somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হায়রে আহলে হাদীস(যারা ধর্মীয় লেখার পাঠক তাদের জন্য)

২৩ শে জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা ধর্মীয় ব্যাপার-স্যাপার ।সবার পড়ার প্রয়োজন নেই।তবে যারা ইসলাম নিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করেন তারা অবশ্যই যেন..................
জনৈক কথিত আহলে হাদীসের সাথে মুহাম্মদ আমীন সফদর রহঃ এর একটি চিত্তাকর্ষক কথোপকথন
একদা মুহাম্মদ আমীন সফদর রহঃ এর কাছে কয়েকজন কথিত আহলে হাদীসের লোক এল। এসে হযরতের কাছে বসল। বসেই বলতে লাগল-“আমরা অনেক পেরেশানীতে আছি। বহুত পেরেশানীতে আছি”।
সফদর রহঃ-“যারাই বড়দের ছেড়ে দেয়, তারা সারা জীবনই পেরেশানীতে থাকে। মওদুদী এই পেরেশানীতেই ছিল। কাদিয়ানীও এই পেরেশানীতেই ছিল। আপনারাও মনে হয় বড়দের ছেড়ে নিজেরাই সব বুঝতে চাচ্ছেন। এজন্যই পেরেশানীতে আছেন”।
কথিত আহলে হাদীস-চারজন ইমাম। চার, চার, চার। কি করবো আমরা?
সফদর রহঃ-আপনি এখানে চারজন পেলেন কোথায়? এখানেতো কোন হাম্বলী নেই। শাফেয়ীও নেই। মালেকীও নেই।
কথিত আহলে হাদীস-যদি চারজন হয়ে যায়!
সফদর রহঃ-হলে ভিন্ন কথা। সেই পেরেশানী এখনই কেন টেনে আনছেন?
কথিত আহলে হাদীস-এটা কেমন কথা যে, আল্লাহ এক আর ইমাম হল চারজন?
সফদর রহঃ-এটা কেমন কথা যে, আল্লাহ এক আর নবী এক লাখ চব্বিশ হাজার? ওখানে যেমন বল যে, এক নবীকে মান, আর বাকিদের ছেড়ে দাও। এখানেওতো ব্যাপার তাই। এক ইমামকে মান। বাকিদের ছেড়ে দাও। কোথাও কি আছে নাকি যে, ইমাম বেশি হতে পারবে না? যদি থাকে বলেন আমি মেনে নিব। আমি দেখি ইমাম বেশি হতে পারবে কুরআন দ্বারা প্রমাণিত। وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ فَلا تَكُنْ فِي مِرْيَةٍ مِنْ لِقَائِهِ وَجَعَلْنَاهُ هُدىً لِبَنِي إِسْرائيلَ وَجَعَلْنَا مِنْهُمْ أَئِمَّةً يَهْدُونَ بِأَمْرِنَا
অর্থাৎ বাস্তব কথা হল আমি মুসাকে কিতাব দিয়েছি, সুতরাং (হে রাসূল!) তুমি তার সাক্ষাত সম্পর্কে কোন সন্দেহে থেকো না। আমি সে কিতাবকে বনী ইসরাঈলের জন্য বানিয়েছিলাম পথ-নির্দেশ।
আর আমি তাদের মধ্যে কিছু লোককে, এমন ইমাম বানিয়ে দিলাম, যারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে পথ প্রদর্শন করত। {সূরা সাজদা-২৩,২৪}
এক রাসূলের উম্মতের মাঝে কয়েকজন ইমাম হতে পারে। এটাতো কুরআন বলছে। কুরআনের শব্দ ইমামের বহুবচন আইয়িম্মাহ ব্যবহৃত হয়েছে।
কথিত আহলে হাদীস- চার ইমামই কি সঠিক?
সফদর রহঃ-হ্যাঁ, চার ইমামই সঠিক।
কথিত আহলে হাদীস-তাহলে চার ইমামের অনুসরণ করেন না কেন? শুধু নিজের ইমামের অনুসরণ করেন কেন?
সফদর রহঃ-যেমন সবাই এক লাখ চব্বিশ হাজার নবীকে সঠিক মানি, কিন্তু অনুসরণ করি আমাদের নবীর। তেমনি সঠিক মানি চার ইমামকেই। কিন্তু অনুসরণ করি নিজের ইমামকে।
কথিত আহলে হাদীস-কোন হাদীসে আছে নাকি এক ইমামের অনুসরণ কর?
