হা হা হা পাপা! ইউ আর গেটিং ওল্ড!!
আই ওয়ান্ডার! হাও কান ইউ মিস দ্যা ক্যাচ??
রাসেল ভাই শুনলেন আমরা নাকি বুইড়া হইয়া গেসি!! হাঁপাতে হাঁপাতে রাসেল মাথা নাড়াল বলল “হুম ,পানিটা দেন দেখি…।“
চলছে ক্রিকেট ম্যাচ!! বাবাদের টীম বনাম ছেলেদের টীম।
ইয়াহুউউ!! উই উইন!!িছুখনের মাঝে এলাকা কাঁপানো চিৎকার সায়মমের............।।
রাসেল সাহেব একজন আদর্শ বাবা এবং একজন আদর্শ ছেলেও।তবুও আজকাল তার ছেলের বয়সীদের দেখলে তার মনে হয় কোথায় যেন একটু ফাঁক রয়ে যাচ্ছে। না খারাপ কিছু নয়, তার মনে হচ্ছে এই জেনারেশনরা যেরকম বিচক্ষণ সেরকমি অভদ্র আর স্বার্থপর।
সেদিন সায়মমকে সে বলেছিল “বাবা, তোর জিওগ্রাফি তে গ্রেড টা পুওর একটু চেষ্টা কর না পারলে আমাকে বল কি বুঝিস না”
।সায়মমের উত্তর টা ছিল এরকম “ কামন ড্যাড,জিওগ্রফি ইস নট মাই কাপ অফ টী।নাও স্টপ নঅ্যাগিং আন্ড লেট মি ফিনিশ দ্যা গেইম। ওহ অ্যান্ড হোয়েন ইউ লিভ দ্যা রুম কিপ দ্যা ডোর ক্লোসড অ্যাজ ইট ওয়াজ।“
রাসেল সাহেব রাগ নিয়ন্ত্রণে এনে ছেলের আদেশ পালন করলেন।
ভাবছিলেন ৩০ বছর আগে তিনি যদি তার বাবা কে এরকম করে বলতেন তাহলে অবস্থাটা কি হতো ??
শুক্রবার মর্নিং ওয়াকে মানিক কে বললেন “বুঝলেন দাদা,বাচ্চাগুল কেমন যেন ব্রয়লার মুরগির মতো বড় হচ্ছে। কান্ডজ্ঞ্যা্নহীন ,ভাল মন্দ বুঝেও বুঝেনা।চারপাশের প্রতি ইন্টারেস্ট নাই।এরকম হলে ওদের জীবনটা আর্টিফিশিয়াল ই রয়ে যাবে।
মানিকের জবাব “পারবেন? আবহাওয়াটাই তো প্রতিকূল"
রাসেল গম্ভির কন্ঠে বলল “দেখি”
রাসেল ব্যবসায়ী মানুষ।ছেলেকে সময় দিতে পারেন না।কিন্তু এদের আপব্রিঙ্গিং এর ভাল ও খারাপ দুটো ফল ই তাদের ভোগ করতে হবে এটা বোঝেন। তাই সুজগ বুঝে সামার ভ্যাকেশনের লম্বা এক্টা প্ল্যান করে নিলেন রাসেল।
যথারীতি ছেলেকে নিয়ে ঢাকার বাইরে লং ড্রাইভে গেলেন।গাছপালা চেনানোর আনেক চেষ্টা চলল ।নদী দেখালেন,মাছ ধরা ,গাছ লাগানো কিছুই বাকি নেই।মাঝে মধ্যে কয়েকটা গাছের ইংরেজি নাম ভুলে গেলেও ছেলের চোখের আড়ালে তা গুগল করে নিলেন। নানা পোজের ছবি তুল্লেন তারা। বাচ্চা ছাগল কলে নিয়ে সায়মমের ছবি,মুরগির বাচ্চা তাড়া করছে সায়মম এরকম ছবি,রাসেল সাহেবের আম গাছে চড়া ছবি।
আসার পথে সায়মম তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে “পাপস!ইয়উর আইডিয়া ওয়াজ রেয়ালি গ্রেট।ওয়াস দ্যাট ইয়উর আইডিয়া অর মম’স??
