somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তবু আমারে দেবনা ভুলিতে...

২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশেষ দ্রষ্টব্য বিষয়টি কোন কিছু লিখে তারপর সংযুক্ত করাই প্রচলিত,
প্রচলিত গন্ডি থেকে বের হচ্ছি, লিখনীতে ব্যবহৃত চরিত্র অথবা চরিত্রগুলো একান্তই মনের ইচ্ছে মতো করেই দিচ্ছি।
কারো জীবিনের সাথে যদি কখনো মিলে যায়, সেজন্যে আমিই দায়ী থাকবো। অনেক শিল্পী, অনেক কবি, অনেক সাহিত্যিক, অনেক এনত্যান তাদের গান,কবিতা,উপন্যাস, এবং এনত্যানে বেশির ভাগ সময় শুনেছি, দেখেছি,এনত্যান করেছি যে একটা বিশেষ চরিত্রের ব্যবহার খুব বেশি করেছেন। আমি কিছুই না, তবুও আমার ছোট খাটো লিখাতে "মাধবী" চরিত্রটি ব্যবহার করি। আজকের মিনি কাহিনী কিংবা গল্পটি মাধবীকে নিয়েই।

সম্মোহন বিদ্যায় মনকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়, যারা এই বিষয় নিয়ে নাড়াচড়া করেছেন তারা ভালোই বোঝবেন। তবু এটি হয়তো সম্মোহনের অন্য রূপ। আত্মিক ভালোবাসা কিংবা প্রকৃত ভালোবাসায় নর নারী পরস্পরের দ্বারা প্রাকৃতিক ভাবেই সম্মোহিত হয়। আগেই বলেছি মনের দুটি ভাগ; বহিঃমন এবং অন্তঃমন। বহিঃমন নিয়ন তন্ত্র, সব মানলেও- অন্তঃমন কিছুই বোঝেনা। অন্তঃমনে প্রবেশ করা কঠিন- তবু প্রকৃত ভালোবাসাতে পরস্পর পরস্পরের দ্বারা সম্মোহিত হয়- পরস্পর চলে যায় পরস্পরের অন্তঃমনে।তখন সেখান থেকে বের করা যায় না কাউকে। তবে নিয়মতান্ত্রিক কোন বাঁধা, পারিবারিক, সামাজিক রীতিনীতির কোন প্রভাব যা বহিঃআত্মা নিয়ন্ত্রণ করে- সেই ভালোবাসায় এ ধরনের কোন ঝামেলার সম্মক্ষীন হলে- অন্তঃমন, বহিঃমনে কথা কাটাকাটি হয়- কখনো অন্তঃমনের প্রভাবে প্রেমিক প্রেমিকা তাদের স্বপ্নের পথে চলে, কখনো কেউ বহিঃমনের প্রভাবে অন্তঃআত্মাকে কষ্ট দিয়ে সব মেনে নেয়, কখনো কেউবা বরণ করে নেয় স্বেচ্ছামৃত্যু। গল্পের অংশটুক সহজ করতেই মনের বোধ আর বিরোধের ব্যাখ্যা।

প্রথম দিকেই বলেছিলাম গল্পটি মাধবীকে নিয়ে!
ভাটি অঞ্চলের স্কুল মাষ্টারের বউ মাধবী, বিয়ের সময় থেকেই মাধবী কেমন আনমনে থাকে,মাঝরাতে কি যেনো দেখে আঁতকে ওঠে- মাঝরাতে কখনো উঠোনে, কখনো বারান্দাতে, আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা দেখে আনমনে। মাধবী অনেকগুলো তারার মাঝ থেকে একটি তারাকে প্রায়ই দেখে তার দিকে কেমন করে তাকিয়ে থাকে, মাধবী দেখে সেই তারাটি তাকে কাছে ডাকছে, আনমনে মাধবী তারাটির সাথে কি যেনো আলাপচারিতাই মেতে উঠে, মাধবী ধীরে ধীরে দেখে তারাটি নীল রং ধারন করে। তারপর হঠাৎ তারাটি অন্যসব তারার ভীড়ে মিলিয়ে গেছে। মাধবী যেনো ভেবে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।

মাধবী আজ তুলসী রংয়ের শাড়ি পড়েছে, মাথায় সিঁধুর- কপালে লালটিপ। আজ সে স্থীর করেছে মাঝরাতে আর বাইরে যাবেনা। বহিঃমন আজকাল মাধবীকে বেশ শাসন করছে, ঠিক সেই সময়েরব মতো করে যখন স্বপ্নপুরুষকে রেখে ধর্ম ভিন্নতার কারনে - পারিবারিক মানসিক অনুচাপে অন্য পুরুষকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছিলো। তারাটিকেও কেমন আপন ভাবা শুরু করেছিলো, মাঝরাত হতেই কিসের মোহে যেনো সেই তারাটির সাথে আনমনে কথা বলতে নিয়ে যেতো। মনে হতো এই তারাটি যেন আপনকেউ তার, তারার সাথে তার আত্মার যেনো কিসের বন্ধন। তবু আজ রাতে মাধবী বাইরে যাবেনা,

রাত তখন ১২ টা বাজতে ১৫ মিনিট বাকি,, স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে যায় মাধবীর-
চিৎকার করে বলতে থাকে, " চান্দ তোর পায়ে পড়ি, তোই এটা করিস না"
আগের বছর ঠিক একই দিনে এমন সময়ই সে একই কথা বলে চিৎকার করে ওঠেছিলো।
মাধবী জানে, এখন বাইরে দুয়ারে তালহার লাশ। প্রতি বছর ১৩ এপ্রিল রাতে আকাশ থেকে নেমে আসে তালহা, মাধবী উঠোনে যাবে কি যাবেনা ভাবতেই ১২ টা বেজে গেলো- কেননা দুয়ারে আসবে প্রিয়তম তালহার লাশ। তবু অন্তঃমন সম্মোহিত তালহার আত্মা দ্বারা, জন্মদিনের প্রথম শুভেচ্ছা যে তালহাই তাকে জানাবে-
দরজা গোছতেই, আকাশের গাঢ়ো নীল তারাটি তালহা হয়ে নেমে এসেছে ;
সেই চিরচেনা কন্ঠে, "শুভ জন্মদিন মাধবী, আই লাভ ইউ-"
এরপরের দৃশ্যটি মাধবী সহ্য করতে পারেনি- চিৎকার করে বারণ করলেও তালহা কিছুই শুনে না-

উঠোনে তালহার লাশ। সম্মোহিত মাধবী অচেতন হয়ে পড়ে আছে উঠোনে-
আজ ১৪ এপ্রিল, মাধবীর ২৫তম জন্মদিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×