আমি গুরতোর আস্তিক;আমি একজন ধর্ম অবিশ্বাসী মানুষ।
বিজ্ঞানের যেই তত্ত্বই আমাকে গিলানো হোক;ইহা আমার পক্ষে বিশ্বাস করা সম্ভব নয় যে ঈশ্বর নেই। পীর-আউলিয়া-বোজর্গ আলেম যেই আসোক আমাকে আলিফ বা তা সা মুখস্থ করাতে কিংবা জ্বীন দর্শন করিয়েও আমাকে ইহা বিশ্বাস করাতে পারবে না যে "কেবল এবং কেবল এই ধর্মটিই একমাত্র এবং সর্বশ্রেষ্ঠ"
ধর্মে অবিশ্বাসী হলে তাকে নাস্তিক বলা যায় না;আমি তখনই নাস্তিক যখন ঈশ্বরে অবিশ্বাসী।
এটি আমার ব্যক্তিগত ধারনা যে পৃথিবীর বেশিরভাগ নাস্তিকই এটি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে পারেনা যে ঈশ্বর নেই;তাদের মধ্যে একটা দ্বিধা কাজ করে; এবং এই দ্বিধা সৃষ্টির কারন বহুমত বহুধর্ম। যে ধর্মগুলো বিভিন্ন সময় কিছু সুবিধাবাদী,সুচতুর এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু মহান ব্যক্তির মাধ্যমে সৃষ্টি। তবে যে ধর্ম যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই সময়ে সেই অঞ্চলের মানুষের অশান্তির পথ থেকে শান্তির পথে আনার এবং সমাজের মানুষের মাঝে শৃঙ্খলা আনায়নের একটি কৌশল ছিল মাত্র। যখন মানুষ কেবল পৃথিবীর সুখ নিয়েই ব্যস্ত ছিল ,যখন তারা হানাহানিতে মত্ত ছিল, তাদেরকে স্বর্গের লোভ-নরকের ভয় দেখানো ছিল একটি বড় কৌশল।
তবে ঈশ্বরের মাথাতে এতো বিটকাইল্লা চিন্তা ভাবনা ছিলো না; ভদ্রলোক সৃষ্টি করেছিলেন কেবল খেইল দেখার জন্যে। ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করেছেন,মানুষ সৃষ্টি করেছে ধর্ম,ধর্ম সৃষ্টি করেছে পার্থক্য।
এক খন্ড মাটি থেকে আমি একটি পুতুল বানালাম- পুতুল কে যেমনে খুশি নাচালাম-তারপর পুতুলটা ভেঙ্গে ফেলে- সেই মাটি দিয়ে আরেকটা পুতুল বানিয়ে আবার আরেকভাবে নাচাবো- এর বাইরে সৃষ্টির কোন রহস্য থাকতে পারেনা। বেহেস্ত-নরক মানুষের কল্পজগতে বিরাজমান; সাত আসমানের উপর ব্রহ্মা বলিয়া কেউ নাই; ঈশ্বর সেখানে নরক বানায়ে আগুনের তাপ পোহাচ্ছে না। ঈশ্বর ইনসানের মস্তকে বসিয়া নরকের আগুনে পুড়ে, ঈশ্বর চিন্তার মাঝে প্রবাহিত করে দুধ-মধুর নদী,চিন্তার মাঝেই স্বর্গের সুস্বাদু ফলের গাছের শিকড় উপরে আর ফল নিচের দিকে ঝুলিয়া থাকে, নারী লোভী চিন্তার জগতেই উলঙ্গ নাচে হুর পরীরা । মানুষের কান্ড-কারখানা দেখে ভগবান কি আত্মহত্যা করছেন কিনা কে জানে। আশা করি ওনি মরেন নাই।
সৃষ্টি আছে বলেই আমাকে স্বীকার করতে হবে স্রষ্টা আছে,আর যদি কেউ স্বীকার না করে তবু ওনি বেজার হননা,আবার কেউ যদি মন্দিরে-মসজিদে বসিয়া পূজা-অর্চনা করে তবু তিনি কিচ্ছু মনে করেন না। কেননা স্রষ্টাতো এটিই চেয়েছিল যে রঙ,তামশা আর খেইল দেখবে।