somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্ল্যাক মিউজিক

১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা মিউজিক কালেকশান করেন বা গানের সাথে মোটামুটি কিছুটা সখ্যতা আছে তারা খুব সম্ভবত "ফ্ল্যাক" ফরম্যাটের স্যাথে বেশ ভালোভাবেই পরিচিতি। ৯০'এর দশক থেকে এমপিথ্রি ফরম্যাটের এক চেটিয়া বাজার থাকলেও হালে "ফ্ল্যাক" ফরম্যাটের দিকে অনেকেই ঝুঁকেছেন। মূলত এমপিথ্রির তুলনায় ফ্ল্যাক অনেক বেশী উন্নত মানের মিউজিক সংরক্ষণ করতে পারে বলেই হয়তো ধীরে ধীরে ফরম্যাটটি বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। পাশাপাশি হাতের নাগালে উন্নত কম্পিউটিং প্রযুক্তি এবং তথ্য সংরক্ষণ এর স্পেস ক্রয় সীমার মধ্যে চলে আসাতে অনেকেই মিউজিক ফ্ল্যাক ফরম্যাটেই সংরক্ষণ করছেন।

প্রযুক্তিটি ওপেন সোর্স হওয়াতে পুরো ব্যাপারটাই বেশ সবার কাছে সমাদৃত হচ্ছে। সিডি থেকে মিউজিক এমপিথ্রিতে কনভার্ট হলে মিউজিকের গুণগত মান অনেকটাই হারিয়ে যায়। তবে ফ্ল্যাকে সিডি মিউজিক এর মান প্রায় শত ভাগ (৯৯.৯৯৯%) অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব হলেও সংরক্ষনের জন্য অনেক বেশী স্পেস প্রয়োজন হয়। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, সাধারণত সিডি মিউজিক শতভাগ অক্ষুন্ন রেখে (কম্প্রেস না করে) ওয়েভ ফাইলে যদি একটা ট্র্যাকের জন্য ৫০ মেঃবাঃ প্রয়োজন হয়, সেখানে ফ্ল্যাকে প্রায় ২৫ মেঃবাঃ প্রয়োজন পড়ে। সফটওয়্যার ব্যবহার করে, আপনি আপনার কম্পিউটারের পাশাপাশি স্মার্টফোনেও এই ফরম্যাটের মিউজিক উপভোগ করতে পারেন।

মূলত হাই-রেজ মিউজিক এর জন্য ফ্ল্যাক সবচেয়ে উপযোগী ফরম্যাট হলেও, ভালো হার্ডওয়্যার প্রয়োজন পড়বে সত্যিকার অর্থে হাই-রেজ মিউজিক উপভোগের জন্য। একটা মধ্যম মানের কম্পিউটারেও হাই-রেজ মিউজিক বাজানো সম্ভব হলেও আমি এর পক্ষে নই, কারন সে জন্যে ডেডিকেটেড হার্ডওয়্যার বেশীরভাগ কম্পিউটারে নেই। ডেডিকেটেড হার্ডওয়্যার বলতে ফ্ল্যাক সার্পোটেড উন্নত মানের ড্যাক, এম্পলিফায়ার এবং স্পিকার। খরচের ব্যাপার অবশ্যই।

একটা মোটামুটি মানের হাই-রেজ স্টেরিও কিনতে গেলে কম করেও হলেও ৫০ হাজার টাকার নিচে চিন্তা করা যাবে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্যানাসনিক এর এস-সি পিএমএক্স ৯ স্টেরিও ব্যবহার করছি। যেটা স্বল্প দামে মোটামুটিভাবে ভালো মানের স্টেরিও। যদিও এর চেয়েও শতগুন ভালো প্লেয়ার রয়েছে, দিন শেষে সেটা ব্যবহারকারীর টেস্ট এবং আর্থিক ব্যপারগুলোর উপর নির্ভর করছে। আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু মাইকেলও আমার এই স্টেরিও কেনার পক্ষে ছিলোনা, শুধু দামের কারনে। কিন্তু ঐ যে বললাম, ব্যাপারটা ব্যক্তিগত ভালোলাগার বিষয়। প্লেয়ারটির ছোট্ট একটা ছবি শেয়ার করছি।


প্লেয়ারটির ব্যাপারে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন আরো জানার জন্য।

বলছিলাম ফ্ল্যাক এর কথা। আগেও বলেছি, গত বছরে দেশে গিয়ে অনেক বাংলা গানের সিডি আর কিছু এ্যালবাম ওয়েভ আকারে রিপ করে নিয়ে এসেছি। মূলত ফ্ল্যাক ফরম্যাটে উপভোগ এবং সংরক্ষন করার তাগিদেই এটা করা।

আপনারা যারা দেশে বাংলাদেশী মিউজিক কালেকশান করছেন, তাদের ব্যাপারটা ভেবে দেখার অনুরোধ থাকবে। অনলাইনে কয়েকটা দোকান থেকে আমি প্রায়ই ফ্ল্যাক মিউজিক কিনে থাকি শুধুমাত্র গুনগত মানের কথা চিন্তা করে। ফ্ল্যাক হাইরেজ মিউজিক সংরক্ষণের অন্যতম মাধ্যম হলেও সিডি থেকে সংরক্ষণ করাও বেশ সহজ। মূলত ওয়েভ ফাইলে মেটাডেটা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না বলেই ফ্ল্যাক কে নেক্সট বেস্ট থিং বলা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে আমি প্রায় দুই সহস্রাধিক এ্যালবাম কালেকশান করেছি শুধু আর্কাভিং করার উদ্দেশ্যে যেগুলো মূলত ব্লু-রে ডিস্কে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

স্ট্রিমিং সার্ভিস যেসম ইউটিউব, স্পটিফাই, আইটিউনস যেটাই হোক না কেন, হাইরেজ মিউজিক বা সিডি সমমানের মিউজিক কখনোই অনলাইনে উপভোগ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। অন্তত আপাতত তেমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন না থাকলে এমপিথ্রিও আপনার কাছে যথেষ্ট উপভোগ্য মনে হতে পারে। দিন শেষে ব্যাপারটা পুরোটাই ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়, তবে প্রযুক্তিগত দিক থেকে ফ্ল্যাক এর মত উচ্চ মান সম্পন্ন মিউজিক আর্কাভিং মাধ্যম আপাতত নেই বললেই চলে। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৩৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×