somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেমন টানলাম?

১০ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার আব্বা ছিলেন আটরশির মুরিদ। বাবার সাথে সাথে আমিও অনেক বার গেছি আটরশির উরসে। আমার আটরশিতে যাওয়ার মূল আকর্ষণ ছিলো ভ্রমণ। ভ্রমণ বলতে এখানে বুঝতে হবে বাসে করে আটরশি যাওয়া আসে, মাঝখানে ফেরিতে পদ্মা পারি দেয়া। আর ছিলো আটরশিতে উরসের সময় বিশাল মেলা। হেনো কিছু নাই যা সেখানে পাওয়া যেতো না। আমি মেলা থেকে কিনতাম টেমটেমি, হাতলওয়ালা হেলিকপ্টার, জলে চালানো যায় এমন খেলনা লঞ্চ, এই সব। এগুলি সহিসালামতে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসাটা ছিলো বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়। আরেকটা জিনিস আমাকে খুব টানতো। উরসে যে খাবারের ব্যবস্থা থাকতো সেটি। মাটির সানকিতে ভাত, আলু আর গোস্তের ঘনো তরকারি, সেই সাথে মাষকলাইয়ের ডাল। যাইহক আজকে বিষয় ঐটা না। মূল বিষয়টায় আসি।

তখন সম্ভবতো স্কুলের উঁচুর দিকের কোন এক ক্লাসের ছাত্র আমি। একবার আব্বার সাথে এমনি ভাবে যাচ্ছি আটরশির উরসে। মাঝে ফেরিতে পদ্মা পারি দেয়ার সময় আমার ক্ষুধা লেগে গেলো। আমি চলে গেলাম ফেরির উপরের অংশে যেখানে খাবারের রেস্টুরেন্ট আছে। তখনকার সময় পেটচুক্তি খাবার ছিল (এখনও আছে কিনা জানি না)। সম্ভবতো ৫০ এবং ৭০ টাকায় একবাটি মাছ অথবা গোস্ত, সাথে আনলিমিটেড ভাত আর ডাল। এই ছিলো পেট চুক্তির খাবার মেনু।

আমি একবাটি মুরগির গোস্ত নিয়ে খেতে বসলাম। আমার টেবিলেই সামনে বসে তখন আরেক জন খাবার খাচ্ছে। তার প্লেটে ডাল আর ভাত। আমি খাওয়া শুর করার আগে থেকেই তিনি খাচ্ছেন বুঝা গেলো। আমি আধা প্লেট খাবার খাওয়ার মাঝে তিনি আরো একবার ভাত ডাল নিয়েছেন, এখন আবার নিবেন।

আমি মোটামুটি দ্রুত খাই। উনার খাওয়ার পরিমান আর গতি দেখে আমি আমার খাওয়ার গতি কমিয়ে দিলাম। উনি মোটামুটি তুফান মেল চালিয়ে দিয়েছেন। ধীর গতিতে আমার খাওয়া শেষ হলো। উনি তখনও চালাচ্ছেন। আমি উঠে হাত ধুয়ে এসে আগের যায়গায় বসলাম। এক সময় উনার খাওয়া শেষ হলো। উনি খাওয়া শেষ করে হাত ধয়ে এসে নিজের আসনে বসে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলেন "কেমন টানলাম?"
আমি তখন কিংকর্তব্যবিমুখ, কোনো রকমে এক পাশে ঘাড় কাত করতে পারলাম।

উৎসর্গ: শেরজা তপন
উনার লেখা - গোয়ালন্দী জাহাজের 'মুরগির ঝোল' পোস্টটি পড়ে এই ঘটনার কথাটি মনে পড়লো।

ছবি সূত্র : মেলা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি′ | বিশ্ব | DW | 18.10.2017
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:৫৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×