সফদর রহঃ-আপনি কুরআন পড়েন?
কথিত আহলে হাদীস-হ্যাঁ পড়ি।
সফদর রহঃ-এক কেরাতে? না সাত কেরাতে?
কথিত আহলে হাদীস-এক কেরাতে?
সফদর রহঃ-সারা জীবন এক কেরাতে কুরআন পড়া আর বাকি কেরাতকে ছেড়ে দেবার কথা কুরআন বা হাদিসের কোথাও আছে?
কথিত আহলে হাদীস-আমাদের কাছে আছেই এটা। তাই পড়ি। কিন্তু এক ইমামের অনুসরণ করলেতো চতুর্থাংশ দ্বীন মানা হয়।
সফদর রহঃ-এক কেরাতে কুরআন পড়লে কি সাত ভাগের একভাগ সওয়াব পাওয়া যায়?
কথিত আহলে হাদীস-না, না, এক কিরাতে পড়লে পূর্ণ কুরআন পড়ার সওয়াবই পাওয়া যায়।
সফদর রহঃ-তেমনি এক ইমামকে মানলে পূর্ণ শরীয়তেরই অনুসরণ হয়।
কথিত আহলে হাদীস-আপনাদের আকল কখনো হবে না? ইমামদের মাঝেতো হারাম-হালালের মতভেদ। একজন যেটাকে হালাল বলেন, অন্যজন সেটাকে হারাম বলেন। তাহলে যিনি হারাম বলেন তিনিও সঠিক। আর হালাল যিনি বলেন তিনিও সঠিক! এটা কি করে সম্ভব?
সফদর রহঃ-আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ তায়ালা আকল দিয়েছেন। নবীগণ সবাই সঠিক।
আদম আঃ এর সময়ে আপন বোনকে বিবাহ করা জায়েজ। আমাদের দ্বীনে হারাম। কিন্তু উভয় নবীই সঠিক।
ইয়াকুব আঃ এর দুইজন স্ত্রী আপন বোন ছিল। এটা সে সময় জায়েজ ছিল। কিন্তু আমাদের নবীর দ্বীনে তা হারাম। উভয়ই সঠিক। সবার আল্লাহ একই। অথচ হুকুম ভিন্ন। তেমনি চার ইমামই সঠিক। কিন্তু তাদের হুকুম ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
কথিত আহলে হাদীস-আরে এখানেতো নাসেখ মানসুখের বিষয়। একটি হুকুম এসে অন্যটাকে রহিত করে দিয়েছে।
সফদর রহঃ-আর ইমামদের ইখতিলাফের মাঝে রাজেহ-মারজুহ এর মাসআলা। তথা একটি হুকুমের উপর অন্যটিকে প্রাধান্য দেবার মাসআলা। যেমন রহিত হওয়া বিষয়ের উপর আমল জায়েজ নয়, তেমনি প্রাধান্য পাওয়া হুকুম রেখে অপ্রাধান্য পাওয়া বিষয়ের উপর আমল করাও জায়েজ নয়।
কথিত আহলে হাদীস-আপনারা যেহেতু অন্য ইমামদের মানেন না, তাহলে তাদের বাতিল বলেন না কেন? সঠিক বলেন কেন?
সফদর রহঃ-আদম আঃ সঠিক নবী হলে কেন বোনকে বিবাহ করা যায় না? ইয়াকুব আঃ সঠিক নবী হলে দুইবোনকে এক সাথে বিবাহ করা কেন করা যাবে না?
কথিত আহলে হাদীস-আমরা শুধু আমাদের নবীকে মানি। বাকিরাও হক একথা ঠিক আছে।
সফদর রহঃ-আমরাও বলি-অন্য ইমাম ঠিক আছে, কিন্তু আমরা মানি আমাদের ইমামকে।
কথিত আহলে হাদীস-সেখানেতো সময় আলাদা আলাদা।
সফদর রহঃ-এখানে এলাকা আলাদা আলাদা। শাফেয়ী শ্রীলংকায় আর হানাফী পাকিস্তানে [বাংলাদেশে]। সেখানে সময় আলাদা আলাদা, আর এখানে এলাকা আলাদা আলাদা।
কথিত আহলে হাদীস-যদি কোন মাসআলায় তিন ইমাম একদিকে হয় আর এক ইমাম একদিকে হয় তাহলে কী করবেন?
