হায়! এই যুবা বয়স পর্যন্ত কত রঙ্গই না দেখিলাম। কিন্তু আপুদের রিক্সা-রঙ্গের ধারে কাছেও কোনোটা নাই! নম্র-ভদ্র লাজুক আপুরা ঘরে যেমনই হোক, রিক্সায় উঠিলেই তাহারা কেমন যেন হইয়া যায়!! আর সেই কেমনের ধরন বুঝিতে না পারিয়া আমার মত হতভাগাদের নির্ঘুম রাত কাঁটে। আর কোলবালিশের উপর দিয়া বইয়া যায় নির্মম অত্যাচার!
নিতান্তই বেকুব আমি। আমায় ভুল বুঝিবেন না। আমার জায়গায় আপনি থাকিলে কি করিতেন, জানা নাই। যাক, আর কথা বাড়াইবো না। এর চেয়ে বরং আপনাদের সেই রঙ্গ-গুলার কথাই বলি-যা দেখিয়া আমার নির্ঘুম রজনী আরো দীর্ঘস্থায়ী হইতেছে!
১. একটি অভিমানী প্রশ্ন। ‘ওড়না আছে বলিয়াই কি এতবার টানিতে হইবে?’ ঘরে বুঝি সেফটি পিনের অভাব?! একেকবার আপুদের কাঁধ হইতে ওড়না গড়াইয়া যায়, আর সাথে সাথেই আমার চোখের গুনাহ বাড়ে। পরম মমতায় ওড়না ঊঠানোর সময় ভাবি... ইস! কেন যে ওড়না হইয়া জন্মাইলাম না!
২.হাতে আয়না লইয়া ঠোঁটে লিপস্টিক ঘসে কত যে আপু! কলিজা চাপিয়া ধরার মত মাঝে মাঝে দুই ঠোঁট চাপিয়া ধরে বোঝার চেষ্টা করে যে- জায়গামত বসিলো কিনা! আবার যখন আপুরা মগ্ন হয়ে কপালে চাঁদ বসাইতে ব্যস্ত, তখন রাস্তার পুলাপানের উদাস ভাবনা... উহা জায়গামত বসিবে তো?!
৩. চোখে রোদ চশমা-হালের নয়া রঙ্গ। খুবই শক্তিশালী অস্ত্র। ইহা দিয়া একত্রে শত শত বেকুব যুবককে ঘুরানো যায়! কারণ, রোদ চশমার আড়ালে আপুরা কাকে যে দেখে- তা বোধকরি চশমাও ভালো জানে না! বেকুব যুবকদের কথা না হয় বাদই দিলাম। এমনকি ষাটোর্ধ চাচামিয়াও ভাবিতে থাকে--‘আহা আমাকেই বুঝি দেখছে!’
৪. রোদ চশমা নিয়া আরো একখান রঙ্গের কথা বলিতে ভুলিয়া গেছিলাম। উহা চোখে রাখা যায়, আবার কপালেও রাখা যায়। কিন্তু কোন কোন আপু উহা সালোয়ারের গলার মাঝামাঝি এমন জায়গায় রাখেন, যা তাকাইয়া দেখিতে যথেষ্ট মনের জোর দরকার! আমার পাশ দিয়ে চলমান এক চাচামিয়ার বোধকরি সেই মনের জোরটুকু ছিলো না। তাই উনি আনমনে বলিয়াই ফেলিলেন-‘নাউযুবিল্লাহ!’
৫. আজকাল এতো ছোট ফতুয়া বাহির হইয়াছে, যাহা পড়িলে আপুদের ধলা-কালা-শ্যামলা কোমর দেখা যায়। আর টাইট জিন্স তো কবে থেকেই আপুদের একচেটিয়া ফ্যাশন। একদা এহেন পোশাক পরিহিত এক আপুকে রিক্সায় দেখিয়া আমারই শ্যামলা গাল বেগুণি বর্ণ ধারণ করিয়াছিলো। কাম-ক্রোধ যে জাগে নাই, তা নয়! তবে নিকটস্থ কনফেকশনারী হইতে ম্যাংগো জুস খাইয়া কাম-ক্রোধ ঠান্ডা করিয়াছিলাম-এটুকু মনে আছে!!
ঢোলা টি-শার্ট গায়ে কিংবা রিমিঝিম নূপুর পায়ে... আপুদের আরো কত রঙ্গই না দেখি! আজকাল বোরকা পড়া আপুরাও নিকাব ছাড়া চলেন। রঙ্গ ছাড়া আপুদের যে দেখি না -তা নয়, কিন্তু তাহাদের সংখ্যা ক্রমেই কমিতেছে।
শেষ করিবো নতুন এক বঙ্গীয় রঙ্গের খবর জানাইয়া---
‘আপু সাথে বয়ফ্রেন্ড-দিয়ে লাজে ভঙ্গ
হুড তোলা রিক্সায়--চলিতেছে রঙ্গ!’
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ২:১৫