somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"নুনো ভিখারীর প্রেমপত্র"

৩০ শে আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের মনে ইচ্ছার রংধনুর যে ছুটেচলা তা আলোর গতিবেগের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। সময়ের সাথে সাথে এই রংধনু, রংধনুর সাতরংকে ছাড়িয়ে কল্পনার আরও অনেক রঙের সৃষ্টি করে। কিন্তু আমাদের আবার ফিরতে হয় আমাদের চেনা জগতে। সাদাকালোর জগতে। অন্য সবার মত আমার ইচ্ছার রংধনুটাও মাঝে মাঝে বর্ণিল হয় কল্পনার হরেক রঙ দিয়ে। তাইতো কল্পনায় আমি কখনও কবি, কখনও লেখক, কখনওবা বিদ্রোহী। কিন্তু সেইতো ফিরে আসি নিজের চেনা জগতে। সত্যি কথা বলতে কি মাঝে মাঝে বাস্তবতা এবং নিজের সামর্থ্যকে ছাড়িয়ে যেতে ইচ্ছা করে। লেখক কিংবা কবি হতে। যদিও অনুভব করতে পারি ব্যাপারটা খুব একটা সহজ নয়। তবুও ইচ্ছার এই ছুটে চলা থামাতে পারিনা। তাই মাঝে মঝেই ইচ্ছার এই জঞ্জালকে কুড়িয়ে আনি। কল্পনা করতে যেহেতু বাঁধা নেই তাই সেখানে কখনও আমি কবি। কল্পনার জগত থেকে বেরিয়ে লেখক কিংবা কবি হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে নয় লেখার ইচ্ছায়ই কাগজ কলম নিয়ে বসে পরি। মাঝে মাঝেই এই পৃথিবীর ধূলোবালি থেকে অনেক দূরে সরে যাই। যেখানে আমি মানুষগুলোকে নিখুত জানি। যেখানে রাগ, লোভ, ঘৃণা অহংকার নেই। হোক না সেটা আমার কল্পনার অন্য কোন গ্রহ। তবে আবার ফিরে আসি নিজের মাঝে, নিজের পৃথিবীতে, নিজের জগতে। কল্পনায় চলে যাওয়ার আনন্দে কিংবা ফিরে আসার দুঃখে ভাবি এ পৃথিবীতে তো আমি একা নই। তবে কেন একা ছুটে চলা, একার জন্য ছুটে চলা।

কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস দেখ আমাকে সারাজীবন একাই চলতে হবে। না না তুমি রাগ কর না!! এ আমার অভিযোগ নয়। একা আমি ভালই থাকবো। আমি আমার কল্পনার সংসার নিয়ে ভালই থাকব তুমি দেখে নিও। আমি জানি তুমি হয়তো ডাকলে সাড়া দেবেনা। কিন্তু তুমি আছো ভেবে আমি না হয় তোমাকে ডাকবো না। আমার প্রাপ্তি শূন্য হতে পারে, আমার কল্পনার রঙ যে বহুরূপী। আমার শূন্য চোখে দ্বিধার খেলা থাকতে পারে। আমি না হয় আমার ভেতরের বাহিরের চাওয়া-পাওয়াগুলোকে নিয়ে সেই শূন্য চোখে মিথ্যে অন্ধকারে মেতে থাকবো। আমার বুকে বিভিন্ন রঙের স্মৃতিগুলো হরেকরকমের অনুভূতি দিয়ে জোনাকীর আলো বিলাবার মত করে অনুভূতি বিলিয়ে যাবে। সাহসী হলে অনেক আগেই এই ভবলীলা সাঙ্গ করে সরে পরতাম। কিন্তু আমি যে বড় দূর্বল, ভীতু। একটু অন্যভাবে বলতে পার, The merciless, the greedy, the insatiable, the murderous. অজ্ঞান উদাসীনতায় ভাসমান স্বপ্নখন্ড। Hanging in dreams, as it were upon the back of a tiger. বাঘের পিঠে স্বপ্ন দেখা। শ্রীকান্তের একটা গান শুনেছ, “স্মৃতির বেড়া বাঁধবে যখন পাথর হয়ে আমার মন, বন্ধু তোমায় বলি শোন, বুকের জ্বালা সয়ে যাবো। অশ্রু ভেঁজা কোন দিনে যন্ত্রনা নিয়েছে কিনে, অনেক দূরে তবু কাছে হয়তো একদিন হারিয়ে যাবো, মেঘলা রাতে লুকিয়ে থেকে রূপোর আলোয় জোৎস্না পাবো।”

