একটি শ্রেণী আছে যারা এই মুক্তিযদ্ধের সময়কার আন্দোলন এবং যুদ্ধ- সামগ্রিক ব্যাপারটিকে অযৌক্তিক মনে করে, এবং আন্দোলন এবং যদ্ধকে মনে করে নেতিবাচক গন্ডগোল। এই শ্রেণীটার যে প্রজন্ম তারাও এই শিক্ষা পেয়ে যাচ্ছে পরিবার থেকে। এটি আমাদের জন্যে সরমের ব্যাপার যে, আমাদের দেশে একটি প্রজন্ম বেড়ে ওঠছে পারিবারিক ভাবে একটি শিক্ষা নিয়ে যে একাত্তর এ যা হয়েছে তা স্রেফ একটা গন্ডগোল। ১৯৭১ সাল সমন্ধে তাদের মাথাতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে নেতিবাচক ভাবনা।
একাত্তরকে কোনভাবেই জাতির ভুল ডিশিসান এবং আন্দোলন কিংবা যুদ্ধকে কোনভাবেই গন্ডগোল বলার উপায় নেই।
পৃথিবীর সকল দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যে সবচেয়ে যৌক্তিক আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন।
একাত্তর সমন্ধে, এর কারন সমন্ধে বলার নতুন কিছু নাই।
বায়ান্ন থেকে একাত্তরের ২৫ মার্চ অবধি আমাদের উপর যে অন্যায় করা হয়েছে-তার জবাব মুক্তিযুদ্ধ।
একাত্তর কোনো ভুল নয়, একাত্তর গন্ডগোল নয়-
একাত্তর আমার অহংকার।