রাসেল সাহেব মুচকি হেসে বললেন “বাবা একটা কথা বলি “ইয়উর ফাদার ইস সামওয়ান ইউ নেভার আউটগ্রো –এটা জীবনে ভুল্বিনা!’’
সায়মম তখন গাড়ির রিয়ার ভিউ মিরর দিয়ে ফেলে আশা পথ টাকে দেখছিল…।।
বাবা ছেলের সম্পর্ক গভীর হল একয়দিনে।
রাতে সায়মমের মা রাসেল সাহেবকে বলল “তোমরা করছোটাকি শুনি? প্ল্যান কতদূর? আমার ছেলেটাকে গেঁয়ো ভুত বানিয়না প্লিজ।এক্টা মাত্র ছেলে আমার,কত কাঠ খর পুড়িয়ে সেরা স্কুলে ভর্তি করলাম যেন আন স্মার্ট না হয়,শেষ কালে তুমি সব ভেস্তে দিও না”
“না তা হবেনা, ভেবনা” বললেন রাসেল।
রাসেল নিজেও কম স্মার্ট নয়।নটোরডেমের স্টুডেন্ট। ভাল রেসাল্ট,ভাল ইঊনিভারসিটি ডিগ্রী কিন্তু বেতন ভোগী চাকুরী আর ভাল লাগছিলনা তার,তাই ব্যবসা করা।অনেক দূরদর্শী তিনি।রোজগার অ বেশ ভালো।
ফেইসবুক আর স্ক্রাপবুকে সায়মমের ছবি দেখে তার বন্ধুরা আর তাদের মা বাবা খুব ই এক্সাইটেড।
একজন তো সেদিন দৌড়ে এসে বলেই ফেললেন “মিঃ হোসেন! স ইয়ুর পিকচারস!গ্রেট জব!ইয়ু রিয়েলই স্পেন্ট অ্যা গুড টাইম উইথ সায়মম রাইট??বাই দ্যা ওয়ে ,আই উড লাইক টু রাইট ডাউন দ্যা লোকেশন,উইল ইয়উ হেল্প মি? মাই ডটার ওয়ান্টস টু ভিসিট দ্যা প্লেইস নেক্সট ফ্রাইডে!উই উইল টেইক সো মেনি পিকচারস লাইক ইয়উ এন্ড আপলোড দিজ ইন ফেইসবুক!!”
খানিকটা বিরক্তই হলেন রাসেল সাহেব এতো আদিখ্যাতার কি আছে এতে? বুঝে পেলেন না।
বললেন “না ভাই লোকেশনের কিছু নেই।ছেলের সাথে দূরত্ব কমাতে লং ড্রাইভে গিয়েছিলাম ময়মনসিংহের দিকে।ছেলে যেখানে বলেছে গাড়ি থামিয়েছি,ছবি তুলেছি।ওর খুশিটাই আমার অ্যাচিভমেন্ট।“
ছুটির পর রাসেল সাহেব আর সায়মম খেতে যায় কদাচিৎ ।আজো রাসেল সাহেব গাড়ী পার্ক করলেন সায়মমের প্রিয় ফাস্টফুডের দোকানে। সায়মম চেঁচিয়ে বলল “বাবা প্রায় একটা বাজে চল কথাও যেয়ে বিরিয়ানি খেয়ে আসি। তোমার খুব পছন্দ না? এখানে না হয় আরেকদিন আসবো”
অবাক রাসেল বলল “সত্যি তো পরে রাগ করবি নাতো??”
সায়মম মাথা নেড়ে বল্ল “একদম ই না”
রাসেল ড্রাইভ করছে আর ভাবছে মাত্র ১০ দিনের পিতৃসঙ্গ সায়মমকে কতটা ম্যাচইউর করে দিয়েছে।এখন থেকে সে তার ছেলেকে আরো বেশি সময় দেবে…।