আমি সেই জোৎস্নার অপেক্ষায় আছি কিনা জানিনা। তবে তোমাকে ভুলাতে পারবোনা। তোমার হয়তো মনে নেই বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, জোৎস্না গায়ে মেখে দিনের পর দিন রাতের পর রাত তোমার সামনে নতজানু হয়ে তোমাকে আমি আমার করতে চেয়েছিলাম। দুচোখ বুঁজে তোমার হাতে সঁপে দিয়েছিলাম আমাকে, আমার ভালবাসাকে। সেই বন্ধ দুচোখ আর খুলে দেখা হয়নি। উন্মুক্ত রয়ে গেছে হৃদয়ের সকল দরজা। আমার দরজার ফাঁক গলে অভাব, মায়া, বিদ্বেষ, ঘৃণা, ভালবাসা প্রবেশ করে। আবার অন্য পাশের খোলা দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাইতো নিজেকে কখনও স্থির করতে পারিনি। তাই আমি কখনও তোমার প্রেমিক, কখনও অভাবী। কখনওবা সেই তোমার কাছেই আমি ঘৃণিত কেউ। আবার কখনওবা তুমি শুনতে পাও তোমার প্রতি আমার বিদ্বেষের সুর।


দরজার বাইরের রঙ্গিন পৃথিবী
ঘরের ভেতর তুমি আমি।
তুমি কি চেয়েছিলে?
বর্ণিল আকাশের অন্য রঙগুলো?
না তা কি করে হয়!
নীল দেয়ালের ঘরইতো তুমি চেয়েছিলে।
নীল রঙের পর্দা,
তোমার বিছানার পাশে কিছু বই।
এইগুলোইতো চেয়েছিলে।
দেখ-
আমার ঘরে কোন এস্ট্রে নেই।
কিন্তু বারান্দায় ফুটেছে
তোমার দেয়া অর্কিড।
তোমায় সাথে নিয়ে কেনা
সেই দুটো রকিং চেয়ার
আমি মাঝে মাঝেই দুলিয়ে দেই।
তোমার দেয়া হালকা নীল রঙের
চায়ের মগ দুটোয় চা বানানো হয়নি।
কে বানিয়ে দেবে বল?
পৃথিবীর কে খবর রাখে?
আমার চায়ের বড় তৃষ্ণা!

এখন শুধু আমার চায়েরই তৃষ্ণা নয়। রবি ঠাকুরের গানের ভাষায় তৃষ্ণা এখন বক্ষ জুড়ে। কি লিখেছি জানিনা। কোথাও তোমাকে ভালবাসি একথাটি কি স্পষ্ট করে লিখেছি??? মনে হয়না। থাক লিখে আর কি হবে??? নাইবা জানলে কেউ একজন তোমাকে আজীবন ভালবেসে যাবে। তাতে তোমার কি আসবে যাবে। তোমার বানানো চায়ের স্বাদতো এখন একজনের খুব তৃষ্ণা মেটায়। তোমার ঘরের রঙটাওতো নীল। তবে তোমার ঘরের বারান্দায় রকিং চেয়ারদুটো প্রতি মাঝ রাতেই পৃথিবীর ঘুর্ণনের সাথে পাল্লা দিয়ে দোলে, তোমার হাসির শব্দে থেমে যায় সেই দোল। চারটি হাত তুলে নেয় দুটো চায়ের মগ। আবার দুলতে থাকে। আমি দূরের কোন এক বারন্দা থেকে দেখে যাই একটি একটি জলন্ত আগুনের উঠানামা। আবার দুলতে থাকে। তবে সেখানে একটা জিনিসের অভাব আমার খুব চোখে লাগে। দুটো অর্কিড!! আমি ঠিক পাঠিয়ে দেব। আমার বারন্দার দুটোই আমি পাঠিয়ে দেব। তোমার দেয়া অন্য কিছুই আমি তোমাকে ফেরত দেবনা। শুধু এই অর্কিড দুটো ছাড়া। কারন তোমার ভালবাসার কাছে আমি পরাজিত। তবুও আমি ভাল আছি। একা আমি ভালই থাকবো।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×