সফদর রহঃ-তিন জন নয়, তিন হাজার হলেও আমাদের ইমামকেই মানবো।
কথিত আহলে হাদীস-এটা কোন ইনসাফ হল?
সফদর রহঃ-অবশ্যই এটা ইনসাফ।
কথিত আহলে হাদীস-আরে অপরদিকে তিন ইমাম।
সফদর রহঃ-তাতে কি? আমরাতো আমাদের ইমামের অনুসরণ করবো। তিন হাজার হলেও কি?
কথিত আহলে হাদীস-আপনি কি জিদ করছেন নাকি?
সফদর রহঃ-নাহ, জিদ করবো কেন? ইউসুফ আঃ তার পিতা ইয়াকুব আঃ কে সিজদা করেছিলেন এটা কুরআনে আছে কি?
কথিত আহলে হাদীস-হ্যাঁ আছে।
সফদর রহঃ-সে আয়াতের তাফসীরে মুফাসসিরীনরা বলেন-হুজুর সাঃ এর নবুওয়াতের আগে সকল নবীর যুগে সম্মান করে সেজদা দেয়া জায়েজ ছিল। তো একদিকে এক লাখ তেইশ হাজার নয় শত নিরান্নবই নবীর কাছে সম্মানসূচক সেজদা জায়েজ। আর একজন হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন জায়েজ নয়। আপনি বলছেন তিন জনের কথা। এখানে লাখের বিষয়। কাকে মানবেন? বিশাল জামাতকে? না একজনকে?
মুফাসসিরীনরা বলেন-প্রথম সকল নবীর শরীয়তে দেহযুক্ত ছবি আঁকা জায়েজ ছিল। কেবল আমাদের নবীর শরীয়তে না জায়েজ। তাহলে এক লাখ তেইশ হাজার নয় শত নিরান্নব্বই নবীর শরীয়ত মানবেন না আমাদের এক নবীর শরীয়ত মানবেন? বেশি কে না একজনকে?
কুরবানীর গোস্ত খাওয়া আমাদের নবীর আগে কারো শরীয়তে জায়েজ ছিল না। তাহলে কাকে মানবেন? লাখ নবীকে না আমাদের এক নবীকে?
কথিত আহলে হাদীস-[কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে] দ্বীন মক্কা-মদীনায় এসেছে? না কুফায়?
সফদর রহঃ-মক্কা-মদিনায়।
কথিত আহলে হাদীস-তাহলে মক্কা-মদিনার ইমামকে মানা উচিত না কুফার ইমামের?
সফদর রহঃ-আপনার মন কি বলে?
কথিত আহলে হাদীস-মক্কা-মদিনার ইমামদের মানা উচিত।
সফদর রহঃ-বড় একটি মিথ্যা কথা বলেছেন আপনি। কখনো এটা মাফ হবে না।
কথিত আহলে হাদীস-ভুল হইছে?
সফদর রহঃ-হ্যাঁ, বহুত বড়।
কথিত আহলে হাদীস-কিভাবে?
সফদর রহঃ-কুরআন মক্কা-মদিনায় নাজিল হয়েছে না?
কথিত আহলে হাদীস-হ্যাঁ।
সফদর রহঃ-সাত জন ক্বারী ছিল। এর মাঝে মক্কা-মদীনার ক্বারীও ছিল। বসরার ক্বারীও ছিল। কিন্তু সবাই ক্বারী আসেম কুফীর কিরাতে কুরআন কেন পড়েন? কুফী ক্বারীর কেরাতে কুরআন পড়লে আপনাদের থেকে বড় কুফী আর কে আছে? কুরআন নাজিল হয়েছে মক্কা-মদিনায় আর কেরাত পড় কুফীর! এটা কেমন কথা?
কথিত আহলে হাদীস-কুফার লোকেরাতো আর কুরআন নিজেরা বানায়নি। কুফাতে যে সাহাবারা এসেছেন তারা কুরআন সাথে নিয়ে এসেছিলেন।
সফদর রহঃ-মক্কা-মদিনা থেকে সাহাবারা গিয়ে কুরআন যদি কুফায় নিয়ে নতুন না বানিয়ে থাকেন, তাহলে নামায কি মক্কা-মদিনা থেকে সাহাবারা কুফায় নিয়ে গিয়ে নতুন নামায বানিয়ে ফেলেছেন?
খামোশ হয়ে গেল কথিত আহলে হাদীসের লম্বা জিহবা।
১৬টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×